নিয়োগ - অধ্যায় ১০

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-69847-post-6033650.html#pid6033650

🕰️ Posted on September 13, 2025 by ✍️ Manali Basu (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1249 words / 6 min read

Parent
নিয়োগ পর্ব ১০ বসার ঘরের নিস্তব্ধতা ভেঙে সমরেশ মাধবীর দিকে চেয়ে বলে উঠলো, "বিমল এই কিছুক্ষণ হল এসছে। ওর সাথে তোমাকে নিয়েই কথা হচ্ছিল। বিমল চায় যতদিন না তুমি মা হচ্ছ তুমি এখানে আসো।" সমরেশের মুখ থেকে এই কথা শুনে বিমল হাঁ করে তার দিকে তাকালো। সে কখন এই কথাটা বললো? এসব নিয়ে তো সবে আলোচনা হচ্ছিলো, কোনো সিদ্ধান্তে তো আসা হয়নি! তাহলে সমরেশ আগ বাড়িয়ে কেন এই কথাটা বললো? মাধবী একবার বিমলের দিকে তাকালো, সত্যিই কি সে চায় এই নজিরবিহীন ঘটনাপ্রবাহকে নিজ নিয়মে প্রবাহিত হতে দিতে? সে কি জানে তার বন্ধু তার স্ত্রীকে এই এক মিলনেই ভালোবাসতে শুরু করেছে? প্রেম নিবেদন করেছে তাকে! সমরেশ তাদের দুজনকেই বেশি ভাববার সময় না দিয়ে নিজের চাল চালতে শুরু করলো। তার এখন একটাই লক্ষ্য, মাধবীকে নিজের করে পাওয়া। সে বুঝতে চায়না কোনো নীতিগত নিয়ম, কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল, কোনটাই বা প্রতারণা। সে শুধু জানে এই বিশাল পৃথিবীতে সে একা, এবং সেও সবার মতোই এক টুকরো ভালোবাসা ডিজার্ভ করে। তাই মাধবীকে তার চাই, চাই-ই চাই। এই ভেবে সে বিমলকে বললো, "ভাই এবার তুই আয়। আমার আর মাধবীর কাজ এখনো শেষ হয়নি।" তারপর ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললো, "তুই এক কাজ কর, তুই এই ন'টা নাগাদ আয়, এসে ওকে নিয়ে যাস, কেমন।...." বিমল থতমত খেয়ে গেল। সমরেশ এসব কি বলছে? তাও আবার ওর বউয়ের সামনেই!.... মাধবীও পাথরের মতো দাঁড়িয়েছিল। কিচ্ছু বুঝতে পারছিলনা কি ঘটছে তা!" সমরেশ বিমলের হাত ধরে টেনে নিয়ে গিয়ে সদর দরজার সামনে দাঁড়ালো। মাধবী শুনতে না পায় সেরকম নিচু স্বরে বন্ধুকে বললো, "আমি যা করছি তোদের ভালোর জন্যই করছি। আমার উপর একটু বিশ্বাস রাখ। এখন তুই আর মাধবী মুখোমুখি কথা বললে দুজনের জন্যই সেটা সমান অস্বস্তিকর হবে। তার চেয়ে বরং আমাকে একটু সময় দে, ওকে আমি নিজের মতো করে স্বাভাবিক বানিয়েই তোর কাছে পাঠাবো। তুই এখন কথা না বাড়িয়ে যা.....", বলেই সমরেশ বিমলকে হালকা ধাক্কা দিয়ে বাড়ির বাইরে বের করে দিল। তারপর ওর মুখের উপর দরজাটা বন্ধ করে দিল। বিমলের আর কিছু করার ছিলনা তখন। সে ভারী মন নিয়ে মুখ ফিরিয়ে গাড়ির দিকে হাঁটা দিল। ওদিকে সমরেশ দরজা বন্ধ করে মাধবীর দিকে পা বাড়ালো। মাধবী সমরেশের এহেন ব্যবহারে বেজায় রুষ্ট হয়েছিল। সে কিছু শুনতে না পেলেও স্পষ্ট দেখতে পেয়েছিল যে সমরেশ একপ্রকার বিমলকে ধাক্কা মেরে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। যেটা স্বভাবতই তার চোখে যথেষ্ট অশোভনীয় আচরণ বলেই ঠেকেছে। সমরেশ কাছে আসতেই মাধবী তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিল। সমরেশ কারণ জানতে চাইলে সে উত্তর দিল, "আমি দেখলাম তুমি বিমলকে কিভাবে বাড়ি থেকে বের করে দিলে। তোমার এত লোভ? এত খিদে শরীরের? যে তুমি আমার সামনে আমার স্বামীকে এইভাবে অপমান