নীল আধার - অধ্যায় ৮

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-70027-post-6016125.html#pid6016125

🕰️ Posted on August 23, 2025 by ✍️ ধূমকেতু (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1057 words / 5 min read

Parent
কয়েক সপ্তাহ হয়ে গেছে মধুমিতা মেহুলদের বাড়ি থেকে ফিরে এসেছে। শ্বশুর বাড়িতে ফিরে আসা অবধি নিজের মধ্যে বড় ধরনের একটা পরিবর্তন অনুভব করছিলো ও। সব সময় কেমন একটা উত্তেজনা হচ্ছিলো ওর, সংসারে মন বসাতে পারছিলো না। রান্না খারাপ হচ্ছিলো, ঘর গোছাতে গিয়ে এটা ওটা ভাঙ্গছিলো, একদিন তো রিতমের বাবার চায়ে চিনির পরিবর্তে নুনই দিয়ে দিয়েছিলো। বিকেল গুলোতে বিষন্ন হয়ে থাকতো মন। রিতম ইংল্যান্ডে চলে যাওয়ার পরও এমন খারাপ লাগে নি ওর। মনে মনে অনেক বার নিজেকে প্রশ্ন করেছিলো মধুমিতা, একি প্রেমে পড়ার লক্ষণ? বার বার না উত্তর এসেছে। রিতমকে ছাড়া ও আর কাউকে ভালোবাসে না। দিহানকেও ভালোবাসে না। তবে যে পরিমাণ সুখ মধুমিতা ঐ একটা সপ্তাহ পেয়েছে তার তুলনা হয় না। রিতম কোনো দিন সেই সুখ ওকে দিতে পারবে না। দিহানের সাথে কাটানো ঐ রাতগুলোর কথা ভেবে উদাস হয়ে পড়ছিলো মধুমিতা। কবে যে আবার সেই স্বর্গীয় সুখ পাবে, তা ঠাকুর জানেন। মধুমিতাকে গাড়িতে উঠিয়ে দেওয়ার সময় দিহান ওর কানে কানে বলেছিলো, সুযোগ সময় করে কোনো এক হোটেলে দেখা করবে ওরা। মধুমিতা এখন সারাদিন ঐ মুহুর্তটির জন্য মনে প্রাণে প্রার্থনা করছিলো। মাঝে মধ্যে আত্মসমালোচনাও করছিলো মধুমিতা। ও কি খুব কামুক হয়ে উঠছে? বাজে মেয়েছেলে হয়ে গেছে? নাহলে সারা দিন পরপুরুষের সাথে কাটানো যৌন মিলনের মুহূর্ত গুলো মনে করে উত্তেজিত হচ্ছে কেন? কেন আবার দিহানের সাথে মৈথুন করার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠছে? তখন ওর মনের ভেতরে চুপটি করে থাকা সেই সত্ত্বাটি বলে উঠলো, যে সব সময় ওকে এই অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনে সামনের দিকে এগিয়ে দিয়েছে। ও বলল, তুই কিছুই খারাপ করছিস না মিতা। যা করছিস নিজের সুখের জন্য করছিস। শরীরের সুখের জন্য করছিস।  রিতমকে ঠকাচ্ছি যে। আমার জন্য দিন রাত এক করে পরিশ্রম করছে ছেলেটা। আর আমি ওকে এভাবে – তুই রিতমকে ঠকাচ্ছিস না। তুই তো রিতমকে ভালোবাসিস। তাহলে আমি যা করছি তা কি? সেই সত্ত্বাটিকে জিজ্ঞেস করলো মধুমিতা। ও হেসে বলল, এটা তোর একান্ত ব্যক্তিগত সুখ। তোর আকাঙ্ক্ষা, তোর ইচ্ছা। এগুলো পূরণের দায়িত্ব রিতমের, কিন্তু ও তা করতে পারছে না। এতে ওর দোষ নেই, তোরও দোষ নেই। পরিশেষে