প্রথম_প্রেম_২ - অধ্যায় ৫

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-52718-post-5097167.html#pid5097167

🕰️ Posted on January 11, 2023 by ✍️ Manjarul Haque (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1083 words / 5 min read

Parent
পর্ব-০৬ লোভ! বড্ড খারাপ এটা।লোভে পড়ে যে মানুষ কত কী করতে পারে তা আজ আংকেল কে না দেখলে বুঝতাম না। মাথায় আপাতত কিছুক্ষণ আগের ঘটনাটায় ঘুরছে। কিছুক্ষণ আগে,,,, ---- আমার আপনাদের সাথে কিছু কথা আছে। তোমরা তো জানোই রাদিফ আর আফরার সম্পর্কটা কত ভালো।জানি ওরা এখন ছোট তবুও আমি চাই ওদের বিয়ে দিতে। " আংকেলের কথায় সবাই অবাকের চরম সীমায় পৌঁছে গেলে।মামা বলে উঠল" ---- তুমি যে এতটা নিচে নেমে যাবে আমি ভাবিনি।তুমি এইসব আফরার ভাগের সম্পত্তির জন্য করছো, তাইনা। আংকেল প্রথমে মামার কথা মানতে নারাজ হলেও পরে উনি স্বীকার করেন।আমার বাবার সম্পত্তির পাশাপাশি আমার মায়ের ভাগের যে সম্পত্তি আমি পায় সেটাও তাদের চায়।আর এজন্য এরা এমন করছে। আংকেল না বাইরের লোক কিন্তু খালামণি কেন আমার সাথে এমন করছে। অনেক কথা কাটাকাটির পর আংকেলরা চলে গেলেন।পরে বাকি সবাই ও চলে গেলো।মামি আমাকে তাদের বাড়ি নিয়ে যেতে চাইল কিন্তু আমি যায়নি। বাসায় ভালো লাগছিল না তাই রাহাদের বাসায় চলে গেলাম। ---------------- রাহার ঘরে বসে আছি।ও কোথায় যেন গেছে।ফোন করেছিলাম, বলল আসছে। রাহার টেবিলে দেখলাম বেশ কিছু গল্পের বই।সেগুলো দেখতে গিয়েই ওখান থেকে একটা ডাইরি নিচে পরে গেলো।ডাইরির ভেতর থেকে কতগুলো ছবি বের হলো।ছবিগুলো নিবির ভাইয়ার ছিল। এখানে নিবির ভাইয়ার ছবি দেখে অবাক হলেও আরো বেশি অবাক হলাম ডাইরির লেখাগুলো পড়ে। পুরো ডাইরি জুড়ে খুব গভীর আবেগের প্রকাশ।সবটাই নিবির ভাইয়াকে ঘিরে। আর এই লেখাটা যে রাহার সেটা বুঝতে অসুবিধা হলোনা।আমি ডাইরির কয়েক পেজ পড়ে ডাইরিটা রেখে দিলাম। ---- আরে আফরা,সরি ইয়ার এতক্ষন ওয়েট করানোর জন্য।তুই আর একটু ওয়েট কর আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি। ---- হুম,যা।  ---- কিরে আফরা,কিছু বলছিস না যে। ---- নিবির ভাইয়াকে এতটা পছন্দ করতি? " আমার কথাশুনে রাহা একদম চুপ করে গেলো ওর উত্তর না পেয়ে আমি আবার বললাম" ---- যখন নিবির ভাইয়াকে এতটাই পছন্দ করিস তাহলে বলিসনি কেন। শুধু আমি তাকে পছন্দ করতাম বলে।তুই এমনটা কী করে করতে পারলি। ---- আফরা,তুই আমাকে প্লিজ ভুল বুঝিস না,প্লিজ।আমি তোকে সবটা,,, ---- আমি কিছু শুনতে চায়না।আমি এতদিন আমার সব কথা তোর সাথে শেয়ার করেছি আর তুই এতবড় একটা কথা আমার থেকে লুকিয়ে গেলি। ---- আমি মানে,,,, ---- আমি কিন্তু তোর জায়গায় থাকলে মোটেও এটা লুকিয়ে রাখতাম না।নিজের ভালোলাগাটা প্রকাশ করতে শিখ, রাহা। আমার কথা শুনে যেন রাহার দেহে প্রাণ ফিরল।