তার ছিঁড়ে গেছে কবে - অধ্যায় ২৪

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-68445-post-5939310.html#pid5939310

🕰️ Posted on May 5, 2025 by ✍️ Choton (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1735 words / 8 min read

Parent
(২৪) গরব মম হরেছ প্রভু পরের দিন সাতেকে দুই দিদি, মা ও দুই জামাইবাবুর সতর্ক নজরদারি ও কড়া তত্ত্বাবধানে ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া করানো গেলেও রাতের পর রাত জেগে কান্নার ফলে শরীর একদম ভেঙে গেল। প্রায় প্রতিদিন রাতে ও বিছানায় শুয়ে নীরবে চোখের জলে বালিশ ভেজাত। চোখের কোলে ঘন কালি জমল, শরীরের সেই লাবণ্য ঝরে গিয়ে রুক্ষ, কঙ্কালের মতো একটা চেহারা হল ওর। বাড়ির সবাই বেশ চিন্তিত হয়ে পড়ল। দক্ষিণ কলকাতার এক নামী ডাক্তারকে দেখিয়ে খাবারের রুটিনে বিস্তর বদল করা হল। সেই সঙ্গে নার্ভ শান্ত রাখা এবং ওর বয়সের তুলনায় একটু কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধ দেওয়া হল ওকে। ডাক্তার বললেন, সপ্তাহদুয়েক গেলেই উপকার কতটা কী হচ্ছে তা বুঝে ওষুধের ডোজ কমানো বা বাড়ানো হবে। দেখা গেল, ওষুধের গুণে টানা ঘুমিয়ে সেই রুক্ষ ভাবটা গেল, অস্থিরতাটাও কমল। কিন্তু সারাক্ষণ হয় ঝিমোয়, নয় কাঁদে। ডাক্তার বললেন, এটা থাকবে এখন কদিন। পুরো সুস্থ হতে সময় লাগবে। তবে ওকে নর্মাল রুটিনে ফেরার দাওয়াই দিলেন। কিন্তু ঈশিতা আর কিছুতেই পুরনো কলেজে যাবে না বলে জেদ ধরল। ওর বক্তব্য, ওই কলেজে ভর্তির ব্যাপারটা ও প্রথমে সৌমাভকে জানায়ইনি এবং সেটা সৌমাভ যে ভালভাবে নেয়নি, সেটাও ও খবরটা জানাতে গিয়ে বুঝেছিল। তা ছাড়া ওই কলেজে অনুষ্ঠান করতে গিয়েই পুরনো কলেজের বন্ধুদের সূত্রে রাহুল ওর খোঁজ পায় এবং তার পরে তো ওই ঘটনা, যেটা পুরোপুরি ওএরই দোষে হয়েছে। এই বার নতুন করে নানা রাজনৈতিক দাদা-আমলা-মন্ত্রী ধরে অবশেষে বছরের গোড়ায় রবীন্দ্রভারতীতে ওকে ভর্তি করিয়ে দিলেন মেজ জামাইবাবু। বিষয়ও বদলে ফেলল। রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে পড়বে বলে ঠিক করল। এবং এটাও করল সৌমাভর কথা ভেবেই। ওর স্বপ্ন, একদিন না একদিন সৌমাভ ও কুট্টি-মুট্টিকে ও খুঁজে পাবে, সেদিন সৌমাভর পায়ে ধরে দরকারে সব শাস্তি মাথা পেতে নিয়ে ও তখন সৌমাভর যোগ্য ঘরণী হয়ে উঠবে। এই একমাসেরও বেশি সময় ধরে ওদের সবার অলক্ষ্যে একজন পুরোপুরি বদলে গেল, গুঞ্জা। ঈশিতা বাড়ি আসার পর থেকেই দুই দিদি এবং মা পালা করে ওর কাছে শুতেন, গুঞ্জা নিজের পড়ার ঘরটায় শুতে শুরু