স্মৃতি সুন্দরী - অধ্যায় ৪

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-57140-post-5343649.html#pid5343649

🕰️ Posted on September 2, 2023 by ✍️ Bichitro (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1298 words / 6 min read

Parent
আবাসিকে নিজের শেষ সরস্বতী পূজার অনুষ্ঠানের কয়েক মাস পরেই সে আবাসিক থেকে ছাড়া পেল । তারপর সে পেল স্বাধীনতা। আবাসিক থেকে স্বাধীনতা। আবাসিক থেকে বার হলে আবাসিকের ঠিক করে দেওয়া কোথাও কাজ করতে হয় । সেখানে কিছু দিন কাজ করার পর অনেকেই দূরে দূরে চলে যায় । কেউ কেউ যোগাযোগ রাখলেও বেশিরভাগই যোগাযোগ রাখেনা । বিক্রম আবাসিক থেকে বেরিয়ে একজনকে খুঁজতে শুরু করলো । তার স্মৃতিতে যে সুন্দরী বাস করে তার খোঁজ। বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে সে খুঁজতে লাগলো বিদ্যাকে । প্রথম কয়েক মাস সে শোভাবাজারের আশেপাশে ভোরবেলা বাড়ি বাড়ি খবরের কাগজ দিয়ে আসতো । এইসময় আবাসিক থেকে তাকে ওপেন কিংবা ডিসটেন্সে গ্রাজুয়েশন এর পড়াশোনা করার জন্য বলা হয়েছিল । আবাসিক থেকে গ্রাজুয়েটের পড়াশোনার জন্য উদ্বুদ্ধ বা উৎসাহ দেওয়া হলেও কখনো বাধ্য করা হতো না । তাই বিক্রম ও উচ্চমাধ্যমিকের পর আর পড়াশোনা করলো না । কয়েক মাস খবরের কাগজ দেওয়ার পর খবরের কাগজের সাথে বাড়ি বাড়ি প্যাকেট দুধ ও দিতে শুরু করলো । কাজ করলেও তার মন পড়ে রইলো বিদ্যার উপর । একদিন হঠাৎ তার মাথায় বুদ্ধি এলো যে এই ভাবে রাস্তায় রাস্তায় না খুঁজে বেড়িয়ে মণীষা ম্যামকে জিজ্ঞেস করলে তো বিদ্যার ঠিকানা যাবে । আর আবাসিক থেকে মণীষা ম্যামের ঠিকানা পাওয়া যাবে । যেমন ভাবা তেমন কাজ । সে সঙ্গে সঙ্গে আবাসিকের দিকে রওনা দিল । আবাসিকে ঢুকেই একটা খটকা লাগলো । মণীষা ম্যামের ঠিকানা নিয়ে যদি ম্যামের বাড়িতে সে চলেও যায় তাহলে সেখানে গিয়ে সে বলবেটা কি ? এমন তো বলা যায় না যে ম্যাম আপনার সেই বান্ধবীকে আমার পছন্দ হয়েছে ভালো লেগেছিল তাই তার ঠিকানা যদি দিতেন কিংবা ম্যাম আপনার বান্ধবীর ঠিকানা ... যতোটা উৎসাহ নিয়ে সে আবাসিকে এসেছিল এটা ভেবে সে তার থেকেও কয়েকগুণ সে হতাশ হলো । প্রতিভা ম্যামের অফিসে ঢুকে এদিক ওদিকের কথা বলে বিক্রম বললো , “ ম্যাম আমি কয়েকটা ফটো চাই । „ “ ফটো ? ফটো নিয়ে তুই কি করবি ? „ “ স্মৃতি । এই আবাসিকের স্মৃতি আপনাদের স্মৃতি । আমার অন্যান্য ভাইদের স্মৃতি । „ কথাটা শুনে প্রতিভা দেবী খুব খুশি হলো । একটা মোটা অ্যালবাম বার করে বললো , “ নে এর থেকে বেছে নে । „ বিক্রম খুব ভালো ভাবে অ্যালবামে লাগানো ফটো গুলো দেখতে লাগলো । তার চোখ দুটো এক মহিলাকে খুঁজছে। একদম শেষের দিকে সে সরস্বতী পূজার অনুষ্ঠানে তোলা কয়েকটা ফটোর মধ্যে একটা গ্রুপ ফটো বার করলো । বিদ্যার ফটো তাতে বিদ্যমান। আরো কয়েকটা ফটোর