কাকিমাদের উপর প্রতিশোধ - অধ্যায় ১

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-69880-post-6008621.html#pid6008621

🕰️ Posted on August 13, 2025 by ✍️ Abirkkz (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 1116 words / 5 min read

Parent
১  আমার নাম আকাশ, আর আমার ছোটবেলার কথা মনে পড়লে এখনো মনটা একটু আনচান করে। তখন আমার হবে, বাবা-মা আমাকে নিয়ে  কাকার বাড়ি যেতাম। কাকার বাড়িটা ছিল একতলা, ছোট্ট একটা উঠোন আর পিছনে একটা আমগাছ। আমি আর আমার কাকাতো বোন রিমা, তখন সবে তিন-চার বছরের, সারাদিন উঠোনে দৌড়াদৌড়ি করতাম। কখনো আমগাছের নিচে লুকোচুরি খেলতাম, কখনো কাকীমার হাতের পিঠে খেয়ে দুজনে একসঙ্গে দুষ্টুমি করতাম। রিমা ছিল দারুণ দুষ্টু, আমার শার্ট টেনে ধরে হাসত আর আমি তাকে কোলে তুলে ঘুরিয়ে দিতাম। কাকীমা তখন হাসিমুখে আমাদের দেখতেন, মাঝে মাঝে বলতেন, “আকাশ, রিমাকে এতো আদর করিস না, মাথায় উঠে যাবে।” কাকাও হাসতেন, তবে তিনি বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকতেন তার ছোট্ট দোকান নিয়ে। আমার ছোটবেলার সেই হাসি-খুশির দিনগুলো যেন একটা স্বপ্নের মতো ছিল। কিন্তু সেই স্বপ্ন ভেঙে গেল যখন আমার বয়স তেরো বছর। সেদিনটা এখনো আমার মনে ঝকঝকে স্পষ্ট। বর্ষার একটা দুপুর, আকাশ ছিল ঘন কালো মেঘে ঢাকা। বাবা-মা কলকাতা থেকে হালিসহরে কাকার বাড়িতে আসছিলেন আমাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমি তখন আমাদের পুরোনো বাড়িতে একটা প্রতিবেশীর কাছে ছিলাম। বাবা একটা সেকেন্ড-হ্যান্ড মারুতি গাড়ি কিনেছিলেন কিছুদিন আগে, আর সেই গাড়িতেই তারা আসছিলেন। কিন্তু পথে বৃষ্টির জন্য রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে গিয়েছিল। শুনেছিলাম, বাবা গাড়ি চালাচ্ছিলেন, আর মা পাশে বসে গান শুনছিলেন। হঠাৎ একটা ট্রাক তাদের গাড়ির সামনে এসে পড়ে। বাবা ব্রেক করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পিচ্ছিল রাস্তায় গাড়িটা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লাগতেই গাড়িটা দুমড়ে-মুচড়ে যায়। পুলিশ পরে বলেছিল, দুর্ঘটনাটা এতো ভয়ানক ছিল যে বাবা-মা দুজনেই ঘটনাস্থলেই মারা যান। আমাকে যখন খবরটা দেওয়া হলো, আমি যেন পাথর হয়ে গিয়েছিলাম। আমার মাথায় কিছুই ঢুকছিল না। আমার সেই ছোট্ট দুনিয়াটা যেন এক মুহূর্তে ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। আমার বুকের মধ্যে যেন একটা শূন্যতা তৈরি হয়েছিল। প্রতিবেশী আন্টি আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলেন, কিন্তু আমার চোখ দিয়ে এক ফোঁটা জলও বেরোল না। আমি শুধু চুপ করে বসে ছিলাম, মনে হচ্ছিল আমি একটা স্বপ্ন দেখছি, যেখান থেকে জেগে উঠলেই আবার বাবা-মাকে দেখতে পাব। