কোন কূলে যে ভীড়লো তরী/কামদেব - অধ্যায় ৮

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-22369-post-1645027.html#pid1645027

🕰️ Posted on February 23, 2020 by ✍️ kumdev (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1262 words / 6 min read

Parent
    [৮]            স্কুলের সেশন শুরু হয়ে গেছে। বাইওলজি নিয়ে পল্টু উচ্চ মাধ্যমিক পড়ছে।সঞ্জয় বিজ্ঞান বিভাগে সুযোগ না পেয়ে অন্য স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েছে।পাড়াগত সম্পর্কে দুজনের বন্ধুত্বে ছেদ পড়েনি। তবে বাড়ীতে না গেলে পরস্পর খুব একটা দেখা  হয়না। বাপির কথাটা ঘুরে  ফিরে  মনে আসে  ডাক্তারিতে  ভর্তি হলে সার্টিফিকেট  মিললেও ডাক্তার হওয়া যায় না।আর একটা কথা একই স্কুলে একই শিক্ষকের কাছে পড়ে সকলেই একই ফল করে না। স্কুলে পারমিতা যেচে আলাপ করলেও পল্টুর মনে তেমন দাগ কাটতে পারেনি। নীরার ব্যবহার মেয়েদের প্রতি মনোভাব বদলে দিয়েছে। ড.অনলদেব সোম কদিন বিশ্রামের পর বেরোতে শুরু করেছেন।রোগী দেখা শেষ হলে মিসেস রাও এসে বললেন,স্যার এক ভদ্রমহিলা বসে আছেন। --কেন? --এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট ছিল না।মিসেস রাও ইতস্তত করে বললেন। --আচ্ছা পারু আমাকে দেখে কিছু বুঝতে পারছো? মিসেস রাও এ ধরণের প্রশ্নের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না।বুক কেপে উঠল।এত বছর ওর আণ্ডারে কাজ করছেন অনেক কথা হয় কিন্তু ব্যক্তিগত কোনো বিষয় নিয়ে কখনো কথা হয়েছে বলে মনে পড়ে না।আজ স্যারের মুড একটু অন্য রকম। অনেক দিন পর তাকে পারু বলে ডাকলেন।তবু নিজেকে সংযত করে বলল,স্যার আপনি ড্রিঙ্ক ছেড়ে দিয়ে ভালই করেছেন। ড.সোম হাসলেন,মনুর কথা মনে পড়ল।কি করছে একা একা কে জানে।তারপর মিসেস রাওয়ের দিকে তাকিয়ে কি ভেবে বললেন,কে বসে আছে বললেন,দিন পাঠিয়ে দিন। মিসেস রাও ভদ্রমহিলাকে নিয়ে টেবিলে শুইয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,আপনার নাম? --মিস খাদিজা আক্তার অঞ্জনা। --বয়স? --থার্টি ফাইভ প্লাস। মিসেস রাও ওজন প্রেশার নিয়ে অপেক্ষা করেন।ড.সোম পাশের ঘর থেকে এসে রোগী পরীক্ষা করতে করতে জিজ্ঞেস করলেন,কি সমস্যা? --ফিলিং আন ইজি স্যার। ড.সোম মাটির দিকে তাকিয়ে কি ভাবলেন।তারপর জিজ্ঞেস করলেন,ম্যারেড? --ডিভোর্সি স্যার। ড.সোম নিজের চেম্বারে ফিরে গিয়ে মিসেস রাওকে বললেন,ওকে পাঠিয়ে দিন। ড.সোম চেয়ারে বসে পেপারওয়েট নিয়ে নাড়াচাড়া করছেন,এমন সময় বেশবাস ঠিক করে মিস অঞ্জনা প্রবেশ করতে ড.