মন ১ - কাহিনীর নাম -সে আলোর স্বপ্ন নিয়ে ( সমাপ্ত) - অধ্যায় ১৭

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-44697-post-4631222.html#pid4631222

🕰️ Posted on January 15, 2022 by ✍️ nandanadasnandana (Profile)

🏷️ Tags:
📖 2362 words / 11 min read

Parent
                                                                           ষোল                            রাতে অপেক্ষা করছিলাম দুষ্টু টার জন্য। বলেছিলাম, ছোড়দি যেন জানতে না পারে। আমার ঘর টা একদম ধারে। মানে এটাই আমার আর ছোড়দির ঘর ছিল। সেই ছোট খাট এখন আর নেই। আমি একটা ডিভান কিনে এখানে রেখে দিয়ে গেছিলাম বছর তিনেক আগে যখন এসেছিলাম। আমি না থাকলেও মা রোজ এই ঘর টা পরিষ্কার করে। এসেই বুঝেছি। ধুপ ধুনো পরে। জানালা খুলে শুয়ে আছি আমি। আর হয়ত দিন দিন সাতেক পরেই পূর্নীমা। রাত হয়েছে আকাশে জ্যোৎস্না থই থই করছে। খুব ভালো লাগল আমার। দরজা খোলা রেখে বসে আছি। কি জানি আসতে পারবে কিনা। ভাই এর সাথে তো থাকে সব সময়ে। ভাই না ঘুমোলে আসতে পারবে না। কিন্তু আমার ঘুম আসছে না। ইচ্ছে করছে, এই বিছানায় এসে ও আমার সাথে বসুক। কথা নয় কোন, শুধু ওকে দেখি। নিঃশ্বাসের ঘ্রান নি। অনুভব করি ওর বুকের ধুকপুকুনি। অনেক রাতে এল। মনে হয় তখন একটা দেড়টা বাজবে। চুপি চুপি ঢুকল সে।    -     কি গো ঘুমোউ নি? আমি তো ভাবলাম তোমাকে জাগাতে হবে আমাকে ঘুম থেকে। কোন কথা বললাম না আমি। জানালার দিকে সরে গেলাম আরো, পাশের জায়গা টা ফাঁকা করে দিয়ে। ও টি সার্ট টা খুলে খালি গায়ে আমার পাশে এসে শুলো। হুম এই তো গন্ধ পাচ্ছি ওর। ও পছন্দ করল বলে, আমি শাড়ি টাও ছাড়িনি এখনো। সত্যি কত সাহস বেড়েছে আমার। বাড়ি ভর্তি লোক। আর আমি আর অর্জুন শুয়ে আছি এক বিছানায়। বললাম -     যাক তোর এই আশাও পূর্ন হয়ে গেল। যত বর বউ আছে আজকে এ বাড়িতে সবার মতন তুই ও এই ঘরে এসে শুলি এক বিছানায়। এসে আমার হাত টা ধরল ও। হাতে একটা চুমু খেয়ে বলল -     হুম। খুব ভালো লাগে আমার ও যখন কথায় কথায় আমার হাতে চুমু খায়। বড় ভালবাসা সেই চুমু তে। বললাম -     কি হলো? এতো বড় এচিভমেন্ট আর একটা হুম মাত্র। চুপ রইল অর্জুন। কিছু পরে বলল -     জানো? -     কি? -     যখন তুমি কালকে সবাই কে প্রণাম করলে, আমিও করলাম। বেশ তোমার বর বর ফিলিং আসছিল আমার। -     তা আর বুঝিনি? দুষ্টু। শুধু আমি কেন, তোর মনিও বুঝেছে -     বুঝুক গে। মনির জন্যেই তো আমরা ঠিক করে প্রেম করতে পারছি না। -     আহা, তোমার মতন মহাদেব কে না আটকালে এতো দিনে বাড়ি সুদ্ধু লোক জেনে যেত। -     যেত যেত। কি হতো? আমাদের তাড়িয়ে