যেখানে যার নিয়তি/কামদেব - অধ্যায় ৮

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-27499-post-2055601.html#pid2055601

🕰️ Posted on June 13, 2020 by ✍️ kumdev (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1226 words / 6 min read

Parent
 অষ্টম পর্ব           সকাল সকাল সাজগোজ করে তৈরী হয়ে নিলাম।ঠিক ছিল আমার সঙ্গে তনিমা যাবে শেষ মুহুর্তে নির্মলা সুন্দরী বললেন,শোনো বউমা তুমি তো আজ রাতে ফিরবে না। তনিমা রাতে বাইরে থাকতে পারবে না। তুমি বরং একাই যাও। তনিমার মুখ ভার হল সকাল থেকে কত আশা করছিল বিয়ে বাড়ী যাবে। বিয়ে বাড়ী সবাই ব্যস্ত থাকবে ভাল করে কথা বলা যাবে না।বরং বউভাতের সময় গিয়ে কটাদিন থেকে আসা যাবে। আমি বললাম,ঠিক আছে আমিও রাতে ফিরে আসবো।তনিমা আমার সঙ্গে যাক। --দেখো বউমা আমি কিন্তু রাগ করে বলছি না,তুমি কটাদিন থেকে আসতে পারো। আমি হেসে বললাম,আমিও রাগ করে বলছি না,আজ রাতেই ফিরে আসবো। কটাদিন থাকা বউভাতের সময় ভাবা যাবে। নির্মলার দিকে তাকিয়ে ভাবে মেয়েতে মেয়েতে সম্পর্কের কথা আগে শুনেছে।ওরা কি করে সারাক্ষন অবাক লাগে ঐটা ছাড়া কি আনন্দ পায়? শালোয়ার কামিজ পরেছে তনিমা,রাস্তায় নেমে তনিমা আমার কনুই চেপে ইশারা করতে তাকিয়ে  দেখলাম উল্টদিকের ফুটপাথে দাঁড়িয়ে সেই ছেলেটা।তনিমা বলল,বলতো এরকম হ্যাংলার মত দাঁড়িয়ে থাকলে ভাল লাগে? তুমি যদি না থাকতে কাছে এসে জিজ্ঞেস করতো,কোথায় যাচ্ছ তনু? বাস স্ট্যাণ্ডে দাঁড়িয়ে আছি বাসের জন্য।ছেলেটি নির্নিমেষ তাকিয়ে আছে  এদিকে চোখচুখি হলেই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে অন্যদিকে।একটা মেয়ের মধ্যে কি পায় ছেলেরা,অনেক মেয়ের মধ্যে কেন বেছে নেয় একজনকে?তনিমা যখন পাত্তা দিচ্ছে না আরো তো কত মেয়ে আছে সময় নষ্ট না করে অন্য কোথাও চেষ্টা করতে পারে। আমি জিজ্ঞেস করলাম,ওকে তোমার ভাল লাগে না? --ভাল লাগার কথা হচ্ছে না। জানো বৌদি সজলরা ভাড়া বাড়ীতে থাকে।     বাস এসে গেছে উঠে পড়লাম।লেডিস সিটে দুটো ছেলে বসেছিল উঠে দাড়াতে আমরা বসে পড়ি।কাউকে উঠিয়ে নিজে বসতে ভাল লাগে না। ওরা যদি না উঠত আমি বলতাম না,লেডিস সিট উঠূন। তনিমার কথা নিয়ে নাড়াচাড়া করছি। সজলরা ভাড়া থাকে নিজেদের বাড়ী নেই।একটি ছেলে বা একটি মেয়ের পারিপার্শ্বিক যোগ করে তার মান নির্ধারিত হয়।  