মন ২ - কাহিনীর নাম- শিবের শিব প্রাপ্তি- সমাপ্ত - অধ্যায় ১৯

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-45086-post-4682289.html#pid4682289

🕰️ Posted on February 11, 2022 by ✍️ nandanadasnandana (Profile)

🏷️ Tags:
📖 2343 words / 11 min read

Parent
রাতের বেলায় খেয়ে দেয়ে ছেলেকে চুমু খেয়ে ও যখন বিদায় নিল তখন প্রায় দশ টা বেজে গেছে। মা আমার সাথে আমার ঘরে এল। আমি ছেলের বিছানা করে রেডি করলাম। ছেলে কে শোবার জন্য পাতলা কটনের হালকা জামা আর একটা ছোট্ট প্যান্ট পরিয়ে দিলাম। মা নতুন কেনা বালিশের ওয়ার গুলো পরাচ্ছিল। আমি গুড নাইট লিক্যুইড এর সুইচ টা দিয়ে বসতেই মা বলল, -     ভাগ্যিস ছেলে টা কে খেতে বললাম। কত কাল পরে হয়ত একটু খুশী হলো। সাড়া দিলাম না আমি। ছেলে খেলছিল, আমি কোলে করে নিয়ে এসে শুইয়ে দিলাম। আমার কোলে মাথা রেখে ও শুয়ে রইল। আমি গায়ে হাত বোলাচ্ছি যাতে ও ঘুমিয়ে যায়। আর মা বলে চলে, -     তুই উপরে চলে এলি ছেলেকে পড়াতে আর তখন রাকা কত কথা বলল কেরাম খেলতে খেলতে। আমাকে আর তোর বাপি কেই বলল। রনি জানে দেখলাম অনেক টাই। তোকে নাকি এই সব বলতে মানা করেছিল রাকা রনি কে। আমি আনমনেই বললাম মাকে, -     কি বলল তোমাকে ও -     তোকে বলে কি হবে? তুই তো আর ওকে ক্ষমা করবি না -     না করব না। কিন্তু তাও শুনব। কি অজুহাত দিল তোমাকে। -     অজুহাত দেয় নি রে। বলছিল ও অপরাধ করেছিল। তার শাস্তি ভগবান ওকে গত ছয় বছর ধরে দিচ্ছেন। ও এখনো বুঝতে পারে না সেই দুই বছর কি হয়েছিলো ওর। ও, তোকে আর রনি কে সন্দেহ করেছিল। রনির সামনেই বলল। ক্ষমা ও চাইল রনির কাছে। অঞ্জনা, শিভ কে জন্ম দেবার পরেই অসুস্থ হয়ে পরতে, ও জানতে পারে, ওর হার্ট এবং কিডনী দুটোই ড্যামেজড। অনেক ডাক্তার, ভারতে বিদেশে দেখিয়েও লাভ হয় নি। হার্ট অপারেশন আর কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট দুটোই হয়েছিল।  অঞ্জনা এই রুদ্রপুরেই মারা গেছে। তুই খবর পাস নি? মনে করে দেখলাম ভালো করে। মার দেড়েক দুয়েক আগের খবর। মনে পড়ছে না। এমন কি স্কুলেও তো আসে এমন খবর। ও এগারো বারো ক্লাস আমাদের স্কুলে ছিল না। ট্রিটমেন্ট চলছিল ওর। কিন্তু তাও তো আসার কথা খবর। মনে হয় ওর বাবা মা গোপন রেখেছিল। ইভেন খবরের কাগজেও বেরোয় নি। ভারতের ক্যাপ্টেন এর স্ত্রী মারা গেলে তো খবর বেরোনোর কথা। কিম্বা বেরিয়েছিল। আমি দেখিনি। রাকার খবর টিভি বা খবরের কাগজে বেরোতে শুরু করার