যেমন করে চাই তুমি তাই/কামদেব - অধ্যায় ৪৯

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-27911-post-2141493.html#pid2141493

🕰️ Posted on July 5, 2020 by ✍️ kumdev (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1303 words / 6 min read

Parent
।।৪৯।।         জানলা দিয়ে ভোরের আলো এসে পড়েছে বিছানায়। ঘুম ভেঙ্গে উঠতে গিয়ে বাধা পেয়ে দেখলেন,একটা পুরুষ্ট হাত তাকে চেপে রেখেছে। নিজের দিকে চোখ পড়তে লজ্জায় রক্তিম হলেন গুলনার। রাতে উত্তেজনার মাথায় ভাল করে দেখার সুযোগ হয়নি। এত বড় দেবের ল্যাওড়া,নিজের ভিতরে নিয়েছিল ভেবে অবাক লাগে। দেবের বাহুবন্ধন থেকে নিজেকে মুক্ত করে আয়নার সামনে দাড়ালেন। দেবের গায়ে ইবলিশের মত শক্তি। সেদিন যদি দেব থাকতো তাহলে ছেলেগুলোর যে কি দশা করতো ভেবে মজা পান। বাথরুমে গিয়ে সাবান মেখে স্নান করলেন। একটা নাইটি গলিয়ে রান্না ঘরে ঢুকে চায়ের পানি চাপিয়ে দেবকে ডাকতে গিয়েও ডাকলেন না,লজ্জা করল। একটা চাদর এনে চাপা দিলেন। রান্না ঘর থেকে হাক দিলেন,ওঠেন,চা হয়ে গেছে। চায়ের পানি ফুটছে। স্কুল থেকে ফিরে আজ বাড়ি যাবেন। আব্বু বিয়ের কথা বলেছিলেন কিন্তু বেশি পীড়াপিড়ি করেন নি। ভেবে অবাক লাগে এত নিশ্চিন্ত থাকেন কি করে? একটা কথা আছে কন্যাদায় গ্রস্থ পিতা,আব্বুকে দেখে তা মনে হয় না। খুব খারাপ লাগছে আব্বু যখন শুনবেন তার আদরের মণ্টি তাকে না জানিয়ে বিয়ে করেছে এক অন্য ধর্মের মানুষকে কি প্রতিক্রিয়া হবে? মানুষটা অন্য মানুষের মত নয় একথা কি সবাই বুঝবে? মনে হচ্ছে দেব উঠেছেন,সাড়া পাওয়া যাচ্ছে উকি মেরে দেখলেন লুঙ্গি পরেছেন। এবার সামনা সামনি হওয়া যায়। খাবার আর চা নিয়ে প্রবেশ করলেন গুলনার। — মনে আছে তো আজ বাড়ি যাবো? — মণ্টি কাল কষ্ট হয়নি তো? — কষ্ট কেন হবে? এত কথা বলেন কেন? প্রথম দিনেই কিছু হোক আমার ইচ্ছা না। — কি ইচ্ছা না? — কিছু না,বলদা কি সাধে বলে? — মণ্টি আমার পাশে একটু বসবে? — রান্না করবে কে? সারা রাত একসাথে শুয়েছিলাম তাতে হয়নি? চা খেয়ে গোসল করেন আমি রান্না ঘরে যাই। স্কুল আছে না? রান্না করতে করতে ভাবেন খুব ভয় ছিল সহ্য করতে না পেরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলবেন নাতো? একটু কষ্ট হলেও খুব উপভোগ করেছেন। মনে হচ্ছিল দেব তাকে ছিন্ন ভিন্ন করে দিক। চিন্তাটা কিছুতেই ঝেড়ে ফেলতে পারছে না। দেবকে দেখে কি প্রতিক্রিয়া