সৌরভ - অধ্যায় ৮

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-41647-post-4839460.html#pid4839460

🕰️ Posted on June 13, 2022 by ✍️ cuck son (Profile)

🏷️ Tags:
📖 2346 words / 11 min read

Parent
আমার রেগুলার ডাক্তার ডা. মিজানুর সাহেব গিয়েছেন দেশের বাইরে , কি জানি একটা কনফারেন্স এ জয়েন করতে । তাই বিকল্প একজনের হাতে আমাকে সঁপে দিয়ে গেছেন । এখন আমি তার সামনেই শুয়ে আছি , উনি নানা রকম টেস্ট দিয়েছেন সেগুলি মনোযোগ সহকারে দেখছেন । অল্প বয়স্ক ডাক্তার তাই বুঝি কাজে মনোযোগ একটু বেশি । ডাক্তার মিজানুর এতো গুরুত্ব সহকারে রিপোর্ট দেখেন না । এই ডাক্তার দেখছে , বার বার ভ্রু কুঞ্চিত হয়ে উঠছে উনার ।   একবার ডাক্তার সাহেব এর ভ্রু কুঞ্চিত হয় আর আমার বুকের ভেতর ধড়াস করে ওঠে । মনে হয় এই বুঝি বলবেন কি কি খাওয়ার ইচ্ছে হয় খেয়ে নিন , আর ছয় মাস জীবিত আছেন আপনি । তার পর আপনার ডাক চলে আসবে । আশ্চর্য ব্যাপার কত ঝামেলার এই জীবন , তার উপর আমার জীবনের তো কোন ছিরি নেই । তারপর ও মৃত্যু কে কত ভয় পাই আমরা । না না ভুল বললাম হয়ত , মৃত্যুকে আমরা মনে হয় ভয় পাই না । যে অনুভুতি আমাদের মাঝে কাজে করে সেটা সম্ভবত অতৃপ্তি । সব কিছু না পাওয়ার ক্ষেদ । আমাদের কাছে মনে হয় হয়ত আরও কিছুদিন বেঁচে থাকলে আরও কিছু পেতে পারতাম ।   আচ্ছা? একজন সহায় সম্বলহীন লোকের ও কি এমন মনে হয় ? তার মন ও মৃত্যুর কথা শুনলে অত্রিপ্ততায় ভরে ওঠে ? হয়ত হয়, কারন মানুষ সবচেয়ে আশাবাদী প্রানি , দুনিয়ার সবচেয়ে নিরাশাবাদি মানুষটিও অন্য প্রানিদের চেয়ে আশাবাদী । সেও আশায় থাকে হয়ত একদিন অবস্থার পরিবর্তন হবে । হয়ত ভাব দেখায় সে আশা ছেড়ে দিয়েছে , কিন্তু আমি নিশ্চিত সে আশা ছারেনি , ছাড়া সম্ভব না এটা মানুষের ক্ষমতার বাইরে । আমার বিশ্বাস দুনিয়ার সবচেয়ে হতাশ বেক্তিটিও ঘুমের মাঝে সপ্ন দেখে, এক রোদে ঝলমলে সকালে সে ঘুম থেকে উঠে দেখছে ওনাকে ঘিরে প্রচুর খুশির অনু পরমাণু ভেসে বেড়াচ্ছে । এতো খুশি দেখে সে যখন হতো বিহ্বল ঠিক তখন তার সবচেয়ে আপন মানুষটি এসে বলে , কি? বোকার মত কি দেখছো? তখন সে জিজ্ঞাস করে এতো খুশি কেনো আমার চারিদিকে ? তখন তার আপন মানুষটি বলে , বোকা নাকি , যখন কোন সমস্যা না থাকবে দুঃখ না থাকবে , তখন চারিদিকে কি থাকবে ? লোকটি বোকার মত বলবে, কি?  তার প্রিয় মানুষটি হেসে লুটোপুটি খাবে , বলবে আরে বোকা তখন চারিদিকে সুধু খুশি থাকবে খুশি হি হি হি হি ।   “মি. সৌরভ” ডাক্তার এর ডাকে আমার আবোলতাবোল চিন্তার ইতি ঘটলো । আমি ডাক্তার এর দিকে তাকালাম  “আপনি তো অনেক ইম্প্রুভ করেছেন” হাঁসি মুখে আমার দিকে তাকিয়ে বলল ইয়ং ডাক্তার । মনে মনে ভাবলাম বলে কি এই লোক , টানা তিনদিন অজ্ঞান ছিলাম , মেজো আপা এসে দরজা ভেঙ্গে উদ্ধার করেছে আমাকে । আর এই লোক বলে কিনা আমার ইমপ্রুভমেন্ট হয়েছে । উনি কি সত্যি সত্যি ডাক্তার নাকি সে বিষয়ে আমার সন্দেহ হতে লাগলো ।   “হ্যাঁ রিপোর্ট তাই বলছে , এবং সুধু ইমপ্রুভমেন্ট বললে ভুল হবে ,মিরাকল হয়েছে বলতে হবে”   ডাক্তার এর কথা আমার বিশ্বাস হলো , কারন ডাক্তার কে উত্তেজিত মনে হচ্ছে । হয়ত নতুন ডাক্তার এমন রোগির ভালো অবস্থা দেখে নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারছে না । ডাক্তারদের এমন হওয়া ঠিক না , ওদের উচিৎ আবেগহীন হওয়া , যদি সম্ভব না হয় অন্তত ভালো অভিনয় জানা । আচ্ছা ডাক্তারি পড়ার কোর্সে যদি একটা অভিনয় কোর্স ঢুকিয়ে দেয়া যায় তাহলে কেমন হয়?   কি সব আবোলতাবোল ভাবছি , হয়ত খুশির সংবাদ শুনে আমিও উত্তেজিত, আনন্দিত । যাক এতো আনন্দিত হয়ে লাভ নেই , আমার চারিদিক হয়ত এখনো খুশির ধুলো দিয়ে ভরে যায়নি , যদি জেতো তাহলে এই আনন্দ সংবাদ পেতাম কোন প্রিয়জন এর কাছে অপরিচিত কচি ডাক্তার এর কাছ থেকে নয় । তাই আনন্দ টা কে চাপা দিলাম । বললাম “ তাহলে যে গত তিনদিন অজ্ঞান ছিলাম?” একটু চিন্তায় পরে গেলো ডাক্তার সাহেব , কিছুক্ষন ভাবল , তারপর জিজ্ঞাস করলো , কোন কারনে কি আপনি উত্তেজিত হয়েছিলেন?   না বলতে গিয়েও থেকে গেলাম , হঠাত মনে পরে গেলো , হ্যাঁ উত্তেজিত ছিলাম আমি । প্রচণ্ড উত্তেজিত জীবনে মনে হয় এতো উত্তেজনা হয়নি আমার । তবে এই উত্তেজনা অন্য ধরনের উত্তেজনা , এটা অক্ষমতার উত্তেজনা ।   ঐযে বড় আপার বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর তিতলির বান্ধবীর সাথে দেখা । প্রথমে ইচ্ছে হয়েছিলো কেটে পরি , কিন্তু মেয়েটির নাম জানা হয়নি এমন একটা বাজে অজুহাতে থেকে গিয়েছিলাম । মেয়েটি যার নাম আরশি , দাড়িয়ে দাড়িয়ে আলাপ জুরে দিলো । আমি চলে আসতে চাইছিলাম কিন্তু মেয়ে আলাপ কিছুতেই থামাচ্ছিলো না । বড় অধভুত আচরন করছিলো , আমি কোথায় গিয়েছিলাম , কেনো গিয়েছিলাম , আমার অসুখ এর খবর কি এসব অবাঞ্ছিত প্রশ্ন একের পর এক করছিলো ।   