দিত। ভালো হত। আমরা চলে যেতাম। আলাদা থাকতাম -     কি বুদ্ধি। সবার আশীর্ব্বাদ না থাকলে সেই জীবন কি সুখের হয়? -     বাজে বোক না তো। কত ইন্টার রিলিজিয়ন বিয়ে হচ্ছে, ইন্টার কাস্ট বিয়ে হচ্ছে। সবাই কি আশীর্ব্বাদ পায় নাকি পরিবারের? -     বাবাহ, খুব কথা বলছিস আজকাল। -     হুম বলি না। বললে ঠিক ই বলি। আমি কথা ঘোরালাম -     ভাই ঘুমিয়েছে? -     তোমার ভাই হবু বউ এর সাথে ছাদে প্রেমালাপ করছে। -     তোমার ভাই কি? আজকে সন্ধ্যে তেও বললি। তোর মামা হয় না? -     বাল হয়। শালা হয় শালা এক কিল মারলাম ওর বুকে। কিন্তু রাগে নয়। একটা ভালো লাগায়। কিন্তু বুকের ভয় টা বেড়ে গেল। সত্যি তো আমাদের সম্পর্ক টা পূর্নতা পেলে, আর ও একশো টা সম্পর্ক উলটে পাল্টে একেবারে নষ্ট হয়ে যাবে। শালা কথা টা নিয়ে বেশি জল ঘোলা করলাম না। শুধু বললাম রাগের ভান করে -     আবার মুখ খারাপ করে? -     উহ এতো বকাঝকা কর কেন সবসময়ে? ভুলে যেও না আমিও তোমার হবু বর। -     ভারী বর এলেন আমার। কিন্তু কথাটা বলে, নিজেই গলে গেলাম। ওর বুকে মুখ গুঁজে দিলাম একেবারে। জীবনে প্রথম বার। যাতে আমার ভয় টা ও ধরতে না পারে। ওকে বলি কি করে আমি যে আমিও সেই ইচ্ছে পোষণ করি মনে মনে। যে ডিল টা ভেঙ্গে ভেগে যাই ওর সাথে। কিন্তু আমার কাছে দুটো দিক ই ভীষণ ইম্পর্ট্যান্ট। যদি পালিয়ে যাই, আমার বাবা মা, দিদিরা, অর্জুনের বাবা মা, কাকে কি জবাব দেবে? সবাই নান্দু অর্জুন কে নিয়ে পালিয়েছে। বদনাম তো হবে এক, উপরে জুটবে অভিশাপ। আমার জীবনে অভিশাপ আসুক। কিন্তু অর্জুন জুড়ে যাবে তখন আমার জীবনে। আমার সাথে সেও অভিশাপ কুড়োবে দশ জনের। সেটা আমি কি করে হতে দি। সাড়া দিলাম না আমি বিশেষ। ওর বুকে এতো ভরসা ছিল বলে বোঝাতে পারব না। বললাম -     বেশ আর পুটপুট করতে হবে না। আরেকটু জড়িয়ে ধরে থাকি, তার পরে তুই ভাগ। -     আর আমি? -     তুই কেন? তুই তো বলেছিস আমাকে জড়িয়ে ধরবি না কোন দিন। আমি তো বলিনি যে ধরব না। -     ইল্লী আরকী। এই বলে আমাকে চেপে জড়িয়ে ধরল। কতক্ষন ছিলাম জানিনা। মনে হয়, এতো নিশ্চিন্ত কোন দিন ও হইনি, ওকে জড়িয়ে ধরার পরে যত টা নিশ্চিন্ত হয়েছিলাম। ঘুমিয়ে গেছিলাম মনে হয়। যখন চোখ খুললাম দেখলাম ও আমাকে দেখছে বড় বড় চোখ নিয়ে। বললাম আদুরী গলায় -     কি রে যাবি না? দশ জনা কে না দেখালে কি তোর শান্তি হবে না? -     আমি যেটা শুনি সেটা বলে দাও। কথাটা ওর শেষ ও হলো না। বাইরে গলা খাঁকারির আওয়াজ পেলাম। মনে হয় কাকা হবে কিম্বা বড় জামাইবাবু। আমি ওকে আলমারির পিছন টা দেখাতেই, এক লাফে উঠে গিয়ে লুকিয়ে পড়ল আলমারির পিছনে। ভয়ে আমার বুকের ধুকপুকুনি