ও ভেবেছিল হয়ত আমি এটা জানলে রাগ করব। ও বলল ---- প্রকাশ করেই বা কী হতো।উনার থেকে তো তুই পাত্তা পাসনি আর আমি? ----আমি পায়নি বলে যে তুইও পাবিনা, এটা কেমন কথা। ----থাক বাদ দে এসব।তুই আগে বল তোর আংকেল কেন এসেছিল? " রাহাকে সবটাই খুলে বললাম।" ---- সত্যিরে,বাবা-মা না থাকলে যে দুনিয়া কতটা কঠিন সেটা তোকে না দেখলে বুঝতাম না। আরো কিছুক্ষন রাহাদের বাসায় থাকলাম।তারপর বাড়ির দিকে রওনা হলাম। বেশ খানিকটা রাস্তা আসতেই আমার পথ আটকালো প্রহর।হঠাত উনাকে এখানে দেখে বেশ অবাক হলাম। ---- আপনি এখানে? ---- তোমায় দেখতে এলাম। ---- আপনি প্লিজ আমার পেছনে আসবেন না।রাস্তার মানুষ দেখলে খারাপ ভাববে। ---- সো হোয়াট! আমি মানুষের কথা শুনি না। ---- কিন্তু আমাকে শুনতে হয়। ---- আচ্ছা, বাবা রেগে যাচ্ছো কেন?যাবো না তোমার সাথে।ওকে।তুমি সাবধানে বাসায় যাও। ---- হুম। ------------------ বাসায় এসে দেখলাম পুরো বাসাটা একদম অন্ধকার। আমি বুঝলাম না এমন কেন? দুপা এগোতেই সব লাইট একসাথে জ্বলে উঠল।সবাই একসাথে বলে উঠল" হ্যাপি বার্থডে, আফরা।"  আনন্দে আমার চোখ দিয়ে পানি বেরিয়ে গেলো।  সবাই আছে এখানে এমনকি রাহা আর প্রহরও। এরা কখন এলো।আর আমার আগেই বা কী করে এলো? ভাইয়া আমার দিকে এগিয়ে এসে বলল ---- আজ আর কাঁদিস না বনু।চল কেকটা কাটবি। বাবা- মা থাকতে তারা সব সময় আমার বার্থডে পালন করতেন।তারা চলে যাওয়ার পরেও এমন একটা সারপ্রাইজ পাবো ভাবিনি।আজ যে আমার জন্মদিন সেটা আমার মাথায় ছিলনা।মামা- মামি এমনকি প্রহরের মা- বাবাও ছিলেন।ভাইয়া নাকি তাদের ইনভাইট করেছিল।প্রহরের বাবা ভারি রাসিক মানুষ।উনি একাই সবাইকে মাতিয়ে রাখলেন। সবাই মিলে একসাথে অনেক মজা করলাম। গত একবছর পর আজ প্রাণখুলে হাসলাম। নিবির ভাইয়া আমার দিকে এগিয়ে এসে বলল ---- এই সবকিছু কিন্তু প্রহরের জন্য হয়েছে।সবটাই ওর প্ল্যান ছিল। ---- তাহলে উনি রাস্তায় কী করছিলেন? ---- আমাদের সব প্রস্তুতি নেওয়ার আগেই তুই চলে আসতি তাই ও তোকে আটকাতে গেছিল। --- ও। নিবির ভাইয়া আর প্রহরের মাঝে সব ঝামেলা মিটে গেছে দেখে ভালো লাগল।নিবির ভাইয়া মানুষটা ওতটাও খারাপ না।যদি রাহা আর নিবির ভাইয়া এক হতো তাহলে হয়ত সব ঝামেলা মিটে যেতো। ---------------- রাতে শুয়ে শুয়ে তখনকার কথা ভাবছিলাম।অনেকদিন পরে যেন একটু স্বস্তি পেয়েছি আজ।ভাবলাম এতকিছুর জন্য প্রহরকে আমার একটা ধন্যবাদ দেওয়া উচিত। তাই উনাকে ফোন করলাম। ---- কী ব্যাপার,সেদিন তো খুব বললে আর ফোন করবেনা তাহলে ---- আপনাকে ফোন করাটাই ভুল হয়েছে আমার। ---- সরি, রাগ করোনা।কেন ফোন করেছে বলো। ---- ধন্যবাদ।অনেকগুলো ধন্যবাদ।আমাকে এত সুন্দর একটা সন্ধ্যা উপহার দেওয়ার জন্য। ---- শুধু এটাতেই এত খুশি।