কিছু সম্পর্ক - অধ্যায় ৪

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-69727-post-5999856.html#pid5999856

🕰️ Posted on July 31, 2025 by ✍️ gungchill (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1306 words / 6 min read

Parent
কিছু সম্পর্কঃ  ২   বাড়িতে জয়  আর জান্নাত কেউ ছিলো না , তবে শিকদার পরিবারেকে  স্বগত জানানোয়  কোনরকমে কমতি হলো না । জয়নাল আর আয়শা বাড়ির গেটের সামনে দাড়িয়ে ছিলো । রাজীব অটো থেকে নেমেই ওদের দুজন কে পা ছুয়ে সালাম করলো। আয়শা আর জয়নাল দুজনেই রাজীব কে জড়িয়ে ধরে আদর করলো ।   রানী রাজীবের পেছনেই দাড়িয়ে ছিলো , রানীর পালা এলে ও আর পা ছুয়ে সালাম করার সময় পেলো না , আয়শা ওকে বুকে জড়িয়ে ধরলো । কাঁপা গলায় বলল , “ মারে এই দের বছরে তুই কত বড় হয়ে গেছিস, একদম তোর মায়ের মত লাগছে” বান্ধবির কথা মনে হতেই আয়শার চোখে পানি চলে এলো । বেশ কিছুক্ষন জড়িয়ে ধরে রাখলো রানীকে , তারপর কপালে চুমু খেলো ।   আরে এবার তো ছারো আমাদের মহারানীকে , আমিও একটু দেখি “ জয়নাল পেছন থেকে হাসতে হসাতে বলল”   কিন্তু ওর স্ত্রী তাতে কর্ণ পাত করলো না , বলল “ তুমি পরে দেখো , আমি আগে আমার বুক জুরাই”   এদিকে রহিম শিকদার ব্যাগ পত্তর নিয়ে পেছনে এসে দারিয়েছে , হাসি মুখে বলল “ ছেলে মেয়ে পেয়ে এই বন্ধুকে ভুলে গেলে”   “ তুই না এলেই পারতিস” হাসতে হসাতে জয়নাল এগিয়ে গিয়ে রহিমের হাত থেকে একটা ব্যাগ নিজের হাতে নেয় । তারপর সবাই মিলে ঘরের ভেতর যায় । সুধু রহিম ঘরের ভেতর যাওয়ার সময় পাশের খালি বাড়ির দিকে একবার চেয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে । *****      বিকেল বেলা রানী আয়শার সাথে রান্না ঘরে রাতের খাবারের প্রস্তুতি নিচ্ছে । রানী পেঁয়াজ কেটে দিচ্ছে । আয়শা রানীর পেঁয়াজ কাটা দেখে বেশ ইম্প্রেসড হয়ে জিজ্ঞাস করলো , “ বাহ মা, তুই তো ভালো কাজ শিখে গেছিস , কিভাবে?” “ আমি আর ভাইয়া মিলেই তো খাবার বানাই বাসায়, ভাইয়ার কাছে শিখেছি” রানী পেঁয়াজ কাটতে কাটতে বলল   আয়শার মনটা ভারি হয়ে এলো , কিন্তু মুখে হাসি রেখেই রানীর মাথায় হাত বুলিয়ে বলল “ মা আমার বড় হয়ে গেছিস”   এমন সময়   জান্নাত ফিরে এলে , বাড়ির পরিবেশ দেখেই বুঝতে পারে কে এসেছে । ঘরের ভেতর ঢুকেই চেঁচিয়ে রানীকে ডাকতে শুরু করে , “ কই গো আমাদের মহারানী , আপনার সেবায় দাসী হাজির”    “ ঐযে এসেছে , নিজেকে দাসী বলছে আর কাজ করে সম্রাজ্ঞীর মত , যা মা দেখা কর নইলে বাড়ি মাথায় তুলবে , কিন্তু ভুলেও রান্না ঘরের দিকে আসবে না , এই পথ সে চেনে না”  আয়শা রাগের সাথে বলল ,   রানী রান্না ঘর থেকে বেড়িয়ে এসে  টিভিতে দেখানো সিরিয়ালে রানীদের মত কমোরে দু হাত রেখে গলা টান  করে বলল   বলল “ কে এই বেয়াদপ  এতো এতো উচ্চস্বরে চেঁচাচ্ছে ?”   “ দাড়া বেয়াদপ কাকে বলে তোকে শেখাচ্ছি ” এই বলে দৌরে এলো জান্নাত , একে অপর কে জড়িয়ে ধরে দুটো চক্কর খেলো,  তারপর দুই বান্ধবি হাসতে হসাতে জান্নাতের ঘরে চলে গেলো ।     এর কিছুক্ষন পর জয়ের  এন্ট্রি হলো , কেজুয়াল ড্রেস পরা , জিন্স আর  টিশার্ট , কিন্তু হাঁটাচলায় হিরোদের এলিগেন্স ।জয়   জানে না যে আজ কে এসেছে , রাজীব ইচ্ছা করেই বলেনি । এবং ফোনে বড় আম্মু আর বড় আব্বুকে বলে দিয়েছে যেন জয়  কে না জানানো হয় ।   ঘরে ঢুকে সুস্বাদু রান্নার সুগন্ধ পেয়ে , হল ঘর থেকেই চেঁচিয়ে ওর মা কে ডাকল “ আম্মু ,আম্মু , এই আম্মু” কিন্তু আয়শা কোন উত্তর দেয় না দেখে আরো জোরে চেঁচিয়ে ডাকল “মাম্মি………”   আয়শা ইচ্ছে করেই এতক্ষণ উত্তর দেয়নি , কিন্তু উত্তর না দিলে রক্ষা নেই এটা ওর জানা আছে , তাই চেচিয়েই উত্তর দিলো         “ তোমরা দুই ভাই বোন কি রান্না ঘরের রাস্তা চেনো না , দূর থেকে চেঁচিয়ে তোমাদের উত্তর দিতে হবে” বেশ রাগের সাথেই বলল আয়শা ,  ছেলে মেয়ে দুটোর এই অভ্যাসে বেশ বিরক্ত ও বাড়িতে ঢুকেই চেচানো শুরু করবে ।     কিন্তু আয়শার রাগান্বিত স্বরের কোন মূল্য জয়ের  কাছে নেই , ও আবারো চেঁচিয়ে উঠলো বলল “ আজকে  বাড়িতে এতো রান্নার সুগন্ধ আসছে কেউ আসবে নাকি, জান্নাত কে দেখতে আসবে নাকি পাত্র পক্ষ” শেষের কথা গুলো জান্নাত কে ক্ষেপানোর জন্য বলল।   আর এতে কাজ ও হলো , জান্নাত আর রানী জান্নাতের ঘর থেকে বেড়িয়ে এল । পুরো এগ্রেসিভ মুডে জান্নাত , দোতলার রেলিং ধরে নিচে হল রুমের দিকে তাকিয়ে বলল “ এই উল্লুক , তোর মনের আশা এতো সহজে পূর্ণ হবে না , আমি এই বাড়ি ছেড়ে এতো জলদি কোথাও জাচ্ছি না , আমার বিয়ের পর হ্যাজবেন্ড নিয়েও এইখানে থাকবো”   জয়  উত্তর দেয়ার জন্য উপরে তাকিয়ে কিছু বলতে যাচ্ছিলো , কিন্তু ওর কথা মুখের ভেতরেই আটকে যায় , জান্নাতের সাথে একটা মেয়ে দাড়িয়ে আছে , নাহ সাধারন কোন মেয়ে নয় , মেয়েটিকে অনিন্দ্য সুন্দরি বললে ভুল হবে না । একবার তাকালে সহজে চোখ ফিরিয়ে নেয়া যায় না  । টানা টানা চোখ দুটোতে রাজ্যের সকল রহস্য এসে  আশ্রয় নিয়েছে ।   বেশ কয়েক সেকেন্ড চুপ থাকার পর জয়  জিজ্ঞাস করলো “ এটা কে রে ?” তারপর হঠাত করেই চিনতে পারলো বলল “ আমাদের রানী না? ওরে বাপ তোকে তো চেনাই জায়না ,একদম বড় হয়ে গেছিস , একেবারে ইয়ং লেডি লাগছে ” স্বভাব মত  চুটল ভঙ্গিতে জিজ্ঞাস করলো জয় ।   বেশ লজ্জা পেলো রানী , গলার ওড়নায় হাত চলে গেলো অটোমেটিক , না এতে জয়ের  দৃষ্টির কোন  দোষ নেই । কিছুক্ষন আগে জান্নাত আর ওর কথোপকথনের টপিক ছিলো ওর শরীরের বিশেষ একটা অঙ্গ বড় হওয়া নিয়ে । তাই জয়  যখন  “বড়” শব্দটা বলল তখন ওর হাত অটো রিফ্লেক্স দেখিয়ে ওই কাজটা করলো । সেই সাথে গাল দুটো হালকা লাল হয়ে গেলো , তার উপরে এসে ভর করলো রাজ্যের লজ্জা , যদি কেউ ওর ব্লাশিং করা দেখে ফেলে ।  