পর থেকে আমি দুটোই দেখা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। মাকে ঘাড় নাড়লাম। বললাম, -     নাহ পাই নি। পেলে তো যেতাম ওদের বাড়িতে। -     রাকা বলল, অঞ্জনা এখানে ছিল তখন। কোন কথা কাটাকাটি হচ্ছিল, তার মধ্যেই ওর হার্ট ফেল করেছিল। -     আহা রে। মেয়েটা খুব মিষ্টি ছিল। হ্যাঁ ওই সময়ে আমাকে খুব অপমান করেছিল আর ওই সময়ে অহংকার ছিল খুব। কিন্তু সেই ভুলের জন্য তো ভগবান কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেন না। -     কি জানি? ছেলেটা খুব মানসিক কষ্টে আছে। এমন একটা ভালো ছেলের এমন পরিনতি হবে, আমি ভাবিনি। কি নেই বল ওর কাছে? কিন্তু না পাবার দলে ও। যাকে ভালবাসত সে নেই। ছেলের সাথে বলল, কোন দিন ই তেমন সখ্যতা ওর গড়ে ওঠে নি। অঞ্জনা তো বাপের বাড়িতেই বেশি থাকত। ওর মা কথা বলে না ওর সাথে। মানে বিশ্বাস ভরসা কিছুই করে না। বলল শুনলি না সকালে, - আজকে নাকি ওর মা ওর সাথে একটু ভালো করে কথা বলেছে। আমি মাথা নামিয়ে শুনছি মায়ের কথা। শিভ আমার কোলে প্রায় ঘুমিয়ে গেছে। এদিকে মা বলেই চলে -     শাশুড়ি তো ওমনি। ওর ধারনা, ওর শাশুড়ির জন্যেই অঞ্জনার সাথে বা শিভের সাথে কোন দিন সম্পর্ক ওর ভালো হয় নি। মন টা খারাপ হয়ে গেল আমার। মা কে বললাম -     কেমন অদ্ভুত তাই না মা? এতো ভালো জামাই। তার পরেও মেয়েকে ভরসা করে ছাড়তে পারল না? এই যে তুমি, কই আমি তো কোন দিন ও তোমাকে দেখিনি গরু কে ভালো মন্দ কোন কিছুই বলতে? ও নিজের মতন ওর সংসার মেন্টেন করে। ওর বয়েস ও তো বেশি না। শমিতের সাথে ওর টিউনিং বেশ ভাল।   -     হুম। কোন মেয়ের মা কেই বলতে নেই। এটা নিজের উপলব্ধি। আমার উপলব্ধি ওর ঘাড়ে চাপিয়ে দিলে ভালো ও হতে পারে আবার খারাপ ও হতে পারে। তার থেকে ও নিজেই নিজের টা বুঝুক। মেয়ের মা কে মেয়ের পাশে থাকতে হয় শুধু। সে অনেক ব্যাপার। তোর বিয়ে হলে তোকে বলতাম। -     তাহলে আর তোমার বলা হলো না। -     কেন? আমি তো এখনো দেখতে পাই স্বপ্নে। যে আমার শিবের বিয়ে হচ্ছে। একটা দামী বেনারসী পরবে আমার মেয়ে। এক গা গয়না। ধুমধাম করে আমার মেয়ের বিয়ে হচ্ছে। -     পাগলামো কোর না মা। -     পাগলামোর কিছু নেই। দু দিন বাদে দেখবি এটা রিলিভেন্ট লাগছে তোর ও। -     কোন দিন ও লাগবে না। আমার কাছে শিভ আছে। আমি কেন বিয়ে করতে যাব। আর আমার তো কোন ছেলেই ভালো লাগে না। ওই সম্পর্ক বানাব, রাতে এক সাথে শোব, এই ব্যাপার টাই তো আমি চাই না। আমি মেয়ে