জীবনের অপর পৃষ্ঠা/কামদেব - অধ্যায় ৩৬

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-23991-post-1807522.html#pid1807522

🕰️ Posted on April 6, 2020 by ✍️ kumdev (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1626 words / 7 min read

Parent
[ছত্রিশ]                                                              রত্নাকর দোতলায় নেমে এল।ড্রেশিং রুমে ঢুকে পোষাক বদলে বেরোতে তার হাতে একটা খাম দিয়ে বলা হল,মেডিটেশন শেষ হলে আম্মাজীর সঙ্গে দেখা করে যাবেন।রত্নাকর উপাসনা মন্দিরে গিয়ে দেখল বেদীর উপর ধ্যানস্থ আম্মাজী।কি চমৎকার লাগছে দেখতে।নজরে পড়ল সেই অধ্যাপিকা মহিলাও তাদের মধ্যে আছে।মনে পড়ল অমৃত রসের কথা।সাধনা বলে কিনা সম্ভব মনে মনে ভাবে রত্নাকর।একবার মনে হল ওদের মাঝে বসে সেও ধ্যান করে কিন্তু সাহস হলনা।কখন ধ্যান শেষ হবে?এভাবে কতক্ষন দাঁড়িয়ে থাকা যায়?মনে হল পাশে এসে কে যেন দাড়ালো,ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল রাগিনী ম্যাম।পোশাক বদলে এসেছেন। --আনন্দ, দা ব্লাইণ্ড লেডি ভেরি প্লিজড। --থ্যাঙ্কস। --আপনাকে আম্মাজীর অফিসে বসতে বলেছে। --অফিসে? --আম্মাজী আপনাকে কিছু এ্যাডভাইস করতে চান।  রাগিনীর প্রতি রত্নাকরের বিরূপভাব চলে যায়।রত্নাকর উপাসনা মন্দিরের পাশ দিয়ে অফিসে গিয়ে বসল।মোবাইল টিপে সময় দেখল,প্রায় ছটা বাজে।কতক্ষন বসবে,ধ্যান শেষ হবে কখন?তারপর বানী দিতে পারেন। তাকে বলল পড়াশুনা করতে তাহলে এতক্ষণ কেন আটকে রেখেছেন?শব্দ শুনে পিছন ফিরে দেখল আম্মু ঢুকছেন।পিছনে একজন মহিলা টেবিলের উপর এক প্লেট মিষ্টি রেখে চলে গেল। --প্রসাদ খা বাচ্চা।রত্নাকর অবাক হয়ে তাকায় এত মিষ্টি--প্রসাদ? আম্মু বলল সবাইকে দিয়েছে তুই ছিলিনা তাই এখানে দিয়ে গেল। --তুমি খাবেনা?আম্মাজী হাসলেন বললেন,আমি দিনে একবার খাই-- ডিনার। --সারাদিন কিছু খাও না?বিস্মিত চোখ মেলে জিজ্ঞেস করে রত্নাকর। --ওনলি ফ্রূটস।আম্মাজী হেসে বললেন।রত্নাকর মন দিয়ে প্রসাদ খেতে থাকে,সোসাইটী কাছাকাছি হলে রোজ এসে প্রসাদ খেয়ে যেতো। --কি ভাবছিস বাচ্চা? --তুমি তো সব বুঝতে পারো,বলতো কি ভাবছি? আম্মাজী হাসলেন,মুক্তোর মত দাত ঝিলিক দিয়ে উঠল।রত্নাকর বলল,একটা কথা জিজ্ঞেস করব? আম্মাজী কিছু বলেনা,মুখে প্রশ্রয়ের হাসি।রত্নাকর সসঙ্কোচে জিজ্ঞেস করে,তোমার ওখান থেকে সব সময় অমৃত রস বের হয়? আম্মাজী হাসলেন বললেন,তোকে কত টাকা দিল? রত্নাকরের খাওয়া হয়ে গেছে,মুখ মুছে বলল,বলছি।পকেট থেকে খাম বের করে ছিড়ে টাকা গুণে বলল,পাচশো টাকা।আম্মাজী অদ্ভুত চোখে বাচ্চার দিকে তাকিয়ে থাকে। রত্নাকর মাথা নীচু করে।