যেখানে যার নিয়তি/কামদেব - অধ্যায় ৭

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-27499-post-2053676.html#pid2053676

🕰️ Posted on June 12, 2020 by ✍️ kumdev (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1379 words / 6 min read

Parent
সপ্তম পর্ব         সকালবেলা তনিমা একজন মহিলাকে নিয়ে এসে আলাপ করিয়ে দিল পদ্মমাসী। ভদ্রমহিলার বয়স পঞ্চাশের উর্ধে স্থুল বপু মাথায় একরাশ কালো চুল। বুঝতে অসুবিধে হয় না রঙ করেছেন।এই তাহলে নির্মলা সুন্দরীর ফ্রেণ্ড? ভদ্রমহিলা আমাকে একনজর দেখে বললেন,বাঃ বিয়ের দিন বুঝতে পারিনি নিমুর বউমা বেশ সুন্দরী।তারপর তনিমাকে জিজ্ঞেস করেন,তোর মা কোথায়? অনিমা আসেনি? তনিমা হেসে বলল,সবাই এসেছে ও ঘরে চলো,আসি বৌদি। সন্ধ্যেবেলা ফ্লাইট শুনেছি,এরা দুপুরেই যাত্রা করবে। স্বামী চলে যাবে শুনলে যেমন বিরহের  বাষ্প জমে বিশ্বাস করুণ আমার তেমন কিছু হচ্ছে না।আমি স্নান করতে ঢুকলাম।তার আগে একবার মেসেজ বক্স খুলে দেখলাম,নতুন কোনো মেসেজ নেই।কোনো মেসেজ আসার কথা তা নয় দেখলাম কিছু এসেছে কিনা? বাথরুম গন্ধে ভুরভুর করছে।খুব সাবান লাগিয়েছে সবাই।স্নান করে বেরিয়ে দেখলাম অতনু সাহেবী পোষাকে তৈরী।গলা থেকে টিকটিকির লেজের মত ঝুলছে টাই।ভাগ্যিস মাথায় হ্যাট পরেনি?সত্যি কথা বলতে কি আমার ক্যাজুয়াল পোষাক বেশি পছন্দ। পোষাক নয় পোষাকের ভিতর মানুষটা আকর্ষনীয় হলে পোষাকের কোনো গুরুত্ব নেই আমার কাছে। এয়ারপোর্টে পৌছে দেখলাম প্রায় সবাই সাধারণ বেশ ভুষায় কেউ কেউ আবার হাফ প্যাণ্ট পরে এসেছে।হাফ প্যাণ্টের ভিতর থেকে লম্বা লম্বা ঠ্যাং বেরিয়ে থাকা কেমন যেন লাগে।অতনু ভিতরে ঢুকে গেছে কাচের ভিতর দিয়ে দেখতে পাচ্ছি।অনর্থক অপেক্ষা করার মানে হয় না,বাড়ী চলে যেতে পারি। এক নিরালা জায়গা আশ্রয় করে দাঁড়িয়ে আছি।নির্মলা সুন্দরী আর তার ফ্রেণ্ড কখন আমার পিছনে এসে দাড়িয়েছে খেয়াল করিনি।আজকালকার মেয়ে কেউ ছিল না বললে বিশ্বাস করব? কথাটা কানে যেতে আড়চোখে দেখলাম বক্তা পদ্মরাণী আর শ্রোতা নির্মলা সুন্দরী।আমার শাশুড়ি বললেন,থাকলেও এখন আর নেই বলে মনে হয়।চুপচাপ ঠাণ্ডা প্রকৃতি। হাসি পেল ঠাণ্ডা প্রকৃতি? আমাকে নিয়েই কথা হচ্ছে।মনে মনে বলি ভুল ধারণা সবার থাকে না,এখনো নেই।আপনাদের মত ঐসব নোংরা বইও পড়ে না।কোথা থেকে তনিমা ছুটতে ছুটতে এসে বলল,বৌদি তুমি এখানে? চলো দাদা তোমায় খুজছে। আমি তনিমার সঙ্গে এগিয়ে যাই।দূর থেকে হাত নাড়ছে অতনু। আমিও হাত নাড়লাম।ইশারায় কি যেন বলছে তনিমা বলল, তোমাকে চিন্তা করতে মানা করছে।তনিমা ইশারা বুঝে গেল?  শাশুড়ী এসে বললেন,পদ্ম তোমার খুব প্রশংসা করছিল। আমি হাসলাম,মনে মনে বলি আমি শুনেছি আমার খুব গুণগান করছিলেন।