করেছিল। সে দিন বেশি রাতে তিন দিদি বাড়ি ফেরার পরে নানা কথাবার্তায় ও জেনেছিল, মেজদি সেই ক্যাসেট এবং চিঠিটা একটা প্যাকেটে করে নিজের ব্যাগে ভরে রেখে দিয়েছিলেন। কাউকেই দেখাননি তিনি, শুধু আভাসে-ইঙ্গিতে নিজের স্বামীকে কিছুটা বলেছিলেন। হাজার হোক, মায়ের পেটের বোনকে একটা নোংরা চরিত্রের মেয়ে হিসেবে দেখাতে চাননি তিনি। দিন দুয়েক পরে দুপুরে বাড়ির লোকেদের ঘুমের সুযোগ নিয়ে দুটোই ও মেজদির ব্যাগ থেকে সরিয়ে নেয়। চিঠিটা বিকেলেই নিজে দাঁড়িয়ে থেকে একটা দোকান থেকে জেরক্স করে আবার মেজদির ব্যাগে রেখে দেয়। কিন্তু ক্যাসেটটা তখনই রাখে না। কোচিংয়ের এক চেনা বান্ধবীর বাড়িতে ক্যাসেটটার একটা কপি করায়। সে জন্য ওই বান্ধবীকে আইসক্রিম খাওয়াতে হয়েছিল ঘুষ হিসেবে। তার পরে রাত জেগে পড়ার বাহানায় টানা তিন দিন অন্তত ২০ বার চিঠিটা পড়ে ফেলে, ক্যাসেটটাও শোনে মন দিয়ে বসে কয়েক বার। ইলেভেনে পড়া মেয়ে, গোটা বিষয়টা ধরতে ওর সমস্যা হয়নি। তা ছাড়া সৌমাভ এ বাড়িতে এলে ওর সঙ্গে অনেক গল্প করত। ও বুঝত, সৌমাভদার কোথাও একটা চাপা কষ্ট আছে। কিন্তু বাড়ির সবচেয়ে ছোট বলে ও নিজে থেকে সেটা প্রশ্ন করার সাহস পেত না। চিঠিটা বারবার পড়ে ওর কাছেও স্পষ্ট হয়ে গেল, ছোড়দিই প্রথম থেকে সৌমদাকে ঠকিয়েছে এবং সেটাও এই রাহুলের সঙ্গে সেক্স করবে বলে! পাশাপাশি ওর বাবা-মাও যে বড় এবং মেজ জামাইয়ের তুলনায় সৌমদাকে অনেক কম গুরুত্ব দিত, কম যত্ন করত, সেটা ও বুঝে ফেলেছিল জামাইষষ্টীর দিনেই। সে দিন সৌমাভদাকে ওদের বাড়িতে খেতে আসতে পর্যন্ত বলেনি কেউ। সে দিন প্রচন্ড খারাপ লাগলেও ওর বলার সাহস হয়নি। ক’দিন রাতে একা শুয়ে যেমন এ সব মনে করে কাঁদল, তেমনই বাড়ির লোকেদের উপরে একটা চাপা ক্ষোভও তৈরি হল। আর ঈশিতার সম্পর্কে তৈরি হল প্রবল ঘৃণা। বোধহয় সৌমাভর চেয়েও বেশি। ঈশিতা এ বাড়িতে ফেরার পরে নিয়ম করে কপালে রোজ সিঁদুর পড়লেও গুঞ্জা মনে মনে গজরাত। নিজেই নিজেকে শুনিয়ে বলত, ‘ঢং, ন্যাকামো এ সব। রাহুলকে পেলেই আবার সব খুলে ওর সঙ্গে শোবে, আর এখন নাটক করে বেড়াচ্ছে!’ বয়স কম, তাই নিজের মনোভাব বেশি দিন চেপে রাখতেও পারল না গুঞ্জা। মাস দেড়েক পরে টের পেয়ে গেল বাড়ির সবাই। সে দিন কী একটা কারণে বড়দি ও মেজদি বহু দিন পরে নিজেদের শ্বশুরবাড়িতে রাতে ঘুমোতে যাবেন বলে ঠিক হল। দু’জনের শ্বশুরবাড়িই বলতে গেলে পাশের পাড়ায়। ওদের মা-ও নিজের ঘরে শোবেন ভেবে গুঞ্জার কাঁথা-বালিশ আবার আগের মতো ঈশিতার ঘরের বিছানায় রেখে দিলেন। রাতে খেতে বসে সবার সামনেই ওদের