আম্মাজী বলল,কি দিল গুনে দেখবিনা? --জানো আম্মু আমার মা বলতো,যে ঠকায় পাপ তার যে ঠকে তার কোনো পাপ নেই। আম্মাজী উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,আয় বাচ্চা আমার কাছে আয়। রত্নাকর কাছে যেতে বুকে  চেপে ধরে কি যেন বিড়বিড় করে বলতে থাকেন।একসময় ফিস ফিস করে বললেন,তুই একদিন খুব বড় হবি বাচ্চা।তারপর ছেড়ে দিয়ে ড্রয়ার থেকে আরও পাচশো টাকা বের করে দিয়ে বললেন,যা বাড়ি যা।অমৃত রস সবার ভাগ্যে থাকেনা।তোকে আরেকদিন খাওয়াবো--তুই আমার রাজা বেটা।  --তুমি নাকি কি বলবে আমাকে? --আজ থাক,আরেকদিন কায়া সাধনা করব বেটা।আম্মাজী মনে মনে ্কিছুক্ষন ভেবে বললেন।  উপাসনা হয়ে গেছে এখন বিশ্রাম।একটা ঘরে কয়েকজন মহিলা সবারই সাধারণ পোশাক।ওরা আনন্দকে নিয়ে কথা বলছে।আম্মাজী বলেন পুরুষ এবং প্রকৃতি কেউ স্বয়ং সম্পূর্ণ নয়।মিট্টি বিনা বীজ আউর বীজ বিনা মিট্টী স্বতন্ত্রভাবে কোনোটারই মূল্য নেই।বীজ মাটিতে পড়লে তবেই অঙ্কুরিত হয়।এখানে সেইভাবে নাম করন হয়।যেমন গীতা+নন্দ মেঘা+নন্দ শিবানি+নন্দ মতলব গীতানন্দ মেঘানন্দ শিবানন্দ।আনন্দ কি ভাবে হল? পার্বতী মজা করে বলল,আন্নাপিল্লাই +নন্দ ইজ ইকুয়াল টু আনন্দ । সবাই শিউরে উঠল।আম্মাজীর কানে গেলে সর্বনাশ। --সব কিছু নিয়ে মজা করা ঠিক নয়।কখন বিপদ নেমে আসবে কে বলতে পারে? রাগিনী বলল,একজন সুইপারকে ডেকে বলল,ইলাজরুম সাফা করো। লোকটি চারতলায় উঠে গেল।বিন্দা বলল,দিদি ঘর ফাকা? --এই শিফটে কাজ শেষ।নতুন যে এসেছে আনন্দ ওরই সময় একটু বেশি লেগেছে।গীতানন্দ তো ঢুকল আর বেরোল মেঘানন্দজী বেরোবার আধঘণ্টা পর বের হল আনন্দ। --তুমি কি নাইট শিফটে থাকবে?পার্বতী জিজ্ঞেস করে। --জানিনা আম্মাজী কি বলে দেখি। --শিবানন্দ নাকি প্রাইভেট কাজ করছে? দিদি শুনেছো?রাগিনী হাসল। পার্বতী জিজ্ঞেস করে,হাসছো কেন?  --আম্মাজীর নজর সবদিকে,শিবানন্দকে পুলিশে ধরেছে। --পুলিশে ধরেছে?জানি নাতো? --কলাকার স্ট্রিটে একটা বাড়ীতে পুলিশ রেইড করে দুই আউরত সহ শিবানন্দকে ধরেছে। --বেশি লোভ ভাল নয়।বিন্দা বলল। --ঊষা অগ্রবাল আনন্দের নম্বর চাইছিল।পার্বতী বলল। --তুমি দিয়েছো?রাগিনী জিজ্ঞেস করে। --আমি কি জানি? জানলেও দিতাম না।বললাম,আম্মাজীকে বলুন। --এইটা ঠিক বলেছো।আম্মাজীর সামনে দাড়ালে আমাদেরই বুক শুকিয়ে যায়।সবাই খিল খিল করে হেসে উঠল। রত্নাকর রাস্তায় এসে দাড়ায়।আম্মু তাকে বলেছে তুই অনেক বড় হবি।নিজের জীবনের দিকে ফিরে তাকায়।এই জীবনে বড় হবার সুযোগ কোথায়?ইলাজ করে করে অনেক অর্থ উপার্জন হয়তো সম্ভব কিন্তু খ্যাতি?বাস আসতে উঠে পড়ল।স্বপ্ন ছিল একদিন লেখক হবে।কয়েকটা গল্প এখানে ওখানে ছাপা হয়েছে।কিন্তু কজন তাকে জানে লেখক হিসেবে?ভেবেছিল উপন্যাস লিখে ছাপা হলে হয়তো কিছু হতে পারে,সেইভেবে একটা উপন্যাস লিখেওছে।লেখার পর মাস খানেক ফেলে রেখে আবার চোখ বুলিয়ে ত্রূটি-বিচ্যুতি সংশোধন করতে হয়।ইচ্ছে আছে পরীক্ষার পর আবার লেখাটা নিয়ে বসবে।