জীবনচক্র (নতুন আপডেট নং ৯) - অধ্যায় ২৫

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-60465-post-5537933.html#pid5537933

🕰️ Posted on March 14, 2024 by ✍️ গল্পপ্রেমী (Profile)

🏷️ Tags:
📖 2395 words / 11 min read

Parent
 ছেলেটার ব্যাপারে সব খোঁজ পেয়েছো? সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কালো স্যুট পরা লোকটা কে জিজ্ঞেস করলেন ইমতিয়াজ খান।  জ্বি স্যার, ভার্সিটি এবং ছেলের পরিবারের সব ডিটেইলস আমাদের কাছে আছে…… গুড, নেগেটিভ কিছু??? নো স্যার, ক্লিন এন্ড ক্লিয়ার…..  আচ্ছা যাও, ঠিক ভাবে কাজ করো…. স্যার, ছেলেটার ব্যাপারে দিকনির্দেশনা কি? মানে ম্যাডামের সাথে মেলা-মেশা কতটুকু এলাও করবো আমরা… ছেলেটাকে ও কতটুকু এলাও করবে সেটা ওর বিষয়…. ওকে স্যার……..  কালো স্যুট পরা লোকটি বের হয়ে যাওয়ার পর সাদিয়ার দিকে ঘুরে বসলেন ইমতিয়াজ খান। কি খাবে বলো? খাবো না কিছু, মেয়ের দেখাশোনার জন্য লোক রাখা পর্যন্ত ঠিক আছে, কিন্তু ওর পার্সোনাল লাইফে ইটারফেয়ার করা কি ঠিক হচ্ছে আপনার?  অনন্যার পার্সোনাল কিছুতে আমি বাধা দিয়েছি নাকি? ও তো ওর মত চলতেছে, সে তো আর জানে কেউ তাকে নজরে রাখছে…. জানতে কতক্ষণ? আমি অনেক সময় অনন্যার সাথে থাকার সময় বুঝতে পারি কোন লোকগুলো নজর রাখছে…. বুঝতে পারো না তুমি সাদিয়া,, তুমি জানো আমি অনন্যার জন্য লোক রেখেছি তাই যাকে তোমাদের দিকে তাকাতে দেখো তাকেই তুমি সে লোক মনে করো, ওরা এভাবে নজর রাখে না, বুঝতে পেরেছো?? বুঝতে হবে না আমার… আচ্ছা, এখন কি খাবে বলো…. খাবো না, আপনি এগুলো খেয়ে নিন। ইমতিয়াজ খানের দিকে খাবারের বাটি এগিয়ে দেয় সাদিয়া। কি এনেছো আজ আবার? কিছু না, শুধু খিচুড়ি…. তুমি খাবে না?? আমি খেয়েছি, আপনি খেয়ে নিন…… জানো সাদিয়া, অনন্যা সরাসরি আমাকে জিজ্ঞেস করেছে, আমি তোমাকে পছন্দ করি কিনা? সমস্যা কি, পছন্দ তো করেনই না, বলে দিলেন না কেন সরাসরি?  দেখো সাদিয়া, তুমি আমাকে অনেক ভালো মানুষ মনে করো, আমি কিন্তু মোটেও তেমন ভালো মানুষ না…. কে বলেছে, আপনাকে আমি ভালো মানুষ মনে করি, আপনি একজন খারাপ মানুষ, খারাপ তার উপর ভীতু….. আমি খারাপ ঠিক আছে, কিন্তু ভীতু কোন দিক দিয়ে? ভীতু নয় তো কি? আবার বিয়ে করলে আপনার প্রয়াত স্ত্রীর জায়গায় নতুন স্ত্রীকে বসিয়ে ফেলবেন, আবার অনন্যার যত্ন ঠিকভাবে নিতে পারবেন না এই ভয়ে ভীতু হয়ে সারাজীবন কাটিয়ে দিচ্ছেন….. আসলে সাদিয়া, তোমরা অনেক ছোট, সব কিছু তোমরা বুঝবে না….   