জয়ের চোখেও ব্যাপারটা এড়ালো না , হালকা বিব্রত বোধ করে জয় রানীর উপর থেকে চোখ সরিয়ে নিলো ।   এদিকে জান্নাত রেগে মেগে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলো , কিন্তু জয়  ওকে থামিয়ে দিলো , নিজে নিজেই বলতে লাগলো “ রানী এসেছে , এর মানে রাজীব ও এসেছে” হিসেব মিলে যেতেই রাজীব রাজীব বলে বাড়ি মাথায় তুলতে লাগলো ,   আয়শা আর টিকতে না পেরে রান্না ঘর থেকে চেঁচিয়ে বলল “ ও ছাদে রে মুখপোড়া”   “থ্যাংকইউ মাম্মি” এই বলে জয়  হাওয়ায় স্যালুট দেয়ার একটা ভঙ্গি করলো তারপর সিঁড়ি ভেঙ্গে ছাদের দিকে চলল , তবে যাওয়ার সময় ঘুরে একবার রানীর দিকে তাকিয়ে গেলো , কয়েক পলক এর  জন্য দুজনের চোখ এক হলো , একটা আজব অনুভূতি অনুভুত হলো জয়ের  , যে অনুভুতির সাথে ও ঠিক পরিচিত না ।   এদিকে রানীর গাল দুটো আরো এক শেড লাল হয়ে উঠলো , মনে মনে ভাবল …… কি আজব মানুষ !!!   এদিকে জান্নাত ব্যাকগ্রাউন্ডে  চেঁচিয়ে কিছু বলছে , কিন্তু দুজনের একজন ও সেই কথা শুনছে না ।     ছাদে উঠতে উঠতে অবশ্য জয়ের  মন থেকে সেই আজব অনুভূতি গায়েব হয়ে গেলো । কারন রাজীব তখন ওদের ছাদ থেকে নিজের মায়ের কবরের দিকে তাকিয়ে আছে। বন্ধুকে এমন ভাবে মায়ের কবরের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে জয়ের মনটাও সিক্ত হয়ে উঠলো, ছোট বেলার কথা মনে পরে গেলো । এই রাজীব আর সেই রাজীবের মাঝে বিস্তর তফাৎ । তখন রাজীব ছিলো দুষ্টের শিরোমণি আর প্রচণ্ড জেদি । এমন জেদি যে ওর জেদের কাছে জয় কেও হার মানতে হতো । কিন্তু ওর মা মারা যাওয়ার পর আমুলে পরিবর্তন হয়ে গেলো ছেলেটি । এর পর তো এখান থেকে চলেই গেলো । কিন্তু এর পর যখনি আসতো জয় চেষ্টা করতো পুরনো রাজীব কে ফিরিয়ে আনতে । কিন্তু বার বার ব্যারথ হয় জয় ।   রাগ হতো জয়ের , ভাবতো রাজীব একদম স্বার্থপর একটা ছেলে । হ্যা মা চলে গেছে দুনিয়া থেকে , কিন্তু তাতে কি? ওর ভাই তো আছে । ভাইয়ের জন্যও না হয় একটু আনন্দ ফুর্তি কর । কিন্তু ধিরে ধিরে  অভ্যস্ত হয়ে গেছে জয় , প্রতিজ্ঞা করেছে , রাজীব যেমনি থাকুক সব সময় ওর ভাই ওর বন্ধু সবচেয়ের কাছের মানুষ হয়েই থাকবে ।     স্থির হলো জয়  ধিরে ধিরে হেটে রাজীবের পেছনে এসে দাঁড়ালো । একটা হাত রাখলো বন্ধুর পিঠে , বন্ধুর হাতের স্পর্শ পেয়ে ঘুরে দাঁড়ালো রাজীব ।   “ ছোট আম্মু এখানে একা নেই ভাই , আমরা সব সময় আছি  পাশে”   রাজীব মুখে কিছু বলল না সুধু জয়ের  কাধে একটা হাত রেখে চাপ দিলো । মুখটা ভার হয়ে আছে রাজীবের , কিন্তু জয় এই মুখ ভার বেসিক্ষন স্থাই হতে দিতে চায় না , রাজীবের মন খারাপ ও বেসিক্ষন সহ্য করতে পারে না ।  জয়  বলল “ উহু ভাই আজকে তো মুখ ভার করে রাখলে হবে না , আজকে পার্টি , তোকে পেয়ে মনে হচ্ছে আজকেই রেজাল্ট পেলাম, এখন পার্টি না করলে মন ভরবে না” ***** 
Parent