আম্মুর কথাটা বিশ্বাস করতে পারছেনা আবার ইতিমধ্যে আম্মুর ঐশ্বরিক ক্ষমতার যা পরিচয় পেয়েছে কথাটা একেবারে উপেক্ষা করতেও পারে না।আম্মু কায়া সাধনার কথা বলছিলেন।কায়া সাধনা ব্যাপারটা কি রত্নাকর জানে না।শুনেছে সারারাত লেগে যায়।চলার পথে ডাক্তার উকিল অধ্যাপক ইঞ্জনীয়ার কত রকমের লোক দেখা যায়।কারও ব্যবহার  ভাল কারো ব্যবহার খারাপ তাছাড়াও তাদের ভিতর আরেকটা মন আছে যার খবর কজনই বা জানে।বাইরে থেকে দেখে হয়তো মনে হবে সুখী পরিবার।স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ নেই কলহ নেই।দুজনে একসঙ্গে সিনামা যায় ছুটিতে বেড়াতে যায় কিন্তু একজন আরেকজনের কাছে যা যা প্রত্যাশা করেছিল সবই কি  পেয়েছে?অন্য কোনো নারী বা পুরুষ দেখে কখনো মনে হয় নাকি এই মহিলা আমার স্ত্রী হলে বা এই লোকটি তার স্বামী হলে আরও ভাল হতো? এই যে আম্মুর এত প্রতাপ প্রতিপত্তি সবাই তাকে সম্মান করে,কতলোক ঘুর ঘুর করছে আম্মাজীর একটু করুণা পাওয়ার জন্য তাহলেও আম্মাজীর মনে কি কোনো খেদ নেই নিশ্চিতভাবে বলা যায়?গরীব বড়লোক সব মেয়েই চায়  সন্তান সন্ততি নিয়ে তার ভরা সংসার হোক।কিন্তু একাকী আম্মুর মন কি অনুভব করেনা সংসারের সোনালি হাতছানি?রত্নাকর লক্ষ্য করেছে সে যখন "আম্মু" বলে ডাকে আম্মাজীর চোখে মুখে একটা হাসফাস আকুলতা।আজ তাকে পাঁচশো টাকা দিল কেন?কোন তাড়না তাকে টাকা দিতে উদ্দীপ্ত করেছে?একী অতি সাধারণ সাদামাটা সামান্য ব্যাপার?রাত বেশি হয়নি বাস থেকে নেমে রত্নাকর পাড়ার দিকে হাটতে লাগল।বেলাবৌদির কথা মনে পড়ল।বিজুদার চেয়ে লেখাপড়ায় অনেক ভাল ছিল।অথচ বিজুদার মন পাওয়ার জন্য কি বিচলিত মন।আবেগে তাকে জড়িয়ে ধরেছিল সেকি রতি পাড়ার ছেলে বলে ?সেই মুহূর্তে সে কেবল বেলাবৌদির আশ্রয় যার স্পর্শে অশান্ত মনটাকে শান্ত করতে চেয়েছিল।অথচ অন্য কেউ দেখলে কত কি ভেবে নিত?মেয়েদের বুক যেন ছায়া সুশীতল শান্তির নীড়।রাস্তায় বাতিস্তম্ভে টিমটিম আলো জ্বলছে।মাঝে মাঝে দু-একটা অটো হুউ-শ করে চলে যাচ্ছে।রত্নাকর নানা ভাবনা চিন্তার বোঝা নিয়ে রাস্তার ধার ঘেষে চলেছে।হঠাৎ কে একটা তার পাশ দিয়ে হনহন করে তাকে অতিক্রম করে।মেয়েটাকে চেনা চেনা লাগে সায়ন্তনী না? --এই সায়ন্তনী।মেয়েটি চমকে দাঁড়িয়ে পড়ে। রত্নাকর এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করল,তুমি আমাকে দেখোনি? --না মানে দেখেছি,ভাবলাম তুমি যদি বিরক্ত হও?সায়ন্তনী ঢোক গিলে বলল। সায়ন্তনী বারবার পিছন দিকে দেখছে,ওর দৃষ্টি অনুসরণ করে রত্নাকর পিছন ফিরতে মনে হল কে যেন গলিতে ঢুকে গেল।সায়ন্তনীকে জিজ্ঞেস করে,কে?  সায়নী লাজুক হেসে বলল,তোমার বন্ধু। --হিমেশ?কোথায় গেছিলে? --রতি তুমি এখন কোথায় থাকো?পঞ্চাদার দোকানে দেখিনা। ধরা পড়ে গেছে বুঝতে পেরে সায়ন্তনী কাছে এসে জিজ্ঞেস করল। --সরদার পাড়া।