হুম জানি, আমি বুঝবো না, আপনি সাইকোলোজিস্ট, আপনিই সব বুঝেন…. আচ্ছা, ঠিক আছে, ধরে নাও আমি তোমাকে বিয়ে করলাম, তারপর তোমার আর অনন্যার সম্পর্ক কি হবে? তোমার বয়স এত কম, তোমার ভবিষ্যতের কি হবে? অনন্যা আর তোমাকে বাহিরে কটু কথা শুনতে হবে এসব কিছু একবারও কি চিন্তা করো তোমরা? দেখেন, আমি কারো স্থান দখল করতে চাই না, আর আপনার আর অনন্যার মাঝেও আমি কখনো আসবো না, অনন্যার সাথে সম্পর্ক কেমন থাকবে সেটা না হয় আমাকেই বুঝতে দিন….. আর ভবিষ্যৎ মানে? আমি কি এখনো খুব ভালো আছি? আর আমার বয়সী অন্য কাউকে বিয়ে করলেই ভবিষ্যৎ ভালো হবে সেটার গ্যারান্টি কি? সবচেয়ে বড় কথা আপনি আমাকে ভালোবাসেন, সেটা আপনি মুখে না বললেও আমি অনুভব করতে পারি….  সাদিয়া, যেটাকে তুমি ভালোবাসা বলছো সেটা হয়তো ভালোবাসা না, তোমাকে পাওয়ার লোভ ও হতে পারে…. লোভ! এমন নোংরা শব্দ উচ্চারণ করলেন কেন? কত বছর যাবত আপনি আমাকে সাহায্য করে আসছেন, কই কোনো দিন তো অনৈতিক কোনো কাজ করেন নি, ইচ্ছা প্রকাশ ও করেন নি, তাহলে এটা লোভ হবে কেন? আমি জানি না আসলে, আমার কি করা উচিৎ?  চলুন বিয়ে করে ফেলি, যদি কখনো মনে হয়,আপনার আর অনন্যার মাঝে আমি দেয়াল হয়ে যাচ্ছি আমাকে দূরে সরিয়ে দিয়েন, না হলে আমিই হারিয়ে যাবো নিজ থেকে…… সাদিয়া, চলো বাহিরে কোথাও যাই, ভালো লাগছে না এখানে একদম…… অনন্যা ছাড়া শুধু এই পিচ্চি মেয়েটার সাথে সময় কাটাতেই ভালো লাগে ইমতিয়াজ খানের। সাদিয়ার মুখে কেমন একটা মায়া কাজ করে। সাদিয়া কে পাশের সিটে বসিয়ে মাওয়া এক্সপ্রেস হাইওয়ে ধরে গাড়ি ড্রাইভ করছেন ইমতিয়াজ খান। ঘন্টায় ১০০ + কি.মি. এ ছুটছে তার গাড়ি, তবুও উঠতি বয়সের ছেলেগুলোর বাইক শোঁ শোঁ করে ওভারটেক করে যাচ্ছে তাকে। টোল প্লাজায় আসার পর ইমতিয়াজ খান খেয়াল করলেন তার মানি ব্যাগ গাড়ির পেছনের সিটে। তাই সাদিয়া কে মানিব্যাগ টা নিতে বললেন তিনি। সাদিয়া যখন পিছনের সিট থেকে ওয়ালেট নেয়ার জন্য হাত বাড়ালো তখন তার বোরখার হাতা একটু উপরের দিকে উঠে গেলো। এতটুকু সময়েই ইমতিয়াজ খান দেখলেন সাদিয়ার ফর্সা হাতে তাজা একটা কালসিটে দাগ। বন্ধ হয়ে যাওয়া একটা ফেরির ডেকের ছাদের উপর সাদিয়া কে নিয়ে বসে আছেন ইমতিয়াজ খান। পদ্মার এই মাওয়া ঘাটে বাতাস থাকেই, সাদিয়া যদি হিজাব না পরে থাকতো তাহলে হয়তো ওর