সোম বললেন,বসুন। মিস অঞ্জনা চেয়ারে বসতে ড সোম বললেন,আপনাকে একটু ব্যক্তিগত প্রশ্ন করতে পারি? মিসেস রাও একটু অবাক,স্যারকে আগে কারো সঙ্গে এভাবে কথা বলতে শোনেন নি। ব্যক্তিগত প্রশ্ন বলতে তিনি অন্য ঘরে চলে গেলেন। মিস অঞ্জনা বললেন,নো প্রবলেম স্যার। --আপনি হার্ট স্পেশালিষ্টকে দেখাবার কথা কেন ভাবলেন? --বুক ধড়ফড় করে তাই ভাবলাম মানে...। --যদিও আমার বিষয় নয় তবু বলছি,শরীরের সঙ্গে মনের একটা গভীর সম্পর্ক থাকে।অনেক সময় মনের সমস্যা শারীরিক সমস্যা বলে আমাদের মনে হতে পারে।আপনার হার্টের কোন সমস্যা দেখলাম না। --স্যার আমি আপনার পাড়ায় থাকি। ড.সোম মৃদু হাসলেন। --স্যার হাসছেন? --এর সঙ্গে রোগের কোনো সম্পর্ক নেই।কিছু মনে না করলে একটা কথা জিজ্ঞেস করছি। মিস অঞ্জনার মনে হল ভদ্রলোক রুঢ়ভাষী।তবু কি জিজ্ঞেস করেন তার জন্য কান খাড়া করে থাকেন। --আপনার ডিভোর্স হয়েছে কতদিন? --আট-ন বছরের উপর। --বুঝলাম না,মানে? মিস অঞ্জনা মনে হিসেব করে বললেন,ন বছর দশ মাস। --ইউ লুক ভেরি ইয়াং,আবার বিয়ে করে ফেলুন।হ্যাপি রিলেশন অনেক সময় খুব ভাল কাজ দেয়।আফটার অল আমরা মানুষ জন্তু জানোয়ারের কথা আলাদা। নিঃসঙ্গতা মানুষের অনেক রোগের কারণ।গুড নাইট। মিস অঞ্জনা ইঙ্গিতটা বুঝতে পেরে উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,ওষুধ দেবেন না? --বাইরে অপেক্ষা করুণ,মিসে রাও ডাকবেন।ড.সোম ঘুমের ওষুধ প্রেসক্রিপশন করে দিলেন। দাদা এসেছে শুনে মনোরমা নীচে নেমে এলেন। বসার ঘরে সোফায় হেলান দিয়ে একটা ম্যাগাজিনের পাতা ওল্টাচ্ছেন দেবব্রত।মনোরমা ঢুকে জিজ্ঞেস করেন, কেমন আছো? সোজা হয়ে বসে দেবব্রত বললেন,বোস মনো। মনোরমা সামনে বসে ভাবছেন আজ আবার কি উদ্দেশ্যে দাদার আগমন।অনু থাকলে আসে না,এই ব্যাপারটা ভাল লাগে না। অনু তো কখনো তাকে অসম্মান করে নি,তবে কি আজেবাজে গল্প রাজনীতি অনুর পছন্দ নয়। দেবব্রত বললেন,তোর বৌদি এখন ভাল আছে।আমার খুব চিন্তা ছিল ড.সেনের নাম তো কম নয়। অনল বলল,পেস মেকারের দরকার নেই।খুব চিন্তায় পড়ে গেছিলাম। হাতে টাকা পয়সা নেই কি করবো?যা থাকে কপালে ভাবলাম দরকার নেই ওইসব পেসমেকার ফেকারের--হা-হা-হা। মনোরমার এইসব আলোচনা ভাল লাগছিল না,জিজ্ঞেস করলেন,তোমাকে চা দিয়েছে? --হ্যা-হ্যা তুই ব্যস্ত হোস না তোদের ঝি-টা এদিক দিয়ে খুব ভাল,চা দিয়েছে অমলেট করে দিয়েছে। মনোরমা তাকিয়ে দেখলেন কাছাকাছি মিতা আছে কিনা? --তবে কি জানিস মনো,একটা ব্যাপার খুব খারাপ লেগেছে।দেবব্রত বললেন। --কি ব্যাপার দাদা? --অনল আমার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। মনোরমা হাসি চেপে বললেন,ও কারো কাছ থেকে নিজে হাত পেতে টাকা নেয় না।