হবে সবার? একমাত্র মামুনই জানে,আব্বুর কথা ভেবে চিন্তা হচ্ছে,তার কাজে কোনোভাবে আব্বু ব্যথা পাক গুলনার সহ্য করতে পারবে না। বলদেবকে খাইয়ে স্কুলে বেরিয়ে গেলেন গুলনার এহসান। বেলা বাড়ে,একা একা বলদেবের সময় কাটেনা। স্কুল থেকে ফিরে তাগাদা দেন গুলনার। ব্যাগ রেখে বাথরুমে ঢূকলেন। বলদেব চুপচাপ বসে থাকে, কি পরবে ঠিক করতে পারে না। বাথরুম থেকে বেরিয়ে গুলনার অবাক,এখনো রেডি হন নাই? — তুমি বললে রেডি হতে,কি পরবো তুমি বলেছো? গুলনারের ভাল লাগে দেবের এই নির্ভরতা। মুখে বলেন,সব আমাকে করতে হবে? একপ্রস্থ জামা-প্যাণ্ট বের করে দিলেন,নিজের কামিজের সঙ্গে মিলিয়ে। গুলনার দেখলেন খুব স্মার্ট লাগছে দেবকে। তার ইচ্ছে দেব কোন কলেজের অধ্যাপক হোক। ওর একাডেমিক ক্যারিয়ার ভালই অসুবিধে হবার কথা নয়। ঘণ্টা তিনেক পর বাড়ির সামনে পৌছালো। রাস্তার ধারে বিশাল আকাশ চুম্বি বাড়ী।সারি সারি স্তম্ভ তার উপর বিশাল বারান্দা।  বিরাট গেট গেট পেরিয়ে একটা রাস্তা ডান পাশে চলে গেছে গ্যারাজের দিকে।ধাপে ধাপে  বড়  সিড়ী বেয়ে উপরে উঠে তারপর দরজা।উপরে ত্রিভুজের মত তাতে লেখা এহসান মঞ্জিল।বলদেব অবাক হয়ে বলল,মণ্টি তুমি খুব বড়লোক। --এটা আমার বাবার বাড়ি। ওরা উপরে উঠে  গেল করিম ছাড়া কেউ দেখেনি। নিজের ঘরে দরজা খুলে দেবকে বসিয়ে করিমকে বলেন,ওনাকে চা দাও। তারপর বাথরুমে চলে গেলেন। করিম রান্না ঘর থেকে চা নিয়ে ছোটদির ঘরের দিকে যেতে  গেলে পিছন থেকে নাদিয়া বেগম বলেন,কার চা নিয়া যাস? — ছোটদি আসছেন। করিম দৌড় দেয়। — কে আসছে এই করিম,কে আসছে? দেখছো কথার জবাব দেয়না,বলতে বলতে নাদিয়া বেগম করিমের পিছনে পিছনে গিয়ে মণ্টির ঘরে ঢুকে দেবকে দেখেই আবার বেরিয়ে আসেন। ব্যাটারে একেবারে অন্দরে আইনা তুলছে। বেরিয়ে এসে ছেলেকে ডাকেন,এ্যাই মামুন– মামুন। মামুন ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে ফিসফিস করে বলেন,দেখ তো বাবা মণ্টির ঘরে কে আসলো? করিমটার যদি কোনো আক্কেল থাকে– -একেবারে ভিতরে নিয়া তুলছে। মামুন উকি দিয়ে দেখে বলেন,উনি তোমার দামাদ। নাদিয়া বেগমের বিষম খাবার অবস্থা। বলে কি মামুন? মায়ের লগে ফাজলামি? ড.রিয়াজ আজ সকাল সকাল বাড়ি ফিরেছেন। উত্তেজিত নাদিয়াকে দেখে জিজ্ঞেস করেন,কি হইল এত শোরগোল কিসের? — কি হওনের বাকী আছে? শুনছো মামুন কি কয়? — আবু দুলাভাই আসছে। — দুলাভাই? বলদেব আসছে নাকি? মামুন অবাক আব্বুর কথা শুনে। ড.