মিষ্টি মূহুর্ত ( উপন্যাস) সমাপ্ত :--- - অধ্যায় ৩৩

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-38709-post-4102937.html#pid4102937

🕰️ Posted on December 13, 2021 by ✍️ Bichitro (Profile)

🏷️ Tags:
📖 2286 words / 10 min read

Parent
Update 4 “ বাহ্ ভালো খবর। এখন কত বয়স গোধূলির ? „ কম বয়সে ছেলের বিয়ে দেওয়াটা এখনও ঠিক মেনে নিতে পারেননি তিনি। তার উপর একটা সামান্য কুষ্ঠির কথা মেনে এইসব করাটাকে কুসংস্কার বলে। তবুও ভালো যে নাবালকের বিয়ে দিতে হচ্ছে না। এতকিছুর মধ্যে এটাই একটু শান্তি দিচ্ছে। এখন যদি গোধূলি নাবালিকা হয় তাহলে তো তাকে বেঁকে বসতেই হবে। সঞ্জয় একটু ভেবে নিয়ে বললো , “ এখন একুশ চলছে আর কয়েক মাস পর বাইশে পড়বে। কেন জিজ্ঞাসা করছেন জানতে পারি কি ! „ গোধূলি নাবালিকা নয় শুনে একটা ভার বুক থেকে নেমে গেল । একটা বড়ো নিশ্বাস ফেলে বললেন , “ তুমি জানো আকাশের তেইশ বছর হলেই তোমার বৌদি ওর বিয়ে দেবে। কালকেই ও গোধূলির কথা জিজ্ঞাসা করছিল..... সঞ্জয় চোখ বড়ো বড়ো করে জিজ্ঞাসা করলো , “ মানে বৌদিও রাজি এই সম্পর্কে ? „ আকাশের মায়ের জিজ্ঞাসাটাই তিনি সঞ্জয়ের কাছে বললেন , “ বিদেশে থেকে বড়ো হয়েছে। কোন বদ অভ্যাস , মানে নেশা পার্টি এমন কিছু ..... মুখের সামনে থেকে মাছি তাড়াচ্ছে এমন ভাবে মুখের সামনে দিয়ে হাত নাড়িয়ে সঞ্জয় বললো , “ আরে না , না , আমার মেয়েকে দেখলেই বুঝবেন। ওর এইসব বদ অভ্যাস নেই । „ সঞ্জয়ের হাবভাব দেখে হেসে নিয়ে আকাশের বাবা জিজ্ঞাসা করলেন, “ তোমার স্ত্রী চারুলতা রাজি ? মেয়ের এত কম বয়সে বিয়ে দেওয়া নিয়ে ? „ আকাশের বাবার হাসিকে পাত্তা না দিয়ে সঞ্জয় বললো , “ না , ওর কোন অসুবিধা নেই। পাত্র ভালো হলেই সাত খুন মাফ ওর কাছে । „ মাথাটা সামনে পিছনে একবার নাড়িয়ে আকাশের বাবা বললেন , “ বুঝেছি । „ দুই দিন পর মাস শেষ হয়ে গেলে সুচির অনেক দিনের একটা স্বপ্ন পূরণ করার সময় হয়ে এল। সুচি বেতন হাতে পেয়েই কৌশিককে নিয়ে গিয়ে শোরুম থেকে হলুদ রঙের Honda activa কিনে নিল। এক সপ্তাহ পরেই সঞ্জয় তার মেয়েকে নিয়ে অফিসে ঢুকলো। আকাশ প্রথম দেখায় চিনতেই পারলো না গোধূলিকে। সঞ্জয় সবার সাথে তার মেয়ের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় আকাশ চেয়ারে বসে গোধূলিকে দেখতে লাগলো। একটা লাল রঙের ফুল গাউন পড়ে আছে। উচ্চতা 5'3" - 5'4" হবে। ঘন