হয়েছিলাম, মেয়ে হয়ে বাঁচব বলে। -     হ্যাঁ বুঝলাম কিন্তু, বিয়ে করা , স্বামী র সংসার করাও তো মেয়েরা করে। যদি বাঁচিস হাফ বাঁচছিস কেন। পুরো বাঁচ। আমি তাকিয়ে গেলাম মায়ের দিকে। মায়ের চোখে হাসি। বললাম -     কি ব্যাপার বলত? তোমাকে তো সকালেই বললাম আমি কেন বিয়ে করব না। -     বুঝেছি সেটা। কিন্তু আমি ভাবলাম। এমন তো হতে পারে না, তুই মা একজনের ছেলের, আর বিয়ে করছিস অন্য লোক কে। শিভের তাহলে দুটো বাবা হয়ে যাবে তাই না? মায়ের মুখ টা কেমন একটা শয়তানি তে মাখানো। এই ভাবে কেউ বলে নাকি? দুটো বাবা হয়ে যাবে? আমি বিয়ে করব কেন অন্য কাউকে? আমার কোন দায়িত্ব নেই নাকি? নাকি আমি মাইনে কিছু কম পাই যে আমার ছেলেকে আমি ল্যাভিশলি মানুষ করতে পারব না? রেগে গেলাম আমি। বললাম বিরক্ত হয়ে, -     কি ফালতু বকছ তুমি মা? আমি তো অন্য কাউকে বিয়েই করব না। আর তেমন প্ল্যান থাকলে আমি শিভের জন্য এতো এগোতাম ই না। শিভ কে নিয়ে এমন কথা একদম বলবে না বলে দিচ্ছি আমি। মা পাত্তাই দিল না আমার বিরক্তি কে। বলল -     না রে ফালতু না। অন্য কেউ না, ধর রাকার সাথেই তোর বিয়ে হল। কেমন হবে? -     অ্যাঁ। তুমি ঘুমোতে যাও মা। তোমার ঘুম পেয়েছে। মা রেগে গেলো, -     ধ্যার বাবা। শোন না। আমি অনেক ভেবেছি। -     তুমি কম  ভাব প্লিস মা -     থাবড়ে দেব। শুনতে বলছি না? -     উফ, সকাল থেকে আমাকে তিনবার মারবার কথা বললে কিন্তু মা। -     হ্যাঁ রে বাবা আমি তোর মা। অসুবিধা নেই থাবড়ালে। শোন না কথা টা আমার। -     আচ্ছা বল। শুনি তোমার ফ্যান্টাসি। মা শিভের পা দুটো নিজের কোলে তুলে নিল। তারপরে নড়ে চড়ে বসে আমাকে বলতে শুরু করল, -     না মানে ধর তুই যদি রাকা কে বিয়ে করিস, বা ও যদি তোকে বিয়ে করে, তবে ছেলের মা বাবা নিয়ে আর কোন সমস্যা রইল না। ছেলেও যখন বড় হবে, ওর কনফিউশন থাকবে না। ও জানবে ওর যে মা আর বাবা তারা স্বামি স্ত্রী। আর না হলে ওর কি হাল হবে বল? এটা কেমন ব্যাপার হবে ওর কাছে, যখন ও বড় হয়ে ও শুনবে, ওর বাবা আর মা স্বামি স্ত্রী নয়? আমি মায়ের দিকে তাকিয়ে রইলাম। হ্যাঁ সমস্যা টা তো ভাবিনি আমি। ছেলের ই বেশী সমস্যা হবে। সবাই তো জিজ্ঞাসা করবে। চুপ করে রইলাম আমি। মা বলে চলে, -     এখন ধর সেটাও না হয় হলো, যে তুই বিয়ে তে রাজী হলি না। কিন্তু ছেলে তো বড় হবে। তখন লোকে ওকে আজে বাজে কথা বলবে তাই না? -     কেন কি আজে বাজে কথা বলবে? সবাই তো জানে ও রাকার ছেলে -     এখন