চুল গুলো বাতাসে উড়তো। সাদিয়ার মুখের দিকে একবার তাকিয়ে ইমতিয়াজ খান ভাবলেন, সাদিয়া কে এই লেবাস ছাড়া অন্য কোনো ভাবে তিনি দেখেন নি। সাদিয়া সব সময় বোরখা, হিজাব পরে চলা ফেরা করে। সাদিয়ার চুল গুলোও কতটুকু লম্বা তা জানেন না তিনি। তবুও সাদিয়ার প্রতি টান অনুভব করেন তিনি। এটা লোভ হয় কি করে? তিনি তো কখনো সাদিয়া কে নিয়ে কল্পনাতেও কিছু ভাবেন নি। সাদিয়া, তিনি আবার তোমায় মেরেছেন? কি হলো কথা বলছো না যে…… কিছু না, ওই বাড়ি থেকে মুক্তি পেলে ভালো লাগতো…. তুমিই তো আমাকে কোনো একশনে যেতে দাও না….. কেন? আপনি আমার কে? উনি আমার বাবার স্ত্রী, উনি আমাকে শাসন করতেই পারেন, আপনি বাধা দেয়ার কে? তুমি আলাদা থাকো, বলেছি তো, আমিই সব ব্যাবস্থা করবো…. দরকার নেই, আমি এভাবেই ঠিক আছি, লাগবে না কাউকে…… সাদিয়ার একটা হাতের উপর হাত রাখলেন ইমতিয়াজ খান। কেঁপে উঠে হাত সরিয়ে নিলো সাদিয়া।  সরি, অনন্যার সেমিস্টার ব্রেকে অনন্যা কে নিয়ে ঘুরতে যাবো, যাবে আমাদের সাথে??? জানি না….. বিমানে উঠেছো কখনো? না….. তাহলে চলো কক্সবাজার যাই, তোমরা দুই বান্ধবী ঘুরে বেরিও, আমি আমার কাজ করলাম….. ঠিক আছে…. তৈরি থেকো? অনন্যাকে বলছেন আমাকে নিয়ে যাবেন? ও কিছু মনে করবে না……                               *******************  অনন্যা ভেবেছিলো আকাশ-সুমনের বাসা অন্যান্য ব্যাচেলর ফ্ল্যাটের মতই অগোছালো হবে, কিন্তু বাসায় ঢুকে ও একটু অবাকই হলো, ছোট, ছিমছাম ফ্ল্যাট কিন্তু সাজানো গোছানো। একটা বেড রুম, একটা লিভিং রুম, কিচেন, ওয়াশরুম আমার দুটো। বেডরুমের দরজার বাহিরেই একটা মাঝারি সাইজের একুরিয়াম রাখা। দেয়ালে কয়েকটা পেইন্টিং ও টানানো আছে। অনন্যা বুঝলো এগুলো আকাশের সব। সুমনের বাড়তি খরচের অভ্যাস নেই। অনন্যা, তুমি বেডরুমের ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও, আমরা এখানে বসছি, রিমা একটু পরই আসবে…. অনন্যা ওয়াশরুমে গিয়ে ভাবলো কেন যে আসতে গেলাম, এখন ভয়ই লাগছে, আকাশ-সুমন ভালো ছেলে, ওরা কিছু করবে না। কিন্তু ভালো ছেলে হলেও ছেলে তো। যদি উলটা পালটা কিছু করে বসে? বাথরুম থেকে বের হয়ে অনন্যা দেখলো রিমা চলে এসেছে। হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো যেন সে। আবার সুমনের ব্যাপারে এমন ভাবায় নিজেই অবাক হলো, আর যাই হোক সুমন কখনো এমন কিছু করবে না। রিমা খাবার গরম করতে কিচেনে গিয়েছে। অনন্যা মেয়ে হয়ে এখন বসে থাকলে খারাপ দেখায়, তাই সেও গেলো কিচেনে। যদিও অনন্যা পেঁয়াজটাও কাটতে পারে না।  