মা গুঞ্জাকে আবার আগের মতো ছোড়দির ঘরে শোয়ার কথা বলতেই যেন বিস্ফোরণ হল! ইলেভেনে পড়া মেয়ে খাবার টেবিলেই ফোঁস করে উঠে খেল তো না-ই, দৌড়ে নিজের কাঁথা-বালিশ ঈশিতার বিছানা থেকে টেনে এনে মাটিতে আছড়ে ফেলল। বলল, কাল নতুন কভার পরিয়ে তবে আবার ব্যবহার করবে এগুলো। তার পরে এসে সবার সামনেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে বলল, ‘‘ওই নোংরা ঘরটার নোংরা বিছানায় আমাকে কোনও দিন শুতে বলবে না কেউ! এখন থেকে একাই শোব আমি।’’ বলে দুমদুম করে স্টাডিতে ঢুকে দড়াম করে দরজা বন্ধ করে দিল। গত এগারো মাসে গুঞ্জার সঙ্গে সৌমাভর দারুণ সম্পর্ক কারওরই নজর এড়ায়নি। বাড়ির সবাই এই বিস্ফোরণকে তারই অংশ বলে ধরে নিলেও বহু দিন পরে সবার সামনে হাউহাউ করে কেঁদে ফেলে ঈশিতা বলে উঠল, ‘‘কুট্টি-মুট্টির বাবার মতো গুঞ্জাও আমাকে নোংরা মেয়েছেলে বলেই ভাবে! সেটাই ও আজ স্পষ্ট করে দিল। গত দেড় মাসে আমার সঙ্গে কথা বলা তো দূর, আমাকে দেখলে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নেয় ও। আজ কারণটা স্পষ্ট করে দিল!’’ দুই দিদির আর সে রাতে নিজেদের ঘরে ফেরা হল না। ঈশিতাকে স্বান্তনা দিতে গিয়ে রাত অবধি তার সঙ্গে নানা গল্প করে মনটা হাল্কা করার চেষ্টা করলেন দু’জনেই। রাতে ওষুধ খেয়ে ঈশিতা ঘুমিয়ে পড়লে সে রাতে ওর মা এবং দুই দিদি সে ঘরেই রইলেন। পরের দিন ঈশিতার আড়ালে দুই দিদি গুঞ্জার সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলতে যেতেই সে বুঝিয়ে দিল, ওর সৌমদাকে যে মেয়ে ঠকাতে পারে, সে সব করতে পারে। এমনকি খুনও! তা ছাড়া ও যা করেছে, আবার যে তা করবে না, তার গ্যারান্টি কি? ও যেরকম নোংরা মেয়ে, তাতে ফের এই সব করে বেড়াবে, এখন যতই সতী সাজার চেষ্টা করুক। সুতরাং এই রকম নোংরা মেয়ের সঙ্গে ওর কোনও সম্পর্ক নেই! ওকে ও দিদি বলে মানবেও না আর কোনওদিন। ১৭ বছরের মেয়ের এমন কথা শুনে আর জেদ দেখে স্তম্ভিত হয়ে গেল সবাই। আমূল বদলে গেছিলেন বিশ্বজিৎবাবুও। মেয়ের কীর্তিকলাপ জানতে পেরে লজ্জায় মাথা নীচু হয়ে গিয়েছিল তাঁর। ঈশিতা এ বাড়িতে ফেরার পর থেকে তিনি কারও সঙ্গেই কথা বলতেন না একদমই। খেতেনও আলাদা করে। নিজের মধ্যেই সারাক্ষণ গুম হয়ে থাকতেন। তলে তলে অফিস থেকে দূরে কোনও জেলায় ট্রান্সফার নেওয়ার চেষ্টাও করছিলেন। তাঁর ভয় ছিল, সৌমাভর সেই কাকার মুখোমুখি হলে কী বলবেন? বাড়ির সবাই বিষয়টা বুঝলেও কারওরই কিছু বলার ছিল না। ঈশিতা বুঝত, ওর জন্যই এ সব হচ্ছে। ওই ঘটনার কয়েকদিন পরেই একটা বাক্স এল ঈশিতার নামে। সেটার ভিতরে