অন্ধকার হয়ে এল অতনু কোথায় এখন আকাশে না মাটিতে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে প্লেনের জন্য জানি না।একে একে গাড়ীতে উঠে বসলাম।মোবাইলে টুং করে শব্দ হল,আমি হাসলাম।আবার টুং। মনে মনে ভাবছি একটা না হয় মন  আরেকটা আবার কে? পদ্মরাণী আমার পাশে বসে জিজ্ঞেস করলেন,তোমার খুব ফোন আসে?   --খুব না,তবে আসে। --বন্ধু বান্ধব? --অতনু করে,মা করে।বন্ধুবান্ধব খুব রেয়ার।আপনার খুব বই পড়ার নেশা তাই না? আমি জিজ্ঞেস করি। ভদ্রমহিলা থতমত খেয়ে গেলেন সামলে নিয়ে বললেন,ছোট বেলা খুব পড়তাম। এখন আর তেমন সময় পাই কোথায়? ভিতরে ভিতরে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি কখন এদের সাহচর্য থেকে মুক্তি পাবো? কি লিখেছে মন?মানা করলেও শুনবে না। মন তুমি ভীষণ দুষ্টু।তোমার কি ইচ্ছে নয় আমি সুখে সংসার করি?আমার ঘর ভেঙ্গে তোমার কি লাভ বলো? --মন খারাপ কোরো না ছ-টা মাস দেখতে দেখতে কেটে যাবে। পদ্মরাণীর গলায় সহানুভুতি। আমার সময় কাটতে চায় না কখন বাড়ী পৌছাবো। গাড়ী দাঁড়িয়ে পড়ল সিগন্যালে। ইচ্ছে করছে হাত তুলে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশটাকে  নেমে এক থাপ্পড় কষাই। কত গাড়ী চলে গেল আমাদেরটাকেই আটকাতে হবে?     যাক অবশেষে বাড়ী পৌছানো গেল।অনিমাদি মাঝ পথে নেমে গেছেন,বাসে বাড়ী চলে যাবেন।তনিমা আমার সঙ্গে রয়েছে মেসেজ খুলতে পারছি না। পদ্মরাণি আমাদের সঙ্গে এলেন,ভেবেছিলাম অণিমাদির মত নেমে যাবেন। সন্ধ্যাহার এখানে সারার মতলব।পরে ভুল ভাঙ্গল। শ্বশুর মশায় ডাকলেন,তনিমা দেখতো আবার কে এল? তনিমা চলে যেতে মেসেজ খুলতে যাবো তনিমা বলল,বৌদি দেখ কে এসেছেন? উকি দিয়ে দেখলাম বড়দা শ্বশুর মাশায়ের ঘরে ঢুকছে। এখন বড়দা কেন?তাহলে কি নেমন্তন্ন করতে এসেছে?আমি বসার ঘরে যেতে শ্বশুর মশায় বললেন,বৌমা তোমার শাশুড়ী মাকে ডাকোতো,বল তোমার দাদা এসেছে।আমি শাশুড়ীকে ডাকতে গিয়ে হোচট খেলাম।ইস একী কাণ্ড? শাশুড়ীকে জড়িয়ে ধরে পদ্মরাণী চুমু খাচ্ছে।আমাকে দেখে নির্মলা সুন্দরী ধমক দিলেন,এখানে কি চাও? --আপনাকে ডাকছেন।আমি চোখ নামিয়ে বললাম। --ঠিক আছে যাচ্ছি দু-বন্ধুতে শান্তিতে একটু কথা বলতে পারবো না? আমার অনুমান ঠিক বড়দা একটা কার্ড বের করে শ্বশুরমশায়ের দিকে এগিয়ে দিল।শ্বশুর মশায় কার্ডে চোখ বুলিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, মেয়ে কিছু করে? --আজ্ঞে আমার সঙ্গে ব্যাঙ্কে আছে।বড়দা বলল। --ব্যাঙ্কে?ব্যাঙ্কে তো ভালই ইনকাম।বেয়াই মশায়ের শরীর কেমন আছে? বড়দা হতাশ গলায় বলে,ঐ আগের মত।ডাক্তার তো কম দেখালাম না,জলের মত খরচা করছি কিন্তু কোনো উন্নতি দেখছি না। মন খারাপ হয়ে গেল।বাবার শরীর ভাল নেই।