বাহ রিমা, তুমি তো অনেক কিছু রান্না করতে পারো…..  কে রান্না করতে পারে! আমি কিছুই পারি না, ইউটিউব দেখে শুধু মুরগী আর গরুর মাংস রান্না করে আনলাম….  তাও তো পারো, আমি তো তাও পারি না। তুমি আকাশ কে রান্না করে খাওয়ালে তো সুমনের মন খারাপ হবে। আমি কিছু খাওয়াতে পারবো না ওকে….. সমস্যা কি, সুমনের মন খারাপ হলে বলবে, আমি রান্না পারি না, খাবার এর বদলে আমাকেই খাও….. ধ্যাত তুমি যে কি বলো না…….. কেন, তোমাদের মধ্যে কিছু হয় নি? না….. কেন……. সময়, সুযোগ, সাহস কোনোটাই আমাদের দু'জনের নেই…. আজ সময় আছে, সুযোগ আমি করে দিবো, সাহস করতে পারবে না তোমরা?? রিমার এই কথায় লজ্জায় লাল হয়ে গেল অনন্যার মুখ। অনন্যা এ যুগের মেয়ে। বিয়ের আগে কিছু করা যাবে না, এই ধ্যান ধারণা তার মধ্যে নেই। জীবনের ২১ বসন্ত পার করে ফেললেও সে এখনো ভার্জিন। ওদের পড়ালেখা শেষ হতে হতে আরো ৩/৪ বছর। যৌবনের এমন একটা সময় অনন্যা এখন পার করছে যখন শরীর কোনো বাধা মানতে চায় না। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি সুমনের সাথে ফিজিক্যাল সম্পর্কে যাওয়ার জন্য মানসিক ভাবে তৈরি ও না সে। আর হুট করে আজ কিছু হয়ে গেলে সুমন কি ভাববে কে জানে? আর সে শুনেছে, ছেলেরা দেহের স্বাদ একবার চেখে নিলে ওই মেয়েকে ছুড়ে ফেলতে সময় নেয় না। সে রিমা কে বলে দিলো, থাক, আজ আর সুযোগ করে দিতে হবে না। রিমা উত্তরে শুধু মুচকি হাসলো।  খাওয়া দাওয়া শেষে রিমার ফোনে একটা কল আসলো, কিছুক্ষন কথা বলে রিমা বললো, আকাশ, আমার এখনই যেতে হবে তাড়াতাড়ি, বাইকে এগিয়ে দিতে পারবে একটু? হুম, শিউর, চলো….. অনন্যা বললো, আমিও যাই তাহলে….. আরে, তুমি সুমনের সাথে থাকো, মাত্র খেয়েছো, বিশ্রাম নাও…… আকাশ আর রিমা ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর বোকার মত বসে থাকলো সুমন। খালি বাসায় একা অনন্যা কে নিয়ে থাকলে কি না কি হয়ে যায় ভেবেই গলা শুকিয়ে গেলো সুমনের। এদিকে অনন্যা সুমনের দিকে থেমে থেমে আড়চোখে সুমনের দিকে তাকাচ্ছে। এখন এসব করা কি ঠিক হবে? নাকি বিয়ের রাতের জন্যই বাকি রেখে দিবে সব। সুমন তো তার কাছে কোনো চাহিদা করেনি। সে শুধু শুধু আগ বাড়িয়ে সুমন কে চান্স দিবে কেন? অনন্যা, তুমি বিশ্রাম করতে চাইলে বেডরুমে গিয়ে শুয়ে পরো, আমি এখানেই আছি….. আচ্ছা…. অনন্যা বেডরুমের দরজা একটু ভেজিয়ে দিয়ে সুমনের ফ্লোরিং করা বেডে শুয়ে পরলো। শুয়ে শুয়ে অনন্যা ভাবছে সুমন কি আসবে? তার শরীর খুব চাচ্ছে ভালোবাসার মানুষ টা কে। কিন্তু মন এখনই সায় দিচ্ছে না। কখনো কোনো ছেলেকে চুমু পর্যন্ত খায় নি সে, আজ হটাৎ সব করে ফেলতে পারবে?  