রক্তমুখী নীলা (সমাপ্ত) - অধ্যায় ৮

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-7391-post-3304193.html#pid3304193

🕰️ Posted on May 17, 2021 by ✍️ HASIR RAJA 19 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 826 words / 4 min read

Parent
কতক্ষন যে ওভাবে ছিলাম জানি না। মাথার ভিতরটা ভোঁ ভোঁ করছে সব কেমন জট পাকিয়ে গেছে। আর কিছু ভাবতে ভালো লাগছেনা। শুধু চিন্তা হচ্ছে ম্যাডাম আর দিদার জন্য। দিদার অবস্থা সত্যি খুব খারাপ ছিলো হারামীগুলো যেভাবে আঘাত করেছিলো তাতে....  বেঁচে আছেন তো? কোথায় আছে ওরা,আমার মত কি ওদেরো নিয়ে এসেছে ? কিন্তু ওই লোকটার কথা শুনে ত তা মনে হলো না। আমার সাথে শত্রুতা হয়তো আমাকেই শুধু নিয়ে এসেছে। কিন্তু আছি কোথায়?এই ঘর দেখে ত কিছুই অনুমান করা যাচ্ছেনা। বাবা মার কথা মনে পড়লো কি করছে ওনারা এখন,নিশ্চয়ই চিন্তা করছে। খোঁজাখুঁজিও করছে হয়তো। মায়ের মুখটা মনে পড়লো। বুকের ভিতরটা মোচড় দিয়ে উঠলো। বাবা মাকে আমি সত্যি খুব ভালোবাসি এর আগে এতটা টান আমি অনুভব করিনি কোনদিন। আসলে বাবা মা আমায় জীবনে কোনদিন কোন সমস্যায় পরতে দেয়নি। কিন্তু আজ ? আজ কি পাবো উদ্ধার এই শয়তানের কাছ থেকে। মেরে ফেলবে আমায় ওই লোকটা আর কোনদিন দেখতে পাবো না বাবা মাকে সবকিছুই হারিয়ে গেলো জীবন থেকে। এবার কি তবে শুধু মৃত্যুর প্রহর গোণার পালা। সম্ভবত একটু তন্দ্রা মত এসে গেছিলো দরজা খোলার শব্দে এক ঝটকায় সেটা চলে গেলো। একজন ভিতরে ঢুকে সোজা আমার সামনে এসে দাঁড়ালো হাতে একটা থালা। থালাটা মেঝে রেখে পিছন থেকে আমার হাতটা খুলে দিলো। হাতটা টনটন করছে এতক্ষন ওভাবে বাঁধা ছিলো সামনে এনে কবজি গুলো ঘুরিয়ে একটু ইজি করে নিলাম। খাবার আর কোন ইচ্ছা নেই আমার। মাথার মধ্যে হঠাৎ একটা বুদ্ধি খেলে গেলো। পালাতে হবে আমায়। যেমন করে হোক পালাতে হবে। আমি কাপুরুষ নই ভীতু কাপুরুষদের মত বসে বসে মৃত্যুর প্রহর গোণা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। মুখটা আবার নীচু করে নিলাম। খেলাতে হবে লোকটাকে। -- এই খেয়ে নে।  কিছুই বললাম না -- কিরে শুনতে পাচ্ছিস না খেয়ে নে। এবার একটু জোরে বলে উঠলো লোকটা। আমার কোন হেলদোল দেখালাম না। সজোরে একটা চাপড় আমার গালে এসে পড়লো। চুল ধরে টেনে মাথাটাকে তুলে বলে উঠলো শালা হারামী কথা কানে যাচ্ছেনা। চোখ মেরে দিলো লোকটা। আমি অবাক হয়ে গেলাম। লোকটা চোখ মারলো আমি ঠিক দেখলাম ত? লোকটা চোখের ইশারায় থালার দিকে দেখতে বলছে।  থালার দিকে তাকালাম কিছু খাবার রয়েছে তাতে। দুটো রুটি একটু সবজি আর একটা কাগজ। চমকে লোকটার দিকে তাকালাম।ঠিক লোক বলা যায়না কেননা ওকে অনেকটা আমার বয়সী লাগছে। ছেলেটা চোখের ইশারায় ওর পিছন দিকে তাকাতে বললো। দেখলাম দরজার ওপর ব্যালকনিতে একজন লোক দাঁড়িয়ে আছে। আবার মুখটা ছেলেটার দিকে ফেরালাম। ছেলেটা আমায় মুখটা কুঁচকে একটা ভঙ্গী করলো যেটা কারোর কাছে ক্ষমা চাইবার মত তারপর সজোরে একটা ঘুসি মারলো আমার মুখে। ওপর থেকে এবার কথা ভেসে এলো ছেলেটার উদ্দেশ্যে -- খানকির ছেলের রস হয়েছে ছেড়ে দে, বোকাচোদাকে রবীনদা এলে বুঝে নেবে। বেরিয়ে আয় তুই।  