করলে! তুমি কি ভাবছো এরপরও আমি তোমাকে নিজের কাছে ঘেঁষতে দেবো? হুঁ, সে গুড়ে বালি!.. বলেনা, কাঙালকে কখনো শাকের ক্ষেত দেখাতে নেই। তোমাকে শেষ মিলনের প্রতিশ্রুতি দেওয়াটাই আমার চরম ভুল হয়েছে। তুমি নিশ্চই তারই তাড়নায় বেপরোয়া হয়ে আমার স্বামীকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করলে?" সমরেশ দেখলো মাধবী যথেষ্ট রেগে রয়েছে। আজ হয়তো আর তাকে কাছে পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু এমন একটা ব্যবস্থা করতে হবে যাতে মাধবী বাধ্য হয় আবার এই বাড়িতে ফিরে আসতে। তার জন্যে মোক্ষম দাওয়াই ইমোশন্যাল ব্ল্যাকমেইল। "তুমি আমায় এই চিনলে মাধবী? বিমলকে আমি তোমার চেয়েও অনেক আগে থেকে চিনি। সেই আমিই নাকি আমার প্রাণের বন্ধুকে ইচ্ছাকৃতভাবে অপমান করবো? আরে আমি ওকে এই কারণেই তাড়ালাম যাতে তোমার আর ওর মধ্যে কোনো অপ্রীতিকর মুহূর্ত না তৈরী হয়। ও তোমাকে বিছানায় শুয়ে থাকতে দেখেছে। তোমার নিশ্চই মনে আছে তুমি কি পড়ে শুয়েছিলে? আমার হাজার বারণ করা সত্ত্বেও ও তোমার খোঁজে সিঁড়ি দিয়ে উঠে এসছিল আমাদের ঘরে। সেখানে তোমায় নিরুপমার নাইটিতে দেখে ফেলে। এবার বোলোনা আমি তোমাকে তা পড়তে বাধ্য করেছিলাম! তুমি স্বেচ্ছায় পড়েছিলে। আমি বিমলকে সেখান থেকে নিচে নিয়ে এসে বোঝাচ্ছিলাম, যাতে ওর কষ্ট কিছুটা লাঘব হয়। তারপর।....." "তারপর??" "তারপর সে জিজ্ঞাসা করে আমরা কতবার মিলিত হয়েছি?.." "তুমি কি উত্তর দিলে?" "আমি সৎ ভাবে জবাব দিই দুইবার, এবং তৃতীয়বার অসম্পূর্ণ রয়ে গেল তার আকস্মিক আগমণে। তখন সে অবুঝের মতো জানতে চায়, দুইবার যথেষ্ট কিনা নতুন প্রজন্মকে নিয়ে আনতে? আমি বলি সাধারণ জ্ঞান মতে চেষ্টা ততবার বা ততদিন চালিয়ে যাওয়া উচিত যতদিন না নবজাতকের আগমণের নিশ্চিত বার্তা চিকিৎসা বিজ্ঞান জানান দিচ্ছে। ভুললে চলবেনা ব্রজবালা বসু মল্লিক তোমাদের মাত্র এক বছর সময় দিয়েছেন, মাত্র এক বছর। তাই বিমল একপ্রকার রাজি হয় তৃতীয় মিলনের অসম্পূর্ণ কার্য আমাকে দ্বারা সম্পন্ন করতে দিতে। এবং নিমরাজি হয় এই সম্পর্কটাকে আপন নিয়মে বজায় রাখতে। এই বিষয়ে কথা আরো এগোচ্ছিলোই কি তুমি হঠাৎ এসে হাজির। দুজন দুজনাকে দেখে মূর্তির মতো স্থির হয়ে গেলে। তাই ভাবলাম এই অস্বস্তিকর পরিবেশ এড়াতে আপাতত দুজনকে দুজনার থেকে সাময়িক দূরে রাখা প্রয়োজন। সেই উদ্দেশ্যেই একপ্রকার জোর করে বিমলকে এখান থেকে যেতে বললাম। এবার তুমিই বলো কি ঘোর অন্যায়টা করেছি আমি যার জন্য এতটা বিষোদ্গার করলে আমায়?" সমরেশের লম্বা ভাষণ শুনে মাধবী একেবারে চুপ করে গেছিল। সমরেশ নিজের অবস্থান আরো পোক্ত করতে বলে উঠলো, "তুমি আমাকে কাঙাল বললে মাধবী? একজন বিপত্নীক ব্যক্তির একাকীত্বকে এইভাবে খোঁটা দিয়ে কথা বললে? ছিঃ! ছিঃ! এটা তোমার থেকে আশা করিনি মাধবী। তোমার কোলে সন্তান এনে দিতে তোমার কাছে এসছিলাম, আর তুমি আমার এই উপকারের এই প্রতিদান দিলে? ভেবেই মূর্ছা যেতে ইচ্ছা করছে আমার!" মাধবী বুঝতে পারলো সে কি গর্হিত অন্যায় করেছে কাঙাল বিশেষণ প্রয়োগ করে। অতটাও বলা উচিত হয়নি তার। এবার কি করে পরিস্থিতি সামাল দেবে? মাধবী সমরেশের নিকট গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে শান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করতে চাইলো। কিন্তু এবার সমরেশ তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিল, দূরে সরে গেল। মাধবীর কোমল হৃদয় তাতে ব্যথিত হয়ে কেঁদে ফেললো। "আই এম সরি সমরেশ, তুমি আমায় ক্ষমা করো। রাগের মাথায় ওসব বলা উচিত হয়নি আমার। দয়া করে কিছু মনে করোনা। কথা দিচ্ছি তুমি এখন থেকে যা বলবে আমি তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো। আমি বুঝেছি তুমি যা করেছো, বা করবে তা আমাদের মঙ্গলের কথা মাথায় রেখেই করবে। তোমাকে অবিশ্বাস করার আর কোনো কারণ নেই।" মাধবীকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করতেই চেয়েছিল সমরেশ। অনুশোচনা ও অপরাধবোধের কবলে পড়ে মাধবী যাতে সমরেশের আজ্ঞাবহ হয়ে যায়, তার জন্যই এত শব্দের জাল বোনা। এবং তাতে যথেষ্ট সফল সমরেশ সান্যাল। "তাহলে কথা দাও, আমাকে আর কোনোদিন ভুল বুঝবে না? ছেড়ে যাবেনা না বলে...." আবেগপ্রবণ হয়ে মাধবী চোখের জল মুছতে মুছতে ইতিবাচকভাবে মস্তক দোলালো। সমরেশ এগিয়ে এসে মাধবীর বাকি অশ্রু নিজ হাতে মুছে দিয়ে তার ঠোঁটে ঠোঁট বসালো। দুজনে আরো একবার গভীর ওষ্ঠাধর চুম্বনে মত্ত হল। মাধবী জড়িয়ে ধরলো সমরেশকে। সমরেশও তাকে কাছে টেনে নিল, আরো কাছে। প্রায় মিনিট দুয়েক এই ভাবেই বসার ঘরে দাঁড়িয়ে থেকে একে অপরের মুখে মুখ ঢুকিয়ে কামরস নিংড়ে নিতে লাগলো। সমরেশ রণে ভঙ্গ দিয়ে হঠাৎ চুম্বন থামিয়ে দিল। মাধবীর চোখ বন্ধ ছিল, সে চাইছিল আরো গভীর ও দীর্ঘায়িত হোক তাদের এই জিহ্বার যুদ্ধ। কিন্তু সমরেশ তাকে অর্ধ-পিপাসু রাখতে চায়, যাতে বারবার সে নিজের তৃষ্ণা মেটাতে তীর্থের কাক হয়ে তার ঘড়াতেই এসে মুখ ডোবায়। মাধবী চোখ মেলে দেখলো সমরেশ কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাকে নিজের হাত এবং ওষ্ঠ উভয়ের বাঁধন হতে মুক্ত করে দিয়েছে। প্রশ্নভরা মুখ নিয়ে মাধবী সমরেশের দিকে তাকালো। সমরেশ তা বুঝতে পেরেও বললো, "চা খাবে?" "হুহঃ??" "চা.... খাবে?" "এখন?" "এখন নয় তো কখন? সন্ধ্যে তো হয়ে এল।" "তুমি বানাবে?" "আর নয় তো কে আছে এই সান্যাল বাড়িতে রাঁধুনি হিসেবে?" "আজকে আমি চা বানিয়ে দিচ্ছি, তুমি বসো এখানে....", বলেই মাধবী সমরেশকে পাশ কাটিয়ে যেই রান্নাঘরের দিকে যেতে যাবে ওমনি সমরেশ তাকে পিছন থেকে টেনে ধরলো। ধাক্কা খেল তার পৃষ্ঠ সমরেশের বক্ষতলে। কানের কাছে মুখটা নিয়ে এসে সমরেশ বললো, "মনে থাকবে তো আমি যা বলবো, তা মেনে চলবে। তুমি কিন্তু আমায় কথা দিলে! নড়চড় হবেনা তো?" মাধবী খানিক লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে না বলার মাধ্যমে জানান দিল সে কথা রাখবে। সমরেশ তাতে আস্বস্ত হতেই মাধবীর হাত ছেড়ে দিল, এবং বললো চায়ে সে মাত্র এক চামচ চিনি নেয়। মাধবী পিছনে ফিরে তাকিয়ে হেসে তাকে অভিবাদন দিয়ে রান্নাঘর মুখো হল। সমরেশ দাঁড়িয়ে থেকে মাধবীকে রান্নাঘরের দিকে যেতে দেখতে লাগলো। মনে মনে তাকে বাড়ির গৃহিণী হিসেবে কল্পনা করে এক অলীক সুখ প্রাপ্তির আনন্দ নিচ্ছিলো। বাড়ির কর্তার মতো চেয়ারটা টেনে আরাম করে উপবিষ্ট হল। অপেক্ষা করতে থাকলো মাধবীর হাতের বানানো চায়ের স্বাধ আহরণের।
Parent