ঈশিতার বেশ কিছু সিঙ্গল ছবি, মাধ্যমিকের মার্কশিট এবং আরও কিছুর অ্যাটেস্টেড জেরক্স এই সব ছিল। কয়েকটা ছবি দেখে বোঝা গেল, সেগুলোঅতে একসময় সৌমাভর সঙ্গে ঈশিতার জোড়া ছবি থাকলেও সেখান থেকে কেটে শুধু ঈশিতার ছবিই পাঠিয়ে দিয়েছে সৌমাভ। এমনকি বেলেঘাটার বাসায় তোলা কুট্টি-মুট্টিকে নিয়ে তোলা ওদের চার জনের একটা ছবি থেকে কেটে শুধু ঈশিতার অংশটাই পাঠানো হয়েছে। ওই দুটো শিশুর কোনও ছবি এ বাড়িতে আগেও ছিল না, এখনও রাখতে দিল না সৌমাভই। এ বাড়িতে আসার পরপরই সৌমাভর ছবির খোঁজে পুরনো অ্যালবাম ঘাঁটতে গিয়ে সবাই দেখেছিল, সেখানে সৌমাভর কোনও ছবি নেই! বাকি সকলের অসংখ্য ছবি আছে, কিন্তু সৌমাভর একটাও ছবি নেই! ওর মনে পড়ল সৌমাভর চিঠির কথাগুলো। আচ্ছা ও কি কিছু টের পেয়েছিল? বাক্স থেকে বেরোল আর একটা চিঠি, গুঞ্জাকে লেখা দু’তিন লাইনের— ‘‘আমারে বাঁধবি তোরা সেই বাঁধন কি তোদের আছে।’’ নভেম্বরে চলে যাওয়ার দিন গুঞ্জাকে লেখা কয়েক লাইনের চিঠিতে সৌমাভ লিখেছিল, ‘‘আমারে যে বাঁধবে ধরে এই হবে যার সাধন, সে কি অমনি হবে।’’ এ বারে কেন ফের সেই গুঞ্জাকেই এই লাইনটা সৌমাভ লিখেছে, সেটা বুঝতে এ বারে আর কারওরই অসুবিধা হল না। ঈশিতার ভালবাসার বাঁধন যে কত পলকা, সে ইঙ্গিত ও গুঞ্জাকে আগেই দিয়েছিল, সেটা আবারও সবাই বুঝল। ঈশিতাও বুঝল, ওর মনোভাবের বদল সৌমাভ অনেক আগেই টের পেলেও ওকে একটুও বুঝতে দেয়নি। শুধু নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিল নীরবে। আর শেষদিন ওর কীর্তিকলাপ জানতে পেরে তো একেবারেই চলেই গেল। কিন্তু বাক্সটা বহু খুঁজেও কোথা থেকে পাঠানো হয়েছে, বোঝা গেল না। এ নিয়ে ঈশিতা ফের কয়েকদিন কাঁদল, কিন্তু লাভ হবে না বুঝে চুপও করে গেল একসময়। মাসদুয়েক পর থেকে ধীরে ধীরে রবীন্দ্রভারতীতে যেতে শুরু করল ঈশিতা। তবে ওর যেটা সবাইকে চমকে দিল, তা হল সাজগোজ এবং পোশাক। এমনিতে খুব সাজগোজ করা মেয়ে না হলেও সব সময় ভাল শাড়ি, ভাল জামাকাপড়, দামী ক্রিম, সেন্ট ব্যবহার করত ঈশিতা। চটিও বেশ দামীই ব্যবহার করত বরাবর। সেই সব একেবারে বাতিল করে খুব সাধারণ এবং কমদামী কয়েকটা লাল-নীল পারের সাদা খোলের তাঁতের শাড়ি, কালো ব্লাউজ এবং একটা সস্তার চামড়ার চটি হয়ে গেল ওর নতুন পোশাক। কলেজে বেরনোর আগে চুলগুলো একটা হাতখোঁপা করে নিয়ে শাড়িতে নিজের গোটা শরীর মুড়ে পথে বেরোত। এটাই ওর পোশাক হয়ে গেল ঘরে-বাইরে সর্বত্র। রাতেও আর ঘুমনোর আগে নাইটি বা ম্যাক্সি পরত না। প্রথম কয়েকদিন কলেজ থেকে ফিরে সৌমাভ এবং ছেলেমেয়ের কথা মনে করে রোজ কাঁদত। আসতে