সাথে এই গ্রুপ ফটোটাও সে নিল । প্রতিভা দেবী বুঝতে পারলো না বিক্রমের আসল উদ্দেশ্য। সে ভাবলো গ্রুপ ফটোতে সবাই আছে তাই নিচ্ছে । প্রতিভা দেবী হাসি মুখেই ফটো গুলো দিয়ে দিল । এরপর রাজাবাজারে দিন মজুর খাটা, একটা রেস্টুরেন্টে হোম ডেলিভারি বয়ের কাজ করা , এরকম নানা কাজের মাধ্যমে সে অনেক অর্থ উপার্জন করলো । প্রথম এক বছর রাস্তাঘাটে তার স্মৃতি সুন্দরী কে খুঁজলেও খুব শীঘ্রই এই সমাজের রুক্ষ বাস্তবতার সম্মুখীন হলো । দিন যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার উদ্দামতাও কমতে লাগলো । তার অনুসন্ধানে ভাটা পড়লো । কিছু সময় পর তার স্মৃতিসুন্দরী স্মৃতিতেই বসবাস শুরু করলো । নিজের প্রথম আয়ের পুরোটাই সে আবাসিকে দিয়ে দিয়েছিল । দ্বিতীয় আয়ের কিছুটা নিজের কাছে রেখে একটা খুব দরকারি জিনিস সে কিনলো । দরকারি জিনিসটা হলো একটা নোকিয়ার ২৬২৬ ফোন । তারপর হিসাব করে চলার পর আর একটা জিনিস কিনলো । সেটা হলো একটা পিত্তি রঙের সাইকেল । আর বছরে নিজের জন্য দুটো জামা প্যান্ট আর দুবেলা দুমুঠো খাওয়া আর একটা ছোট ঘর ভাড়া ছাড়া তেমন কোন খরচাই তার ছিল না । এই সবের কাজ করার পর মাঝে মাঝে সে ছুটি পায় এবং ছুটি নিয়েও নেয় । এইসব ছুটিতে তার একমাত্র কাজ হলো সাইকেল চড়ে কলকাতার অলিগলি চষে বেড়ানো । তার একান্ত ব্যক্তিগত মতামত হলো পৃথিবীর যে মানুষ নিজের শহরের রাস্তাঘাট চেনেনা তার কাছে জীবিকা নির্বাহের অনেক পথ অজানাই থেকে যায় । দেখতে দেখতে বিক্রমের বয়স ছাব্বিশ বছর হয়ে গেল । এখন সে একটা হোটেলের রিসেপশনে কাজ করে । একদিন বিকালে সে তার সাইকেল নিয়ে ঘুরতে ঘুরতে কলকাতার একদম দক্ষিনে চলে এলো । টালিগঞ্জ গল্ফকোর্স ছাড়িয়ে আরো কয়েক কিলোমিটার আসার পর রাস্তার পাশে একটা বড়  গ্যারেজে একজনকে দেখে  হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়ে পড়লো  , “ আরে প্রফুল্ল দা না ! „ এক যুবক নিজের নাম শুনে বিক্রমের দিকে তাকালো । সেও বিক্রম কে চিনতে পেরে বললো , “ আরে তুই , কতদিন পর দেখা , ভালো আছিস তো ?  এখন কি করছিস ? „ “ আমি তো ভালোই আছি । কিন্তু তুমি যে সেই বার হলে আর একবারও এলে না তো । আমাদের মনে পড়তো না বুঝি ? „ “ খুব মনে পড়তো । এখনো মনে পড়ে কিন্তু কাজের চাপে যাওয়া হয়ে উঠলো না । „ তারপর এদিক ওদিকের কথা হওয়ার পর প্রফুল্ল বিক্রম কে এই গ্যারাজে কাজের অফার করলো । প্রফুল্ল বললো , “ আরে এতে অনেক টাকা ভাই । „ “ কিন্তু আমি তো কিছুই জানিনা । „ “ তুই চিন্তা করিস না , আমি শিখিয়ে দেব । „ “ কিন্তু রোজ অতো দূর থেকে এখানে আসা সম্ভব হবে না । „ “ তুই এখানে একটা ঘর ভাড়া নে খুঁজে দেখ । ঠিক পেয়ে যাবি । আমিও তো পাশেই থাকি । বেশি ভাড়া না । „ “ আচ্ছা আগে ঘর খুঁজে পাই তারপর বলছি । „ ঘর বিক্রম খুঁজে পেল । সেদিনকেই পেল । সাইকেল