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর ভাঙল না। বাবা-মায়ের শেষকৃত্যের সময় আমি হালিসহরে কাকার বাড়িতে গিয়েছিলাম। কাকা আমাকে বুকে জড়িয়ে বলেছিলেন, “আকাশ, তুই চিন্তা করিস না, আমরা আছি তোর সঙ্গে।” কিন্তু কাকীমার মুখে তখনো সেই হাসিটা ছিল না, যেটা আমি ছোটবেলায় দেখতাম। তিনি চুপচাপ সব কাজ সামলাচ্ছিলেন, কিন্তু আমার দিকে তাকালে তাঁর চোখে একটা অদ্ভুত দূরত্ব দেখতাম। বাবা-মা চলে যাওয়ার পর আমার আর কোথাও যাওয়ার জায়গা ছিল না। আমাদের পুরোনো বাড়িটা ভাড়ায় দেওয়া হয়েছিল, আর সেই টাকায় আমার পড়াশোনা চলত। কাকা আমাকে বললেন, “আকাশ, তুই এখন থেকে আমাদের সঙ্গে থাকবি।” আমি তখন তেরো বছরের কিশোর, মনের মধ্যে দুঃখ আর অভিমান নিয়ে হালিসহরে কাকার বাড়িতে চলে আসি। কাকার বাড়িটা ছিল সেই একতলা বাড়ি, তবে এখন আর আগের মতো উঠোনে আমগাছের ছায়ায় খেলার দিন ছিল না। বাড়িটা একটু জরাজীর্ণ হয়ে গিয়েছিল, দেয়ালে স্যাঁতসেঁতে দাগ, আর কাকার দোকানের ব্যবসাও তেমন ভালো চলছিল না। প্রথম কয়েক মাস কাকা আমার সঙ্গে খুব যত্ন নিয়ে কথা বলতেন। তিনি আমাকে কলেজে ভর্তি করে দিলেন, আমার জন্য বইপত্র কিনে দিতেন। কিন্তু কাকীমার ব্যবহার আমাকে ক্রমশ অস্বস্তিতে ফেলত। তিনি আমাকে দেখলেই যেন মুখ গোমড়া করে ফেলতেন। আমি যখন ঘরে ঢুকতাম, তিনি চুপ করে যেতেন বা অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন। একদিন রাতে খেতে বসে আমি বললাম, “কাকীমা, আজ মাংস রান্না করেছ তো?” তিনি আমার দিকে তাকিয়ে একটু থেমে বললেন, “আকাশ, এখন তো তুই বড় হচ্ছিস। আমাদেরও তো সংসার চালাতে হয়। প্রতিদিন মাংস খাওয়া যায় নাকি?” তাঁর গলার স্বরে একটা তীক্ষ্ণতা ছিল, যেন আমি কোনো অপরাধ করে ফেলেছি। আমার বুকের মধ্যে যেন কেউ ছুরি চালিয়ে দিল। আমি চুপ করে মাথা নিচু করে ডাল-ভাত খেয়ে উঠে গেলাম। সেই রাতে বিছানায় শুয়ে আমি কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। কাকীমার এই ব্যবহার শুধু একদিনের ছিল না। তিনি প্রায়ই আমাকে ইঙ্গিতে বোঝাতেন যে আমি তাদের উপর বোঝা। একবার আমার জুতো ছিঁড়ে গিয়েছিল, আমি কাকাকে বলেছিলাম নতুন জুতো কিনে দেওয়ার জন্য। কাকীমা পাশ থেকে শুনে বললেন, “আকাশ, তুই কি ভাবিস, আমাদের কাছে টাকার গাছ আছে? তোর কাকার তো দোকানে এমনিতেই লোকসান হচ্ছে।” আমি কিছু বলতে পারিনি, শুধু মাথা নিচু করে চলে গিয়েছিলাম। কাকা আমাকে চুপি চুপি একটা জুতো কিনে দিয়েছিলেন, কিন্তু কাকীমার কথাগুলো আমার মনে গেঁথে গিয়েছিল। আমি বুঝতে পেরেছিলাম, আমি এই বাড়িতে অতিথি, কোনো স্থায়ী জায়গা আমার এখানে নেই। রিমার সঙ্গে আমার সম্পর্কও ধীরে ধীরে বদলে গেল। ছোটবেলায় যে রিমা আমার পিছু পিছু ঘুরত, আমার শার্ট ধরে টানত, সে এখন একটু বড় হয়েছে। তখন তার বয়স নয়-দশ বছর হবে। সে আর আগের মতো আমার সঙ্গে দুষ্টুমি করত না। আমি যখন তাকে কিছু বলতে যেতাম, সে লাজুক হাসি দিয়ে চুপ করে থাকত। একবার আমি তাকে