রক্তমুখী নীলা (সমাপ্ত) - অধ্যায় ২৪

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-7391-post-3495350.html#pid3495350

🕰️ Posted on July 15, 2021 by ✍️ HASIR RAJA 19 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 871 words / 4 min read

Parent
সব যেন কেমন ঘেঁটে গেছে। একদিকে যেমন মুক্তর মায়ের আসল পরিচয় জানা অন্যদিকে ওই নিলার আমার জীবনের বদলে মালিকানা পরিবর্তন এ কি অদ্ভুত ব্যাপার। ভাবতে ভাবতে মাথা গরম হয়ে গেল।  মা মিত্রা বাবা এরা কোথায় কে জানে, আর মোক্তার দাদু। আমায় বাঁচাতে গিয়ে নিজের প্রাণ দিলেন। খুব ভালো মনের মানুষ উনি এই দুদিনে ওনাকে দেখে এটুকু বুঝেছি উনি নিজের জীবন দিয়ে দেবে কিন্তু কারোর ক্ষতি চাইবেনা। নিশ্চয়ই ওই মাগীটা ছলে বলে ওর কাছ থেকে কথা আদায় করেছে।  প্রশ্ন কিলবিল করছে মাথার মধ্যে কত প্রশ্ন। কোনটার উত্তরই সঠিক ভাবে মিলছেনা। সব জায়গায় যেন অনেকটা করে ফাঁক। আমার কাকা বলছে ওই মাগীটা ওর বউ তবে মুক্ত, ওর আসল বাবা কে? আর আর ওই মাসি ওই বা কে? মুক্ত কি এদের দলেই, না এ সম্ভবই নয়। ওর চোখ মুখের সরলতা ওকে চিনিয়ে দেবে ও কেমন।  বেশ কিছুক্ষন কেটে গেছে আবোল তাবোল ভাবতে ভাবতে। শেষে মাথা গরম হয়ে উঠলো। এখান থেকে বের হতে হবে। যে কোন প্রকারেই আমায় এখান থেকে বেরোতে হবে। হাতের কব্জিদুটো মুছড়ে ধরলাম না বাঁধন এভাবে খোলা যাবেনা। তখন থেকে উবুর হয়ে শুয়ে আছি। একবার যদি হাতটাকে সামনে আনা যায় তাহলে দাঁত দিয়ে খোলা সম্ভব। গড়িয়ে গিয়ে সোজা হয়ে শুলাম। পা বাঁধা তাই সহজ ভাবে ওঠা সম্ভব নয়। ক্যারাটের বিদ্যা প্রয়োগ করতে হবে।  সোজা ভাবে শুয়ে পা দুটো ওপরে তুলে মাথার দিকে আনলাম। দ্রুতগতিতে আবার নীচের দিকে নামিয়ে এনে সেইএকইসঙ্গে পিঠের নীচে বাঁধা হাতে মেঝের ওপর চাপ দিয়ে শূন্যে লাফিয়ে উঠে সোজা ভাবে দাঁড়িয়ে গেলাম। এবার হাতটা সামনে আনার পালা। শূন্যে লাফিয়ে পায়ের পাতা পাছায় ঠেকিয়ে কোমর বেঁকিয়ে পায়ের তলা দিয়ে হাত বের করে নিলাম। চটপট দাঁত দিয়ে হাতের বাঁধন খুলে পায়ের বাঁধনটাও খুলে ফেললাম। আহঃ এবার আমি মুক্ত।  আগে দেখতে হবে কোথায় আছি আমি। ঘরটা কাঠের একটাই দরজা একটাই জানালা। দরজাটা কাঠের হলেও জানালাটা কাঁচের কিন্তু সেটা এত ছোট যে মানুষও গলতে পারবে না। ওপরে তাকিয়ে দেখি টালির শেড কিন্তু খুবই উঁচু। ওখান দিয়ে বের হওয়া অসম্ভব। ভাস্কো ভাস্কো ভাস্কো ভাস্কো অনেক লোকের একটানা কন্ঠস্বর আবার শোনা গেলো। ভাস্কোটা কী? কেউ বলছে ভাস্কো কেউ বাস্কো। কৌতুহলে জানালার কাছে এগিয়ে গেলাম। জানালার কাঁচ ঘোলা ভিতর থেকে বাইরের দৃশ্য দেখা প্রায় অসম্ভব। কাঁচ ভাঙতে হবে। কিন্তু আওয়াজে যদি কেউ চলে আসে তাহলে হয়তো আরো সমস্যা হবে। দরজার দিকে চলে আসলাম। কাঠের ওপর কান পেতে শোনার চেষ্টা করলাম বাইরের শব্দ। কোন শব্দই শোনা যাচ্ছেনা দরজার নীচে চুলের মত একটা ফাঁক সেখানে কান দিয়েও কিছু শুনতে পেলাম না। আবার জানালার কাছে চলে এলাম হাতদিয়ে কাঁচের ওপর চাপ দিতে লাগলাম, না কোনজায়গাতেই আলগা নেই। দ্রুত গেঞ্জিটা খুলে ফেললাম হাতের মধ্যে পেঁচিয়ে মারলাম এক ঘুষি। ঝনঝন শব্দে ভেঙে পড়লো কাঁচটা। বাইরের কন্ঠস্বর আরও প্রকট হয়ে উঠল। ভাস্কো ভাস্কো ভাস্কো ভাস্কো ভাস্কো। উঁকি মেরে দেখলাম বাইরে সব গগনচুম্বী অট্টালিকা।