কেবল রোগী দেখে।কত নিয়েছে? --নিজে না নিলেও ঐ তো পাবে। একবারই দেখিয়েছি--দুশো টাকা। --আচ্ছা তুমি বোসো,আমি আসছি। --আমার একটু তাড়া আছে বেশিক্ষণ বসবো না। মনোরমা উপরে গিয়ে শ-তিনেক টাকা নিয়ে নেমে এলেন।দাদার হাতে দিয়ে বললেন, কোনো অসুবিধে হলে তুমি আমাকে বোলো। দেবব্রত টাকা হাতে নিয়ে বললেন,এতো তিনশো? --ঠিক আছে হাসি-খুশিকে বোলো পিসি মিষ্টি খেতে দিয়েছে।দাদা ওদের এখন কোন ক্লাস? --নাইন,সামনের বছর টেন হবে।দুজনের এত মিল মাঝে মাঝে তোর বৌদিরও ভুল হয় কোনটা হাসি আর কোনটা খুশি।হা-হা-হা। একরাশ হাসি ছড়িয়ে দেবব্রত বিদায় নিতে মনোরমা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন। দেখতে দেখতে সময় পেরিয়ে যায়।আবার পিকনিকের কথা চলছে,পল্টূর এবছর যাবার ইচ্ছে নেই। পল্টূ এখন বারো ক্লাসে পড়ে।স্কুল ছুটির পর পল্টূ হন হন করে বাড়ীর দিকে চলেছে।মনে হল পিছ থেকে  কে যেন পল্টুদা -পল্টূদা বলে ডাকছে।পিছন ফিরে দেখল লায়লি ছুটতে ছূটতে আসছে।কি ব্যাপার মনে হল লায়লির থেকে কিছুটা দূরে কে যেন গলির ভিতর ঢুকে গেল।কাছে এসে লায়লি বলল,পল্টুদা আমাকে একটু এগিয়ে দেবে? লায়লিদের ফ্লাট পেরিয়ে আমাকে যেতে হয়। কিন্তু লায়লিকে দেখে কেমন সন্তস্ত্র মনে হল জিজ্ঞেস করলাম,তুমি ছুটছিলে কেন? লায়লি একটু দম নিয়ে বলল,জানো প্রতি দিন স্কুল থেকে ফেরার পথে বিরক্ত করে। --কে বিরক্ত করে? --ঐ গুণ্ডাটা।শালা ফেল করেও লজ্জা নেই--হারামী। কি বিশ্রী মুখ লায়লির,মেয়েদের মুখে এই সব শব্দ শুনতে ভাল লাগে না। পাড়ার মেয়ে কিছু বলতে পারি না। --কিন্তু এভাবে কতদিন তুমি পালাবে,গুণ্ডাটাকে তুমি চেনো? --দিলীপ,শীলা আণ্টির ছেলে।এবার ওর মাকে বলতে হবে। দিলীপ উচ্চ মাধ্যিমিক পরীক্ষা দিয়েছিল,পাস করতে পারে নি।ওর বাবা নিরীহ মানুষ কিন্তু বউয়ের কথায় চলেন।দিলীপকে দেখেছিল বরুণদের বাগানে লায়লির সঙ্গে অসভ্য করতে চেষ্টা করছিল।সারাক্ষণ দুজনে একসাথে ছিল পিকনিকের দিন। এখন গুণ্ডা হয়ে গেল? ওর বাড়ীর কাছে পৌছে বললাম,তোমার মাকে সব খুলে বলো। --থ্যাঙ্ক ইউ পল্টুদা।লায়লি ফিক করে হেসে চলে গেল। কিবা বয়স বড় জোর কুড়ি-একুশ হবে।এর মধ্যেই ছেলে সঙ্গ পাবার জন্য এত আকুলতা।দিলীপ শুনেছি ইদানীং মাঝে মাঝে নেশা করে। দোতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে সঞ্জয়। চোখাচুখি হতে জিজ্ঞেস করলাম,স্কুলে যাসনি? --এই ফিরলাম।আসবি? অনেকদিন ওদের বাসায় যাইনি।