রিয়াজ মণ্টির ঘরে ঢুকতে চায়ের কাপ নামিয়ে রেখে উঠে দাঁড়ায় বলদেব। নাদিয়া বেগমও সঙ্গে সঙ্গে ঢুকলেন। — বসো। বলদেব বসে,সামনে সোফায় ড.রিয়াজ সাহেব বসে জিজ্ঞেস করেন,তোমার নাম বলদেব সোম? — জ্বি। — আমি মণ্টির বাবা। নাদিয়া বেগমকে দেখিয়ে বলেন,এই হল তার গর্ভধারিনী। বলদেব দুজনের পা ছুয়ে প্রণাম করে। নাদিয়া বেগমের বিস্ময়ের সীমা থাকে না। ইতিমধ্যে দরজার কাছে এসে দাড়িয়েছেন গুলনার। হতবাক হয়ে শুনছেন আব্বুর কথা। — তুমি পরীক্ষা দিছিলে,তার কোন খবর পাইছ? — জ্বি সেইটা মণ্টি বলতে পারবে। ড.রিয়াজ ঘর কাপিয়ে হো-হো করে হেসে ওঠেন। নাদিয়া বেগমের গা জ্বালা করে। এত হাসি কোথা থেকে আসছে কে জানে। সারাদিন চেম্বার নিয়া পইড়া থাকেন,এত খবর পাইলেন কেমনে? — আব্বু ওর সাব্জেক্টে প্রথম হয়েছে। গুলনার ঘরে ঢুকে বলেন। — সেকেণ্ড ক্লাস ফার্স্ট? ড.রিয়াজ বলেন। এবার মণ্টির বিস্ময়ের পালা। মামুনের দিকে তাকায় ভাইয়া বলে নাইতো?বুঝতে পারে মেয়ের পাত্র দেখার গরজ নাই কেন? — ওইদিকে কি দেখতেছিস? তোরা ভাবিস বাপ হইয়া আমার কোন চিন্তা নাই?মামুন কয় নাই। মামুন কি যেন বলতে যায় ড রিয়াজ হাত তুলে থামিয়ে দিয়ে বললেন,বুঝছি আপুর তোমারে কশম দিছে।  গুলনারের মনে পড়ে দেব বলছিল কে নাকি পথে তাকে নানাকথা জিজ্ঞেস করছিল। তাহলে আব্বু স্পাই লাগাইছেন? ড.রিয়াজ হাসি থামিয়ে বলদেবকে জিজ্ঞেস করেন,এইবার কি করবা? দেব ঘাড় ঘুরিয়ে মণ্টিকে দেখে। মন্টি বলেন,এম.এ পড়বো। আমার ইচ্ছা দেব অধ্যাপনা করুক। — তোমার ইচ্ছা? ড.রিয়াজ মেয়ের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করেন। — না মানে দেবেরও তাই ইচ্ছা। অপ্রস্তুত গুলনার সাফাই দেয়। নাদিয়া বেগমের দিকে তাকিয়ে ড.রিয়াজ বলেন,তোমরা দামাদ খুজতেছিলা,তোমার মাইয়া মনের মত কইরা দামাদ বানাইয়া নিছে। — আচ্ছা দেব এইবার একটা কথা মণ্টি না, তুমি নিজে কও। — জ্বি। — তোমার নাম বলদেব সোম তার মানে তুমি * ? — তা বলতে পারেন। — তুমি কি বলো? — জ্বি আমি * কি  '. কি বুঝি না। আমি একটা জিনিস বুঝি সেইটা মানুষ। — রাইট। * -মুসলিম-ইশাই যাই হও সবার মধ্যেই মানুষের মৌলিক চাহিদা একই। তুমি পিয়নের কাজ করতে তুমি পিয়ন আর যদি মণ্টি তোমারে অধ্যাপক বানায় তুমি অধ্যাপক। এই বদল হইলেও তুমি সেই দেব। --হ্যা স্যার। --স্যার কি?আব্বু কইতে শরম করে? গুলনার ধমক দেয়। --হ্যা আব্বু এইটা ঠিক।বলদেব শুধরে নিয়ে বলল।   