জানে। আর এখানে জানে। কত নতুন মানুষ আসবে , তুই ওকে নিয়ে বাইরে যাবি। আত্মীয় স্বজন, রাকার পরিবার। সেখানে শিভ তো যাবে তাই না? আর তোকেও যেতে হবে তখন। তারা শিভের বাবার কথা জানতে চাইবে। তুই বলবি রাকা ওর বাবা। অথচ তোরা স্বামী স্ত্রী নোস। তারা কি ভাববে, শিভ অবৈধ সন্তান? -     মা!!!!! এমন কথা বোল না আমার ছেলের নামে প্লিস। -     উফ আমি বলব না। লোকে বলবে বলছি। আর ও বলতে পারে। -     না না আমি আর শুনব না আমার ছেলের নামে এমন কথা। মা থামে না। বলেই চলে। মনে হয় আজকে আমাকে রাজি করিয়েই ছাড়বে। -     না না সে আমার থেকে শুনবি না তুই। লোক কে আটকাবি কি করে। তুই তো জানিস, তোকেও কত কথা শুনতে হয়েছে। লোকে এটাও বলতে পারে, রাকার তুই … -     কি আমি রাকার? -     নাহ থাক -     বল না? কেন আমাকে টেনশন দিচ্ছ? -     না বলতে পারে তুই রাকার , বেশ্যা। আমি মায়ের দিকে তাকালাম। মা একদম ই সিরিয়াসলি বলছে না কথা গুলো। মায়ের মুখে হালকা হাসির ভাব। বুঝতে পারছি না মা কি চাইছে? এই রকম কঠিন কথা গুলো মা আমার আর শিভ এর সম্পর্কে বলছে কেন? মা কে বললাম -     মা আমি তোমার মেয়ে। আর তুমি আমাকে বেশ্যা বলছ? -     উফ এতো আচ্ছা মেয়ে !  আমি বলছি এমন টা লোকে ভাবতে পারে। আমি কি সব লোক দের ডেকে ডেকে বলতে পারব, যে আমার মেয়ে, ছেলে থেকে মেয়ে হয়েছে। শিভ ওর পেট থেকে হয় নি। কাজেই ও রাকার বেশ্যা না। শিভের ছেলেকে আমার মেয়ে মানুষ করছে। ওগো তোমরা ভুল ভেব না। এটা কি সম্ভব হবে? আমি আবার চুপ করে গেলাম। কথাটা মা মন্দ বলে নি। এই সবে সব থেকে বেশী ক্ষতি হবে আমার ছেলের। আমার রক্ত ঠান্ডা হয়ে গেল। আমি জানি মানুষের টোন টিটকিরী কত মারাত্মক হতে পারে। ছেলের সকাল টা ভালো করতে গিয়ে আমি বাকি দিন টা খারাপ করে দিচ্ছি না তো? মায়ের দিকে তাকালাম। মনে আমার শিভ কে হারানোর ব্যাথা শুরু হয়ে গেল। চোখে জলে টলটল করছে আমার। একবার পলক ফেললেই গাল বেয়ে নামবে। মা আমার দিকে তাকিয়ে রইল। আঁচল দিয়ে চোখ টা মুছিয়ে দিল। আমার দিকে চেয়ে বলল, -     আমার মেয়ে লাখে এক। এমন সুন্দরী খুঁজলেও কেউ পাবে না। কাঁদছিস কেন? শিভের কথা ভেবে কাঁদছিস? মা আর হাসছে না। মুখ টা মায়ের ও কাঁদো কাঁদো। মা হয়ত আমার ব্যাথা, আমার চিন্তা অনুভব করছে। মা বলে চলে -     ওরে ছেলের জন্য মায়েরা সর্বস্ব বিলিয়ে দেয়। আর তুই একটা বিয়ে করতে পারবি না? আমার মনে পরে গেল সব অপমান। মা কাকে বিয়ে করতে বলছে যে আমাকে, হবু বউ এর