তুই শুধু তোর সুখ খুঁজে নিয়েছিস, ব্যস। আমি ভুল করছি না তো? বোকা মেয়ে, না। আজকাল নিজের এই সত্ত্বাটির সাথে কথা বলে খুব শান্তি পায় মধুমিতা। কে জানে কথা গুলো কতাটা যৌক্তিক কিন্তু নিজের হৃদয়কে বোঝানো যায়, প্রবোধ দেওয়া যায় নিজেকে। সেদিন বিকেলে রিতমের সাথে অনেকক্ষণ কথা বললো মধুমিতা। আজকাল ওর সাথে তেমন একটা কথা হয়নি। রিতম ফোন করলেই ব্যাস্ত আছি, রান্না করছি, ঘুম পাচ্ছে বলে কাটিয়ে দিতো ও। নিজের মধ্যে চলতে থাকা মানসিক দ্বন্দ্বের জন্য এমনটা করেছে মধুমিতা। ও চায় নি পুরোপুরি নিজেকে না জেনে রিতমে করতে। রিতম ফোন করতে ঝটপট ফোন তুললো মধুমিতা। দেখলো মোটা এক কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে দিহান। ঠোঁটে সব সময়ের মতো স্মিত হাসি। রিতম জিজ্ঞেস করলো, হাই ম্যাম। কেমন আছেন? আমি কি তোমার হাই কলেজের টিচার নাকি যে ম্যাম বলে ডাকছো। হাই কলেজের টিচার না হলেও, ছোট খাটো সেলিব্রিটি বলে বোধ হচ্ছে। মানে? ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো মধুমিতা। যেমন করে এ্যাভোয়েট করছো আমায়, আমি তো ভাবছিলাম বউ বুঝি আমার হিরোইন হয়ে গেলো। এরপর আর আমায় চিনবেই না। রুপোবতী কিনা, কবে কোন ডিরেক্টরের চোখে পড়ে। তখন তো আর এই কাকের বাসায় আর থাকবে না। মধুমিতা  পাগল কোথাকার। হেসে ফেললো মধুমিতা। তুমি যেদিন আমাকে তাড়িয়ে দেবে সেদিন চলে যাবো। রিতমও হাসলো, টেনে টেনে ছড়া কেটে বলল, আমার শ্বাধ্য কি তোমায় তাড়াবো, আমি তো দাস, আমিতো দাস তোমার চরণে– সম্রাজ্ঞী তুমি, এতো দুর্মতী নই হে হৃদয়েশ্বরী যে তোমায় হারাবো। বাহ্। কেয়াবাত। খুব আমোদে আছো মনে হচ্ছে। কবিতা ফুটছে মুখ দিয়ে। তারপর জিজ্ঞেস করলো, গলার স্বর এমন ভাঙ্গা ভাঙ্গা শোনাচ্ছে কেন। ঠান্ডা লেগেছে। দেখছো না, কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছি। কিভাবে লাগলো? উদ্বিগ্ন হয়ে উঠলো মধুমিতা। ঠান্ডা লাগছে তোমার খুব কষ্ট হয়। নিশ্চয়ই মাথা ব্যথা করছে। মন খারাপের ভাব করলো রিতম পাশে থাকা পাশবালিশটাকে বুকের কাছে টেনে নিয়ে বলল, করলেই বা, আমার কি সেই ভাগ্য যে সুন্দরী বউ নিজের কোলে মাথা নিয়ে টিপে দেবে। সে তুমি নিজের থেকে এমন ভাগ্য বানিয়েছো। নিজেও কষ্ট পাচ্ছো আমাকেও কষ্ট দিচ্ছো। তারপর রিতমের দিকে তাকিয়ে বলল, শোনো, আজকে আর শিফ্ট নিতে যেয়ো না। রেস্ট করো। চা বানিয়ে খাও কাশি হবে না, মাথা ব্যাথা কমে যাবে। শিফ্ট না করলে টাকা কামাবো কিভাবে? তোমরা কি খাবে। না খেয়ে থাকবো। কয়েক দিন না খেলে কিছু হবে না। হঠাৎ গম্ভীর হয়ে গেছে