এখন না গেলে ভাববে আমি ওকে এড়িয়ে যাচ্ছি। রাঙা পিসি আমাকে দেখে এমন করে ভয় হয় জানাজানি হলে কি বিশ্রী ব্যাপার হবে। উপরে উঠতে নীরা জিজ্ঞেস করলো, কি ব্যাপার পল্টুদা পথ ভুলে নাকি? নীরা বাড়িতে আছে জানতাম না।একটা সময় ছিল নীরার মুখ দেখলে মন ভরে যেত, এখন আর তেমন হয় না।শুষ্ক হাসি হেসে বললাম,সঞ্জয় ডাকল তাই। --ও না ডাকলে বুঝি আসা যায় না? মনে মনে ভাবি কি জন্য আসবো তোমার মুখে পাকা পাকা কথা শোনার জন্য আসবো? পছন্দ মত বেছে নিয়েছে তবে কেন আমার পিছনে লেগে আছে বুঝতে পারছি না বললাম,না ডাকলে গেলে খেলো হয়ে যেতে হয়। --মোটেও না,এ তোমার কমপ্লেক্স।যাক বাদ দাও,পারমিতা তোমাদের স্কুলে ভর্তি হয়েছে তাইনা? --কে পারমিতা? -আমাদের স্কুলের বেষ্ট গার্ল। --ও হ্যা মেয়েটা ভারী ন্যাকা,ব্যাঙ কাটতে গিয়ে এমন করছিল যেন কোনোদিন ব্যাঙ দেখেনি।অত যদি ভয় তাহলে বাইওলজি পড়তে এলি কেন? --তোদের ব্যাঙ কাটা শুরু হয়ে গেছে?সঞ্জয় জিজ্ঞেস করলো। --হ্যা টুয়েলভ ক্লাসে শুরু হল। নীরা চুপি চুপি কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল,কেমন দেখতে বলো?পল্টুদা লেগে যাও। এতক্ষণে ফুলটস বল পেয়েছি ব্যাট তুলে হাকড়াবার মত বললাম,স্কুলে পড়তে গিয়েছি, প্রেম করতে নয়। নীরা চুপ করে গেল,আমি সঞ্জয়কে জিজ্ঞেস করলাম,কাকীমা নেই?কাকীমাকে দেখছি না। --কে মা? মা রাঙা পিসিকে স্নান করাচ্ছে।নীরা তুই চা কর না। --এখন স্নান?অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম। --স্নান মানে গামছা ভিজিয়ে গা হাত পা স্পঞ্জ করে দিচ্ছে।আয় আমরা ঐ ঘরে বসি। সঞ্জয় হাসতে হাসতে জিজ্ঞেস করে,ব্যাঙ-এর জনন তন্ত্র দেখেছিস? কিছু বললাম না,ওর সেই বাগানে পোদ উচিয়ে থাকা দৃশ্যটা মনে পড়ে গেল। মানুষের জনন তন্ত্রের ছবি দেখেছি,ছবিতে ভাল বোঝা যায় না। নীরা চা নিয়ে ঢূকলো।প্রসঙ্গ বদলাতে আমি বললাম,রাস্তায় লায়লির সঙ্গে দেখা হল,দিলীপকে গাল মন্দ করছিল। --ওদের তো কেটে গেছে।নীরা হেসে বলল। আমি নীরাকে দেখলাম,কেটে যাওয়া জোড়া লাগা কত সহজে উচ্চার করে এরা। চায়ে চুমুক দিয়ে বললাম, আরো কত মারামারি কাটাকাটি হবে কে জানে। নীরা খিল খিল করে হেসে উঠল বলল,পল্টুদাটা এমন কথা বলে না--। --দিলীপটা দিন দিন কেমন হয়ে যাচ্ছে।সঞ্জয় বলল। আমি কোনো উত্তর দিলাম না।দিলীপ আমার খুব কাছের বন্ধু ছিল।ইদানীং কেমন দূরে সরে যাচ্ছে।ওর জন্য খুব খারাপ লাগে।মানুষ কিভাবে বদলে যায় ভাবি।দিলীপ আমাকে বেশ সমীহ করে।কেন যে লায়লির পিছনে লেগে আছে বুঝি না।জোরজার করে কি প্রেম  হয়?এটা ঠিক রূপ ঐশ্বর্য বয়স প্রেমে বাধা হতে পারেনা কিন্তু  পরস্পরের প্রতি সমীহের ভাব থাকতে হবে তো।
Parent