কোন কূলে যে ভীড়লো তরী/কামদেব - অধ্যায় ৩২

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-22369-post-1670683.html#pid1670683

🕰️ Posted on February 29, 2020 by ✍️ kumdev (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1410 words / 6 min read

Parent
                      [একত্রিশ]              সকালবেলা দাওয়ায় বসে বীরেন মিস্ত্রি উবু হয়ে বসে বিড়ি টানছে।মদন আর ফটকে দরকারী যন্ত্রপাতি গুছিয়ে থলেতে ভরছে।ফ্লাটের কাজ ধরেছে অনেকদিন চলবে।বীরেন আগে ফ্লাটের কাজ করতো না মজুরী কম।বাজারের যা অবস্থা ফ্লাটের কাজে সুবিধে একটা ধরলে কদিন নিশ্চিন্ত।বিড়িতে শেষ টান দিয়ে বীরেন বলল,মদনা এখন কামাই করবি না, কাজের খুব চাপ।তারপর কি ভেবে বলল,তুই নাকি বিয়ে করছিস? --কে বলল? --ফটকে তোর বাড়ীতে গেছিল তোর মা বলল তুই দিদির বাড়ী গেছিলি ঐ জন্য? দিদি দত্তপুকুরে থাকে অনেকদিন ধরে বলছিল একটা মেয়ের কথা। দিদির বাড়ী যাচ্ছি বলে বেরিয়েছিল মা হয়তো তাই ঐরকম ভেবে নিয়েছে। মদন বলল,মার কথা ছাড়ো তো ওস্তাদ। ভিতর থেকে সবিতা বলল,চা হয়ে গেচে। --যাতো মদনা চা নিয়ে আয়। মদন ভিতরে যেতে সবিতা জিজ্ঞেস করলো,ঠাউর-পো তুমি বিয়ে করতেছো? --তোমাকে কে বলল? --তোমার ওস্তাদ তোমাকে বলছিল শুনলাম।সবিতার মুখ গম্ভীর। --দিদি নাকি একটা মেয়ে পছন্দ করেছে।মাও এমন পিছনে লেগে আছে।মদন বলল। সবিতা একটা থালায় তিন কাপ চা আর তিনটে লেড়ো বিস্কুট তুলে দিয়ে বলল, বৌদিকে ভুলে যাবে? --তুমি কি যে বলোনা,তোমায় ভুলে যাবো? সবিতা দরজার দিকে তাকিয়ে চকাম করে মদনকে চুমু খেলো। --অ বউ আমারে চা দেও নি তো? --দিতাছি আমি কি বইয়া রইছি?সবিতা জবাব দেয়। শাশুড়িকে চা দিয়ে সবিতা কাজে বেরিয়ে পড়ে। মদনার বিয়ে হবে ভেবে মনটা খারাপ হয়ে যায়। বউ নিয়ে ঘর সংসার করবে চিরকাল কি আইবুড়ো হয়ে থাকবে নাকি? সবিতা জানলেও কেন জানি বুকের মধ্যে একটা চিনচিনে ব্যথা অনুভব করে। হুশ করে করে সামনে দিয়ে একটা ট্যাক্সি চলে গেল।মনে হল ডাক্তারবাবুর ছেলে বসেছিল ট্যাক্সিতে।সবিতা পালবাড়ীতে কাজ সেরে বৌদির বাড়ী গেল।ঘুম থেকে বেলায় ওঠে,বৌদি বলেছে আগে পালবাড়ীর কাজ আগে সেরে নিতে।বাসন মেজে ঘর ঝাট দিতে দিতে বলল, জানো বৌদি বুনের জন্য সঞ্জুর বিয়ে হচ্ছে না। --কেন সঞ্জুর বিয়ে দিতে অসুবিধে কোথায়?শুনেছি ভাল চকরি করে। --তা না আগে মেয়ের বিয়ে হবে তারপর ছেলে। --মেয়ের তো কোথায় বিয়ে ঠিক হয়ে আছে তাহলে বিয়ে দিচ্ছে না কেন? --ছেলের বাড়ী থেকে খালি ঘুরায়,বলে আজ না কাল।তোমারে বলিনি ডাক্তারের ব্যাটা কোথায় গেছিল আজ ফিরলো। --তুই কি করে জানলি? --দেখলাম টেক্সি করে ফিরলো। --বক বক না করে কাজ কর।