একটু দূরে ছেলে মেয়েদের একটা জটলা আমাদের দিকে বার বার তাকাচ্ছিলো , আর নিজেদের মাঝে হাঁসি তামাশা করছিলো । কয়েকবার আমার দিকে ইশারা করে কি জেনো বলছিলো । এতে আমার অস্বস্তি আরও বেড়ে যাচ্ছিলো । একবার আমি বলেই ফেলেছিলাম “ আমি তাহলে যাই আরশি”  মেয়েটি মাথা হেলিয়ে হ্যাঁ সুচক ইশারা ও করেছিলো । কিন্তু আমি নড়তে পারিনি , এমন কিছু আমি দেখতে পেয়েছিলাম যে আমি সেখানে আটকে গেলাম । আরশি মাথা হেলিয়ে হ্যাঁ বল্লেও , ওর চোখ দুটো অন্য কিছু বলছিলো , সেখানে ছিলো অসহায়ত্ব , নিরাশা আরও অনেক অনুভুতির এক মিশ্রণ ।   অবাক হয়ে কিছু প্রশ্ন করে জানতে চেষ্টা করলাম , কিন্তু কোন উত্তর পেলাম না , বার বার এড়িয়ে গেলো । এরি মাঝে একটা ২০-২২ এর ছেলে এগিয়ে এলো , দেখেই বোঝা যাচ্ছিলো বেশ পয়সা ওয়ালা বাপের ছেলে । এসে বলল “ হেই babes   আমরা এখন জাচ্ছি  come on”   কিন্তু আরশি নরলো না , একবার আমার দিকে তাকাচ্ছে আর একবার ওই ছেলের দিকে , ছেলেটি ওকে আরও একবার ডাকল। কিন্তু আরশির কোন উত্তর নেই , আমি ওর চোখে আতংক দেখতে পেলাম । তখন ছেলেটি একটি মেয়ের উদ্দেশ্যে বলল “ হেই ইভা কি হলো দেখো তো” বিরক্ত মনে হচ্ছিলো ছেলেটিকে ।   তখন ইভা নামের মেয়েটি এগিয়ে এলো , মেয়টি বয়সে ওই ছেলেটির সমান হবে । এসে আরশি কে একটু দূরে টেনে নিয়ে গেলো , কি যেন কথা হলো ওদের সাথে , দেখলাম আরশি বার বার না সুচুক মাথা নাড়ছে , আর ইভা আঙুল তুলে ওকে কি জেনো বলছে , মনে হচ্ছে শাসন করছে । কৌতূহল নিয়ে আমি সে সব দেখতে লাগলাম । কিছু কিছু বুঝতে পারছিলাম , আরশি কে কোন যায়গায় যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে কিন্তু আরশি যেতে চাচ্ছে না ।   কিছুক্ষন পর ছেলেটিও যোগ দিলো , বেশ কয়েকটা লাইন আমি শুনতে পেয়েছিলাম don’t be a pussy , এরকম কথা ছিলো না ,  com on baby খুব fun হবে । এক পর্যায়ে দেখলাম ছেলেটি রেগে গেলো খুব অকথ্য ভাষায় ইংরেজিতে গালি গালাজ করতে লাগলো । যার বেশিরভাগ আমি বুঝতে পারছিলাম না । এর এক পর্যায়ে আরশি প্রায় দৌরে আমার কাছে এসে বলল “ আপনার বাসায় যাওয়া যাবে প্লীজ”   মেয়েটা ছেলেটির সাথে যেতে চাচ্ছে না , তাই ছেলেটি ভীষণ রেগে উঠছে । ছেলেটির চোখের ভাষা আমার কাছে বেশ পরিচিত মনে হচ্ছিলো , হিংস্র মাংসাশী প্রানির কবল থেকে প্রায় নিশ্চিত শিকার ফস্কে যাওয়ার রাগ ছিলো ছেলেটির চোখে মুখে। আমি যদিও নিজেকে সদা সিধা আদমি হিসেবে জাহির করতে চাই কিন্তু এসব বোঝার ক্ষমতা আমার আছে । কারন ছেলেটির যে ক্ষুধা সেই ক্ষুধার উরধে আমি নই । কতটা তিব্র এই ক্ষুধা সেটা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয় , হয়ত একে মাকড়সার জালের সাথে তুলনা করা যায় , ধির ধির এই ক্ষুধা মানুষ কে বিবশ করে ফেলে , এর থেকে রক্ষা পাওয়া বড়ই কঠিন ।   