সব বাড়িরই মাথায় টালির শেড। আর বাড়িগুলোও অন্যরকম। কলকাতার সাধারণ বাড়ির থেকে আলাদা। তবে কি আমি কলকাতায় নেই? এটা কোন জায়গা?  আবার উঁকি মারলাম। কাছেই একটা বাসস্ট্যান্ড, সেখানে সারি সারি বাস দাঁড়িয়ে আছে। কন্ডাক্টররা বাসের পিঠ চাপড়ে অনবরত ডেকে চলেছে ভাস্কো ভাস্কো ভাস্কো ভাস্কো ...। বাসের মাথার দিকে চোখ পরতেই চোখ ছানাবড়া হয়ে গেলো। বাসের মাথায় ইংরেজিতে লেখা আছে ভাস্কো দা গামা। তার মানে? তার মানে কী! আমি কি তবে গোয়ায়! এই মৃত্যুপুরীতে থেকেও আনন্দের উচ্ছাসে বুকের ভেতরটা ছলাত করে উঠলো। যেভাবেই হোক মুক্তি পেতেই হবে। আমার স্বপ্নের গোয়ায় পাহাড়ে সমুদ্রে অবাধে ঘুরবো। কিন্তু আমি এখন কোথায়? বাস তো যাচ্ছে ভাস্কোয়। এটা তো ভাস্কো নয়। জানালাটা এতই ছোট যে ভালো করে চারপাশটা দেখা যায়না। অনেক কষ্টে ঘার বেঁকিয়ে দেখলাম এক জায়গায় বড় বড় হরফে লেখা আছে পানাজি। অর্থাৎ গোয়ার রাজধানী। উফঃ আমি ভাবতেই পারছিনা যাক এরা এই একটা কাজ অন্তত ভালো করেছে। হঠাৎ দরজার বাইরে লোকের গলার শব্দে চমকে উঠলাম। দ্রুত আবার যেখানে শুয়েছিলাম সেখানে এসে চটপট পায়ের দড়িটা আলগা করে বেঁধে হাতটাকে পিছনে নিয়ে শুয়ে পড়লাম। চোখ দুটো বুঁজিয়ে এমন ভাব করলাম যেন আমি ঘুমাচ্ছি না হয় অজ্ঞান হয়ে আছি। খটখট শব্দে বুঝলাম কেউ দরজা খুলে ঘরে প্রবেশ করলো। চোখ পিটপিটিয়ে দেখলাম দুজন লোক অদ্ভুত ভাষায় কথা বলতে বলতে ভিতরে ঢুকে এলো। একজনের হাতে একটা থালা, ওটা নীচে নামিয়ে আমায় ডাকতে যাবে ওদের জানালার দিকে চোখ পড়লো দ্রুত ওরা জানালার কাছে চলে গেলো। উত্তেজিত ভাবে দুজনে অদ্ভুত ভাষায় কথা বলছে। একবিন্দুও কিছু বুঝতে পারলাম না। একজন আমার দিকে এগিয়ে এসে নীচু হয়ে যেই আমায় পরীক্ষা করতে যাবে ঠিক সেই মুহুর্তে হাত দিয়ে ওর গলা পেঁচিয়ে ধরলাম অন্য লোকটি এগিয়ে এসে ওকে ছাড়াবার চেষ্টা করতে গেলো। হাতের বজ্রআঁটুনি আর একটু শক্ত করতেই লোকটা নেতিয়ে পড়লো। ওকে ছেড়ে দিয়েই উঠে দাঁড়ালাম। অন্যজন হতভম্ব হয়ে গেছে। হাতটা মুঠো করে এগিয়ে এলো আমার কাছে। পিছনে সরতে গিয়ে ঘটলো বিপত্তি, পায়ে আলগা দড়ি বাঁধা থাকাতে টাল সামলাতে না পেরে পরে গেলাম। লোকটা কোন সুযোগ না দিয়ে আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পরলো। মুখে পেটে অনবরত ঘুসি এসে আছড়ে পড়লো। একটু ফাঁক পেতেই দুহাতদিয়ে ঠেলে ফেলে দিলাম লোকটাকে, দ্রুত পায়ের দড়িটা খুলে ফেলে উঠে দাঁড়ালাম। শক্ত হয়ে দাঁড়ালাম, লোকটা এগিয়ে আসতেই মুখে একটা ঘুষি মারলাম নাকে হাত চাপা দিলো লোকটা। গলগল করে রক্ত বেরোচ্ছে নাক দিয়ে পরোয়া না করে আবার এগিয়ে এলো। এবার সত্যি আমায় আর সুযোগ দিলে চলবেনা। বিদ্যুতের চেয়েও দ্রুত থ্রী পান্চ কম্বো চালিয়ে দিলাম। লোকটা কলাগাছের মত পড়ে গেলো। প্রচন্ড খিদে পেয়েছে ঘর থেকে বেরোতে গিয়ে থালার দিকে চোখ পরতেই দেখলাম ওতে কিছু খাবার রয়েছে,চটপট খেয়ে ফেললাম। এবার বেরোনোর পালা। সন্তর্পনে বাইরে এসে খেয়াল করলাম এটা একটা হোটেল জাতীয়। তিনতলার একদম শেষের ঘরটিতে আমায় রাখা হয়েছিলো। নিস্তব্ধে দ্রুত চারিদিকে চেয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চললাম। সারি সারি ঘরের কয়েকটা ঘর পেরিয়ে আসতেই চোখে পড়লো ওদের।
Parent