ঝাট দিয়ে দু-কাপ চা করতো। চা করা তার কাজ নয়।সবিতাকে ভালভাবে বললে কোনো কাজেই আপত্তি নেই। বৌদির চায়ে ভারী সুন্দর ঘ্রাণ চায়ের সঙ্গে যে বিস্কুট দেয় খুব দামী।সবিতা নিজে না খেয়ে লুকিয়ে পুটির জন্য নিয়ে যায়। বৌদির কাছে ধরা পড়ে গিয়ে আসল কথাটা বলতে বৌদি আরো দুটো বিস্কুট বেশি দিয়েছিল।ল্যাংটো সিনেমা দেখলেও বৌদির মনটা খুব ভাল।সবিতা চা করতে চলে গেল। মৌপিয়া আনমানা হয়,পল্টু তাহলে ফিরে এসেছে?কতদিন দেখেনি ওকে।ওর কি বৌদিকে মনে পড়ে না?মৌপিয়ার মনে ভেসে ওঠে পল্টুর মুখটা কেমন সরল নিষ্পাপ চোখের চাউনি।ক্লান্ত হয়ে ফিরেছে আজ মনে হয় বেরোবে না,বিশ্রাম করবে। ট্যাক্সির ভাড়া মিটিয়ে উপরে উঠে গেল পল্টু। দরজার আড়াল থেকে মামী লুকিয়ে দেখছিল।অদ্ভুত লাগে অমন লুকিয়ে চুরিয়ে দেখার কি আছে? মনোরমা ছেলেকে দেখে জিজ্ঞেস করলো,গাড়ী কি দেরী করেছে?মিতা বসে বসে এইমাত্র চলে গেল। --কেমন আছো মম? --ছেলে বাইরে থাকলে একা একা মা যেমন থাকে।যা স্নান করে আয়। আমি ভাত দিচ্ছি। খাওয়া দাওয়ার পর মমের সঙ্গে শোয় পল্টূ।সন্ধ্যের আগে বেগমের সঙ্গে দেখা হবে না।অনেক কথা জমে আছে।প্রথম কদিন ফোন ধরছিল না বেজেই যাচ্ছে।খুব রাগ হয়েছিল।তারপর কলেজে ফোন করে পাওয়া গেল।ফোনে বেশি কথা বলা যায় না,সামনা সামনি জিজ্ঞেস করবে,কেন ফোন ধরেনি? পরিবর্তনের কারণ কি?মমের হাত এসে পড়ল বুকের উপর।পল্টু জিজ্ঞেস করে, কি ভাবছো মম? একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে মনোরমা বলল,আমি না থাকলে তোর কি হবে?তুই বড় একা,তোর দেবমামার উপর ভরসা করেছিলাম কিন্তু--সংসার বড় স্বার্থপর। --দেবমামা কিছু করেছে? --করেনি করতে কতক্ষণ?ও বুঝতে পারছে না বাপের চরিত্রের প্রভাব সুকুমার মতি মেয়েদুটোর উপর পড়বে। পল্টূ পাশ ফিরে জিজ্ঞেস করে,এসব কি বলছো আমি কিছুই বুঝতে পারছি না? --আমার বয়স হয়েছে আজ আছি কাল নেই। পল্টূ মমকে জড়িয়ে ধরে ধরা গলায় বলে,মম কেন তুমি এসব বলছো? আমার ভাল লাগে না। --তোর বাপিও খুব কষ্ট করেছে সারা জীবন।পার্বতী  পাশে না দাড়ালে কোথায় ভেসে যেতো অনু। পার্বতী? পল্টূ বুঝতে পারে না ঐ ভদ্র মহিলার কথা আসছে কেন? মমকে জড়ীয়ে ধরে বলল,আমি তোমাকে যেতে দেবো না,এইভাবে ধরে রাখবো।দেখি কে তোমাকে আমার কাছ থকে নিয়ে যায়। মনোরমা হাসল একেবারে ছেলে মানুষ সেই জন্যই তো ভয় হয়।চারদিকে এত চক্রান্ত প্রলোভনের জাল ছড়ানো সেসব কে এড়িয়ে কি ভাবে টিকে থাকবে এই ছেলে? --ছোড়দা তুমার চা। মিতামাসীর ডাকে পল্টু উঠে বসে।সন্ধ্যে হয়ে গেছে।হেসে জিজ্ঞেস করলো, মাসী কেমন আছো? --আর কেমন যা সব হচ্ছে----।মনোরমার সঙ্গে চোখচুখি হতে মিতামাসী কথা শেষ করে না। --কি হচ্ছে?