মধুমিতা। রিতমের জন্য খুব মন খারাপ লাগছিলো ওর, রাশভারী কন্ঠে বলল, শুয়ে থাকতে বলেছি শুয়ে থাকবে। অন্যথা যেন না হয়। আমার কথা বাদ দাও, মিতা। তারপর কয়েক মুহূর্ত মৌন থেকে রিতম কি যেন ভাবলো, হয়তো কিছু একটা বলতে চাইছিলো, বলা উচিত কি না তা ভাবছিলো হয়তো। পরে জিজ্ঞেস করলো, তোমার কি কিছু হয়েছে, মিতা? মধুমিতা প্রায় চমকে উঠেছিলো। দ্রুত বলল আমার? না। আমার আবার কি হবে। আমি তো ঠিক আছি। তোমার এমনটা মনে হলো কেনো? না এমনি। তোমার মুখটা কেমন শুকনো শুকনো লাগছে। চোখের নিচে কালি। কিছু নিয়ে দুশ্চিন্তা হচ্ছে? আমাকে বলো। কোমল কন্ঠে জিজ্ঞেস করল রিতম। ওর এই মেঘের মতো নরম কন্ঠে হুহু করে উঠলো মধুমিতার বুক। তবে কয়েক সেকেন্ডেই নিজেকে সামলে নিলো ও। বলল, না তেমন কিছু না।  মা আজকে বলছিলো, তোমার নাকি কাজে মন নেই, ভুল করছো পদে পদে। রান্না খারাপ হচ্ছে। তুমি তো সব কিছতেুই খুব পরিপাটি। তোমার মতো ভালো রান্না খুব কম মেয়ে রাঁধতে পারে। মা দুশ্চিন্তা করছিলো। অসুস্থ কিনা জানতে চাইছিলো। সরাসরি আমাকে জিজ্ঞেস করতে পারতেন। আমার কাছে জানতে চাইছিলো শুধু। শোনো যদি ভালো না লাগে, কয়েক দিন রেস্ট করো। বাপের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে পারো কিছু দিন। মা এখনো সমর্থ। একা একা সব কাজ করতে পারবে। আমাদের বাড়ির কথা তুমি জানো রিতম। আমার বাবা মা নেই। বৌদি আমাকে দেখতে পারে না, ওখানে আমি ভালো থাকি না। আর এমনিতে তো আমার কিছু হয় নি। আচ্ছা তাহলে। সামলে থেকো। কাজে যেতে যেয়ো না বলে দিলাম। ওষুধ খেয়ে নিয়ো। ফোন করবো একটু পর। ওকে ম্যাম। নো টেনশন। মধুমিতা হেসে ফোন কেটে দিতে যাচ্ছিলো। রিতম বললো, দাঁড়াও মিতা, কেটো না। কি হলো। কবিতা লিখেছি, শুনবে? আমার জন্য লিখে থাকলে শোনাও। আর কার জন্য লিখবো? শোনাও। তোমার কমলসম নীল আঁখিতে কাজল হতে চাই– অশ্রু এলে রাখবো বেঁধে, যদি বা গড়ায় এক সাথেতে ভেসে যাবো কখনো ছাড়বো না তোমায়। তোমার কমলসম নীল আঁখিতে  কাজল হতে চাই– চোখতো নয় যেন মহামায়া  মুখ মন্ডল ঠিক চন্দ্রকায়া, হাসলে পরে লাগে মধুর  লাগে আমার বুকে, হারিয়ে যাই আবার যখন  তাকাই তোমার চোখে। তোমার কমলসম নীল আঁখিতে  কাজল হতে চাই– থাকবো আমি তোমার পাশে সারা জীবন ভর। যদি তোমার কমলসম নীল আঁখিতে  কাজল হতে পাই। আমি কাজল হতে চাই। মধুমিতা হেসে বলল, ওয়াও। খুব ভালো। আই এম প্রাউড অব ইয়ু, হানি। লাভ ইয়ু। লাভ ইয়ু ঠু। রিতম খুশি হয়ে গেল। ওর প্রয়োজন খু ব সীমিত, মধুমিতার মুখে হাসি আর কয়েকটা ভালো কথা রিতমকে স্বর্গ সুখ এনে দেয়।
Parent