বললে নাতো কোথায় গেছিলে? --সিনেমা।আর বোলো না ওর পাল্লায় পড়ে যেতে হল।খালি মারধোর ঘুষোঘুষি তুমি বলো ভাল লাগে? তাহলে সঙ্গে হিমেশ ছিল? হিমেশ হিন্দী সিনেমার ভক্ত। সায়ন্তনীর কথা শুনে ভাল লাগল।আজকাল বাংলা সিনেমাগুলো হিন্দি সিনেমার অনুকরন কোনো চিন্তার খোরাক যোগায় না। --পারু তোমার খোজ করছিল, বলছিল কি নাকি দেবে তোমাকে।সায়ন্তনী বলল। পারমিতা ওর সহপাঠী,এক কলেজে পড়ে।মনে হয় সাজেশন দেবে। হঠাৎ দুপুরের কথা মনে পড়ল। --ও হ্যা তোমাদের দিদিমণি সিল্ককের শাড়ি পরে লম্বাটে মুখ শ্যামলা রঙ ঘাড় অবধি ছাটা চুল--। --কেকে?কৃষ্ণকলি ম্যাম--রতি উনি তোমার চেয়ে বয়সে অনেক বড়।সায়ন্তনী মজা করে বলল। --ঝাঃ তুমি ভীষণ ফাজিল হয়ে গেছো।রত্নাকর লাজুক গলায় বলল। --দেখতে পারো ফাকা আছে। --মানে?  --স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। --খুব ইয়ার্কি হচ্ছে?  --হি-হি-হি।এমনি বললাম।কেকে খুব মাই ডীয়ার,মেয়েরা সবাই ওকে পছন্দ করে। রত্নাকর ভাবে কৃষ্ণকলি বেশ সুন্দর নাম।মনে পড়ল সেই গানটা--"কালো হরিণ চোখ" "ময়না পাড়ার মাঠে  চুলগুলি তার পিঠের পরে লোটে।" কেকের চুল অবশ্য কাধ পর্যন্ত।উনি রিলিফ সোসাইটিতে কেন যান বোঝা গেল। কথা বলতে বলতে পঞ্চাদার দোকানের কাছে চলে এল।রত্নাকর "আসি" বলে পঞ্চাদার দোকানে ঢুকে গেল। অন্য দিকে তাকিয়ে সায়ন্তনী দোকান পার হয়ে গেল।হিমেশ গভীর মনোযোগ দিয়ে শুভর সঙ্গে কথা বলছে।রতি গুনে দেখল দোকানে তাকে নিয়ে পাঁচজন।সবাইকে লক্ষ্য করে রতি বলল,কে কে চা খাবি? শুভ অবাক হয়ে তাকায়।হিমেশ অবাক হয়ে বলল,তুই কখন আসলি? --কখন আসলাম বলব? --থাক থাক বলতে হবেনা,তুই চা বল।রতি ওকে দেখেছে বুঝতে পেরে হিমেশ কথাটা ঘোরাবার চেষ্টা করে। --বেশ আমদানী হচ্ছে মনে হয়?বঙ্কা মজা করে বলে।  রতি হাসে,ইতিমধ্যে পঞ্চাদা টেবিলে চা রেখে গেল।চায়ে চুমুক দিয়ে রতি  জিজ্ঞেস করে,উমাদা আসেনি? --তুই শালা উমাদাকে যা নেশা ধরিয়ে দিয়েছিস,সারাক্ষণ ওই নিয়ে পড়ে আছে। উমাদা চ্যারিটি ব্যাপারটাকে বেশ সিরিয়াসলি নিয়েছে দেখে রতির ভাল লাগে।বাজে আড্ডা দিয়ে সময় নষ্ট করার চেয়ে কিছু একটা করা ভাল।শুভর সঙ্গে রোজির সম্পর্ক নেই।সায়ন্তনী মেয়েটা খারাপ নয়।রতি ভাবে কিভাবে এদের সম্পর্ক তৈরী হয় আবার কেনই বা ভেঙ্গে যায়? একটা সম্পর্ক কি এতই পলকা যা তুচ্ছ কারণে কিম্বা অকারণে ভেঙ্গে যেতে পারে।মানব চরিত্র অতিশয় জটিল।রতি কথা বলছে কেউ জানে না রতি এখন কোথা থেকে এল। স্থানীয় ওসি সিকদারকে বিদায় করে আম্মাজী উঠি-উঠি করছেন,ফোন বাজতে আম্মাজী কানে লাগিয়ে বললেন,হ্যা বলো....না না এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট নিয়ে পরে আসতে বলো...শুনছে না মানেটা কি....সারাদিন আমি এইসব করব?....