যেখানে যার নিয়তি/কামদেব - অধ্যায় ১১

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-27499-post-2056502.html#pid2056502

🕰️ Posted on June 13, 2020 by ✍️ kumdev (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1118 words / 5 min read

Parent
একাদশ পর্ব                      রাতে খেতে বসে কথাটা তুললেন আমার শ্বশুর পশুপতি, বৌমা আজ পার্কে গেছিলে? আমি কিছু বলার আগেই জবাব দিল তনিমা,হ্যা বাবা পার্কে গিয়ে ফুচকা খেলাম,বৌদি খাওয়ালো। পশুপতির মুখে বিরক্তি এ ব্যাপারে মেয়ের কথা বলায় বললেন,তুমি ছিলে?তোমাকে তো দেখিনি। ওমা কি বলে বাড়ী থেকে আমরা একসঙ্গেই বেরিয়েছি।তনিমা বলল। পশুপতি ভাবেন,আমার যেন মনে হল একটা ছেলে--তবে কি আমি ভুল দেখলাম?জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের সঙ্গে কোনো ছেলে ছিলনা?আমি কি ভুল দেখলাম? নির্মলা সুন্দরী বললেন,তোমাকে হাজারদিন ধরে বলছি চোখটা দেখিয়ে চশমার পাওয়ার বদলাও। কে শোনে সে কথা। --আমার সঙ্গে কমলবাবু ছিলেন উনিই আমাকে দেখালেন--।কথা শেষ না করে পশুপতি নীরবে খেতে থাকেন।  নির্মলাসুন্দরী চশমা বদলের কথা বললেও লক্ষ্য করলাম ওর সন্দিহান দৃষ্টি আমার দিকে। ওরাই আলোচনা সেরে ফেলল আমাকে কিছু বলতে হলনা।বুঝতে পারলাম পশুপতি মনকে দেখেছেন।আমার মুখ থেকে ফুচকা তুলে নেওয়া দেখেন নি তো?খাওয়া শেষ করে হাত মুখ ধুয়ে নিজের ঘরে চলে এলাম,দরজা বন্ধ না করে ভেজিয়ে রাখলাম।আমার মনে হল পশুপতির দম শেষ হয়নি আমি উঠলেই আবার শুরু করবেন,কান খাড়া রাখলাম। নির্মলা সুন্দরী বললেন,কি হল কি ভাবছো বলতো?শরীর খারাপ লাগছে? পশুপতি গলা নামিয়ে বললেন,তুমি বৌমার দিকে একটু নজর রেখো। --তুমি মেয়েটার দিকে একটু লক্ষ্য রাখো,আমি বলে দিয়েছি বৌমা তুমি ওকে জড়িও না। কারো অবর্তমানে কাউকে নিয়ে আলোচনা আমার অপছন্দ। আমাকে নিয়ে আলোচনা করছে সন্দিহান চোখে দেখছে সর্বক্ষণ এই রকম একটা পরিবেশ কতখানি দুর্বিষহ অবস্থায় না পড়লে কেউ বুঝতে পারবে না।পার্কে গিয়ে ফুচকা খেয়েছি-হ্যা পাশে মন ছিল তাতে কি হয়েছে? মনের জায়গায় অন্য খদ্দেরও থাকতে পারতো? আমাকে স্পর্শ  করেনি বা এমন কথা বলেনি যা অন্য মহিলাকে বলা উচিত নয়।একটা ফুচকা আলগোছে মুখ থেকে তুলে নিয়েছে।নিতেই পারে,ফুচকার দাম ঐ দিয়েছে,আমি ভেবে পাই না কি এমন হল যাতে ফিসফিস করে আলোচনা করতে হবে?চেপে দরজা বন্ধ করে দিলাম। বেশ ছিলাম পুরানো অস্বস্তিটা ফিরে এসেছে আবার। ভাল লাগেনা কোনো কিছু কেন ভাল লাগে না বুঝতে পারি না। অতনু নেই বলে কি মন খারাপ? যখন ছিল তখনও এই রকম একটা হতাশার ভাব আমাকে ঘিরে থাকতো। মায়ের কথা মনে পড়ছে,ছোড়দা ফাল্গুণীকে নিয়ে কি করছে এখন?মোবাইলটা নিয়ে মেসেজ বক্স খু্ললাম, নতুন কোনো মেসেজ নেই। মাথার কাছে রেখে শুয়ে পড়লাম।সবাই মনে হয় ঘুমিয়ে পড়েছে,কোনো সাড়া শব্দ নেই।চোখ বুজে শুয়ে আছি ঘুম আসছে না। হিসসস-ফিসসস নিঃশ্বাসের শব্দ পাচ্ছি। মনের সম্পর্কে এত খবর তনিমা জানল কি করে? আর কি জেনেছে,আমার বিয়ের আগের কথা জানতে চাইছিল কেন?