আর আরশির মুখ দেখে মনে হচ্ছিলো সে কিছুতেই ওই ছেলেটির সাথে যেতে চাইছে না । ছেলেটি হয়ত ওকে জোর করে সেদিন নিয়ে আসেনি ওখানে , হয়ত আরশি এমন কোন কাজ বা কথা বলেছিলো যাতে করে ছেলেটি ধরে নিয়েছিলো শিকার আজ তার গুহায় নিজে পায়ে হেঁটেই যাবে । কিন্তু আরশির ততক্ষনে মত পরিবর্তন হয়েছিলো । তাই আমাকে একটা উপায় ভেবে নিয়েছিলো , অখান থেকে বেড়িয়ে আসার ।   দ্রুত একটা অটো চখে পরল আমার , ডাক দিতেই চলে এলো , আমি আর আরশি উঠে বসলাম , কোন কিছুই চিন্তা ভাবনা না করে একটা মেয়েকে আমি নিজের বাড়ি নিয়ে এলাম । হোক সে আমার ভাগ্নির বান্ধবী , কিন্তু সেটা কি সমাজ মানবে ? কারন সমাজ জানে আমার ও ক্ষুধা আছে ।  বাড়িতে এসে আরশি চুপ চাপ বসে ছিলো , আমিও কিছু জিজ্ঞাস করিনি । বাড়িতে রান্নার যোগার আর সেদিন করিনি , বাইরে থেকে খাবার নিয়ে এসেছিলাম । কিন্তু আরশি সেগুলো ছুয়েও দেখেনি । রাত যখন বিপদজনক ভাবে বেড়ে যাচ্ছিলো তখন আমি নিরুপায় হয়ে , আরশি কে ওর বাড়ির সাথে যোগাযোগ করার জন্য বলেছিলাম ।   কিন্তু আরশি ছিল নিরুত্তর, এর আগে মেয়েটাকে যখন দেখেছিলাম তখন ই এর মাঝে একটা মেচিওরিটির ছাপ চোখে পরেছিলো। কিন্তু সেদিন ছিলো অন্য রকম , মনে হচ্ছিলো মেয়েটির বয়স আমার চেয় বেশি । আমি আরও কিছুক্ষন চুপ বসে থেকে মুখ খুলেছিলো ,   কিছু না জিজ্ঞাস করতেই সব বলেছিলো, কেনো ও আজ বেড়িয়ে এসেছিলো, কি করতে এসেছিলো, এবং হঠাত আমাকে দেখে ওর মত বদলায় । বলেছিলো , জাস্ট দৃষ্টি আকর্ষণ এর জন্য এসব করেছিলো । ভেবেছিলো হয়ত অনেক রাত পর্যন্ত বাড়ি না ফিরলে ওর খোঁজ হবে । কিন্তু একটা ১৪ বছরের মেয়ের বাইরে থাকার সীমা লঙ্ঘন হওয়ার পর ও যখন কোন প্রশ্ন এলো না। তখন ভাবল এসব করা মিছে , ফিরতি পথ খুজতে লাগলো , তখন হঠাত আমাকে দেখে একটা উপায় খুঁজে পেলো ।   মনটা আমার বিস্বাদে ভরে গিয়েছিলো , একটা ছোট্ট বাচ্চা মেয়ে , যার এখন থাকার কথা বাবা মায়ের চোখে চোখে সে কিনা ভিখিরির মত এটেনশন সিক করছে । নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হয়েছিলো সেদিন , অন্তত ওই বয়সে আমাকে একাকীত্ব বুঝতে হয়নি ।   কিন্তু বেশীক্ষণ মন খারাপ করে থাকতে পারিনি , হঠাত একটা বিকট শব্দ হলো । কেউ একটা ঢিল ছুড়েছে , বাড়ির বাইরে ফাকা রাস্তায় কয়েকটি গাড়ি বার বার আমারর বাড়ির সামনে দিয়ে যেতে আসতে লাগলো । গেটের সামনে গাড়ি রেখে অকথ্য ভাষায় আমাকে আর আরশি কে নিয়ে কথা বলছিলো ওরা , আর ঢিল ছুড়ছিল । লজ্জায় আমার কান গরম হয়ে গিয়েছিলো , তাকাতে পারছিলাম না আরশির দিকে ।     