আচ্ছা দু-মিনিট পরে আসতে বলো।ফোন রেখে আম্মাজী সংলগ্ন বাথরুমে ঢুকে কমোডে বসলেন।শিবানন্দের ব্যাপারে সিকদার এসেছিল কথা বলতে।লোকটির আসল নাম টি আর বালু,পুরানো লোক।সাইজ খারাপ না ভালই কাজ করছিল,শেষ দিকে লোভ সামলাতে পারেনি।বালু আবার ফিরতে চায়।একবার যে এ কাজ করেছে তাকে আর বিশ্বাস করা যায়না।সব কনটাক্ট নম্বর নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।সিকদারকে বলেছে ওকে দেশে পাঠিয়ে দিতে।বাচ্চা তাকে ভালবাসে ও এরকম করবে না।গুদে জল দিতে দিতে মনে পড়ল বাচ্চা আরেকবার অমৃতরস পান করতে চায়।আম্মাজী মনে মনে হাসে একদম ছেলে মানুষ। বাথরুম থেকে বেরিয়ে অফিসে ঢুকে দেখলেন,বছর চল্লিশ বয়স বেশ ফিটফাট ভদ্রলোক বসে বসে ঘামছে।উপর দিকে তাকিয়ে দেখলেন, মাথার উপর বন বন করে ঘুরছে পাখা। আম্মাজীর কপালে ভাজ পড়ে,কি মতলব?আম্মাজী চেয়ারে বসে বললেন,বলুন কি জরুরী দরকার? লোকটি প্রণাম বলে রুমাল বের করে ঘাম মোছে।আম্মাজী অনুমান করার চেষ্টা করেন। --আমাকে এক ফ্রেণ্ড পাঠিয়েছে।ব্যাপারটা খুব প্রাইভেট। আম্মাজী কোনো কথা বলেন না।লোকটি বলল,আমার ওয়াইফকে নিয়ে সমস্যা। --উকিলের সঙ্গে কথা বলুন। --না মানে আমাদের দশ বছর বিয়ে হয়েছে,কোনো সন্তান নেই। --কাউকে এ্যাডপ্ট করে নিন। --এইটা আমার মনে হয়েছিল কিন্তু কার না কার বাচ্চা মানে ডাক্তারী পরীক্ষা করেছি।গলতি আমার আছে। আম্মাজী বুঝতে পারেন ভদ্রলোক অবাঙালী,কি বলতে চান।আম্মাজী বললেন,নীচে এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট নিয়ে যান। --না মানে শোভা মানে আমার ওয়াইফ বহুৎ শর্মিলি,আমার বিজিনেস শারদ চাওলা।মহারাষ্ট্রে আমাদের আদি নিবাস।কলকাত্তায় তিন পুরুষের বিজনেস। --মেয়েদের তো শরম থাকা স্বাভাবিক। --খুব সিক্রেট রাখতে চাই।টাকা কোনো সমস্যা নয়। --শুনুন এই কাজ আগেও হয়েছে।আপনি  নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন।কোনো ছোটো জাতকে দিয়ে করানো হবেনা--। --এইটা আমি বলছিলাম।আপনার বহুৎ মেহেরনবানি আম্মাজী।আই উইল বি ভেরি গ্রেটফুল,প্লিজ--। --ঠিক আছে কি নাম বললেন? --জি শোভা--শোভা চাওয়ালা। --আসল নাম নয়, নামটা বদলে এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট নিয়ে যান। --থ্যাঙ্ক ইউ আম্মাজী।পরনাম। --শুনুন একমিনিট।দিন পনের পরে হলে অসুবিধে হবে?মানে একটা ভাল লোক ছিল,দিন পনেরো পর যোগ দেবে। --নো প্রবলেম।আপনি যা ভাল বোঝেন।তবে ও খুব লাজুক কেয়ারফুলি হ্যাণ্ডল করতে হবে।কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না লেকিন মা হতে কে না চায়--। --ঠিক আছে।আম্মাজী একটু বিরক্ত।আম্মাজি অর্থাৎ আন্না পিল্লাইয়ের বুকের ভিতর আছড়ে পড়ে হাহাকার।ঠোটে ঠোট চেপে জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকেন।
Parent