সামনে হিজড়ে বলে অপমান করেছিল? কেঁদে ফেললাম আমি। মা কে বললাম -     মা আমি তো মেয়ে নই। আমি তো হিজড়ে। রাকার কথায় আমি সমাজের বোঝা। কীট। পোকা মা চুপ করে গেল কিছুক্ষন। তারপরে বলল -     বাজে কথা গুলো কেন বলিস তুই? তুই এখন পুরো দস্তুর মেয়ে। আর তোকে কথা গুলো বলার জন্য মরমে মরে যাচ্ছে রাকা। আজকেই নীচে বলছিল আমি ফোঁপাতে ফোঁপাতে বললাম -     কি বলছিলো ও -     বলছিল, কাকিমা আমার ওর সামনে যাবার কোন মুখ নেই। একবার ও সুযোগ দিলে ওর পায়ে ধরে ক্ষমা চাইব আমি। ওর থেকে বেশী দেয়া আমাকে আমার জীবনে কেউ দেয় নি। আর তাকে আমি কাঁদিয়েছি , অপমান করেছি। আমাকে যে এর প্রায়শ্চিত্ত করতেই হবে। ফোঁপাতে ফোঁপাতে বললাম আনমনে -     ঢং -     আরে ! ঢং নয়। বলতে বলতে কেঁদেই ফেলল ছেলেটা -     ওটাও ঢং ওর। আমি ছেলের দিকে মুখ করে কথা গুলো বললাম মাকে ফোঁপাতে ফোঁপাতে। মাকে বললাম -     ভাব বিয়ের পরে যদি ও বোঝে ও ভুল করেছে আর আমাকে আবার অপমান করে তখন? আমি না পারব বেরিয়ে আসতে না পারব মরতে না পারব পালাতে। তখন কি হাল হবে আমার বুঝতে পারছ? -     আরে বাবা কিছু হবে না। ছেলেটা আছে না। হ্যাঁ আমার স্বার্থ আছে। আমার মেয়ে স্বামী পাবে, ছেলে পাবে। একটা সুস্থ সংসার হবে। -     কিন্তু ও যদি না মানে? -     আরে! ও মেনে বসে আছে। তুই বুঝলি না?  আমাদের বাড়িতে ও চারবার এলো । কেন? তোকে একবার দেখতে। তুই রান্না ঘরে আছিস, এ কাজ সে কাজ করছিস, ছেলে খাওয়াচ্ছিস, আর ওর চোখ সব সময়ে তোর উপরে। আমি তো ওকেই দেখছিলাম কাল থেকে। কালকে তুই ও বাড়িতে ঘরে ছিলি, আর ও বাইরে দাঁড়িয়ে বার বার ঘরের দিকে দেখছিল, শুধু একবার তোকে দেখবে বলে। না হলে একটা কথা বল, ওর যা টাকা পয়সা, কোন মেয়ে কে পাবে না এমন কি হতে পারে? থাকত ছেলে ওর মামার বাড়ি তে আর ও কলকাতায় মজা করত। কিন্তু ভেবে দেখ ওর কাছে ওর ছেলে খুব ইম্পর্ট্যান্ট। আর সাথে তুই। এখনো বুঝিস নি তুই? নিজের ছেলেকে তোকে মা বলতে শেখাল বা অনুমতি দিল। আর কত তোকে ও ইঙ্গিত দেবে? ও চাইছে তোকে ওর জীবনে বুঝলি? মনে মনে ভাবলাম, আমার ওর কোন ইঙ্গিতের দরকার নেই। যা বলার তো মুখে বলেই দিয়েছিল। এখন আর ইঙ্গিত দিয়ে কি হবে? ইঙ্গিত বুঝতে মন লাগে। ও আমার মন তো ইস্পাতের মতন কঠিন করে দিয়েছে ছয় বছর আগেই। মাকে আর ঘ্যান ঘ্যান করলাম না এই নিয়ে। শিভের জন্য আমি যখন ওর পায়ে পরতে রাজী আছি তখন, সবাই রাজি হলে বিয়ে টাই বা নয় কেন? হ্যাঁ ওর সাথে আমার সম্পর্ক