জীবন যে রকম ( সম্পূর্ণ ধারাবাহিক উপন্যাস) By Lekhak - অধ্যায় ৬৭
এই এই এই কি করছো বলো তো? মা’ পাশের ঘরেই রয়েছে। দুম করে যদি ঘরে ঢুকে পড়ে কি হবে বলো তো? তোমার কি বুদ্ধি সুদ্ধি সব গেছে না কি?
আমি বললাম, মা’ জানে এ ঘরে একমাত্র বিদিশাই আছে আমার সাথে। মা এত বোকা নয়, যে তুমি আমাকে চুমু খাচ্ছো, সেটা দেখার জন্য এই ঘরে ঢুকবে, বা আড়াল থেকে দেখবে। অনেক খাটাখাটনি করে মা’ এখন বিশ্রাম নিচ্ছে। অন্তত এক ঘন্টা মা এ ঘরে আসবেই না।
বিদিশা বলল, তা হলেও, আমি চুমু খাবো না তোমাকে।
আমার বুকের ওপরে বিদিশার দুই হাত, শরীরটা ছড়িয়ে দিয়ে আমার বুকের ওপরেই ভর করেছে। আমার চোখে চোখ রেখে একদৃষ্টে দেখছে। এক ঝলক মুখে দুষ্টু হাসি। রসিকতা করে ওকে বললাম, তাহলে কি আমিই চুমুটা খাবো?
- না, না, আর ভালবাসা দেখাতে হবে না। বিদিশা চুমু না পেলেও তোমাকে আগের মতই ভাল বাসবে।
- সত্যি বলছো?
- কেন? নইলে তোমার কাছে ফিরে আসতাম আমি?
আমি কেমন উদাস চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছি। আমার মুখটা বেশ ফ্যাকাশে। চোখের কোণ দিয়ে দু ফোটা অশ্রুধারা গড়িয়ে পড়ল। কষ্টটা এতদিন বুকের মধ্যে চেপে রেখেছিলাম, আজ যেন বাঁধ ভাঙা আনন্দে সেটাই জল হয়ে চোখ থেকে ঝরে পড়ল।
বিদিশা বলল, এ মা? তুমি কাঁদছ?
চোখের জলটা আঙুল দিয়ে মুছে বললাম, না আসলে তুমি ফিরে এসেছো, তাই আনন্দে কাঁদছি। এই পৃথিবীতে আমার থেকে বড় সুখী এখন আর কেউ নেই।
আচম্বিত বিদিশা এবার আমার ঠোঁট স্পর্ষ করলো ওর ঠোঁট দিয়ে। প্রথমে আসতে, আসতে। তারপর একটু জোরে। ক্রমশই আমার ঠোঁটের সাথে ওর ঠোঁটটা প্রায় মিশেই গেল। বিদিশা আমার গলা জড়িয়ে ধরে আমাকে ঠোঁট দিয়ে ঠোঁট ধরে রাখার চেষ্টা করছে। শরীরের শিরা উপশিরা গুলো হঠাৎই দ্রুত গতিতে চলাচল শুরু করেছে। মনে হলো, কতদিনের ভালবাসার ঘাটতি পূরণ করবার জন্য আজ বিদিশাও কত ব্যাকুল। ঘরের দরজা হাট করে খোলা, বিদিশার এখন খেয়াল নেই, মা’ যদি এই মূহূর্তে ভুলেও ঘরে ঢুকে পড়ে, তাহলে ও ভীষন লজ্জ্বায় পড়ে যাবে।
আমি এসে গেছি, আর কাঁদবে না বলো?
আমি বললাম, না আর কাঁদবো না।
ঠোঁটের ওপর থেকে ঠোঁটটা সামান্য তুলে বিদিশা বলল, আমি খুব অন্যায় করে ফেলেছি, আমাকে ক্ষমা করে দাও। তোমার এতগুলো বছর আমি শুধু শুধু নষ্ট করলাম। কি যে আমার ভীমরতি হয়েছিল তখন। সত্যি মথ্যে কিছুই যাচাই করলাম না। শুধু তোমাকেই কষ্ট দিলাম।
বিদিশার কোমর আর পিঠটা দুই হাতে জড়িয়ে ধরে বললাম, আর কেউ তো কষ্ট দেয় নি, তুমিই দিয়েছ। তোমার জন্য সাতখুন মাপ।
-এতটা ভালবাসো আমাকে?