সুমন বাহিরে বসে মনে মনে গালি দিচ্ছে আকাশ কে, শালা ইচ্ছা করে এমন বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে গিয়েছে ওকে। এমন সময় সুমনের স্ন্যাপ চ্যাটে একটা মেসেজ আসলো আকাশের।  “আমার টেবিলের ড্রয়ারে প্রটেকশন আছে, লাগলে ইউজ করতে পারিস” সুমন রিপ্লে তে লিখলো বাইঞ্চোদ। আকাশের মেসেজ পাওয়ার পর সুমনের মনে হলো এটা ওরা প্ল্যান করেই করেছে। ইচ্ছে করেই ওরা তাদের দু'জন কে খালি বাসায় রেখে গিয়েছে। অনন্যাও কি এই প্ল্যান জানে?  সুমনের ভিষণ রাগ হচ্ছে অনন্যার উপর। অনন্যা নিশ্চয়ই জানে, না হলে ওরা বের হওয়ার সময় অনন্যাও তাকে নিয়ে বের হয়ে যাওয়ার কথা বলতো। কিন্তু আকাশ একবার বলাতেই অনন্যা বিশ্রাম নিতে রাজি হয়ে বাসায় থেকে গেল। যা ঘটছে সেটা সুমনের কাছে বিশ্রী লাগছে। যদি সে তার জি এফ এর সাথে সেক্স করেও সেটা হবে গোপনে, এখন যদি সেটা হয় তাহলে তো আকাশ রিমা জানবে তাদের মধ্যে কি হচ্ছে। ছি: এটা সম্ভব নাকি, অনন্যাও কিভাবে রাজি হলো এটা করতে?? বেডরুমের দরজায় নক করলো সুমন। নক শুনে কেন যেন কেঁপে উঠলো অনন্যা। গলা পরিষ্কার করে বললো এসো….. অনন্যা, রিমা বা আকাশ তোমাকে কিছু বলেছে? কিছুটা কড়া গলায় জিজ্ঞেস করলো সুমন। না তো, কোন বিষয়ের কথা বলছো? এই যে আমাদের কে রেখে ওরা বাহিরে চলে গেল….. না রিমা একটু মজা করে বলছিলো আর কি…… রিমা মজা করে বলছে, আর তুমিও নাচতে নাচতে রাজি হয়ে গেলে! দেখো অনন্যা, আমি ওই টাইপের কোনো ছেলে না, এসব আমার দ্বারা হবে না, আর আমি চাই না তুমি সব কিছুতে এত খোলামেলা আচরণ করো, মেয়েদের রক্ষণশীল হতে হয়। রাগী গলায় একটানে কথা গুলো বললো সুমন। অনন্যা বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছে সুমনের আচরণে। এভাবে কারো কাছ থেকে রাগী গলায় কোনো কিছু শুনতে সে অভ্যস্ত না। তার উপরে এখানে তার দোষটা কি সেটাই সে বুঝতেছে না। সুমনের শব্দ চয়ন ও তার ভালো লাগে নি। নাচতে নাচতে রাজি হয়ে গেছি মানে….. ওরা চলে গেল, আমরাও চলে যেতাম, তা না করে আকাশের কথা মত তুমি বেডরুমে এসে শুয়ে পরলে….. ও