কালো চুল পনিটেল করা। গাল দুটো এখন আগের থেকে বেশিই লাল। চোখ দুটো পাহাড়িদের মত অতোটা সরু নয় তাই এই ফর্সা লাল টমেটোর মতো মুখে ওই চোখ দুটো মুখের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। যৌবনের ছাপ গাউনের উপর ফুটে আছে আর সেটা অফিসের ইয়ং ছেলেদের আড় চোখে তাকানোর কারন হচ্ছে। অফিসে ঢুকে সঞ্জয়কে দেখে সবাই উঠে দাঁড়ালেও আকাশ উঠে দাড়ায়নি তাই গোধূলির দৃষ্টি মাঝেমাঝেই আকাশের উপর চলে যেতে লাগলো । আকাশকে এক কোনায় একটাচেয়ারে বসে থাকতে দেখে গোধূলি  মনে করলো অর্থাভাবে জর্জরিত কোন দুঃখী পরিবারের সন্তান যে এই অফিসের পিওনের কাজ করছে। অফিসের বাকি সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পর যখন সঞ্জয় গোধূলিকে নিয়ে আকাশের কাছে এলো তখন গোধূলি যে অবাক হয়েছে সেটা তার চোখে মুখে ফুটে উঠলো। সঞ্জয় মেয়েকে বললো  , “ চিনতে পারছিস ? „ বাবার কথা শুনে গোধূলি বুঝতে পারলো যে সে আকাশকে আগে দেখেছে কিন্তু এখন চিনতে পারছেন না , তাই মাথা দুই দিকে নাড়িয়ে সে বললো , “ না ! „ সঞ্জয় একটু হেসে বললো , “ আকাশ । চিনতে পারলি না ! „ গোধূলি আর সঞ্জয় যখন আকাশের কাছে এগিয়ে এসছিল তখনই আকাশ উঠে দাড়িয়ে ছিল। এখন হাত তুলে মুখে হাসি নিয়ে সে বললো , “ Hi „ আকাশের নাম শোনার পর আকাশকে চিনতে না পারার জন্য গোধূলির মুখে লজ্জা ফুটে উঠলো , “ তুমিই আকাশ ! আমি তো চিনতেই পারি নি । এখানে বসে কেন ? „ আকাশের এখন আর লজ্জা লাগে না বলতে তাই সে অকপটে সত্য কথাটাই বলে দিল , “ আমি এখানে পিওনের কাজ করছি । „ পিওনের কাজ শুনেই গোধূলির ভুরু কুঁচকে গেল , গলায় বিস্ময় ঝড়ে পড়লো , “ মানে ! তুমি পিওনের কাজ ! বুঝতে পারছি না কিছু ! „ সঞ্জয় এদের কথা থামিয়ে বললো , “ তোমাদের কথা পরে অনেক হবে । আয় আগে তোকে আকাশের বাবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিই । „ আকাশ বললো , “ পরে কথা হবে । „ গোধূলিকে নিয়ে সঞ্জয় আকাশের বাবার কেবিনে ঢুকলে গোধূলি আকাশের বাবার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতে করতে জিজ্ঞাসা করলো , “ কেমন আছেন আংকেল ? „ “ আরে কি করছো কি তুমি ! পায়ে হাত দেয় নাকি কেউ ! আমি ভালো আছি । তুমি কেমন আছো ? „ “ আমিও ভালো আছি। বাইরে আকাশকে দেখলাম। বললো পিওনের কাজ করছে। বুঝলাম না ঠিক ! „ “ সে তুমি ওকেই জিজ্ঞাসা করো । „ তারপর সঞ্জয়ের দিকে ফিরে বললেন , “ অনেক