একটি মেয়ের কোনো ছেলেকে ভাল লাগল যখন জানল তার বাবা ডাক্তার বা আদালতের বিচারক ছেলেটির মান বেড়ে গেল আবার যদি দেখা যায় তার বাবা সাধারণ কেরাণী বা বাজারে মাছ বিক্রি করে তখন মেয়েটির চোখে তার মুল্য হ্রাস পেল।যেখানে বিচারের মাপকাঠি স্বার্থ জড়িত তাকে কি প্রেমের সম্পর্ক বলা যায়? তে-রাস্তার মোড়ে বাস থেকে নেমে পড়লাম।কব্জি ঘুরিয়ে ঘড়ি দেখলাম,চারটে বেজে গেছে। আমাকে দেখে সবাই হৈ-হৈ করে উঠল,ঐতো মণিমালা এসে গেছে।মা জিজ্ঞেস করল,এত দেরী করলি আমি ভেবেছিলাম সকালে এখানে খাওয়া দাওয়া করবি।এসো তনিমা উপরে চলো।     বড়দা রেজিষ্ট্রি বিয়ে করেছে,শ্বশুরবাড়ীতে বিধবা মা ছাড়া কেউ নেই সেজন্য আনুষ্ঠানিক ব্যাপারগুলো বাদ দেওয়া হয়ছে। তবে বউভাতের অনুষ্ঠান দুজনেরই হবে।বড়দার ঘরে দেখলাম চুল বেঁধে বসে আছে মৌমিতা বৌদি।বরযাত্রী যাবার জন্য তৈরী।ছোড়দার ঘরে তার বন্ধুরা আড্ডা দিচ্ছে।বাবার ঘরে গিয়ে দেখলাম ধোপদুরস্ত ধুতি পাঞ্জাবি পরে বসে আছেন।অন্যদিন শুয়ে থাকেন অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করি,বাবা তুমি যাবে? বাবা হাসলেন বললেন,তুই এখন এলি ভেবেছিলাম সকালে আসবি।এই শরীরে আর কোথাও যাওয়া হবে না,বাড়ীতে লোকজন আসছে তাই ভদ্রস্থ পোষাক পরেছি। মা ঢূকে বলল,তুই এখানে? ঐ মেয়েটা নীচে একা একা ঘুরে বেড়াচ্ছে,পরের মেয়ে খেয়াল রাখিস। মা তনিমার কথা বলছে। তনিমার বিচারের মাপকাঠি বেশ শক্ত  ওকে নিয়ে কোনো ভয় নেই।উপর থেকে উকি মেরে দেখলাম ছোড়দার বন্ধুদের সঙ্গে গপ্পে মেতেছে।কিছুক্ষণ এদিক-ওদিক ঘুরে মনে পড়ল ফাল্গুণী বলেছিল 'তুই এখন এ বাড়ীতে অতিথি।' সেকথা এখন অনুভব করছি,কারো নজর নেই আমার দিকে।যে আসছে সবাই খোজ করছে বড় বৌদির।মা অতিথি আপ্যায়নে ব্যস্ত।ভাবলাম মাকে সাহায্য করি,রান্না ঘরে যেতেই মা এমন করে উঠল যেন অনধিকার প্রবশ করেছি।মা বলল,এই কালিঝুলির মধ্যে তুই কি করতে এলি?যা বিশ্রাম করগে।বিয়ে হয়ে আমি পর হয়ে গেলাম? কাজ করিনা বলে আগে মা কত বকাবকি করত,নিজের সংসার হোক তখন বুঝবে। ছোড়দাকে নিয়ে বড়দা আর ছোড়দার দুই বন্ধু একটা গাড়ীতে আগে আগে চলে গেল। পুরোহিত মশায়কে ফেলে গেছে বলে তিনি খুব বিরক্তি প্রকাশ করলেন। বোঝাতে লাগলেন শুভ কাজে পুরোহিতের ভুমিকা কতখানি গুরুত্ব পুর্ণ এসব উপেক্ষা করার জন্য যত অনাসৃষ্টি কাণ্ড ঘটছে।আমার বিয়ের সময় কনে বউ হয়ে শেখানো মন্ত্র বলছিলাম তখন পুরোহিত মশায়কে যথযথ গুরুত্ব দেওয়া হয়ছিল কি না জানা নেই।কিছু অনাসৃষ্টি কি ঘটেছে? শোরগোল পড়ে গেল বাস এসেছে।