জীবন যে রকম ( সম্পূর্ণ ধারাবাহিক উপন্যাস) By Lekhak - অধ্যায় ৬

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-38842-post-3444303.html#pid3444303

🕰️ Posted on July 1, 2021 by ✍️ Lekhak is back (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1571 words / 7 min read

Parent
চার   বিদিশাকে নিয়ে আমি অনেক ঘুরেছি। ওর সাথে বাসে করে যখন ঘুরতাম, বাসের ঝাঁকুনিতে মাঝে মাঝে বিদিশা আমার গায়ের ওপর টলে পড়ত। মজা পেয়ে আমি একহাত দিয়ে ওকে বুকে টেনে নিতাম। বিদিশা আমার কাঁধে মাথা রাখতো। আমার শরীরে হেলান দিয়ে দাঁড়াতো। সারা রাস্তায় আমাকে ওর বড় আপন মনে হত। বিদিশার মনে হত ও যেন আমার ওপর নিশ্চিন্তে নির্ভর করতে পারে। খুব কাছ থেকে ও বুক ভরে নিঃশ্বাস নিত। বিদিশার কোমরে হাত দিলে ওর সারা শরীরটা শিরশির করে উঠত। এ যেন এক অদ্ভূত অনুভূতি। বিদিশা বলত, ‘‘তুমিই আমার জীবনের একমাত্র প্রেমিক দেব। প্রেমের মানে কি তা, আমি তোমার মধ্যেই খুঁজে পেয়েছি।’’ ভিক্টোরিয়ায়, গঙ্গার ঘাটে নিরিবিলিতে যখন ওকে জড়িয়ে ধরতাম, বিদিশা বলত, ‘‘তোমার মধ্যেই আমার শরীর এখন হারাতে চায় দেব। একজন পুরুষের শরীরেই নারী তার নারীত্বকে আবিষ্কার করে। তাই আজ তোমার শরীরের অস্তিত্বের মধ্যে আমার শরীরের উপস্থিতি খুঁজে পাচ্ছি।’’   বিদিশাকে নিয়ে প্রথমে যেটুকু আমার দ্বিধা আর সংকোচ ছিল, বিদিশাই সেটা কাটিয়ে দিল। দূর্বার, দুরন্ত প্রেমের মধ্যে দিয়ে আমরা দিনগুলো অতিবাহিত করছি। একদিন বিদিশা এল বাড়ীতে। সেদিন মা ঘরে ছিল না। আমি কলেজে যাইনি। শরীরটা একটু খারাপ। বিদিশা  কলেজে এসে আমাকে দেখতে পাচ্ছে না বলে পাগলের মত খোঁজাখুঁজি করছে। শুভেন্দুর কাছ থেকে ও জানলো, আমার শরীর খারাপ। আমি কলেজে না গিয়ে বাড়ীতেই এখন বসে রয়েছি। শুভেন্দু বিদিশাকে বলল, দেবকে পেতে গেলে তোকে এখন ওর বাড়ীতে যেতে হবে। যা, দেখ গিয়ে হয়তো তোরই জন্য পথ চেয়ে বসে আছে। বিদিশা এল। আমি কোনরকমে বিছানা থেকে উঠে দরজা খুললাম। দেখি বিদিশা দাঁড়িয়ে। -কি ব্যাপার? তুমি কলেজে যাও নি। শুভেন্দু বলল, তোমার শরীর খারাপ। আশ্চর্য তো তুমি! আমাকে একবারও বলোনি? বিদিশাকে ঘরের ভেতরে ডেকে নিলাম। ও বলল, মা নেই বুঝি? তুমি একা? আমার কপালে হাত রাখলো বিদিশা। বলল, জ্বর? সর্দি হয়েছে? ওষুধ খেয়েছ? আসতে আসতে আমার বুকের কাছে এসে দাঁড়ালো বিদিশা। আমি বললাম, শরীরটা ভালো নয়। তাই কলেজে যাইনি। একটু জ্বরও জ্বরও এসেছে। মা নেই। আজ সকালেই মাসীর বাড়ী গেছে। তাই আমি একা। চকিতে মুখ তুললো বিদিশা। তারপর ডায়েরীটা টেবিলের ওপর রেখে, হঠাৎই আছড়ে পড়ল আমার বুকে। সমস্ত শরীর থরথর করে কেঁপে উঠলো। আমি দেখলাম বিদিশা পাগলের মতন আমার কাঁধে গলায় মুখ ঘষছে। পায়ের পাতা থেকে হাতের আঙুল অবধি একটা ‘কি জানি কি’ বিন্দু বিন্দু হয়ে ছড়িয়ে যাচ্ছে। আমি বিদিশার কাঁধে হাত রাখলাম। দুহাতে আমাকে জড়িয়ে ধরেছে ও। আমি দাঁড়িয়ে থেকে টলতে লাগলাম। তারপর বিদিশার মুখ দুহাতে অঞ্জলির মত করে ওপরে তুললাম।  