লোকটা আর দাঁড়ালো না পিছনের দরজা দিয়ে ভিতরে চলে গেলো। খট করে দরজা বন্ধ হয়ে গেলো। এবার কাগজটা তুলে পড়লাম।  " বিনা বাক্যব্যায়ে সামনের ছেলেটার সাথে বেরিয়ে আসো " বুকের ভিতর হাতুড়ি পেটা শুরু হয়ে গেলো। তবে কি সত্যি মুক্তি পাবো? কে এই ছেলেটি,কোথা থেকে এসেছে সেসব তখন মাথায় নেই। এখান থেকে বেরোতে হবে যে কোন প্রকারে। কৃমিকীটের মত নির্জীব হয়ে থেকে আমি মরতে পারবো না। লড়াই করে বাঁচার আশাটা আমার কাছে অনেক ভালো।  চমকে তাকালাম ছেলেটির দিকে। মিটিমিটি হাসছে। হাতের ইশারায় শান্ত থাকতে নির্দেশ দিলো তারপর ঠৌঁটে আঙুল ঠেকিয়ে চুপ করতে বললো। শান্ত আমি এমনিতেই আছি। বিপদের সময় রুখে দাঁড়ানোর জন্য নিজেকে শান্ত রাখার মত আর কোন ভালো হাতিয়ার হয় না। আমার ক্ষেত্রে সেটা অনেক দ্রুত কাজ করে। হাতের দড়িটা আগেই খুলে দিয়েছিলো এখন দ্রুত পায়ের দড়িটা খুলে দিলো। সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়ালাম। ছেলেটা দরজার দিকে এগিয়ে গেলো হাতের ইশারায় থামতে বললো থেমে গেলাম দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে একবার আশপাশটা দেখে নিলো হাতের ইশারায় বেরিয়ে আসতে বললো। দরজা দিয়ে বেরিয়েই সোজা একটা করিডোর দিয়ে এগিয়ে চললাম অত্যন্ত নিশ্চুপে কিন্তু যত দ্রুত সম্ভব। বেশ লম্বা করিডোর পার হয়ে এসে বাঁদিকে বাঁক নিলাম সামনে সিড়ি ওপর থেকে দুজন লোক কথা বলতে বলতে নেমে আসছে সিড়ি দিয়ে। আমি দ্রুত আড়ালে চলে এলাম। ছেলেটি মুখ ঘুরিয়ে দেখে একবার হাঁসলো সম্ভবত নির্দেশ দেওয়ার আগেই কাজ করলে যেমন হয়। সে এগিয়ে গেলো সামনে। লোকদুটো নীচে নেমে ছেলেটির সাথে কথা বলতে লাগলো। একবার দ্রুত উঁকি মেরে দেখে নিলাম আমার দিকেই পিঠ করে দাঁড়িয়ে আছে দুজন। ওদের সামনে সিড়ির গোড়ায় ছেলেটি দাঁড়িয়ে আছে। বেরিয়ে এলাম আড়াল থেকে, পা টিপে টিপে ওদের কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। যে একটু আমার সামনে তাকেই আগে সাবাড় করবো, নিমেষের মধ্যে বাঁ হাতটা এগিয়ে নিয়ে গিয়ে লোকটার মুখ চেপে ধরলাম সাথে সাথে ডান পা দিয়ে হাঁটুর পিছনে লাথি মারলাম একটু নীচের দিকে ঝুঁকতেই প্রচন্ড জোরে ঘারে একটা ঘুসি মারলাম। নির্জীব শরীরটা ফেলে দিয়েই অন্য লোকটির দিকে তাকালাম লোকটিকে ছেলেটি কাবু করে এনেছে হাত দিয়ে পুরো গলা পেঁচিয়ে ধরেছে। হাত দিয়ে প্রাণপন ছাড়াবার চেষ্টা করছে লোকটি। আমি এগিয়ে গিয়ে সজোরে নাকে একটা ঘুষি মারলাম লোকটার। হাতের বাঁধন খুলে দিলো ছেলেটি তারপর সিড়ি ধরে এগিয়ে চললো। সিড়ি দিয়ে উঠেই লক্ষ করলাম এটাও একটা বেশ লম্বা করিডোর যেটার শেষ প্রান্ত ডানদিকে বাঁক নিয়েছে, এগিয়ে চললাম সেই করিডোর দিয়ে। ডানদিকে বাঁক ঘুরতেই আবার সিড়ি দুজনে চুপিসাড়ে উঠতে লাগলাম সেই সিড়ি দিয়ে। ওপর থেকে গানের শব্দ ভেসে আসছে। সিঁড়ির মাথার কাছে এসে ছেলেটি হাতের ইশারায় আমায় দাঁড়াতে বললো। উঁকি মেরে দেখলাম বেশ বড়ো একটা ঘরে এসে দাঁড়িয়েছি। পাঁচজন লোক ঘরের মধ্যে উপস্থিত। একটু ভাবনায় পড়লাম এদের এড়িয়ে সামনে এগোব কি করে ?
Parent