বড়ো হয়ে গেছে চেনাই যাচ্ছে না। সেই ছোটবেলায় দেখেছিলাম। „ সঞ্জয় একটু হেসে নিয়ে মেয়েকে বললো , “ চল আমার কেবিনে । „ আকাশকে জিজ্ঞাসা করার পর আকাশের কাছ থেকে উত্তর শোনার আগেই বাবা তাকে ওখান থেকে নিয়ে চলে এসছে। এখন আবার আকাশের বাবাকে জিজ্ঞাসা করার পরেও তার বাবা তাকে এখান থেকে নিয়ে চলে যেতে চাইছে। নিশ্চয়ই কোন কারন আছে । না হলে বাবা এরকম করবে না । এটা ভেবেই গোধূলি সঞ্জয়ের পিছন পিছন আসতে আসতে আকাশের বাবার উদ্দেশ্যে বললো , “ আসছি আংকেল । „ আকাশের বাবা চেয়ারে বসতে বসতে বললেন , “ হ্যাঁ এসো । „ গৌধুলি আকাশের বাবার কেবিন থেকে বার হয়ে , বাবার পিছন পিছন গিয়ে বাবার কেবিনে ঢুকলো। চেয়ারে বসে সঞ্জয় জিজ্ঞাসা করলো , “ কেমন লাগলো অফিস ? „ “ এখানে এসে দারুণ লাগছে। কিন্তু আকাশের ব্যাপারটা বুঝলাম না । „ সঞ্জয় বিদ্রুপ করে বললো , “ ওকে এখন ওর বাবা পিওনের কাজে লাগিয়েছে। ভাব একবার ... নিজের ছেলেকে দিয়ে এইসব করাচ্ছে। জিজ্ঞাসা করেছিলাম , তখন বললো নাকি ছেলেকে নিজের হাতে গড়তে চান । „ বাবার কথা শুনে গোধূলির ভুরু আরও কুচকে গেল , “ এতে আকাশের কোন আপত্তি নেই ? মানে এতো বড়ো কোম্পানির ওয়ারিশ । সে নিজের কোম্পানিতে পিওনের কাজ করছে ! „ “ আপত্তি আছে কি না জানি না ।  হয়তো বাড়িতে কথা হয় এই নিয়ে । তুই ওকেই জিজ্ঞাসা করিস , তবে এখন না। টিফিন আওয়ারে কথা বলিস। এখন কাজ না করে গল্প করলে আকাশের বাবা আবার রেগে যায়। „ টিফিন আওয়ারে আকাশ বাবার সাথেই খাওয়া দাওয়া করে। আজকে সঞ্জয় সেটা হতে দিল না। আড়াইটে বাজতেই সে আকাশের বাবার কেবিনে ঢুকে আকাশের বাবাকে বললো , “ আজকে ওদের একসাথে খেতে দিন। একসাথে খেলে আলাপ করতে পারবে । এতে আমাদেরই সুবিধা । „ আকাশের বাবা হাসলেন কিন্তু কিছু বললেন না। আকাশ হাত ধুয়ে বাবার কেবিনে ঢুকলে তিনি তার টিফিন কৌটটা ছেলেকে দিয়ে বললেন , “ আজ তুই গোধূলির সাথে খেয়ে নে । আমার খিদে নেই । „ আকাশকে কিছু বলতে দেওয়ার আগেই সঞ্জয় বললো , “ তুমি আমার কেবিনে চলে যাও। ওখানেই গোধূলি আছে । „ আকাশ আর কিছু না বলে টিফিন কৌটটা নিয়ে চুপচাপ চলে এলো । সঞ্জয়ের কেবিনে ঢুকতেই গোধূলি জিজ্ঞাসা করলো , “ তুমি ! „ “ হ্যাঁ আমি। তোমার বাবা এখানে পাঠিয়ে দিলেন। বাবার মনে হয় কাকার সাথে কোন কাজ আছে । তাই এখানে এসে খেতে বললো । „ “ ও বসে পড়ো । „ বলে গোধূলি পাশের চেয়ারটা দেখিয়ে দিল। আকাশ সেখানে