দেখলাম বিদিশার চোখে জল।  এখন এই নির্জন দুপুরে, আমারই ঘরেতে চারদেয়ালের মধ্যে বিদিশা আমাকে জড়িয়ে রেখেছে।  আমার সমস্ত ছেলেবেলা, কৈশোর থেকে টেনে এনে ছুঁড়ে দিল যৌবনের রহস্যময় বিস্ময়ে। আমার চোখে চোখ রাখলো বিদিশা। ভিজে চোখের পাতায় এত কথা লেখা থাকতে পারে আমি কখনও জানতাম না। দুহাতে ওকে জড়িয়ে ধরলাম। তিল তিল করে বুকের মধ্যে একটা বোধ ছড়িয়ে যাচ্ছে। এরই নাম কি সুখ! একটা ঘোরের মধ্যে চাপা স্বরে আমি বলে উঠলাম, ‘বিদিশা আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি’। আমার বুকের মধ্যে একটা গাল চেপে বিদিশা বললো, জানি, জানি, জানি! তুমি কষ্ট করে আমার জন্য এলে? কেন আসবো না? কেন? ও যেন একটু একটু করে দুলছিলো। ওর দুহাতের মধ্যে জড়িয়ে থাকা আমার শরীরটায় সেই দুলুনি লাগলো। বিদিশার মসৃণ মুখ, ঠোঁটের কোনে মৃদু হাসির ঢেউ- আমি মাথা নিচু করলাম, মুখ নামালাম। আমার চোখের সামনে একশ নন্দন কানন। বিদিশা চোখ বুজে ফেললো। মনে হল, ওকি ভয় পাচ্ছে? ও কি চাইছে না? আমি দেখলাম কি একটা আশ্চর্য মায়ায় বিদিশা ক্রমশ সুন্দর থেকে সুন্দর হয়ে উঠছে আরো। বিদিশার ঠোঁটে ঠোঁট রাখছিলাম আমি। বিদিশার গরম নিস্বাস লাগছে মুখে। আর ঠিক সেই সময় এক ঝটকায় মুখ সরিয়ে নিল বিদিশা। তারপর আমার কাছ থেকে সরে গিয়ে হুহু করে কেঁদে ফেললো। আমাকে বলল, আমি খারাপ, খুব খারাপ। তোমাকে আমি ঠকিয়েছি। খুব নাড়া খেলে যেমন সাড়া থাকে না আচমকা। আমি প্রথমে কিছুই বুঝতে পারলাম না। ওর কাছে গিয়ে ওর কাঁধে হাতটা রাখলাম। বিদিশাকে বললাম, কি যাতা বলছ? ‘তুমি আমাকে খুব বিশ্বাস করো না? বিদিশা মুখ ফেরাচ্ছিল না। আমি তোমাকে শুধু বিশ্বাস করি না বিদিশা, আমি তোমাকে খুব ভালবাসি। অথচ দেখো, তোমার কাছে আমি সত্যিটা লুকিয়েছি। কি লুকিয়েছো বলবে তো? তোমার আগে আমি একটা ছেলেকে ভালবাসতাম দেব, এ সত্যিটা তোমাকে একবারও বলা হয় নি। তুমি কি আমাকে ক্ষমা করে দেবে ‘দেব’? সেদিন বিদিশার সরল মুখটা দেখে আমার মনে হয়েছিল, ও তো এই কথাটা আমার কাছে চেপেই যেতে পারতো? সত্যিটা না বললে, কি এমন হত? আমি তো ও না বললে কোনদিন জানতে পারতাম না। বিদিশাকে বললাম, যাকে ভালবাসতে সে এখন কোথায়? বিদিশা বললো, সে নেই। আমাকে ছেড়ে সে চলে গেছে। অবাক হয়ে বললাম, কেন? বিদিশা বললো, ভালোবাসাটা একতরফা ছিল, তাই। আমি ওকে ভালোবাসতাম। কিন্তু ও আমাকে সেভাবে ভালোবাসেইনি কোনদিন। ছেড়ে যাওয়াতে খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। আমার বিশ্বাসটাকে চূর্ণ করেছিল সে। সেভাবে মর্যাদা দেয় নি আমাকে। দেখলাম ওর চোখে এবার বেশ খানিকটা জল। বিদিশাকে বললাম, আমি কিন্তু তোমাকে ছেড়ে যাব না বিদিশা। তুমি আমাকে সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাস করতে পারো।  