বেড়ে গেল অস্বাভাবিক রকমের। আর সাথে সাথে ওর লাফিয়ে চলে যাবার দৃশ্য টা মনে করে মনে মনে হেসেও উঠলাম। বীর পুঙ্গব আমার। এক লাফে আলমারির পিছনে ঢুকে গেল। আমি চুপ করে শুয়ে পড়লাম। ঘর অন্ধকার ই ছিল। কাকাই মনে হলো। আমার ঘরের দরজা খোলা দেখে অবাক হয়ে গেল একটু। কিন্তু সোমত্ত মেয়ের ঘরে ঢুকতে ও পারল না কাকা। বাইরে থেকে বন্ধ করে দিল দরজা টা ঠেসিয়ে। বেশ কিছুক্ষন আমি মরার মতন পরে রইলাম। পরে কাকা চলে যাবার আওয়াজ পেতেই সে বেড়িয়ে এলো আলমারির পিছন থেকে। ওর বুকে কান পেতে দেখলাম, ধুকপুকুনি আমার মতই হচ্ছে।    ওকে জড়িয়ে ধরলাম আবার। বললাম, -     ইনি নাকি আমাকে নিয়ে পালাবেন। মহাবীর। একটা গলা খাঁকারি তেই এক লাফে আলমারির পিছনে! -     দেখ, চ্যালেঞ্জ নিও না। শুধু তোমার মুখ চেয়ে চুপ করে আছি। -     আচ্ছা আচ্ছা বেশ , এবারে থাম। একটু জড়িয়ে ধরে থাকতে দে। আমাকেও জড়িয়ে ধরল অর্জুন। বলল -     আর সেটা বলবে না? -     বেশ, আমি তোর । আর কারোর না। -     মনে থাকবে? -     উম্মম্মম্ম । এবারে ভাগ। আর শোন, আমার দু ঘন্টা পরে পরে তোর দেখা না পেলেও চলবে। ওটা কে তুই এক ঘন্টা করে নিস। প্রতি ঘন্টায় হলে আপাতত চালিয়ে নেব। এক মুখ হাসি নিয়ে তড়াক করে উঠে পালালো। মন টা আনন্দে ভরে গেল। মনে প্রচণ্ড চিন্তা কিন্তু, এই সুখ টা তে সেই চিন্তা কোন ভাগ বসাতে পারল না। দরজা বন্ধ করে এসে, ঘুমিয়ে গেলাম কোন অতলে।   সকালে উঠতে দেরী করে ফেলেছি। নামলাম যখন তখন সাত টা বেজে গেছে। আমার পক্ষে আন- ইউসুয়াল ব্যাপার টা। আসার সময়ে অর্জুনের ঘরের পাশ দিয়ে এলাম। দেখলাম তিনিও ঘুমোচ্ছেন বিছানার এক ধারে। সকালে বেশ ঠাণ্ডা লাগছিল বলে, গায়ে আমার ঘর থেকে একটা চাদর নিয়ে গিয়ে চাপা দিয়ে এলাম। জানিনা ওকে পাব কিনা জীবনে। কিন্তু এই গুলো করে মনের আশ মিটিয়ে নি। আমি বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বেরোতেই, দেখলাম ছোড়দি, বাচ্ছা গুলো কে হেলথ ড্রিঙ্ক খাওয়াতে খাওয়াতে আমাকে দেখছে। আমি প্রমাদ গুনলাম। বুঝে গেলাম কি ভুল করেছি। আমিও ঘুমিয়েছি দেরী অব্দি আর সেও ঘুমোচ্ছে। দিদির এই সব ক্যাল্কুলেশন এ ভুল হয় না। ইশ আমারি দোষ, আমি যদি উঠে পড়তাম পাঁচটা তে তবে সমস্যা থাকত না। আমি প্রায় আড়াই ঘন্টা বেশী ঘুমিয়েছি আজকে।   