পল্টু হেসে জিজ্ঞেস করে। --কি হচ্ছে না তুমি বলো?মিতামাসী পাল্টা প্রশ্ন করে। --তুই যা খাবার কর।মনোরমা বলল। লুচি আলুভাজা ভেজে একটু পরেই মিতামাসী হাজির।পল্টূ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে,এর মধ্যে রুটি হয়ে গেল? --তুমি আসবে বলে আমি সকালেই ময়দা মেখে রেখে গেছিলাম।দেরী হচ্ছে দেখে ভাবলাম আর বুঝি আসলে না। জল খাবার খেয়ে পল্টু বেরোবার জন্য তৈরী হয়।মনোরমা জিজ্ঞেস করল,তুই কি বেরোচ্ছিস? --হ্যা একবার ঘুরে আসি কতদিন সবার সঙ্গে দেখা হয় না। --তোকে জিজ্ঞেস করিনি তুই বললি ভর্তি হয়ে আসতে তোর দেরী হয়েছে।টাকা পেলি কোথায়? পল্টূ ভাবলো পরে খুলে বলবে এখন বলতে গেলে আবার নানা প্রশ্ন আসবে।বলল,তুমি দিয়েছিলে ওতেই হয়ে গেল। সেই জন্য রেজাল্ট বেরনো পর্যন্ত অপেক্ষা করছিলাম। সঞ্জুদের বাড়ী পেরিয়ে কিছুটা এগোতে দেখল উটো দিক থেকে একজন মহিলা আসছেন।তাকে পেরিয়ে দু-পা এগোতে কানে এল,ডাক্তার বাবু না? পল্টূ ঘুরে দাঁড়িয়ে ভাল করে দেখে কত বড় হয়ে গেছে নীরা। --কি পল্টুদা চিনতে পারছো না? --কতবড় হয়ে গেছো আমি চিনতেই পারিনি। --হি-হি-হি।ছোট তো হওয়া যায় না।কবে এলে? --আজই এলাম।কাকু কাকীমা কেমন আছেন? সঞ্জু কি ফিরেছে অফিস থেকে? --এতগুলো প্রশ্ন একবারে কোনটার উত্তর দেবো?আচ্ছা পল্টূদা তুমি তো ডাক্তার? --কেন বিশ্বাস হচ্ছে না? নীরা মনে মনে ভাবে কথাটা কিভাবে বলবে?পল্টূদা যদি কিছু ভেবে বসে?আদৌ বলা ঠিক হবে কিনা?অবশ্য পল্টূদা যা বোকা ওসব বুঝবে না। পল্টূ জিজ্ঞেস করলো,কি ভাবছো? --তেমন কিছু না।জানো একটা মজার ব্যাপার হয়েছে।একদিন আমার এক বন্ধুর সঙ্গে খুব তর্ক করেছি--অবশ্য আন্দাজেই করেছি। --বুঝলাম না মজার ব্যাপার কি হল? নীরা চারদিকে চোখ বুলিয়ে গলা নামিয়ে বলল,জাষ্ট কৌতুহল তুমি কাউক বোলনা। পল্টূদা প্রেগন্যাণ্ট কি না কি করে বোঝা যায়? --নিশ্চিত হবার জন্য নানা রকম পরীক্ষা আছে। --তা বলছি না মানে সাধারণভাবে একটী মেয়ে কি করে বুঝবে সে প্রেগন্যাণ্ট কি না? সন্ধ্যে হয়ে গেছে নির্জনে একা একা একটি মেয়ের সঙ্গে এইসব কথা বলতে ভাল লাগছিল না।পল্টু বলল,নীরা তোমাকে কিছু বলতে হবে না সেই মেয়েটী নিজেই বুঝবে।একটা সহজ উপায় আছে ইউরিন টেষ্ট করলে ধরা পড়বে প্রকৃত প্রেগন্যাণ্ট কিনা?অনেক সময় অন্য কারণে প্রেগন্যাণ্ট বলে ভুল হতে পারে।এবার একটা বিয়ে করে ফেলো।পল্টু হাসলো। --হি-হি-হি প্রেগন্যাণ্ট হবার জন্য? পল্টু বলল,আসি একটূ কাজ আছে। নীরার মনে এই সব চিন্তা কেন এল?মনে হল ও সব কথা খুলে বলেনি।বরুণের সঙ্গে বিয়ে হবার কথা শুনেছিল। বরুণের দিদির বিয়ে হয়ে গেছে এখন তো আর বাধা নেই।প্রান্তিকের কাছে এসে উপরে তাকিয়ে দেখল কেউ নেই বারান্দায়।সোজা তিনতলায় ঊঠে এল।