সত্যি বলছো? একদম সত্যি। কথাটা বলার পরই বিদিশাকে দেখলাম, ও দুহাতে শিশুর মতন জড়িয়ে ধরল আমাকে। তারপর আমার ঠোঁটে আলতো করে ঠোঁট ছোঁয়ালো। যেন চমকে উঠলাম আমি। এরকম হচ্ছে কেন? শরীরের সব রক্ত আচমকা টলে উঠলো কেন? চন্দনের ফোঁটা পড়িয়ে দেবার মত বিদিশা আমার কপালে, চোখের পাতায়, গালে, চিবুকে-এখন সারা মুখে ছোট ছোট চুমু খেয়ে যাচ্ছে। শুধু নিষিদ্ধ করে রাখছে ঠোঁটটা। আমার সমস্ত শরীর শক্ত হয়ে গেলো। অনুভব করলাম, বুকের বাতাস এত ভারী কেন? শেষ পর্যন্ত তিন বছর না খাওয়া কোন ভিখিরীর মত ঝাঁপিয়ে পড়লাম বিদিশার ঠোঁটে। দুটো নরম উষ্ণ অথচ সিক্ত জবাফুলের মত ঠোঁট পাগলের মত নিতে চাইলাম নিজের মত করে। অস্ফুট আওয়াজ করে উঠলো বিদিশা, উঃ একেবারে রাক্ষস। লাগে না বুঝি।’’ একটু থমকে গেলাম আমি। মুখ তুলে দেখলাম বিদিশা হাসছে। আমাকে বলছে, ‘উম আমাকে নাও, নাও, নাও।’ হঠাৎই শরীরে মনে হল, আমার আর জ্বর নেই। অসুস্থ শরীরটাকে যেন সুস্থ করে দিয়েছে বিদিশা। একটা ঝড়ো বাতাসের মত আমি বিদিশাকে বুকে তুলে নিলাম। আমার অগোছালো বিছানায় বিদিশাকে শুইয়ে দিলাম যত্ন করে। ছেলেমানুষের মতন বিদিশা তখন আমায় দেখছিল। খাটের পাশে হাঁটু গে’ড়ে বসে আমি বিদিশার হাতে মুখ রাখলাম। কি নরম জলের মত গন্ধ বিদিশার হাতে, সমস্ত ছেলেবেলা মনে করিয়ে দেয়। আস্তে আস্তে মুখ নামালাম ওর হাতের ওপরের দিকে, বাজুতে। বিদিশার বুকের কাছে মুখ রেখে ও কৃপণের মত চুপ করে বসে থাকলাম খানিক। আজ অবধি কোন যুবতী মেয়ের বুককে এত কাছ থেকে দেখিনি। বিদিশার বুক কি নরম? একটা হাত আমার মাথায় রেখেছে বিদিশা। আঙ্গুলগুলো আমার চুলের ভেতরে খেলা করছে। বিদিশার বুকের মধ্যে থেকে মন কেমন করা সুবাস উঠে আসছে আমার নাকে। এই শাড়ী আর অন্তর্বাসের আড়াল খুললেই বিদিশার সমস্ত যৌবনটা আমার সামনে এসে দাঁড়াবে। অথচ ওটা খুলতে আমার কেমন যেন ভয় হচ্ছিলো। একবার আড়াল ঘুচে গেলেই সব যে দিনের আলোর মত পরিষ্কার হয়ে যাবে। বিদিশা তখন কি ভাববে? আমি আসতে আসতে মুখ নামালাম নিচে। বিদিশার কোমর পেট কি নরম-আঃ। বিদিশা চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে। এখন ওর ঠোঁটদুটো ঈষৎ খোলা। চিকচিকে কুন্দ ফুলের মত সাদা দাঁত দেখা যাচ্ছে। জিভের ডগা দাঁতের গায়ে সামান্য নড়ছে। বিদিশা আমাকে ডাকলো, ‘এই শোনো।’ মুখ তুললাম আমি। বিদিশার গলার স্বরটা কেমন অনরকম। ‘এখানে আমার পাশে এসে শোও।’ হাত বাড়িয়ে আমাকে ডাকলো বিদিশা। মূহূর্তে পরিবেশটা কেমন অন্যরকম হয়ে যাচ্ছে, টের পাচ্ছিলাম আমি। এই বিদিশা কেমন এক আকুতি নিয়ে আমাকে ডাকছে। আমার ভেতরে একটা শিরশিরে অনুভূতি ছড়িয়ে দিচ্ছে। উঠে গিয়ে আমি বিদিশার পাশে শুয়ে পড়লাম। বিদিশা আরো একটু সরে এলো। তারপর আমার বুকে আঙুলের ডগা দিয়ে কি যেন লিখতে লাগল। চোখ বন্ধ করে আমি লেখাটা বোঝার চেষ্টা করছিলাম। এই আমাকে বিয়ে করবে? আজ কিংবা কাল। খুব আস্তে আস্তে বিদিশা বললো। ‘বিদিশা!’ আমি অবাক হয়ে গেলাম। এখনই বিয়ে?  এখনও তো কলেজের গন্ডীই পার হলাম না। কেন কিসের অসুবিধা? তুমি তো পাশ করে চাকরি পেয়ে যাবে তাই না? ‘কিন্তু আমার তো একটু সময় দরকার। তুমি তো সবই জানো অনার্সটা পাশ করতে এখনও দেড়বছর। আমিও তোমাকে বিয়ে করতে চাই। কিন্তু বিয়ে করে তোমাকে আমি খাওয়াবো কি? ‘আমি জানি না। কিছু জানি না। এসব তুমি ভাববে, আমি আমার সবকিছু তোমাকে দিয়ে দিলাম।’ ছেলেমানুষের মত আমার বুকে মুখ ঘষতে লাগল বিদিশা। বিদিশাকে বললাম, কিন্তু তোমার বাবা মা? তাদের কাছে তো আমাকে যেতে হবে। কথা বলতে হবে। তবে না বিয়ে। বিদিশা বললো, বাবাকে তো সব বলাই আছে। তুমি বরং যা করার তাড়াতাড়ি করে ফেলো। আমি আর পারছি না। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি? প্রেমিক থেকে পতিদেবতা বানাতে চাইছি তোমাকে, তুমি বুঝতে পারছো না? বিদিশা এরপরে আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ল। আমিও তখন চোখ বুজে চিন্তা করছি বিদিশাকে নিয়ে কি করব? ও এত ছেলেমানুষি করছে। এও কি হয় নাকি? বিয়ে, তা বলে এখনই? চিন্তা করতে করতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানিনা। সন্ধেবেলা ঘুম ভাঙল আমার। দেখি বিদিশাও চোখ খুলে তাকিয়েছে আমার দিকে, তখনো ও আমাকে ছেড়ে যেতে চাইছিলো না। আমার বুকের কাছে মুখটা ঘষছে আবার। বিদিশাকে বললাম, ‘বিদিশা এক কাজ করলে হয় না? আমি যদি শুভেন্দু আর সৌগতকে বলি ব্যাপারটা। তুমি তো জানো। ওদের কাছে আমি সব কথা খুলে বলি। কিছু লুকোই না। ওরা যদি আমাকে কিছু হেল্প করে।’ বিদিশা বলল, ‘বিয়ে করবে তুমি। আর ওরা তোমাকে কি হেল্প করবে?’ আমি বললাম, ‘তুমি জানো না। শুভেন্দুরা খুব বড়লোক। ওদের অনেক পয়সা। আমি যদি শুভেন্দুকে বলি আমাকে একটা কাজ জুটিয়ে দিতে, ও ঠিক পারবে। আমার তো সেরকম চেনাপরিচিত কেউ নেই। তোমাকে বিয়ে করবো, তার আগে রোজগার পাতির একটা ব্যবস্থা তো করতে হবে। কিছুক্ষণ ভেবে নিয়ে বিদিশা বললো, ‘এই একটা কাজ করবে? তুমি তো ভালো গান গাও। আমাকে গান শেখাবে?’ অবাক হয়ে বললাম, গান শেখাবো? তোমাকে? কিন্তু এর সাথে বিয়ের বা রোজগারের কি সন্মন্ধ আছে? গান তো এমনি শেখাতে পারি তোমাকে। বিদিশা আমার গালে একটা টোকা দিয়ে বললো, দূর বোকা। গান কি এমনি শেখাবে নাকি? আমি বাবাকে বলবো, মাসে মাসে এরজন্য দুহাজার টাকা করে দিতে। বাবা না করবেন না। বিদিশার ছেলেমানুষির মত কথা শুনে আমার খুব হাসি পাচ্ছিলো। বললাম, ‘আমি তোমাকে গান শেখাবো। তোমার বাবা আমাকে টাকা দেবেন। আর সেই টাকায় আমি সংসার চালাবো। বা কি সুন্দর। একেবারে বুদ্ধিমতী মেয়ের মত কথা বলেছো তুমি। বিদিশা কিছুক্ষণ বোকার মত ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে রইলো আমার দিকে। মুখ নিচু করে বললো, হ্যাঁ তাও তো ঠিক। বাবা এভাবে টাকা দেবেই বা কেন? আমি তো তখন তোমার কাছেই থাকবো।
Parent