কলপারে যখন আমি গেলাম, দিদি শাম্প্যু করছিল বসে। আমিও বসে পড়লাম। আমি রোজ ই শ্যাম্পু করি। আমি দেখেছি এতে আমার চুল বেশ ভালো থাকে। ঝরে না। কলপার টা ঘেরা। বাবা বানিয়েছে একটা ঢাউস চৌবাচ্চা। এমন তিন চার জনা একসাথে স্নান করতে পারে। ঘেরা বাথরুম ও তিনটে আছে। কিন্তু আমরা বোনেরা এই ভাবেই গল্প করতে করতে স্নান করি। আজকে আমি আর ছোড়দি আছি। আমি তো বিশেষ সাড়া দিচ্ছি না। দিদি ই প্রথম কথা বলল -     কি ব্যাপার আমার ডেয়ার ডেভিল বোন, আজকে আমার সাথে চোখে চোখ রাখতে পারছে না কেন? মাথায় জল ঢেলে তাড়াতাড়ি, শামপ্যু ঘষতে শুরু করলাম, যাতে দিদি আমার চোখ দেখতে না পায়। বললাম, -     কি যে বলিস? কেন চোখে চোখ রাখতে পারব না কেন? -     সে তুই জানিস। এখানে এসে দেখছি, রূপ চর্চায় বেশ মন লেগেছে। -     কি যে বলিস বুঝি না। ওই টুকু আমি ইদানীং করি। -     হুম, যেদিনে অর্জুনের সাথে দেখা হয় সেদিন করিস, আর এখানে রোজ করছিস। -     দিদি, প্লিস। -     তুই কিন্তু প্রচন্ড ভাবে ইনভল্ভ হয়ে পড়ছিস। আমি দেখছি সেটা -     কি রকম? আমি তো থাকি ই না ওর ব্যাপারে। কি খাচ্ছে কোথায় যাচ্ছে কিছুই জানিনা। -     তাই? কালকে ওর পাঞ্জাবী টা কাচতে কে বলেছিল? -     এ মা না হলে দাগ লেগে থাকত। -     ওর মা তো যাচ্ছিল, আটকালি কেন ওর মা কে? -     ওর মা কে চিনিস না? পারত না ঠিক করে। -     হুম সেটাই বোঝাতে চাইছি। নিজেই বোঝ কত টা পজেসিভ তুই ওকে নিয়ে। ওর সামান্য জামা কাপড় নিয়েও তুই কত টা পজেসিভ। আর তুই বলছিস তুই ওতে ইনভল্ভ না? তুই কিন্তু দিব্বি কেটে বলেছিলি যে তুই এই ব্যাপার টা থেকে বেরিয়ে আসবি। কথা দিয়েছিলি। হুশ হুশ করে জল ঢালতে লাগলাম আমি। সত্যি টা দিদি বলে দেবার পরে, আমার যেন শরীরের গরম বেড়ে গেল। জল ঢালা শেষ হলে দিদি আবার বলল, -     কতক্ষন ছিল কালকে রাতে ও? -     বেশীক্ষন না। -     তাও? -     ঘড়ি দেখিনি। -     হুম আমি দেখেছি। ও শুতে এসেছে প্রায় চারটে। -     অ্যাঁ? চমকে উঠলাম আমি। এতোক্ষন ছিলো ও আমার কাছে কালকে? হে ভগবান। আমরা কেউ বুঝতেই পারিনি। আমার মনে হচ্ছে আমার এই অদ্ভুত টানের জন্যেই ও আমার থেকে দূরে সরতে পারছে না। কারন আমি ওকে দূরে সরতে দিচ্ছি না। যতই আমার অজান্তে হোক সেটা। আমি তো কোন অসুখে নেই। কিন্তু ওর অসুখ আমি বাড়িয়ে দিচ্ছি। আর সেটা ও বুঝতে পারছে না। যে সম্পর্কে র কোন ভবিষ্যৎ নেই, সে সম্পর্ক নিয়ে ওকে আমি কেন এতোটা ইনভল্ভ করে ফেলছি? আমি পুরো মাত্রায় দুর্বল একটি প্রানী। যাকে ভালোবাসি তার জন্য আমি এই টুকু কস্ট মেনে নিতে পারছি না? কিন্তু সত্যি ই কস্ট এই টুকু? বুঝতে পারছি না। ওকে যখন ছেড়ে এসেছিলাম আমি খড়গপুর থেকে, এক বছর আমি কেঁদে ছিলাম, আড়ালে আবডালে। কাউকে বুঝতে দিই নি। মনে মধ্যে কি রকম ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়েছিল আমি জানি। কারন ওই সময়ের কারোর সাথে আমার আর যোগাযোগ নেই। এর মানে তো পরিষ্কার, আমি ছিলাম ওখানে এটা ঠিক কথা, কিন্তু মন টা ফাঁকা