এবার পুরোহিত মশায় আগেভাগে গিয়ে জানলার ধারে বসলেন। তনিমা কোথায় বাসে উঠে দেখলাম ছোড়দার বন্ধুদের সঙ্গে মধ্যমণি হয়ে বসে আছে।ওর কোনো অসুবিধে হচ্ছ কিনা কিসে সুবিধে হয় তা নিয়ে সবাই ব্যস্ত। তনিমাও জারিয়ে জারিয়ে তাদের  সেবা উপভোগ করছে। ডাকতে গিয়েও ডাকলাম না,আনন্দ করতে এসেছে আনন্দ করুক। ছল ছুতোয় কেউ কেউ গায়ে হাত দিচ্ছে,দেবেই সেবা কেন কোনোকিছুই বিনা মাগনায় পাওয়া যায় না। ফাল্গুণীদের বাড়ি বেশিদুর নয়,পৌছাতে বেশিক্ষণ লাগল না।               বাস থেকে নেমে মজা করে তনিমাকে বললাম,কে ভাড়াটে কে বাড়ীওলা তোমার  কিছু জানা নেই। তনিমা হেসে বলল,ধ্যেত তুমি না...আমি কি প্রেম করতে এসেছি নাকি? খুজে খুজে বের করলাম ফাল্গুণী কোথায়।নাকে নথ পরিয়েছে বেশ লাগছে দেখতে।পাশে দাঁড়িয়ে একভদ্রমহিলা ফাল্গুণীর হাত থেকে উপহারগূলো নিয়ে গুছিয়ে রাখছে।আমি ওর পাশে দাড়ালাম। এক ভদ্রমহিলা হাসতে হাসতে এসে একটা শাড়ী ফাল্গুণীর হাতে দিলেন। আমি সাহায্য করার জন্য হাত বাড়াতে শাড়ীটা সরিয়ে নিয়ে এমনভাবে তাকালো আমার দিকে আমি হাত সরিয়ে নিলাম।আমরা এক কলেজে পড়তাম পরস্পর বন্ধু ছিলাম একী সেই ফাল্গুণী?চোখের জল সামলে ধীরে ধীরে সেখান থেকে সরে এলাম। মনে পড়ল আমাদের বাড়ী ফিরতে হবে বেশি রাত করা যাবে না।এদিক-ওদিক খুজে বের করলাম তনিমাকে। বিরক্ত হয়ে তনিমা বলল,এখনই? --বেশি রাত হলে বাস পাওয়া যাবে না। অনিচ্ছে সত্বেও তনিমা আমার সঙ্গে খেতে বসল। আমি একমাত্র বোন নিজের দাদার বিয়েতে এসেছি বলে মনে হল না। কেমন অনাহুত যেন খাবার জন্য এসেছি। তনিমার কোনো হেলদোল নেই,ওকে খাওয়াবার জন্য কয়েকটি ছেলে খুব ব্যস্ত। একজন বলল,এত তাড়াতাড়ি বসে পড়লেন? --বাড়ী ফিরতে হবে। তনিমা আমার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে বলল। --আপনার মোবাইল ফোন নেই? --এবার ভাবছি কিনতে হবে।তনিমাটা হাদা নয় বুঝতে পারলাম। খাওয়ার পর দেখলাম একটি ছেলে খামে মোড়া পান তনিমার হাতে দিয়ে ফিস ফিস করে বলল, মোবাইল নম্বর লেখা আছে। তনিমা পান বের করে খামটা বুকে ঢুকিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে হাসল। আমরা সিড়ি দিয়ে নীচে নামতে থাকি। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করছে না,কিরে চলে যাছিস থাকবি না? অভিমাণ হল।রাস্তায় কয়েকটা গাড়ী দাঁড়িয়ে কয়েকজন লোক। চমকে উঠলাম,মন না?অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। পরনে জিন্সের প্যাণ্ট ছাপা টি-শারট।