বললাম, “রিমা, চল, উঠোনে গিয়ে লুকোচুরি খেলি।” সে শুধু মাথা নেড়ে বলল, “না, আকাশ দা, আমার পড়া আছে।” তার চোখে একটা দূরত্ব ছিল, যেন সে আমাকে এড়িয়ে চলছে। আমি বুঝতে পারিনি, এটা তার লজ্জা, না কাকীমার প্রভাব। কাকীমা মাঝে মাঝে রিমাকে বলতেন, “তুই আকাশের সঙ্গে বেশি মিশিস না, ও এখন বড় হয়েছে।” এই কথাগুলো আমার কানে এসে পৌঁছাত, আর আমার মনে হতো, আমি এই বাড়িতে একা হয়ে যাচ্ছি। রিমার এই দূরে সরে যাওয়া আমাকে আরও একা করে দিল। একদিন বিকেলে আমি উঠোনে বসে ছিলাম, রিমা পড়ার টেবিলে বসে ছিল। আমি তাকে ডেকে বললাম, “রিমা, একটু বাইরে আয় না, আম গাছের নিচে বসি।” সে আমার দিকে তাকিয়ে শুধু একটা হাসি দিল, কিন্তু উঠল না। তার চোখে একটা অদ্ভুত ভাব ছিল, যেন সে আমার সঙ্গে কথা বলতে চায়, কিন্তু কিছু তাকে আটকে রাখছে। আমি আর জোর করলাম না। সেই থেকে আমাদের মধ্যে কথা কমতে কমতে বন্ধই হয়ে গেল। আমি বুঝতে পারলাম, রিমাও আমাকে এড়িয়ে চলছে, হয়তো কাকীমার কথায়, নয়তো তার নিজের লজ্জায়। কাকার বাড়িতে থাকতে থাকতে আমার মনে হতো, আমি এখানে একটা অতিরিক্ত লোক। কাকীমার ব্যবহার আমাকে প্রতিদিন মনে করিয়ে দিত যে আমি তাদের উপর বোঝা। কাকা আমার জন্য যত্ন করতেন, কিন্তু তিনি দোকান নিয়ে এতো ব্যস্ত থাকতেন যে আমার সঙ্গে বেশি সময় কাটাতে পারতেন না। আমি কলেজে যেতাম, পড়াশোনা করতাম, কিন্তু বাড়িতে ফিরে এলে যেন একটা অদৃশ্য দেয়ালের মধ্যে বন্দি হয়ে যেতাম। কাকীমা আমার দিকে তাকালে আমি মাথা নিচু করে ফেলতাম। রিমার সঙ্গে আমার কথা হতো না, আর আমি ধীরে ধীরে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলাম। একদিন আমি ঠিক করলাম, আমি আর এখানে থাকব না। আমার পড়াশোনার জন্য বাবা-মায়ের বাড়ির ভাড়ার টাকা আসত, আর আমি একটা ছোট্ট চাকরির জন্য আবেদন করেছিলাম। কলেজ শেষ হওয়ার পর আমি কলকাতায় চলে আসার সিদ্ধান্ত নিলাম। কাকাকে বললাম, “কাকা, আমি এখন নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই।” কাকা একটু দুঃখ পেলেন, কিন্তু বললেন, “ঠিক আছে, আকাশ, তুই যা ভালো বুঝিস।” কাকীমা কিছু বললেন না, শুধু মাথা নাড়লেন। আমি বুঝলাম, তিনি হয়তো খুশিই হয়েছেন যে আমি চলে যাচ্ছি। রিমা আমার দিকে তাকিয়ে ছিল, তার চোখে একটা কথা ছিল, কিন্তু সে মুখে কিছু বলল না। আমি আমার ব্যাগ গুছিয়ে অজানার  উদ্দেশে রওনা দিলাম, আর পিছনে ফেলে এলাম সেই বাড়ি, যেখানে আমার ছোটবেলার স্মৃতি ছিল। শহরে  এসে আমি কাকাদের কথা ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করলাম। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেল। আমি আমার নতুন জীবনে মন দিলাম, কিন্তু মনের কোণে কাকীমার সেই কথাগুলো আর রিমার লাজুক হাসি বারবার মনে পড়ত। আমি ভাবতাম, হয়তো একদিন আবার আমাদের দেখা হবে, কিন্তু তখনো জানতাম না যে সেই দেখা আমার জীবনকে কীভাবে বদলে দেবে।
Parent