হয়ে গেছিল বলে ভাবতাম, সেটা আসলে ওর ই স্মৃতি তে পরিপূর্ন ছিল। কেউ ঢুকতেই পায় নি ভিতরে। ওখানে কম করে আমি খান দশ প্রপোজাল পেয়েছিলাম, বিয়ে বা প্রেমের, কিন্তু কারোর মুখ তো দুরের কথা নাম ও মনে নেই আমার আজকে। আমি যেখানে যেখানে ও কে নিয়ে থেকেছি বা ওর সাথে ইন্টার‍্যাকশন হয়েছে, সেখানের কথা আমার মনে আছে। বাকি কথা আমার স্মৃতি থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। মজার ব্যাপার যে তিন বছর মাঝের, আমার আমি বাড়ির সাথে কোন যোগাযোগ রাখিনি, খেয়াল করে দেখলাম আমার সাথে অর্জুনের কোন রকম কোন যোগাযোগ ছিল না। এটা বাড়ির সাথে যোগাযোগ রাখিনি বলে হয়েছে, নাকি অর্জুনের সাথে যোগাযোগ নেই বলে আমার কিছু ভাবতেও ইচ্ছে করে নি। আমি কি ছোট থেকেই ওর উপরে অবসেসড ছিলাম? নাকি সেটা খড়গপুর থেকে হয়েছে? আমার মন বলছে খড়গপুর থেকে, কিন্তু মাথা বলছে হয়ত তার আগে থেকেই। না হলে একটা মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়া বাচ্চা ছেলেকে জড়িয়ে ধরে ছাদে কেন কেঁদেছিলাম? এই সম্পর্কের পিছনে কে বেশি সময় আর নিজের মন দিয়েছে, আমি না অর্জুন? আমি ভাবতাম, অর্জুন ই সে যে আমাকে বাধ্য করেছে ওকে নিয়ে ভাবতে। কিন্তু অর্জুন কেন? আমার তো ওকে সেই সময় থেকেই ভালো লাগত যে সময়ে আমি আর ও দুজনাই বাচ্চা ছিলাম। কেন ভালো লাগতো? কি কারন? নিজের ঘরেই ছিলাম চুপ করে বসে আমি। আর বসে বসে মাথা আর মন তোলপাড় করে ভাবছিলাম এই সব কথা। বাড়িতে অনেকে আসবে আজকে। আমি দিদির সাথে স্নানের সময়ে কথা বলে সেই যে ঘরে এসেছি আর নিচে যাই নি। ইচ্ছেও করছে না। দিদির কথা গুলো আমার বুকে বাজছে দামামার মতন। আমি ওকে নিয়ে কি লেভেলের পজেসিভ সেটা দিদি আমাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে আজ দেখিয়ে দিল। লজ্জা লাগছিল খুব, কিন্তু তার থেকেও বুকে লাগছিল, আমার জন্যেই ছেলেটা একটা নর্ম্যাল লাইফ লিড করতে পারছে না। এই সময়ে ওর হেসে খেলে জীবন কাটানোর কথা। কত বন্ধু বানাবে, মেয়েদের সাথে ফ্লার্ট করবে। হাসি খুশী তে কাটাবে জীবন। ও হয়ত ভাবছে আমাকে চোখে সামনে দেখছে, হাতের কাছে পাচ্ছে, ও খুশী তে আছে।  কিন্তু আমি বুঝতে পারছি, ওই হাসি খুশীর পিছনে ওর মনে কি ঝড় চলছে। আমাকে না পাবার মারাত্মক যন্ত্রণা ওকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে অনবরত। তাই যতক্ষন আমার সাথে থাকছে ভালো থাকছে আর আমি না থাকলেই চুপ করে যাচ্ছে। আমি বুঝতে পারছি এটা। কারন আমার ও ঐ এক ই হাল। নাহ ভাবতে পারছি না। কে কার জীবন থেকে সরে গেলে , কার জীবন টা ভালো হবে আমি বুঝতে পারছি না। হয়ত দিদিও পারছে না বুঝতে তাই ধীরে