মুখে কোনো কথা নেই জিজ্ঞেস করি,তুমি এখানে? নিরুত্তর মন।হেসে বললাম,ভুত দেখলে নাকি? --উম হু,ভুত না পেত্নী।কোথায় যাচ্ছো? --বাড়ি যেতে হবে না? --তুমি বাড়ি চলে যাচ্ছো?গলায় বিস্ময়। --কোথায় যাবো? একপাশে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ীর দরজা খুলে বলল,ওঠো। উঠবো কি উঠবো না স্থির করার আগেই তনিমা উঠে বসে ডাকল,এসো বৌদি। তনিমা প্রতি বিরক্ত হলাম কার না কার গাড়ি জানা নেই চেনা নেই বলল অমনি উঠে পড়লি? আমি উঠে দরজা ঘেষে বসলাম যাতে পাশে বসতে না পারে।মনে হচ্ছে আশাভঙ্গ হয়েছে।    মন বলল,একটু ভিতরে ঢুকে বোসো। --কেন? --দরজা বন্ধ করলে তোমার লাগবে। আমি একটু সরে বসতেই ধুম করে দরজা বন্ধ করে দিয়ে ড্রাইভারকে বলল, মেমেসাবকে বাড়ী পৌছে দিয়ে আসুন। আমি জানলা দিয়ে হাত বের করে বললাম,বাই। মন এগিয়ে এসে হাত চেপে ধরে হাতের তালুতে চকাম করে চুমু খেল।পাশে তাকিয়ে দেখলাম অন্য জানলা দিয়ে হাত বের করে তনিমা টাটা করছে।মুখে হাসি মন হাত নাড়ছে।হাত মুখের কাছে নিয়ে চুমু খেল।অসভ্য কোথাকার,তনিমা দেখলে কি ভাবতো? পিছনে হেলান দিয়ে বসলাম।একটু আগে বিয়ে বাড়ীর সব অবজ্ঞা গ্লানি  এক চুমুতে ধুয়ে মুছে সাফ।   --ভদ্রলোক কে বৌদি? --ছোড়দার বন্ধু। --বেশ জলি তাই না? আমি কোনো উত্তর না দিয়ে চোখ বুজে থাকি।আমার বিয়েতে নেমন্তন্ন করেনি নিজের বিয়েতে বলেছে। মন তখন ছিল বেকার এখন বড় চাকুরে।এটাই কি মানুষের আইডেন্টিটি? ড্রাইভার জিজ্ঞেস করল,মেমসাব কোথায় যাবেন? তনিমা বলল,মানিক তলা।তুমি ওনার গাড়ী চালাও? ড্রাইভার বলল,কোম্পানীর গাড়ি উনি মানিজার সাহেব। --আপনাকে 'আপনি-আপনি' বলছিলেন? --উনি সবাইকে বলেন। --কোথাকার ম্যানেজার? --টিসিএস। তনিমাটা এত বকবক করে,ভাল লাগে না। তনিমা বলল,টিসিএস? আপনি অতনু চক্রবর্তিকে চেনেন? --সবাইকে চিনি,আজই তো দেখা হল। -- না না উনি এখন এ্যামেরিকায় আছেন। --কত অতনু কাজ করে কজনকে চিনবো বলুন? তনিমা দমে গেল।গাড়ী ফাকা রাস্তা পেয়ে ছুটে চলেছে কিছুক্ষণের মধ্যে বাড়ীর নীচে আসতে বললাম,এখানে থামুন।         উপরে ঊঠতে নির্মলা সুন্দরী বললেন,যাক তোমরা এসেছো? তনিমা বলল,মা আমাদের গাড়ী পৌছে দিয়ে গেল।নিরমলা সুন্দরী বললেন,তোমার কাছে কেউ শুনতে চেয়েছে। যাও শুয়ে পড়ো। মণিমালা এক ঘোরের মধ্যে মন এখন ম্যানেজার।সেই আগের মতই আছে।চোখের সামনে হাতের তালু মেলে ধরে দেখতে দেখতে ভাবে।কোনো দম্ভ নেই।একটু স্পর্শে এত শিহরণ! ম্যানেজার সাহেবের  খুব সাহস বেড়েছে।
Parent