আচ্ছা, আমি নাচতে নাচতে রাজি হয়ে গিয়েছি, আমি কি তোমাদের বাসায় আসতে চেয়েছিলাম? তোমরাই তো জোর করলে, আর তুমি এই টাইপের ছেলে না মানে কি বুঝাচ্ছো? আমি কোন টাইপের মেয়ে! এমন ভাবে বললে যেন আমি জনে জনে ছেলেদের সাথে এসব করে বেড়াই। আমার মন খারাপ ছিলো তাই এসেছি, এখন চলেও যাচ্ছি, আমি তো তোমাকে সিডিউস করার ও কোনো চেষ্টা করিনি… ঠিক আছে তুমি ভালো ছেলে, আমি তেমন মেয়ে না, মেনে নিলাম। এখন আসি আমি। একশ্বাসে কথা গুলো বলে দাঁড়িয়ে গেল অনন্যা। অনন্যা, আমি এভাবে মিন করে বলি নি সরি….. সমস্যা নেই, গেলাম আমি….. আমি এগিয়ে দিচ্ছি…… কোনো দরকার নেই, আমি একা চলে যেতে পারবো….. অনন্যা, আমি সরি, প্লিজ রাগ করো না……  অনন্যা কোনো কথা না বলে হনহন করে বের হয়ে গেল বাসা থেকে। অনন্যার পিছনে পিছনে সুমন এসেছে মেইন রোড পর্যন্ত, কিন্তু সুমনের কথার কোনো উত্তর না দিয়ে একটা টেক্সি ডেকে সেটাতে উঠে পরলো অনন্যা। সুমন বুঝতে পারলো অনন্যার সাথে এমন টোনে কথা বলা উচিত হয় নি তার। এমনিতেই আব্বু আম্মুর কথা মনে পরায় মন খারাপ ছিলো মেয়েটার, তার উপর এখন সে খারাপ ব্যাবহার করে ফেলেছে। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা, তারপর রাত অনেক গুলো কল, ট্যক্সট করেছে সুমন, কিন্তু নো রিপ্লে।  বাসায় ফিরেই নিজের রুমের দরজা বন্ধ করে শুয়ে পরলো অনন্যা। ভিষণ রাগ লাগছে সুমনের উপর। কোনো কারণ ছাড়াই ও কিভাবে এত রাফ বিহেভ করতে পারে? আমি তো কিছুই করি নি, কল দিচ্ছে দিক, আমি ধরবো না, ও ওর টাইপের মেয়ে খুঁজে নিক গিয়ে। রাতে শোয়ার আগে ইমতিয়াজ খান মেয়েকে উদ্দেশ্য করে বললেন, কিরে অনন্যা, মন খারাপ কেন? কই না তো, ঠিকই আছি…… মন খারাপ সেটা তো দেখতেই পাচ্ছি, আমি তো মন খারাপ হওয়ার মত কিছু করি নি, বয়ফ্রেন্ড এর সাথে ঝগড়া হয়েছে? পাপা! কিছুই হয় নি……  কিছু হয় নি? উহ, জানো পাপা, আজকে ও আমার সাথে রাগ করে বকাবকি করছে, এমন বকা কেউ আমাকে দেয় নি আগে….. আগে তো কেউ তোর বয়ফ্রেন্ড ছিলো না….. মানে……. মানে বয়ফ্রেন্ড বকাবকি করবে, এটাই স্বাভাবিক। সবসময় যদি শুধু ভালোইবাসে সেটাতে প্রেম একঘেয়ে হয়ে যায়, যদিও বকাবকি করাটাও ভালোবাসা প্রকাশের একটা মাধ্যমও বটে….. রাগ না করে থেকে কথা বল, ভালোবাসার মুল মন্ত্র হলো একজন যখন রাগ করবে অন্য জন রাগ করবে না, দুইপাশ থেকে একসাথে রাগ হলে সেই রাগে ভালোবাসা থাকে না…. এমন সময় ইমতিয়াজ খানের