দরজা বাইরে থেকে বন্ধ,কি ব্যাপার বেগম সাহেবা এখনো ফেরেনি?কিন্তু ও তো জানতো তার দেব আজ ফিরছে।অভিমান হয়,রাস্তায় এসে যে পথ দিয়ে বেগমসাহেবার ফেরার কথা সেই পথ ধরে হাটতে থাকে। কিছুটা এগোতে দিলীপের সঙ্গে দেখা। --কি বস কবে ফিরলি? পল্টূ দেখলো ঝামেলা এখনই,বেগম সাহেবার আসার কথা ওর সঙ্গে বেশি কথা বলা যাবে না,কাটাবার জন্য বলল,আজ ফিরেছি।তুই ভাল আছিস তো? --আর ভালো?এদিকে যা কিচাইন হয়ে গেল।তুই তো ছিলি না। পল্টু বিরক্ত হয় কে শুনতে চায় কিচাইনের কথা।দিলীপ থামে না বলে যায়,একা মহিলা পেয়ে মিস অঞ্জনা ম্যাডামের সঙ্গে যা ব্যবহার করলো। --অঞ্জনা ম্যাডাম?পল্টুর মন টান টান। --একদিন সবাই দল বেধে--তোর মামাও ছিল ম্যাডামের ক্যারাকটার নিয়ে যা না তাই।বলে কিনা ভদ্রলোকের পাড়া এখানে ওসব চলবে না তারপর * মুসলিম নানা কথা। --ম্যাডাম কি বললো? --উনি শিক্ষিতা মহিলা ছোটলোকদের সঙ্গে পারবে কেন?বললেন " কদিন সময় দিন আমি চলে যাবো।" --চলে গেছে? --তারপর দিনই চলে গেলেন। মালপত্তর সব রয়েছে পরে নিয়ে যাবেন।বোকাচোদা রমেন কাকুও এসেছিল শালা লায়লির মাকে নিয়ে পড়ে থাকে।ভদ্রতা মারানো হচ্ছে? ফোন বেজে চলেছে কেউ ধরছে না কেন পল্টূ বুঝতে পারে।কিন্তু বেগম সাহেবা এতকাণ্ড হয়েছে কিছু বলেনি তো? --আমার মামাও ওদের সঙ্গে ছিল? দিলীপ একটূ ইতস্তত করে তারপর বলে ,আমাকে ভুল বুঝিস না বস তোমার মামাই আমার মনে হল জগা উকিলের সঙ্গে জোট পাকিয়ে সব করেছে। লক্ষণদাকেও টুপি পরিয়ে সামিল করেছে। পল্টূ বলল,চল কোথাও গিয়ে একটূ চা খাই। রাস্তার ধারে একটা দোকানে চায়ের ফরমাস করল।চা-অলা দু-ভাঁড় চা এগিয়ে দিয়ে বলল,এই নিন ডাক্তারবাবু। পল্টু নীরবে চায়ে চুমুক দিতে থাকে।একসময় দিলিপ বলে,শুনেছি নাকি মাসীমার সঙ্গেও তোর মামা ভাল ব্যবহার করে না। --তোর মা কেমন আছেন?পল্টূ প্রসঙ্গ বদালাবার চেষ্টা করে। --আর বলিস না মা আবার আগের মত চাঙ্গা হয়ে আমার পিছনে লেগে আছে। পল্টু হেসে বলল,তুই তো বি এ পাস করেছিস? --করেছি বলেই চাকরি-চাকরি করে কানের পোকা বের করে ছাড়লো।তোর কথা খুব বলে মার ধারণা তুই আমাকে বদলে দিয়েছিস।একদিন আয় না? --তুই আর বদলালি কোথায়?অকারণ মুখ খারাপ করিস কেন? যা বললি খিস্তি না করেও বলা যেত। --বস তোকে যত দেখছি অবাক লাগছে। দিলীপ অবাক হয়ে বলে। মিতা মাসী বলতে গিয়েও বলেনি। মম কেন নিজেকে একা মনে করছে।মামী কেন দরজার আড়াল থেকে লুকিয়ে তাকে দেখছিল।একে একে সব জলের মত পরিস্কার হয়ে যায়।বেগম সাহেবা কোথায় আছে? নিশ্চয়ই কলেজে যায়,কাল কলেজ যেতে হবে। --দিল্লী গেলি খবর কি? --আবার যেতে হবে,চান্স পেয়েছি।মাকে একটু দেখিস। --সে তোকে বলতে হবে না।দিলীপ আশ্বস্থ করে।
Parent