-ভালবাসা কি, সেটা তো তুমিই আমাকে শিখিয়েছ। আগে তো ভালবাসা কি? তাই আমি জানতাম না।
-আর আমি যদি ফিরে না আসতাম?
- তুমি ফিরে আসবে বলেই তো ভগবান আমাকে এখনও বাঁচিয়ে রেখেছে। এত কষ্ট পেয়েছি, কিন্তু মরে তো যাই নি? তোমার জন্যই আমার বেঁচে থাকাটা দরকার ছিল বিদিশা।
এবার দেখলাম, বিদিশার চোখেও জল। হাপুস নয়নে কাঁদতে শুরু করেছে। ভালবাসা ফাঁকি দিয়ে দরজা গলে পালিয়ে যায় নি। যেন দরজার আড়াল থেকেই আমাদের দেখছে, আর হাসছে, মনে মনে বলছে, দেখলে তো কেমন তোমাদের দুজনকে মিলিয়ে দিলাম।
শক্ত করে বিদিশাকে জাপটে ধরে এবার আমিই সজোরে চুমুটা খেলাম।
একদম কাঁদবে না বিদিশা, তোমার কান্না আমি দেখতে পারি না। কষ্ট হয়।
ভালবাসার জোর দেখাতে গিয়ে বিদিশার ঠোঁটটা প্রবল ভাবে ঠোঁটের সাথে আবদ্ধ করে নিলাম। প্রথমে চুমু, তারপরে শোষন, লালা শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত চুমুর পর্ব চললো। দাপটটা আমারই বেশি। বিদিশা শুধু আমাকে সহযোগীতা করছিল। আমার ভালবাসার নারীকে চুম্বনে অনেক্ষণ বেঁধে রেখে আমার শুধু একটা কথাই মনে হচ্ছিল। এই মূহূর্তে আমার মা’ কে এই ঘরে নয়। আরও একজনকে দরকার ছিল। যে আমার আর বিদিশার অন্তরঙ্গ মূহূর্তটা খুব কাছ থেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখত, আর জ্বলে পুড়ে মরত। সে ওই মিনু হতচ্ছারী ছাড়া আর কেউ নয়।
শুভেন্দু একদিন মজা করে আমাকে বলেছিল, তুই এখনও পর্যন্ত বিদিশাকে কটা চুমু খেয়েছিস?
জবাবে বলেছিলাম, গুনে দেখিনি। আর এই বিষয়ে তোর এত আগ্রহ কেন? তুই তো জীবনে কোনদিন কোন মেয়েকে চুমু খাবি না, এই প্রতিজ্ঞা করেছিস। শুনে কোন লাভ হবে কি?
শুভেন্দুর তৎক্ষনাৎ উত্তর, আমি চুমু না খেলেও, কামসূত্র পড়েছি। ওতে চুমুর অনেক বিবরণ দেওয়া আছে। মনে মনে একটা আইডিয়া করতাম, তুই ঠিক কি ধরণের চুমু’ টা খাচ্ছিস বিদিশাকে।
আমি প্রায় হেঁসে গড়িয়ে পড়েছিলাম। - ওরে বোকা, চুমু খাওয়ার জন্য কামসূত্র পড়ার দরকার হয় না। ওটা মানুষের, বিশেষত প্রেমিক প্রেমিকার সহজাত প্রবৃত্তি। তবে চুমুর সাথে যদি আবেগের মিশ্রণ হয় সেটা ভালো। সেটা বেশ মনে দাগ কেটে যায়।
শুভেন্দুর সেই কথা এই মূহুর্তে আমারও মাথায় আসছে না। তবে একটা অনুভূতি হলো, এত আবেগ মাখানো গাঢ় চুম্বন আমি বিদিশাকে আগে কখনও খাই নি।
ওর ঠোঁটের ফাঁকে জিভটা প্রায় প্রবিষ্ট করে ফেলেছিলাম। বিদিশার দু চোখ বন্ধ। দম বন্ধ করা অনুভূতি। আমি ওর ঠোঁটের ওপর থেকে নিচ অবধি জিভ দিয়ে লেহন করছিলাম। কেমন একটা শিরশিরানি অনুভুতি টাও সংযুক্ত হলো। হঠাৎ ই বিদিশা আমাকে ছাড়িয়ে উঠে দাঁড়াল।
-ইস কি অসভ্য দেখেছো রে বাবা। দরজা হাট করে খোলা। এর পর থেকে আর মাসীমাকে আমি মুখই দেখাতে পারতাম না।
দরজাটা ভেতর থেকে ভেজিয়ে দিয়ে বিদিশা আবার আমার দিকে মুখ ফিরে তাকিয়েছে। দেখছে, আমি বিছানা ছেড়ে উঠে পড়েছি। এবার ওর দিকেই এগিয়ে আসছি।
- দেখেছো কান্ড? বাবু অসুস্থ শরীরে বিছানা ছেড়ে উঠে পড়েছে।
আমি ওকে জড়িয়ে জাপটে ধরার চেষ্টা করতেই বিদিশা আমার নাগাল ফস্কে একটু দূরে গিয়ে ফিক ফিক করে হাসতে লাগল।
দাঁড়াও, মা’ কে গিয়ে সব বলছি।
-কি বলবে?