বসলে গোধূলি বললো , “ তোমাকে একটা কথা  জিজ্ঞাসা করছি । কিছু মনে করো না । জাস্ট কিউরিওসিটি বলতে পারো । আসলে না জিজ্ঞাসা করেও থাকতে পারছি না। „ আকাশ টিফিন কৌটটা খুলতে খুলতে বললো , “ আগে প্রশ্নটা তো শুনি । তারপর । „ “ তুমি এই কোম্পানির মালিক হয়ে , মানে ভবিষ্যতের মালিক হয়ে এই কাজ করছো ! ...... “ বুঝেছি । আসলে আমি একটু বেশি অহংকারী ছিলাম। টাকার অহংকার ছিল সেটা এখন বুঝতে পারি। মাসের শেষে নিজের হাতে যখন সাত হাজার টাকা পাই তখন বুঝি .... গোধূলির আরও অবাক হওয়ার বাকি ছিল। এখন আকাশ যে সাত হাজার বেতনে কাজ করে সেটা শুনে চোখ ঠিকরে বেরিয়ে এলো। ভুরু কপালে উঠে এলো , “ তুমি সাত হাজার বেতনে এখানে কাজ করো ! „ “ হ্যাঁ। তাই এখন কষ্টের উপার্জনটা বুঝি । „ গোধূলি আর কিছু বললো না। কিন্তু আকাশের কথা শুনে সে যে খুব ইমপ্রেস হয়েছে সেটা তার চোখে মুখে ফুটে উঠলো। এতক্ষণে আকাশের টিফিন কৌটটা খুলে গেছে। আর তাতে মাছ ভাত আছে সেটাও গোধূলি দেখে ফেলেছে , “ তুমি এটা টিফিন করবে ? „ “ আমি মাছে ভাতে বাঙালি। দুপুরে ভাত না হলে চলে না। „ তারপর গোধূলির টিফিনে নুডলস দেখে বললো , “ এটা তো একদমই চলবে না । „ অনেক্ষণ ধরে আকাশের মনে একটা প্রশ্ন বিঁধছিল এখন সেটা বলে ফেললো , “ তুমি ইংলিশ মিডিয়ামের মেয়ে । লন্ডনে পড়াশোনা করেছো । কিন্তু তুমি ইংলিশ বলোই না এখন। ছোটবেলায় তো খুব বলতে । „ গোধূলি রুমালে হাসি চেপে বললো , “ ছোটবেলায় ছিলাম ইংলিশ মিডিয়ামের ছাত্রী। তখন আলাদা কথা ছিল। লন্ডনে আমার মাসির মেয়ের সাথে একসাথে থাকতাম। ও বাংলা সাহিত্যের খুব বড়ো ভক্ত। বাংলা মিডিয়ামেই পড়তো বলে তখন কথা বলতাম না। ওখানে গিয়ে ওর সাথে থেকে বুঝতে পেরেছি কতো বড়ো ভুল করেছিলাম। এখন আমাকে বাংলা সাহিত্যের পোকা বলতে পারো । „ গোধূলির কথা শেষ হতেই দুজনেই হেসে উঠলো। দুই দিন পর অফিস আওয়ার শেষে সবাই চলে যেতে লাগলো কিন্তু আকাশের বাবা আর সঞ্জয় গেল না। কিছুক্ষণ পর একটা মিটিং হবে । বাইরের একটা কোম্পানির দুইজন লোক এখন কলকাতা শহরে এসে পৌছেছে। তাই মিটিংটা এখনই করতে হবে। গোধূলি আর আকাশের অফিসে থেকে কোন কাজ নেই তাই আকাশের বাবা বললেন , “ তোরা চলে যা ।  