মনে হচ্ছে মোবাইল বাজছে,হাত বাড়িয়ে বালিশের পাশ থেকে নিয়ে কানে ধরে বললাম,হ্যালো? --যাক তাহলে ঘুমিয়ে পড়োনি? --ও মন?এত রাতে কি ব্যাপার? --আগে করতাম,ভাবলাম তুমি কথা বলতে পারবে কিনা? --আজ  পার্কে শ্বশুর মশায় মনে হয় আমাদের দেখেছেন। --কি করে বুঝলে? --সে অনেক কথা পরে বলবো এখন বলো কি জন্য ফোন করেছো? --মণি তুমি কেমন আছো? কি বলবো ভাল আছি?সত্যি কি আমি ভাল আছি? --মণি তুমি কথা বলছো না কেন? --আমি ভাল নেই। --কেন কি হয়েছে কেউ কিছু বলেছে? --কিছু হয়নি,কেউ কিছু বলেনি তবু--তবু আমার কিছু ভাল লাগছে না। --বুঝেছি। --তুমি কি ভাবছো আমি ইয়ার্কি করছি? --না না মণি আমি তা বলিনি--আমার মনে হয় দ্বন্দ্ব মানে অন্ত্রর্দ্বন্দ্ব এর কারণ? --তোমার কথা আমি বুঝতে পারছি না। --সহজ করে বলি,মণি তোমার মনের দ্বিধা--একদিকে তোমার মায়ের ইচ্ছে আবার তোমার নিজের ইচ্ছে এই দুইয়ের দ্বন্দ্ব।তুমি তোমার মায়ের ইচ্ছেকে গুরুত্ব দিলে অবদমিত সুপ্ত ইচ্ছে তোমাকে ক্ষত বিক্ষত করছে। --হি-হি-হি।তুমি মনস্তাত্ত্বিক নাকি? --তুমি হাসবে আমি জানতাম এটাই তোমার আসল কারণ,তুমি অশান্তি এড়িয়ে যাবার জন্য সত্যকে হেসে উড়িয়ে দিতে চাও। বাইরে যে কিসের শব্দ হল?বললাম,মন একমিনিট ধরো।পা টিপে টিপে দরজার কাছে গিয়ে শব্দ না করে ছিটকিনিটা নামিয়ে দরজা খুলতেই দেখি শায়া ব্লাউজ পরে দাঁড়িয়ে নির্মলা সুন্দরী।মনে হচ্ছে এইমাত্র চুদিয়ে এলেন। অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম,আপনি?কিছু বলবেন? --না না বাথরুমে এসেছিলাম। --বাথরুম ঐ দিকে। --হ্যা ঘুম চোখে বুঝতে পারিনি।তুমি ঘুমাও। দরজা বন্ধ করে ফোন ধরে জিজ্ঞেস করি,মন তুমি আছো? --হ্যা হ্যা মণি,তুমি কোথায় গেছিলে?                                                                   --তোমাকে বলছিলাম না আমি ভাল নেই?এইমাত্র শাশুড়ী দরজায় আড়ি পেতে আমাদের কথা শুনছিলেন। --মণি এটা তোমার ভাল না থাকার কারণ নয়। এটা স্বাভাবিক ঘটনা বাড়ীর বউ পার্কে অন্য লোকের সঙ্গে ঘুরবে কার ভাল লাগে বলো?তোমার রোগের কারণ অন্যত্র। --আমার যা হবার তাই হবে এবার তুমি একটা কথা বলতো? তুমি সবাইকে বলো একটা মেয়ে তোমাকে ভালবাসে--কথাটা কি সত্যি? --আমি মিথ্যে বলিনা। মন খারাপ হয়ে গেল,ভেবেছিলাম বলবে মজা করে বলেছি।এত রাতে আমাকে জ্বালানো কেন,তাকেই ফোন করতে পারতে।ফোন কেটে দেব কিনা ভাবছি,মন জিজ্ঞেস করল,জিজ্ঞেস করলে না তো মেয়েটা কে? --তুমি কি ভেবেছো এ কথা শুনে আমি ভেঙ্গে পড়বো? তুমি মণিমালাকে চিনতে পারোনি। --শোনো মণি আমার সব কথা না শুনে তুমি ফোনটা রেখে দিও না। মেয়েটার বাড়ীর লোক সন্দেহবশে তাড়াতাড়ি মেয়েটার বিয়ে দিয়ে দিল অন্য ছেলের সঙ্গে। --মেয়েটা রাজি হয়ে গেল?এ কেমন ভালবাসা?আপদ গেছে ভাল হয়েছে।  আজ থাক পরে শুনবো তোমার প্রেম কাহিনী,রাখছি? --শুভরাত্রি। শুভরাত্রি বলে আমি রেখে দিলাম ফোন। মনকে একটি মেয়ে ভালবাসতো আমি জানতাম না। কে হতে পারে? তার নামটা জিজ্ঞেস করা হয়নি,মেজাজটা এমন বিগড়ে গেল।