ফোন বেজে উঠলো, ফোনটা ইমতিয়াজ খানের কোলের উপরেই ছিল, তাই সাদিয়ার নামটা চোখ এড়ালো না অনন্যার, খপ করে পাপার কোল থেকে ফোনটা নিয়ে নিলো সে। কল রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে ভেসে এলো সাদিয়ার গলা। হ্যালো, কি, অনন্যার মন ভালো হয়েছে? আমার মন খারাপ তোকে কে বললো? ওহ অনন্যা, তুই ফোন রিসিভ করেছিস! আচ্ছা কি করিস? একদম কথা ঘুরাবি না, আগে বল আমার মন খারাপ তোকে কে বলেছে? তোর পাপাই একটু আগে বললো…. বাবাহ, ভালোই তাহলে… পাপা নাও কথা বলো। ইমতিয়াজ খান ফোন হাতে নিয়েই কলটা কেটে দিলো। অনন্যা, এমনি ফোন করেছিলো ও……. পাপা, আমি কিছু বলেছি, সাদিয়া তোমাকে ফোন করতেই পারে, আমি কিছু মনে করি নি…. আবার অন্য কিছু ভাবিস না যেন? কি ভাববো পাপা, তুমি সাদিয়ার সাথে প্রেম করছো! হিহিহিহিহিহি…… এবার ট্যুরে সাদিয়া কে নিয়ে চল আমাদের সাথে….. পাপা, এক কাজ করো, তুমি আর সাদিয়াই ঘুরে আসো এবার, আমি না যাই…… হাসতে হাসতে বললো অনন্যা।  থাপ্পড় খাবি একটা, বড়দের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় জানিস না… বলে বের হয়ে গেলেন ইমতিয়াজ খান। সাদিয়া, তলে তলে এত দূর এগিয়ে গেছিস তুই, কালকে দেখা হোক শুধু একবার, বুঝাবো তোকে….. এখন সুমন কে একটা কল দেই, অনেক গুলো কল দিয়েছে বেচারা….. হ্যালো….. কোথায় তুমি অনন্যা, বাসায় পৌঁছেছো কখন, কথা না বললে, একটা টেক্সট তো করতে পারতে, কত টেনশনে ছিলাম জানো….. আমি কি কচি খুকি নাকি, আমাকে নিয়ে টেনশন করতে হবে….. টেনশন হলে আমি কি করবো….. সত্যি টেনশন করেছো? না, তোমার কথা মনেই ছিলো না আমার….. আচ্ছা…. সরি অনন্যা, খুব খারাপ ব্যাবহার করে ফেলেছি……  সরি বলা লাগবে না, আমি বুঝেছি….. আসলে, গ্রামে থেকেছি সারাজীবন, এসব খুব ভালো করে বুঝি না আমি, ব্যাকডেটেট বলতে পারো আমায়…… ব্যাকডেটেড থাকাই ভালো, এত স্মার্ট হওয়ার দরকার নেই…… আচ্ছা, একটুও পড়ি নি তোমার টেনশনে, পরশুই তো নেক্সট এক্সাম, পড়তে বসি, তুমিও একটু পড়ো….. আমি পড়তে পারবো না, সারাজীবন তো তুমিই খাওয়াবে, আমি পড়ে কি করবো…… অলস মেয়ে কোথাকার……  হুম আমি অলস, রান্না শিখে রাখো, বিয়ের পর তুমিই আমাকে রান্না করে খাওয়াবে….. আচ্ছা, খাওয়াবো…. ভালো করে পড়ো, পাপা তোমার CGPA জিজ্ঞেস করেছিলো….. তোমার পাপা জানে আমাদের কথা! পাপাকে বলতে হয় না, পাপা সব বুঝে….. **পরবর্তী অংশ পরের পোস্টে **
Parent