ধীরে আমাদের সম্পর্ক টা ওর মন মেনে নিয়েছে। ও হয়ত ভাবছে, দোষ দুজনার ই। বা দুজনার ই কিছু করার নেই। মানুষের মন পড়ার ক্ষমতা আমার মারাত্মক। তা সে আমার স্বামী হোক বা ছেলে মেয়ে। মা হোক বা বাবা, দিদি হোক বা ললিত দা। কিন্তু যেদিন বুঝলাম যে আমি অর্জুন কে ভালোবাসি, সেদিন থেকে ওর মন পড়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম। ভয় পেয়েছিলাম। যদি আমি ভুল বুঝি? যদি এমন কিছু বুঝি যেটা তে আমি ওকে ঘেন্না করতে শুরু করি? কি মুশকিল না? সারা জীবন আমি এই মুশকিল বয়ে নিয়ে বেড়িয়েছি। আমি যে রকম দুর্বল ছিলাম, ও চাইলে আমাকে যে কোন মুহুর্তে সব রকম ভাবে পেতে পারত। আমি হয়ত ওকে আটকাতেও পারতাম না। কিন্তু ও এগোয় নি। বিশেষ মুহুর্তে ওকে আমি আমার শরীরের নানা জায়গা জাস্ট গিলতে দেখেছি। ইয়ার্কী মেরেছে। আমি কিল থাবড়া দিয়েছি রেগে। কিন্তু ও লিমিট ক্রস করেনি কোন দিন । আমাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে থেকে ঘন্টার পর ঘন্টা, কিন্তু একটা ফাউল টাচ করেনি আমাকে কোন দিন। এমনি এমনি ওকে ভালোবেসে ফেলিনি আমি। আমি অনেক সময়ে মনে করতাম, ছেলেটা কি বীতকাম? এবারে হয়ত ঠিক কিছু করবে। কিন্তু ঠিক সময়ে ও আমাকে ছেড়ে দিয়েছে। এতো বোধ এই বয়সে কি করে এলো ওর মধ্যে। মনে হয়েছিল, এই আমার সেই মানুষ টা। ও জানে লাইন টা ঠিক কোথায় আছে। ও আমাকে বাধ্য করতে চায় নি। আমি নিশ্চিত আমাকে যদি ও সেই সময়ে এই শারীরিক সুখ টা দিত , আমি ই হয়ত ওকে নিয়ে পালাতাম। কিন্তু সেই বাধ্যতা আমার ঘাড়ে ও চাপিয়ে দেয় নি। জানিনা ও কি ভেবেছিল, বা আদৌ ভেবে করেছিল কিনা এটা, কিন্তু এই ব্যাপার টাই আমার আর সম্পর্কের মূল হয়ে গেছিল। বিশ্বাস আর ভরসা। ওকে চোখ বুজে বিশ্বাস করার ইচ্ছে টা আমার সেই থেকেই জন্মে গেছিল। ও আমার দিদির ছেলে। সন্তান তূল্য। ভালোবাসা তো থাকবেই। কিন্তু ভেবে দেখুন সেই ভালোবাসা কি শুধুই অপত্য নয়? ও আমার থেকে এমন কিছু ছোট নয়। আমি উনত্রিশ তো ও চব্বিশ। দুজনাই মারাত্মক রকম এট্রাক্টিভ। ব্রিলিয়ান্টলি শাইন্ড সমাজে। দুজনের ই শরীর তখন ফুটছে। এই সব ছাড়িয়ে, যে ভরসা আমাকে ও দিয়েছিল, তাতে কি আমি ওকে ভালোবাসতে পারি না? মাসী নয় একটা সাধারন নারীর মতন?  হ্যাঁ আমি অসহায়, তাই জিজ্ঞাসা করছি। আমার দোষ আমি খুঁজে পাচ্ছি না। মাঝে মাঝে মনে হয় সেদিনে মরে যাওয়া বেস্ট ছিল। যেদিনে ও আমার বাড়ি চলে এসেছিল সোজা মিশিগান থেকে। মরে গেলেই ব্যস আমার আর কিছু যায় আসত না। কিন্তু আমি শিওর ছিলাম, তারপরে সেও আর থাকত না পৃথিবীতে।                                                                 
Parent