জীবনে কোনদিন আমাকে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি, সেদিন সম্পূর্ণ রুপে অবশ হয়ে গিয়েছিলো আমার মস্তিষ্ক । আশেপাশের লোকজন উঁকিঝুঁকি দেয়া শুরু করেছিলো ।     একপর্যায়ে আরশি উঠে দাড়ায়, বলে ও জতক্ষন থাকবে ততক্ষন ওরা এমন করবে । আমার সম্বিৎ ফিরে এসেছিলো, আমি যতই কা পুরুষ হই না কেনো একটা মেয়েকে এভাবে চলে যেতে দেয়া যায় না । আমি আটকে ছিলাম ওকে , কিন্তু যদি জানতাম আমি অমন অক্ষম তাহলে হয়ত সেই ভুল করতাম না । পুলিশে খবর দিয়েছিলাম , পুলিশ এসেছিলো ও । এসে উল্টো আমাকে গ্রেপ্তার করতে চাইলো । আমি আকাশ থেকে পড়লাম , তর্কা তর্কী হতেই আমার গায়ে হাত তুলল পুলিশ ।   এক প্রাকার গাড়িতে উঠেই ফেলে আমাকে, আমার অপরাধ নাবালিকা মেয়ে কে ফুসলিয়ে নিয়ে যৌন নিপীড়ন । এবং সেটার প্রতিবাদ করায় একজন বিশিষ্ট নাগরিকের নামে মিথ্যা অভিযোগ করা । গাড়িতে প্রায় উঠিয়েই ফেলেছিলো, কিন্তু এগিয়ে এলো আরশি, ওই ছেলেটার কাছে কি যেন বলল ছল ছল চোখে । ছেলেটির চোখে ফুটে উঠেছিলো ক্রূর বিকৃত হাঁসি । পুলিশ কে কি জেনো বলতেই তারা ছেড়ে দিলো আমাকে । আমি আরশির দিকে তাকালাম , ছেলেটি তখন ওকে হাত ধরে প্রায় টেনে নিয়ে যাচ্ছিলো , একবার পেছন ফিরে তাকালো আরশি , রাস্তার আলোয় ওর ছল ছল চোখে আমার জন্য কোন অভিযোগ ছিলো না।   কিন্তু নিজেকে আমি ক্ষমা করতে পারিনি, পারিনি নিজের অক্ষমতা কে মেনে নিতে । আমি বুঝতে পারছিলাম আমার শরীর এর সব রক্ত মাথায় গিয়ে জমা হচ্ছে । কিন্তু আমি ছিলাম নিরুপায়, নিরাশা গ্রাস করে নিচ্ছিলো আমাকে । ধিরে ধিরে আমি অবশ হয়ে জাচ্ছিলাম । আমি জানতাম কোন কিছু করা মানে আরও বিপদ বাড়ানো । তাই টলতে টলতে ঘরে ফিরে দরজা লাগিয়ে দিয়েছিলাম , তার পর আর কিছুই মনে নেই ওই সব এর ।   সুধু মনে আছে আমি একটা খোলা মেলা ঘরে শুয়ে আছি , ঘরের চার পাশে পরচুর জানালা । সেই জানালা দিয়ে সূর্যের প্রথম আলো এসে ঢুকছে , কিছু আলো এসে আমার শরীরে পড়ছে । সাধারন সূর্যের আলো সে নয় , একটু ভালো করে লক্ষ করলেই দেখা যাচ্ছে সোনালী রং এর অতি সুক্ষ কিছু ধুলি দিয়ে ওই আলো তৈরি । কেন জানি আমার মনে হচ্ছিলো ওই ধুলি কনা গুলি আর কিছুই নয় , সুখ, আনন্দ ,  পরিতৃপ্তি ।   