জীবন যে রকম ( সম্পূর্ণ ধারাবাহিক উপন্যাস) By Lekhak - অধ্যায় ৭১

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-38842-post-3505081.html#pid3505081

🕰️ Posted on July 17, 2021 by ✍️ Lekhak is back (Profile)

🏷️ Tags:
📖 555 words / 3 min read

Parent
মা’ ঘরে ঢুকে বলল, আমি একটু তোদের সাথে বসতে পারি? ও মা সে কি? তুমি বসবে না তো কে বসবে? এসো আমার পাশে এসে বসো। বিদিশাও বলল, হ্যাঁ মা বসো। সারাদিন অনেক খাটাখাটনি করেছো। এবার গল্প করো। মা’ বলল, তোমাদের সাথে গল্প করার জন্যই তো এলাম। আজ সারাদিনে বাড়ীতে কত লোক। একদিন পরে সবাই দেবের কাছে এসেছে, তাই খুব ভাল লাগছিল। আমি বললাম, মা’ বিদিশা আজ থাকবে। ও বাড়ীতে বলে এসেছে। মুখটা তুলে খুব আশাপূরণ চোখে বিদিশার দিকে তাকিয়ে মা’ বলল, এইবার তোমরা দুজনে বিয়ে থা করে নাও মা। আমার ছুটী। আমি মরে গেলে দেব কে দেখার কেউ নেই। মুখটা বিষন্ন মতন করে বললাম, কি যাতা বলছো? তোমার ছুটী মানে? তোমাকে বুঝি এত সহজেই চলে যেতে দেবো? বিদিশাও বলল, তোমার জায়গা আমি কখনও নিতে পারবো না মা। মা’ মা ই। মায়ের কখনও বিকল্প হয় না। মা বলল, আজ অনেক দিন বাদে বিদিশাকে পেয়ে আমার ছেলে খুশি। আমার সব কষ্ট দূর হলো। বিদিশা লজ্জ্বায় মুখটা একটু নিচু করলো। যেন একটা অপরাধে মনে ও এখন ভারাক্রান্ত হয়ে গেছে। একটা অনুরোধ করবো বিদিশা? আমার কথা রাখবে? আমি আর বিদিশা দুজনেই অবাক চোখে মায়ের দিকে তাকিয়ে রয়েছি। বিদিশা বলল, বলো মা? দেখলাম মা’য়ের দুচোখ ভরা জল। দু গাল বেয়ে সন্তানের কষ্ট আর চিন্তায় অশ্রু টপটপ করে ঝরে পড়ছে। এমন অশ্রু দেখলে মন বেদনায় ভরে যায়। এ মা, তুমি কাঁদছো কেন মা? বিদিশা সঙ্গে সঙ্গে উঠে গিয়ে মা’ কে প্রবল ভাবে জড়িয়ে ধরলো। ‘কেঁদো না মা, আমি জানি তুমি কি বলতে চাইছো। কথা দিচ্ছি আমি কোনদিন তোমার ছেলেকে ফেলে আর যাবো না। আমিও সান্তনা যোগ করে বললাম, তোমার তো আনন্দ হওয়ারই কথা। এতদিন বাদে বিদিশা ফিরে এসেছে। তুমি ই তো কতবার বিদিশা বিদিশা করেছো। এই দ্যাখো বিদিশা এখন তোমার কাছেই দাঁড়িয়ে।  মা বলল, আজ বিদিশাকে এতদিন পরে দেখা। আমার কাছে তো অপ্রত্যাশিতই। এতদিন ধরে বিদিশার কথা চিন্তা করে করে তোর মনের ভাব যেমন বিষন্ন, নীরব আর শোচনীয় উঠেছিল, সেখান থেকে আজ তুই অনেকটাই পাল্টে গিয়েছিস। এর পুরো কৃতিত্বই বিদিশার। তারজন্যই তো ওর ওপর আমার এত আশা ভরসা। এই অনুরোধ। আমি চাই না কোন অবস্থাতেই তোরা আবার সেই আগের মতন বিচ্ছিন্ন হোস। ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করি তোদের বাকীটা জীবন সুখের হোক। আমি মনে মনে বললাম, সত্যি বিদিশার জন্য এতদিন একটা যন্ত্রণা অনুভব করছি। কিন্তু বাইরের কাউকে তা চট করে বুঝতে দিই নি। তবে মা’ তো? মায়ের কাছে কি অভিনয় করে থাকা যায়? মা ঠিকই ধরে ফেলেছে, সেই মনের আঘাত কতটা ক্লান্ত করে তুলেছিল আমাকে। কতটা অস্থির করে তুলেছিল, কতটা দূঃখ দিয়েছিল আমাকে। মা বলল, সারাদিন ধরে তো সবাইকে গান শুনিয়ে বেড়াচ্ছিস। এবার আমাকে একটা গান শোনা তো দেখি। তবে হ্যাঁ, বিদিশাকেও তোর সাথে গাইতে হবে। মা’ য়ের আবদার শুনে বিদিশা রীতিমতন ভ্যাবাচাকা খেয়ে গেছে। - আমি কি ওর মতন গাইতে পারি না কি? তোমার ছেলে কত সুন্দর গায়। আমি সেই তুলনায় কিছুই নয়। বিদিশাকে বললাম, কলেজে পড়াকালীন তোমাকে তো একটা গান শিখিয়েছিলাম, সেটাই একটু গুন গুন করে মা কে শুনিয়ে দাও। বিদিশা বলল, কোন গান টা? আমি বললাম, কেন তোমার মনে নেই? সেই রবীন্দ্র সঙ্গীত টা। বিদিশা একটু মনে করবার চেষ্টা করলো। হ্যাঁ এবার মনে পড়েছে। - এই তো হেথায় কুঞ্জ ছায়ায়। স্বপ্ন মধুর মনে। - হ্যাঁ গাও। না তুমি আগে গাও। নইলে আমি একা পারবো না। আমি বললাম, ঠিক আছে তুমি শুরুটা করো না? আমি ঠিক ধরে নিচ্ছি। বিদিশা শুরু করলো, আসতে আসতে গুন গুন করে, এই তো হেথায় কুঞ্জ ছায়ায়, স্বপ্ন মধুর মোহে এই জীবনে যে কটা দিন পাবো তোমায় আমায় হেসে খেলে কাটিয়ে যাবো দোঁহে স্বপ্ন মধুর মোহে……...  
Parent