টা কোন দিন ই সরল হবে না। যে তার ছয় বছর আগে ছিঁড়ে গেছে, সেই মরচে ধরা তার না জোড়াই ভাল। মাকে এই নিয়ে কোন সাড়া দিলাম না, শুধু বললাম, -     কিন্তু ওর শশুর বাড়ি? -     শুনতে খারাপ লাগলেও, বউ নেই সেখানে শশুর বাড়ি আর কি আছে? -     মানে? - চমকে উঠলাম। তারপরে মাকে বললাম -  ধর আমার সাথে রাকার বিয়ের পরে আমি মরে গেলাম। তোমার রাকার উপরে কোন জোর থাকবে না? -     না থাকবে না। যদি না রাকা আমাকে সেই অধিকার টা দেয়। রাকা তো সেই অধিকার অঞ্জনার মাকে দেয় নি। আর তাছাড়া অঞ্জনার মা সুমনার সাথে রাকার বিয়ে দেবার প্রচেষ্টায় আছে। -     বল কি? তুমি কি করে জানলে? -     রাকাই বলছিল আজকে। রাকা বলল ও না বলে দিয়েছে। এখন তুই রাজী না হলে কেউ না কেউ রাজী করাবে বিয়ে করতে রাকা কে শিভের কথা ভেবে। আর ভেবে দ্যাখ, সুমনা কেমন তো তুই জানিস। শিভ কি করে ভালো থাকবে বল ওর কাছে? -     ওরে বাবা! না না সে একদম ভালো মেয়ে না। শিভ কে আমার জ্বালিয়ে খাবে। তার পরে ওদের আবার বাচ্চা হবে। তখন শিভের দুর্গতির সীমা থাকবে না আর। ও মা, সুমনার সাথে রাকার বিয়ে দিও না প্লিস -     আমি বিয়ে না দেওয়ার কে বলত? আমি তোর বিয়ে দিতে পারি। রাকার বিয়ে তো আটকাতে পারব না। বুক টা কেঁপে উঠল আমার। সৎ মায়ের পাল্লায় পরবে নাকি আমার ছেলে। আর হ্যাঁ হতেই পারে। রাকা যদি অন্য কোথাও বিয়ে করে আইন ও শিভ কে ওদের কাছেই রাখাতে বাধ্য করবে। আর সুমনা একদম ভাল মেয়ে না। খুব ইগো। পুরোন অঞ্জনার মতন। বাপরে, ভাবতেই পারছি না আমি। ওই তো রাকা, সারা দিন বাইরে থাকবে। শিভ টা কে আমার শেষ করে দেবে একেবারে। আমি ভয়ে শিভ কে জড়িয়ে ধরলাম। সে শুধু একটু নড়ে উঠল আর আমার কোলে ঘুরে শুল আমার কোমরে হাত টা জড়িয়ে ধরে। কিন্তু কোন কি উপায় নেই, রাকাও অন্য মেয়ে বিয়ে করে সুখী হলো আর আমিও শিভ কে নিয়ে?  মা কে কথা টা বলতেই, মা মাথা নেড়ে বলল -     না কোন উপায় নেই।   -     মা তুমি তো আমাকে ভয় ধরিয়ে দিলে। আমার হাত পা কাঁপছে। কি হবে এখন -     তুই রাজী হলে বল। আমি কথা বলব রাকার মায়ের সাথে। -     রাকা রাজি না হলে? -     সে দায়িত্ব ওর মায়ের। -     তুমি কি করে জানলে সেটা? -     সব তোকে বলব নাকি? -     বল না। -     আজকে সন্ধ্যে বেলাতেই কথা হচ্ছিল ওর মায়ের সাথে। -     ও বুঝেছি।তখন হেসে হেসে আমাকে বধ করার প্ল্যান করছিলে? -     পাগলী। এটা তে কি সত্যি ই তুই বধ হবি? -     হুম হবই তো। 
Parent