এমন সময় একটি হাত একটা চায়ের কাপ বাড়িয়ে ধরলো আমার দিকে , আমি চাইলাম সেই কাপ ধরা হাতের মালিকের দিকে । কিন্তু আলোর বিপরিতে দাঁড়ানো থাকায় মুখটা দেখা যাচ্ছে না । আমি জিজ্ঞাস করলাম “তুমি কে” উত্তরে সুধু খিল খিল হাঁসি পেলাম । আবারো জিজ্ঞাস করেছিলাম “চারিদিকে এতো আনন্দের ধুলো কেনো”   উত্তরে কিন্নর কণ্ঠে বলেছিলো “ যেখানে দুঃখ না থাকে , সেখানে আর কি থাকবে, বোকা”   “ আরশি কোথায়?” এর পরবরতি প্রস্ন ছিলো আমার   “ কেনো আরশি কে দিয়ে কি হবে” রাগান্বিত কণ্ঠে জিজ্ঞাস করেছিলো সে   “ মেয়েটার অনেক দুঃখ , আমি কিছু সুখ ধার দিতাম”   “ ইস দরদ দেখাতে এসেছে , তোমার সুখের দরকার নেই ওর , সে তার বাবার সাথে ইউরোপ ট্যুরে গিয়েছে , সুখের অভাব নেই সেখানে, আর তুমি এই সুখ ধার দেয়ার কে , এটা কি তোমার একার , এটা আমাদের দুজনের”   হঠাত সেই ঘর চোখের সামনে উধাও হয়ে গিয়েছিলো , মুখে ভেজা স্পর্শ পেয়ে চোখ খুলে দেখি মেজো আপা , ওর চোখে মুখে আতংক । আমাকে চোখ মেলতে দেখেই সেই আতংক দূর হয়ে সেখানে রাগ এসে ভর করলো । জানতে পারলাম আমি তিনদিন ঘর থেকে বের হইনি , এলাকায় রটে গেছে , আমি মেয়ে নিয়ে পুলিশ এর হাতে ধরা খাওয়ায় আত্মহত্যা করেছি । পুলিশ এসেছে , মেজো আপা ও এসেছে ।   এর দুই দিন পর আমি এই ডাক্তার এই চেম্বারে । ডাক্তার আমার দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ।     আমি বললাম “ হ্যাঁ কিছুটা হয়েছিলো উত্তেজনা”   ডাক্তার বলল “ এখন উত্তেজনা আপনার বড় শত্রু , যে অবস্থায় আপনি আছেন মেডিকেশনে আপনার ভালো হয়ে যাওয়া সম্ভব , কিন্তু উত্তেজনা থেকে দূরে থাকবেন , আমি কিছু টেস্ট লিখে দিচ্ছি ওগুলি করিয়ে আনবেন , আমি নিশ্চিত হতে চাই সত্যি কি অবস্থা আপনার”   ডাক্তার এর ঘর থেকে বেড়িয়ে এলাম , সিদ্ধান্ত নিলাম আর কোন টেস্ট নয় , ভয় হয় টেস্ট করলে হয়ত দেখা যাবে আমার অসুখ আসলে ভালো হয় নি , আগের টেস্ট গুলি ভুল ছিলো ।   আমি আশা নিয়েই বাচতে চাই , একদিন সুখের ধুলিকনা ভরা সূর্যের আলো এসে আমার উপর পরবে , সেই সুখ আবার আমার একার হবে না , একজন সেই সুখের সমান অংশীদার হবে  । সুধু আমার উপর না সবার উপর , আরশির উপর , মেজো আপার উপর , বড় আপার উপর , মতিন এর উপর , মতিন এর বউয়ের উপর , সাদিকের উপর , সুমির উপর , মায়ের দোয়া হোটেল এর মালিক রজব এর উপর ।   একটু বেশি বেশি আশা করা হয়ে যাচ্ছে , আমি বুঝতে পারছি । হোক না , আমি না হয় দুনিয়ার সবচেয়ে বড় আশাবাদী মানুষের তকমা নিয়ে থাকলাম , অন্তত একটা যায়গায় তো নিজেকে প্রথম স্থান দখল কারি হিসেবে পরিচয় দিতে পারবো । ব্যাপারটা মন্দ হবে না , জীবনে কথাও প্রথম হতে পারনি , এক জায়গায় হলে মন্দ কি ।
Parent