টাকা খরচের কথা এখানে বলার কোনো দরকার ছিল? শাশুড়ী মা ঢুকে বড়দাকে দেখে বললেন,ও তপেন,তা কি মনে করে? --আসবো আসবো করে সময় করে উঠতে পারছি না,পরশু দিন আপনারা যাবেন। শাশুড়ী বুঝতে পারেন না শ্বশুর মশায় মুচকি হেসে বললেন,তপেন লজ্জা পাচ্ছে,পরশুদিন ওর বিয়ে। --আজ অতনু চলে গেল।মনটা খুব খারাপ বাবা।আমার শরীর ভাল না কেউ না যাক বউমা যাবে। --মা অনেক করে বলে দিয়েছে আপনাকে যেতে।অনিমা বৌদি থাকবেন দেখা হবে। --অনিমা তো এয়ারপোর্টে গেছিল,আজই চলে গেল। অবশ্য অফিস ছিল বলে জামাই আসতে পারেনি। --এখন আসি,বড়দা উঠে দাড়াল।আমাকে দেখে বলল,সকাল সকাল যাস মণি। মনে মনে বলি আমি যাবো শুধু বাবাকে দেখতে।এককাপ চা-ও বড়দাকে দেওয়া হল না।একী অসভ্যতা? মানুষের ভালমন্দ বিচার হবে কোন নিরিখে? খুব খারাপ লাগল,ছেলের জন্য মন খারাপ তাই এসেই চুমাচুমি শুরু করেছিলে? ঘরে এসে দরজা বন্ধ করে চেঞ্জ করছি। নির্মলা সুন্দরী বাইরে থেকে বললেন,দরজা বন্ধ করে কি করছো? দরজা খুলে জিজ্ঞেস করলাম,দরজা খুলে চেঞ্জ করবো? নির্মলাসুন্দরী অবাক হয়ে আমাকে দেখেন। হয়তো মনে মনে ভাবছেন কাকে ' শান্ত প্রকৃতি' বলেছিলেন? বললেন,আচ্ছা তোমার আক্কেলটা কি?তপেন এসে চলে গেল এককাপ চাও দিতে পারো নি?তুমি কি ভেবেছো এভাবে শ্বশুরবাড়ির বদনাম করবে?               যা দেখলাম আজ, বদনাম করার জন্য আমাকে কিছু করতে হবে না।পদ্মরাণি বেরিয়ে এসে বললেন,আঃ নিমু তুই কি বলছিস?ওর মনের অবস্থাটা বোঝ। --কি বুঝবো,গেছে তো ছ-মাসের জন্য এমনভাব করছে যেন আর দেখা হবে না।পেম উথলে পড়ছে। শাশুড়ী দপদপিয়ে চলে গেলেন। মোবাইলের কথা মনে পড়ে গেল।ঘরে ঢুকে মেসেজ বক্স খুললাম,শ্রাদ্ধ মিটে গেল।সারাক্ষণ অনুভব করেছি তোমার উপস্থিতি।মন। হ্যা তাইতো বলেছিল আজ শ্রাদ্ধের কথা। পাগল যা মনে আসে লেখে কোনো অর্থ হয় না।ও আর একটা আছে,পরেরটা খুললাম,পেত্নী এ-কার বাদ দিলে কি হয়?মন। ডিলিট করে দেওয়া মেসেজটা তাহলে পেয়েছে? এ-কার কাটলে হয় পত্নী।অসভ্য কোথাকার,দুষ্টু বুদ্ধি মাথায় ভর্তি।এসব যদি অন্যের হাতে পড়ে?তবু ডিলিট করতে ইচ্ছে হল না। বিয়ের দিন তো যাচ্ছি যদি পথে দেখা হয়ে যায় বলে দিতে হবে কি লাভ পাগলামী করে,চাকরি পেয়েছো এবার বিয়ে থা করে ঘর সংসার করো।পুরানো স্মৃতি ভুলে যাও।সেদিনের জন্য মনকে দোষ দেওয়া যায় না। অনেক নিষেধ করেছিল,কি পাগলামীর ভুত চেপেছিল আমার মাথায় তার পরিণাম অমন হবে ভাবিনি।তবে আজ স্বীকার করতে বাধা নেই আতঙ্কের মধ্যেও পেয়েছিলাম অনাস্বাদিত আনন্দ।  পদ্মরাণী ঢুকলেন ঘরে,এখনো যায়নি? হেসে বললেন,আসি বউমা? বেশি চিন্তা কোর না।বলে খাটের একপাশে  বসলেন।আসি বলে বসে পড়ল যে কি মতলব পদ্মরাণী? --তুমি আমাকে চেনো না,আমি আর নিমু সেই ছোটবেলার বন্ধু পশুপতি জানে। পশুপতি আমার শ্বশুর মশায়ের নাম। বন্ধুত্বের নমুনা একটু আগে দেখেছি। আমাকে এসব কথা শোনানো কেন? বিধবা না সধবা সাজগোজ দেখে বোঝার উপায় নেই।