ড রিয়াজ বলেন, মনে হয় আমার বেগমের মনে অনেক প্রশ্ন কিলবিলাইতেছে। আমি যাই তারে সামাল দিতে হইবো। নাদিয়া বেগমের মনে হয় তিনি ছাড়া সবাই ব্যাপারটা জানতো। ভীষণ অভিমাণ হয় তার কি সংসারে কোন মুল্য নাই? করিম পর্যন্ত তার কথার জবাব দেয় না। ড.রিয়াজ বলেন,বিবিজান আসেন। নাদিয়ে বেগম বলেন,আমারে সামাল দেওনের দরকার নাই। ড.রিয়াজ ঘুরে দাঁড়িয়ে বলদেবকে বলেন,তুমি বিশ্রাম নেও,আমি চেঞ্জ কইরা আসি। নাদিয়া বেগম স্বামীকে অনুসরন করেন। গুলনার একটা লুঙ্গি এগিয়ে দিয়ে বলেন, কথার জবাব দিতে পারেন না? কেউ কিছু জিগাইলে আমার দিকে চাওনের কি আছে? — পাস করেছি তুমি আগে আমাকে বলেছো? না বললে আমি জানবো কি করে? — দেখেন আপনে অখন গ্রাজুয়েট পোলাপানের মত কথা বইলেন না। — আচ্ছা মণ্টি,তুমি আমার সঙ্গে একটু মিষ্টি করে কথা বলতে পারোনা? সারাক্ষন খালি ধমকাও? গুলনার পিছন ফিরে দরজার দিকে তাকিয়ে নীচু হয়ে দেবের মাথা বুকে চেপে ধরে বলেন,তাইলে কারে ধমকাবো ? কে আমার ধমকানোর ধার ধারে বলেন? মণ্টির বাহুবন্ধন হতে মুক্ত হলে দেব বলে,তুমি আমাকে এইভাবে ধরে যত খুশি ধমকাও আমার কিছু হবে না। তুমি ছুয়ে থাকলে সব উপেক্ষা করতে পারি। গুলনার চোখের পানি আড়াল করতে ওয়ারড্রবের পাল্লা খুলে কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কি এমন কথা বলল চোখে পানি আসার মত? গুলনার ভাবেন,আসলে বলার দরদি ভঙ্গি হৃদয়কে বিদ্ধ করে। নিজেকে সামলে নিয়ে গুলনার দেবের কাছে এসে বলেন,সত্যি বলবেন আমি যে আপনেরে ধমকাই তাতে খারাপ লাগে না? — না। — তাইলে আপনের ব্যক্তিত্ব নাই? — অনেকে তাই মনে করে।ব্যক্তিত্ব শিং-র মত সবাইরে গুতা দেবার জন্য না।মনে করি আমার বিবি আমারে ধমকায় তাতে কার কি? — আপনের বিবির কোন দোষ নাই? — থাকবে না কেন? দুইজন যদি নিজেদের এক মনে করে তাইলে আর কোন কমপ্লেক্স থাকে না। গুলনারের মন ভরে যায়। ইচ্ছে করছে সারা বাড়ি দাপাদাপি করে ছুটে বেড়ায়। — তাইলে আপনি একা থাকেন আর মনে করবেন আমি আপনের মধ্যে আছি। বলে চলে যান গুলনার। দেব দরজা বন্ধ করে চেঞ্জ করতে থাকে। দেব পাস করেছে তার মানে আবার তাকে পড়তে হবে। মন্টিকে ছেড়ে ভার্সিটিতে গিয়ে লেকচার শুনতে হবে? পড়াশুনা খারাপ লাগে না কিন্তু উদ্দেশ্যমুলক ধরাবাধা শিক্ষায় হাপিয়ে ওঠে মন। ছোটবেলায় পড়েছিল, “খেলা মোদের গান গাওয়া ভাই খেলা লাঙ্গল চষা। “সব কিছুকে খেলা বলে ভাবতে পারলে আর ক্লান্তি লাগে না।
Parent