- এই তোমার কান্ড কারখানা।
বিদিশা আবারো আমার হাত ফস্কে বেরিয়েই যাচ্ছিল। এবার আমি ওকে ঠিক ধরে ফেললাম।
এই ছাড়ো না? কি করছো বলো দেখি।
কেন? তুমি মা’কে গিয়ে এখুনি সব বলবে বলছিলে না? ভাল করে আর একটা চুমু খেয়ে নিই, তারপর গিয়ে সব বোলো। আমার আপত্তি নেই।
-ইস কি অসভ্য ছেলে রে বাবা।
পরমূহূর্তেই একটা আগ্রাসী চুমু খেলাম বিদিশার নরম ঠোঁটে। বিদিশার শরীরটা হঠাৎই ছটফট করতে করতে এবার শান্ত হয়ে গেল। আমাকে জড়িয়ে ধরে স্ট্যাচুর মতন দাঁড়িয়ে থাকল মিনিট দুয়েক। দুটি ঠোঁট একত্রিত। চুমুর মধ্যে কি অদ্ভূত মাদকতা। গভীর ভাবে আবদ্ধ হয়ে আমার মনে হলো, অসুস্থ শরীরে যেন নতুন করে প্রাণের সঞ্চার ঘটেছে। পুরোনো ঘটনা ভুলে বিদিশার মধ্যে তথন এক বিস্ময়কর শক্তি। ঠোঁট দুটোকে ও বাড়িয়েই রাখল। চুম্বন গ্রহণ করবার জন্য ও শরীরটাকে সঁপে দিল আমার শরীরে সাথে। ওর আদর, ভালবাসা, চুম্বনের সাড়া ঝড়ের মতন আমার শরীর ভরিয়ে দিচ্ছিল। মনে হল, জীবন আমার এখন পরিষ্কার হয়ে গেছে আকাশ পটের মতই। ঠিক আবার আগের অবস্থাতেই ফিরে গেছে। পুরোনো কালো মেঘের কথা এখন আমার, বিদিশার কারুরই মনে নেই।
একটু যেন স্পর্ধা বেড়েই যাচ্ছিল আমার। বিদিশার বুকে হাত দিয়ে ফেলেছিলাম। শাড়ীর আঁচলের তলায় বিদিশার বুকের খাঁজ। আমার কেন যেন মনে হলো, এই ঐশ্বর্য তো এখন আমার। একটু উন্মোচন করে দেখতে অসুবিধে কি?
ব্লাউজটা খুলতেই যাচ্ছিলাম। বিদিশা বাঁধা দিয়ে বলল, এই এটা কোরো না। তুমি আরও অশান্ত হয়ে পড়বে।
ওকে বললাম, তাহলে তোমার বুকের ওপরে শুধু একটা চুমু খাই। এটার পরে আমি একেবারে শান্ত হয়ে পড়বো।
বিদিশা বলল, কথা দিচ্ছো তো?
-সত্যি, সত্যি সত্যি। একেবারে তিন সত্যি।
বিদিশা শাড়ীর আঁচল নামিয়ে অদ্ভূত ভাবে বুক দুটোকে বিস্তৃত করে চোখ বন্ধ করে আমার সামনে দাঁড়াল। চোখ বন্ধ করে অনুভব করলো, ওর বুকের ওপর আমার ঠোঁটের স্পর্ষ পড়ছে না।