আমাদের মিটিং শেষ হতে হয়তো সময় লাগবে । „ গোধূলি বললো , “ আমি কিসে যাবো ? „ সঞ্জয় একটা ভালো সুযোগ পেয়ে গেল। সে বললো , “ আকাশ তোকে ড্রপ করে দেবে । তুই চলে যা । „ গোধূলিকে নিজের বাইকে ছেড়ে দিয়ে আসতে হবে শুনে আকাশ বিরক্ত হলো। সে বাবার দিকে তাকাতে শুভাশীষ বাবু একটা সম্মতি সূচক মাথা নেড়ে আকাশকে ছেড়ে আসতে বললেন। তারপর দুজনেই নিচে নেমে এলো। পার্কিং থেকে বাইকটা বার করতে গিয়ে আকাশ দেখলো সুচিও তার নতুন স্কুটি বার করছে। দুজনের চোখাচোখি হলো। আকাশ সুচিকে দেখে মাথা নিচু করে বাইকে উঠে স্টার্ট দিয়ে দিল। গোধূলি আকাশের পিছনে বসতেই আকাশ বাইক চালিয়ে দিল। এতদিনে সুচি গোধূলির পরিচয় পেয়ে গেছে। একসময় যার জন্য সে আকাশকে চড় মেরেছিল , যার উপর রেগে গিয়ে সঞ্জয়ের গাড়ির চাকার হাওয়া খুলে দিয়েছিল , সেই মেয়েই আজ সুচির বস। আকাশের বাইকে গোধূলিকে বসতে দেখে সুচি রাগে ফুসে উঠলো। আকাশের বাইকের ওই জায়গাটা তার যে নিজের। কেউ কিভাবে ওখানে বসতে পারে ! আর আকাশই ওকে বসতে দিচ্ছে এটা ভেবেই আকাশের উপর রাগ আরও বেড়ে গেল। পরক্ষণেই সুচি ভাবলো , ‘ না , এ আমি কি ভাবছি ! ওর বাইকে যেই বসুক। আমার কিছু যায় আসে না। , এদিকে বাইক রাস্তায় নামিয়ে আকাশ ভাবতে লাগলো , ‘ ইসসস , কি ভাবছে ও এখন ! মনে হয় রেগে আছে । , পুরো রাস্তা সাবধানে বাইক চালিয়ে গোধূলির দিক নির্দেশ মতো যখন আকাশে সল্টলেকে গোধূলির বাড়ির সামনে এসে থামলো তখন গোধূলি বাইক থেকে নেমে বললো , “ আমি ভেবেছিলাম তুমি সুযোগ বুঝে বারবার ব্রেক মারবে। „ কথাটা বলেই গোধূলি হেসে উঠলো গোধূলির কথা শুনে আকাশ অপ্রস্তুত হয়ে উঠলো। আকাশের  হাবভাব দেখে গোধূলি বললো , “ আরে ! তুমি তো সিরিয়াস হয়ে গেলে । আমি মজা করছিলাম । „ এবার আকাশের মুখে হাসি ফুটে উঠলো। গোধূলিকে bye বলে আকাশ বাড়ি চলে এলো। এর কয়েক দিন পর বাড়ি ফেরার সময় আকাশকে বিদায় জানিয়ে গোধূলি বাবার গাড়িতে উঠে বসলো সঞ্জয় গাড়ি চালিয়ে কিছুদূর গিয়ে বললো , “ কেমন লাগলো ওকে ? „ সঞ্জয় তার মেয়ের সাথে খুব ফ্রি। বন্ধু বলা যায়। ছোটবেলা থেকেই একজন বাবার থেকে একজন বন্ধু হিসেবেই মেয়ের সাথে মেশার চেষ্টা করেছে  সে। তাই প্রশ্নটা করে সঞ্জয় লাজুক হাসি হাসতে লাগলো। বাবার দুষ্টুমির হাসি দেখে গোধূলিও হেসে বললো , “ মানে ! „ মুখের হাসিটা বজায় রেখেই সঞ্জয় বললো , “ সত্যিটা বল না । „ কিছু না বোঝার ভান করে গোধূলি জিজ্ঞাসা করলো , “ কি বলবো ? „ “ ওকে কেমন লাগলো ? „ “ কাকে ? „ “ আকাশকে। „ “ ভালোই। হ্যান্ডসাম । ম্যাচিউর। সেন্স অফ হিউমার একটু কম । „ “ তাহলে কিছু খামতি আছে বলছিস ! „ “ তুমি এইসব