হাতে শাখা পলা দেখছি না।পদ্মরাণী বললেন,ওর চলে যাবার পর খুব একা মনে হত।দুই বন্ধু  দেখা হলে আর ইচ্ছে করে না ছেড়ে যেতে। তুমি কিছু মনে কোরনা আমার মত অবস্থা হলে বুঝবে।যাক আসি। পদ্মরাণী চলে গেলেন। উনি কি যা দেখেছি সেই ব্যাপারে কিছু বললেন?দেখে কেমন মায়া হয়।সম্ভবত  খুব ঘাবড়ে গেছেন।শরীরের জ্বালা মানুষের আত্মবিস্মৃতি ঘটায় পরে মনস্তাপ করে। নির্মলা সুন্দরীর গলা পেলাম,আমি আর এখন খাবার করতে পারবো না বাইরে থেকে রোল-টোল কিছু নিয়ে আয়। তনিমা এসে বলল,বৌদি আমার সঙ্গে একটূ যাবে? ঘরে একঘেয়ে লাগছিল চুলে চিরুণী বুলিয়ে তনিমার সঙ্গে বেরিয়ে পড়লাম।ফুটপাথে রোলের দোকান,পাঁচটা এগ রোলের ফরমাস দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। আমি জিজ্ঞেস করি ,পাঁচটা কার কার? --আমরা দুজুন আর বাবা মা পদ্মমাসী।তনিমা বলল। --উনি যাননি? --পাগল এখনই যাবেন।সারাক্ষণ কিযে ফুস ফুস করে কে জানে। না জানাই ভাল তনিমা মনে মনে ভাবি।তনিমা যেন কেমন অস্বস্তি বোধ করছে মনে হল। একটি ছেলে আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়ে রোলের ফরমাস দিল। --তাড়াতাড়ি দেবে না আমরা চলে যাবো?তনিমা তাগাদা দিল। মনে হচ্ছে সদ্য আসা ছেলেটা তনিমার অস্বস্তির কারণ।ছেলেটির দিক থেকে সরে তনিমা আমার গা ঘেষে দাড়াল।ছেলেটি বলল,তনু তোমার দাদা আজ এ্যামেরিকা গেল? --তুমি আমাকে তনু বলবে না,আমার নাম তনিমা।ফুসে উঠল তনিমা। --তুমি আমার উপর খচে যাচ্ছো কেন বলতো? আমি কি এমন খারাপ কথা বললাম? --আমাদের দেখে তোমার রোল খাবার ইচ্ছে হল? নিজেকে খুব চালাক ভাবো? --আচ্ছা ঠিক আছে,এই আমাকে দিও না না,আমি পরে আসছি। ছেলেটি চলে গেল। তনিমা তাকিয়ে থাকে ছেলেটির চলে যাওয়ার দিকে।ইতিমধ্যে একটা ক্যারিব্যাগে রোল আমাদের এগিয়ে দিল,তনিমা পয়সা মিটিয়ে দিয়ে বলল,চলো বৌদি। --ছেলেটা কে,তোমার চেনা মনে হল?আমি জিজ্ঞেস করলাম। --ওর নাম সজল পাড়ার ছেলে। আমার সঙ্গে লাইন করতে চায়। --তোমার মাকে এসব বলোনি কেন? --না বৌদি তুমি মাকে এসব বলতে যেও না। মাকে তো চেনো না তাহলে মা ওকে ডেকে যা না তাই বলে অপমান করবে। আমি আর কথা বাড়ালাম না,তনিমা বলল,আমরা তো পরশু যাচ্ছি? বেশ মজা হবে এক সঙ্গে দু-দুটো বউ আসবে বাড়ীতে তাই না?তোমার বড়দার সঙ্গে যার বিয়ে হবে বড়দি তাকে চেনে। --কে অণিমাদি? কখন বলল তোমায়? --কাল তো মার সঙ্গে এইসব গল্প হচ্ছিল।পদ্মমাসী কি অসভ্য জানো কি বলছিল? --কি বলছিল? --দুই 'ম' একসঙ্গে,হি-হি-হি।  মেয়ে আবার মাল মানে টাকা পয়সা। বড়দার সঙ্গে যার বিয়ে হবে তার নাম মৌমিতা। শালা হোমো এদের কথাবার্তায় বোঝা যায় কেমন মানসিকতা। 
Parent