বললে হত প্রেমিকার বিয়ে হয়ে গেছে,বড় চাকরি পেয়ে গেছো,এবার বাউণ্ডেলের  মত  ঘুরে না বেড়িয়ে বিয়ে করে ফেলো।পরের বউয়ের পিছনে ঘুর ঘুর করে মিথ্যে সময় নষ্ট করার কি দরকার?কি বলছিল মন,দু-টো বিপরীত ইচ্ছের দ্বন্দ?                                             সকালবেলায় ঘুম ভাঙ্গলো মনটা ঝরঝরে।ব্রাশ করে চা নিয়ে বসেছি নির্মলা সুন্দরী কার সঙ্গে কথা বলছেন ফোনে ডাকলেন,বউমা ফোনে কথা বলো। --হ্যালো?মা কেমন আছো?...আমি? মনে পড়ল আমার শরীর ভাল নয় বলা হয়েছিল বললাম,এখন ভাল আছি। বাবা কেমন আছেন?...একরকম মানে ডাক্তার দেখাছে না?...এত ব্যস্ত সবাই?...অতনুর ফিরতে আরো মাস পাঁচেক....ফোন করেছিল তখন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম...আচ্ছা রাখি? ফোন রেখে দেখলাম শাশুড়ী আমার দিকে তাকিয়ে আছেন তারপর নিজের মনে বললেন,বিয়ের পর মেয়েরা আর বংশের কেউ নয়। ঘরে ঢুকে এলাম।বেশ সুন্দর ছিল সকালটা আবার যেন মলিন মেঘে ছেয়ে গেল।মন বলছিল আমার অবস্থার জন্য নাকি আমিই দায়ী। কথাগুলো অর্থহীন হলেও কেন ঘুরে ফিরে আসছে আমার মনে? রোজ রাতে খাওয়া দাওয়ার পর সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়ে মন ফোন করে।কতকথা হয় এলোমেলো অর্থহীন তবু শুনতে ভাল লাগে।ক্রমশ যেন নেশার মত হয়ে যায় বিছানায় শুয়ে থাকি অধীর প্রতীক্ষায় কখন বেজে উঠবে মোবাইল?একদিন মন বলছিল,মণি অশান্তি থেকে দূরে সরে গেলে শান্তি পাওয়া যায় না বরং অশান্তি আরো পেয়ে বসে।মুখোমুখি দাড়াও দেখবে যত ভয়ংকর মনে হয়েছিল অশান্তিকে সে পালাবার পথ পাবে না। সকাল হতেই শুরু হল অশান্তি। শ্বশুর মশায়কে চা দিয়ে চলে আসছি ডাকলেন,বউমা শোনো। আমি দাড়ালাম কি বলবেন উনি? --কাল রাতে ফোনে কার সঙ্গে কথা বলছিলে? আড়ি পেতে শুনেছে বুঝলাম বললাম,ফোনে কথা বলা কি অপরাধ?শাশুড়ী মা কথা বলেন তনিমা কথা বলে আমি তো জিজ্ঞেস করিনি? --তর্ক কোর না।বাড়ীতে তুমি কি করতে সে ব্যাপারে আমি কিছু বলতে চাইনা কিন্তু এখানে আমার ইচ্ছে তুমি ফোনে আর কথা বলবে না। --আপনার ইচ্ছে?আমার ইচ্ছের কোনো মুল্য নেই? কার কার ইচ্ছে মেনে আমাকে চলতে হবে? --বউমা।গর্জে উঠলেন শাশুড়ি,তুমি কার সঙ্গে কথা বলছো ভুলে যেও না।বাড়ীর বাইরে যেতে গেলে জিজ্ঞেস করে যেতে হবে। এ বাড়ীর নিয়ম। ঘরে এসে কাদলাম।আমার ইচ্ছেতে কাঁদায় কেউ বাঁধা দেবে না নিশ্চয়ই।রাতে ফোন বাজতে কেটে দিলাম। কিছুক্ষণ পর আবার বেজে উঠোল,আবার কেটে দিলাম। তন্দ্রামত এসেছিল আবার ফোন বেজে উঠল,বিরক্ত হয়ে বললাম, আমাকে আর ফোন করবে না।কেন ফোন করো? --একটা জরুরী কথা কাল একবার পার্কে এসো। --আমার সময় হবে না। ফোন কেটে দিলাম। সবাই খুশি সবার ইচ্ছে মত চলছি এ বাড়ীর নিয়ম ভাঙ্গছি না। আর কারো কিছু বলার নেই,মন বলছিল ওরা যে ব্যবহার করছে সেটা স্বাভাবিক।বাপের বাড়ীর ব্যবহার স্বাভাবিক শ্বশুরবাড়ীর ব্যবহার স্বাভাবিক আমিই কেবল অস্বাভাবিক?
Parent