জিজ্ঞাসা করছো কেন বলোতো বাপি ? „ “ আমার মেয়ের কাকে পছন্দ হলো সেটাই জিজ্ঞাসা করছি । „ “ তুমিও না বাপি ! „ “ ওকে যদি ভালো লাগে তাহলে প্রোপজ করে দে। মেয়ে হয়ে প্রোপজ করবি লজ্জা লাগবে নাকি ! „ “ কি সব বলছো তুমি ! „ “ ওর গার্লফ্রেন্ড আছে নাকি যে প্রোপজ করা যাবে না ...... দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে গোধূলি বললো , “ না নেই । „ “ তুই কি করে বুঝলি ? „ “ ওকে দেখে এমনিই বোঝা যায়। সারাদিনে আন্টি বার কয়েক ফোন করে আর কেউ ফোন করে না। কেউ মেসেজও করে না । মানে কেউ নেই । „ “ আমার মেয়ে ইন্টেলিজেন্ট বলতে হয় । „ “ এতে মেধাবীর কিছু নেই। মেয়েরা এটা বুঝতে পারে । „ “ তাহলে প্রোপজ করে দে। সামনে তো ভ্যালেন্টাইন ডে। প্রথমেই রোজ ডে। একটা গোলাপ কিনে প্রোপজ কর । কতদিন আর একা থাকবি ? „ “ তুমিও না বাপি। সবসময় ওইসব ! „ “ শোন। তোর বয়সে আমি তোর মায়ের সাথে চুটিয়ে প্রেম করেছি। লজ্জা কিসের ! „ গোধূলি আর কথা বাড়ানো না। দেখতে দেখতে রোজ ডে চলে এলো। গোধূলি বাবার কথা ভুলেই গেছিল। দুপুর গড়িয়ে বিকাল হতে যায়। ঠিক তখন সঞ্জয় একটা গোলাপ ফুলের তোড়া মেয়েকে দিয়ে বললো , “ এনে । „ গোধূলি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলো , “ কি এটা ? „ “ গোলাপ। আকাশকে প্রোপজ করার জন্য । „ গলায় বিস্ময় ঝড়িয়ে গোধূলি বললো , “ বাপি তুমি সত্যি চাও আমি ওর সাথে রিলেশনে যাই ? „ “ আমি চাই তুই সুখে থাক । আর আকাশ খুব ভালো ছেলে। এরকম ছেলে আর পাবি না। এনে ধর । „ গোধূলি বাবার কথায় উৎসাহ পেল। এমন নয় যে সে আকাশকে পছন্দ করে না। আকাশের মতো কিউট , হাল্কা ভোলা ছেলে , তার উপর লম্বা চওড়া তার খুব পছন্দ। আর এতদিনে বাবাকে এসিস্ট করতে গিয়ে , একই অফিসে আকাশের সাথে কাজ করে ছেলেটাকে পছন্দও হয়েছে তার। তাই বাবার উৎসাহে আর নিজের মনের গভীরে লুকিয়ে রাখা একটা ভালোলাগাকে বাস্তবায়ীত করতে সে ফুলের তোড়া থেকে একটা বড়ো সুন্দর গোলাপ ফুল তুলে নিল। তারপর অফিস ভর্তি এমপ্লয়ির চোখের সামনে দিয়ে আকাশের দিকে এগিয়ে গেল। ঠিক সেই সময় একটা ফাইল দিতে সুচিও উপরে উঠে এলো। ফাইলটা দিয়ে কিছুক্ষণ আকাশের দিকে তাকিয়ে থেকে চোখ দুটোকে জুড়িয়ে চলে যাওয়ার সময় দেখলো গোধূলি আকাশের দিকে এগিয়ে আসছে। গোধূলি এগিয়ে এসে অফিস ভর্তি কর্মচারীদের মধ্যে আকাশকে গোলাপ ফুল দিয়ে বললো , “ happy rose day । „
Parent