করে বাড়ি ফেরার পথে সে একটা দেওয়ালে সাদা কাগজে কালো হরফে লেখা একটা পোস্টার দেখতে পেল । এখানে ঘর ভাড়া দেওয়া হয় । সে সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির চৌহদ্দির ভিতর চলে এলো । ঢুকেই থমকে দাঁড়িয়ে পড়লো । উঠোনে মস্ত বড় এক পাতকুয়া । জীবনে প্রথম সে কুয়া দেখছে । বাড়িটা অনেকটা ইংরেজি L আকৃতির । L এর ছোট অংশটায় একটাই ঘর সেটা বাইরে থেকে তালা দেওয়া । আর বড় অংশটায় কটা ঘর সেটা বাইরে থেকে বোঝা যাচ্ছে না কিন্তু একটা বড় দরজা আছে । কুয়া থেকে কিছু দূরেই খালি জায়গায় নানারকম ফুল গাছের বাগান । জায়গাটা তার খুব মনে ধরলো । নিজের কুয়া দেখার কৌতুহল সে দমন করতে পারল না । তাই কুয়ার সামনে এসে কুয়ার ভিতর তাকিয়ে কুয়ার গভীরতা দেখলো । বেশ গভীর আছে । জল ও স্বচ্ছ । আর দড়ি বাঁধা বালতি দেখে বুঝলো যে কুয়াটা ব্যাবহার করা হয় । বিক্রম যখন কুয়ার ভিতরে তাকিয়ে তার গভীরতা মাপতে ব্যাস্ত তখন পিছন থেকে এক গম্ভির আওয়াজ ভেসে এলো , “ কি চাই ? „ বিক্রম থতমত খেয়ে পিছন ঘুরে আমতা আমতা করে বললো , “ বাইরে একটা পোস্টার .... বিক্রমের কথা শেষ করতে না দিয়েই লোকটা বললো , “  হ্যাঁ , এসো , ভিতরে এসো । „ বিক্রম ভিতরে গিয়ে একটা লাল প্লাস্টিকের চেয়ারে বসলে লোকটা বললো , “ কি করা হয় ? „ “ আজ্ঞে এখন ধর্মতলায় একটা হোটেলে রিসেপশনে কাজ করি । এখানে একটা গ্যারাজে কাজ নিলাম তাই ভাবছি ... বিক্রমের অসম্পূর্ণ কথা লোকটাই সম্পূর্ণ করে দিল , “ তাই আশেপাশে থাকতে চাও । „ “ হ্যাঁ স্যার। „ “ মদ খাও ? “ না স্যার , ও জিনিস কখনো স্পর্শ করিনি । „ “ আর মেয়ে ? „ বিক্রম প্রথমে একটু লজ্জা পেল । তারপর দুই দিকে মাথা নাড়িয়ে না বললো । “ ঠিক আছে , কাল কিংবা পরশু যখন খুশি নিজের আইডি প্রুফ নিয়ে এসো । ঘর ভাড়া কিন্তু তিন হাজার । অগ্রীম দুই মাসের এডভান্স দিতে হবে । আর চুক্তি হবে এগারো মাসের । „ মাত্র তিন হাজার ভাড়া । জায়গাটা শহর থেকে একটু বাইরে হলেও ভাড়াটা খুবই কম । তাই বিক্রম সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে গেল , “ আমি কালকেই এসে দেখা করবো একবার । „ লোকটা আরো বললো , “ ওই ঘরে তুমি থাকবে । „ পাকা কথা বলে সে বেরিয়ে এলো । সে তো আর জানতো না যে এখানে তার সাথে কি ঘটতে চলেছে ! তার বিন্দুমাত্র আভাস পেলে সে এখানে থাকতো না । সেই ঘটনাটাই দুঃস্বপ্ন হয়ে বারবার ফিরে আসে । ভাবলেই কেঁপে ওঠে সে ... চোখের সামনে এখনো ভেসে ওঠে সেই বিভৎস দৃশ্য ... চারিদিকে রক্ত আর কাটা মাংসের টুকরো । এদিকে ওদিকে ছড়িয়ে আছে টাটকা লাশ । তার মধ্যে থেকে গলগল করে বার হচ্ছে লাল গরম রক্ত.... বিক্রম আর স্মৃতিমন্থন করতে পারলো না । কারন তার স্মৃতিমন্থনে সে একটা মেয়ের গলার স্বরে ব্যাঘাত পেল , “ দিদি তোমাল জামাই দেখতে এসছি । „
Parent