আসতে সে সব কমিয়ে মন দিল পড়াশোনায়। এ দিকে গুঞ্জা ওর সঙ্গে কথা না বললেও বাড়ির বাকিদের সঙ্গে অত্যন্ত স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই কথা বলত, গল্প করত, মজার মজার কথা বলত এমনকি ঈশিতা সামনে না থাকলে মাঝেমাঝে গানও গাইত। ঈশিতা পরপর কয়েকদিন আড়াল থেকে খেয়াল করে বুঝল, গুঞ্জা যে সব মজার গল্প বলে, তার মধ্যে বেশ কয়েকটা সৌমাভ ওকে বলেছিল আন্দামানে থাকাকালীন। এমনকি ও সামনে না থাকলে সৌমাভর মতোই গুঞ্জাও গানের মাঝখান বা শেষের দিকে দুটো-তিনটে লাইন গেয়ে উঠত। গুঞ্জাও বহু দিন গান শিখেছে। ফলে ওর সুরে ভুল তো হতই না, বরং ঈশিতার  মনে হত, সৌমাভকে অনুকরণ করেই যেন গাইছে। ঈশিতার মনে পড়ল, ওরা আন্দামান থেকে ফেরার কয়েক দিন পর থেকেই ওদের মধ্যেকার হাসিঠাট্টার মতোই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এই গানের ব্যাপারটাও। দু’জনে একসঙ্গে আগের মতো করে গেয়ে ওঠা দূর, সৌমাভ কয়েক দিন পর থেকে গুনগুন করাটাও ওর সামনে অন্তত বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু ওর আড়ালে যে সৌমাভ আগের মতোই গাইত, সেটা দু’বার রাতে নিজে কানে শুনেছিল ঈশিতা। সেই এক জিনিস গুঞ্জার মধ্যেও দেখে একদিকে যেমন ভিতরে একটা প্রবল ঈর্ষার জ্বালা অনুভব করত, তেমনই বুঝতে পারত, ও বহুদিন ধরে অবহেলা করে সৌমাভকে দূরে সরিয়ে রেখে পরে তার সঙ্গে চরম প্রতারণা করলেও গুঞ্জা বরাবরই সৌমাভকে খুব কাছের করে নিয়েছিল। সে কারণেই সৌমাভ ওর নিজের অনেক কিছুই গুঞ্জাকে বলা যায় উপহার দিয়ে গেছে, যা একসময় একান্ত ভাবেই ছিল শুধুমাত্র ঈশিতার। নভেম্বরের সে দিনের ঘটনার ফল কী হতে পারে, সেটা ভালই জানত ঈশিতা। কিন্তু সেই রাতে মেজদির ওই হুঁশিয়ারির পরে ও আর কোনও চালাকির চেষ্টা করেনি। এ দিকে প্রথমে পিরিয়ড বন্ধ এবং তার পরে অন্যান্য লক্ষণ ওর মধ্যে ফুটে উঠতে শুরু করল। মাস তিনেক যেতে না যেতে ওর শরীর ভারী হতে শুরু করল। তখন ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে ওর মেজদিই ওকে নিয়ে গেল একটি চেনা জায়গায়। সেখানে নিজের হাতে অ্যাবর্শনের পেপারে সই করে ভিতরে ঢুকে গেল ও। ঘন্টাতিনেক বাদে হাসপাতাল থেকে ফেরার সময় বহু দিন পরে একটু হাসল ও। মেজদিকে বলল, ‘‘পাপটা শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় এ বার কিছুটা হলেও হাল্কা লাগছে। কিন্তু তোরা ও দিকের কী করলি? আমাকে কিছু বলছিস না তো ? তিন মাস হয়ে গেল....আমার কথাটা ভাব!’’ এইটুকু বলেই আঁচলে মুখ চেপে রাস্তার মধ্যেই কেঁদে উঠল ঈশিতা।
Parent