তোমার জন্য তো আরো অনেক সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে,ডিয়ার। ---- মানে? ---- এত মানে বুঝতে হবেনা। অনেক রাত হয়েছে এখন ঘুমাও। ---- আজ আর কথা বলবেন না। ---- নাহ।তোমার সাথে যত কথা বলব তত তোমার মায়ায় জড়িয়ে যাবো।এমনিতেই তোমার মায়ায় ডুবে আছি।এবার নির্ঘাত মরে যাবো। "তোমার ঐ কথার মায়ায় পড়লে যে আমার আর নিস্তার নেই।" প্রহর ফোনটা কেটে দিলো।অন্যদিন তো কথা বলার জন্য পাগল হয়ে থাকে। আজ এত তাড়াতাড়ি কেটে দিলো। আমি আর এটা নিয়ে বেশি মাথা না ঘামিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। --------------- সকালে ফ্রেশ হয়ে বাইরে গিয়ে দেখলাম ভাইয়ার ঘরে কিছু ভাঙার আওয়াজ হলো।  আমি দ্রুত ভাইয়ার ঘরে ঢুকতে গেলেই দরজার সামনে থাকা কাঁচের টুকরোয় লেগে পা কেটে যায়।আমি মৃদ্যু আর্তনাদ করে উঠি।সামনে তাকিয়ে দেখি পুরো ঘরে সবকিছু ভেঙেচুরে পরে আছে। আমার চিৎকার শুনে ভাইয়া আমার দিকে এগিয়ে এলো ---- কী হয়েছে, আফরা।একটু দেখে চলবি তো,কতটা পা কেটে গেছে। ভাইয়া আমাকে ঘরে নিয়ে করে সুন্দর করে ড্রেসিং করে দিলো।ভাইয়ার মুখ দেখেই বুঝলাম সে খুব রেগে আছে।সাথে অনেক টেনশনেও আছে। ভাইয়া হসপিটালে ফোন করে বলে দিলো যে আজ সে যাবেনা। আজ কাজের মেয়েটাও আসেনি।তাই ভাইয়া রান্না করবে।ভাইয়া রান্নাবান্না মোটামুটি পারে। ভাইয়া আমার জন্য আমার পছন্দের আলুর পরোটা বানালো।দুজনেই একসাথে নাস্তা করে কিছুক্ষন আড্ডা দিলাম।ধীরে ধীরে যেন সেই আগের দিনগুলো ফিরে পাচ্ছিলাম। সারাদিন ভাইয়া বাসায় ছিল।আমাকে তো একদম বিছানা থেকে নামতে নিষেধ করে দিয়েছে।আমিও একজায়গায় বসে বসে বোর হচ্ছিলাম। বিকেলের দিকে হসপিটাল থেকে ভাইয়ার একটা কল এলো।খুব নাকি ইমার্জেন্সি আছে।ভাইয়া যেতে না চাইলেও আমি জোর করে পাঠিয়ে দিলাম। সন্ধ্যা নেমে এসেছে।মাগরিবের আজানও দিয়ে দিয়েছে। কিছুক্ষন পরেই কারেন্ট চলে গেলো।এখানে তেমন লোডশেডিং হয়না।হঠাত মনে হলো দরজার কাছে কেউ দাড়িয়ে আছে। ---- কে ওখানে? কে? কেউ সাড়া দিলো না।ছায়ামুর্তিটা আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগল। আমি বিছানা থেকে নেমে সেদিকে এগিয়ে যেতে নিলেই স্লিপ করে পড়ে গেলাম।প্রচন্ড ব্যাথা পেলাম পায়ে।আবার ব্লিডিং শুরু হয়েছে।জানালা দিয়ে দূরের আবছা আলো আসছে কিন্তু সেটা দিয়ে কিছু ভালোমতো বোঝা যাচ্ছেনা।মানুষটা ক্রমেই আমার দিকে এগিয়ে আসছে। আমি ওঠার শক্তিও পাচ্ছিনা।এবার যেন প্রচন্ড ভয় হচ্ছে। আমি অনেক কষ্টে উঠে দাঁড়াতে গিয়েও পড়ে গেলাম।অসহ্য যন্ত্রনায় চোখ- মুখ খিঁচে আছি।এবার লোকটা আমার একদম কাছাকাছি চলে এলো।আবছা বলোয় লোকটাকে দেখে আমার কলিজার পানি শুকিয়ে গেলো।জ্ঞান হারানোর উপক্রম হলো। চোখের সামনে সবকিছু অন্ধকার হয়ে আসার আগেই অস্ফুষ্ট সুরে বললাম " নিহান " ( চলবে)
Parent