মায়া - আমরা সবাই বাঁধা যেখানে (সমাপ্ত) - অধ্যায় ৬

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-46310-post-4757370.html#pid4757370

🕰️ Posted on April 9, 2022 by ✍️ nextpage (Profile)

🏷️ Tags:
📖 795 words / 4 min read

Parent
পর্ব- ছয় কাঁধ টা ভার শূন্য লাগছে,  দুটো হাত নিলয়কে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরেছে। পিঠের কিছুটা জায়গা ভিজে গেল ওর চোখের জলে। না নিলয় আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে না। মুখ থেকে অস্পষ্ট ভাবে বেরিয়ে আসে -দোলন। ওর ফোঁপানো শব্দটা এবার কানে লাগছে। কি করছিস ধাম এবার। হাতের জোড় টুকু ছাড়িয়ে ঘুরে দাড়ায় নিলয়। দোলনের মুখোমুখি দাড়াতেই আবার জড়িয়ে ধরে ওকে। -দোলন কি করছিস, ছাড় আমাকে। রাস্তায় এভাবে কেউ জড়িয়ে ধরে? মানুষ জন দেখছে তো নাকি৷ কথা শোন আমার। -ছাড়বো না। কেন তর কথা শুনবো বল, তুই কি আমার কোন কথা শুনিস? যদি শুনতি -আচ্ছা বাবা, এখন থেকে শুনবো এবার তো ছাড়। দেখ কত মানুষ চেয়ে রয়েছে।  এবার দোলন বাহুডোর আলগা করে দেয়। স্বাভাবিক হয়ে দাড়ায়। মায়াভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে নিলয়ের দিকে। -তুই আগের মতই আছিস। শুধু মুখটা কেমন কালো হয়ে গেছে। আর একটু শুকিয়ে গেছিস। -তা হয়তো হবে। চল কোথাও গিয়ে বসি। এখানে এভাবে দাঁড়িয়ে কথা বলবি নাকি। সামনেই টাউন হল মোড়ে একটা কফিসপ আছে চল ওখানে যাই। হাঁটতে হাঁটতে কফিসপের দিকে এগোতে থাকে ওরা। নিলয়ের হাতটা ছাড়ে না দোলন, যেন সর্বশক্তি দিয়ে ধরে রেখেছে ও। কফি সপের ভিতরে একটা কর্নার টেবিলে বসে ওরা দুজনে। নিলয় ডেস্কে গিয়ে দুটো স্যান্ডউইচ আর কফির অর্ডার করে আবার টেবিলে ফিরে আসে। সপের সাউন্ড সিস্টেমে গান চলছে। -তা এখানে কবে এসেছিস রে দোলন। -এসেছি মাস দুয়েক হলো। বোনকে কলেজে ভর্তি করালাম এখানে।  -তা এখানে কোথায় আছিস? -দূর্গাবাড়ির ওখানে ৮ তলা নতুন বিল্ডিং টা সেটার ৪ তলায় একটা ইউনিট ভাড়া নিয়েছি। ওখানেই আছি। একদিন যাবি আমার ওখানে। -তা দেখা যাবে।  আড় চোখে দোলন কে দেখতে থাকে। শরীরে অন্যরকম উত্তেজনা। ওর চোখে ধরা পড়ে যাবার ভয়। সপের সাউন্ড বক্সে চন্দ্রবিন্দুর একটা গান বাজছে। গানগুলো ছোটবেলার ভাললাগা, নষ্টালজিয়া। মন বিভোর করে দেয়।  ফিকে হয়ে আসা অন্ধকার প্লাটফর্মে ধোঁয়া ওঠা চায়ের ভাঁড় জানলার কাঁচটাতে লেগে থাকা শূন্যতা সশব্দে ছুটে চলে ট্রেন। ফেলে আসা মুখগুলো ভোরবেলায় লুকোচুরি আর চোর চোর খেলায়  কুয়োতলা মুখোমুখি জড়তার বাঁধা ঠেলে আমাকে কি কিছু বলছেন ? বলতে পারিনি তার যেটুকু যা ভাষা ছিল কেঁপে ওঠা চোখের পাতায় তারপর ভোরবেলা ডিঙিয়েছি চৌকাঠ, ভয়ানক সতর্কতায় এভাবেও ফিরে আসা যায়, এভাবেও ফিরে আসা যায়। খুনসুটি গানহাসি মেয়ের দল ভাল লেগে গেল এই মফস্বল বিকেলের রোদ ছিল আর অনুরোধ ছিল আরেকটা বাউল শোনান। চোখ বন্ধ করে গানটাতে ডুবে যায় নিলয়। দোতলা থেকে নেমে সোজা হল ঘরে ঢোকে যায় নিলয়। ওদিকে দোতলার বারান্দায় এখনো দাড়িয়ে আছে দোলন।  -ধ্যাত ঐ পাগলের আজ কি হল কে জানে। এমন করলো ও। আমার কথাটাও ঠিকমত শোনলো না। না দেখে আসি আবার কোথায় গেল। নিচতলায় নেমে চোখ ঘুরিয়ে নিলয় কে খুঁজে। না ওকে দেখতে পায় না। বারান্দা ধরে এগিয়ে যায়। সামনে যাকে পাচ্ছে জিজ্ঞেস করে নিলয়ের ব্যাপারে। একজন বলে ওকে হল ঘরের দিকে যেতে দেখেছে। দোলন ও ছুটে যায় হল ঘরের দিকে। হল ঘরে পৌঁছে ডাক দেয় -নীলু, নীলু এই নীলু। কই তুই? না কোন সাড়াশব্দ নেই। আরও ভেতরের দিকে যেতে যেতে শেষের দিকের একটা চেয়ারে নিলয় কে দেখতে পায়। ওর সামনে গিয়ে দাঁড়ায় দোলন। -কিরে তোকে যে আমি ডাকছি শোনতে পাচ্ছিস না। -কোন কথা না বলে মাথা নিচু করে বসে থাকে নিলয়। -কানে বয়ড়া হয়েছে কি শুনতে পাচ্ছিস না। বলেই নিলয়ের পিঠে চিমটি কাটে। -ব্যাথায় কুঁকড়ে উঠে নিলয়। মেরে ফেলবি নাকিরে। এখানে এসেছিস কেন? একা থাকতে দে। -সাধে এসেছি নাকি? এতবার পিছন থেকে ডাকলাম, একবার দাঁড়ালি না কেন?? -কেন ডেকেছিলি, এখন বলে ফেল।  - কি হয়েছে তোর বল তো। আজ হঠাৎ এসব বললি যে -এমনি, ভুল হয়ে গেছে। আর বলবো না। - কেন বলবি না? তুই তো বলিস আমি তোর বেষ্ট ফ্রেন্ড। আমি তো সবসময় তকে ভালবাসি৷ তাকা আমার দিকে। নিলয় ওর দিকে তাকায়। রাগে মুখ লাল হয়ে আছে দোলনের। রাগান্বিত মুখটা দেখে হাসি খেলে যায় ওর হৃদয়ে। -উফ তোকে যা লাগছে না। তর গাল দুটো পুরো লাল হয়ে গেছে। -(মেকি রাগ দেখিয়ে)ভাল হয়েছে। থাকা তুই, আমি গেলাম। -তুই কোথায় যাবি? বস এখানে। একটা ভুল করে ফেলেছি। ক্ষমা করে দে প্লিজ। এই যে কান ধরলাম। -হয়েছে হয়েছে আর ভাব ধরতে হবে না। মাফ করে দিয়েছি। -তাহলে একটা পাপ্পি দে। -ওরে শয়তান ছেলে আজ তকে মেরেই ফেলবো।বলেই জড়িয়ে ধরে নিলয়কে। নিলয়ও জড়িয়ে ধরে দোলন কে। নিলয় অনুভব করতে পারে দোলনের শ্বাসপ্রশ্বাস। ওর নরম শরীরের রক্ত চলাচল। দোলনের শিমুল তুলোর মত নরম বুক দুটি লেপ্টে যায় ওর বুকের সাথে। চুলের গন্ধ এসে নাকে লাগে। রক্ত প্রবাহ বেড়ে যায়। মাথায় কাম পোকা গুলো নড়াচড়া বাড়াতে থাকে। হাত নিসপিস করে উঠে দোলনের শরীরে চড়ে বেড়াবার । নিলয়ের ঠোঁট দুটো ইচ্ছে করে চুমো খেতে ওর ঘাড়ে, উষ্ণ ঠোঁটের ছোঁয়ায় আদর করতে ওর কানের লতিতে, লাল হয়ে যাওয়া নরম গালে। কিন্তু ও নিজেকে সংযত করে।  কারণ দোলন ওকে সরল বিশ্বাসে জড়িয়ে ধরেছে,সেখানে কোন কাম ভাবনা নেই, কামনার উষ্ণতা নেই। যা আছে সেটা প্রগাঢ় বন্ধুত্বের ভালবাসা বন্ধুত্বের অধিকারে। নিলয় ছোট্ট করে চুমো খায় দোলনের কপালে। সাথে সাথে ওকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। কাঁধে আবার ধাক্কা লাগছে। কিরে কি ভাবছিস তখন থেকে কফি টা তো ঠান্ডা হয়ে গেল। নিলয় তাকিয়ে থাকে দোলনের মুখে দিকে। সেই আগের মতই মায়া ভরা মুখ, সেই হাসি।
Parent