যেমন করে চাই তুমি তাই/কামদেব - অধ্যায় ৫২

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-27911-post-2144507.html#pid2144507

🕰️ Posted on July 6, 2020 by ✍️ kumdev (Profile)

🏷️ Tags:
📖 850 words / 4 min read

Parent
।।৫২।। ঘুম ভেঙ্গে গুলনার উঠে পড়েন। দিনের আলোয় নিজের দিকে দৃষ্টি পড়তে আরক্তিম হন। দ্রুত খাট থেকে নেমে নাইটি পরলেন। দেব নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে,আজ দেখতে লজ্জা করছে না। কাছে গিয়ে ঝুকে দেবের ধোনটা ধরে চামড়া ছাড়িয়ে ঠোটে ছোয়ালেন। পাকা করমচার মত লাল টুকটুক করছে। দেব পাশ ফিরল। ডাকাইত একটা এখন দেখলে বোঝা যায় না। মনে মনে ভাবেন গুলনার। নাক ধরে নাড়া দিলেন। দেব চোখ মেলে তাকালো। — বেলা হয়েছে। মনে আছে তো আজ কোথায় যেতে হবে? গোসল করে নেও। দেব গোসল করে বেরোতে গুলনার বাথরুমে ঢুকলেন। দেব জানলার ধারে দাঁড়িয়ে বাইরে তাকালো। ব্যস্ত পথ ঘাট। মণ্টি কি তারে এইখানে রেখে যাবে? মুন্সিগঞ্জ থেকে নিত্য যাতায়াত করে সময়মত ভার্সিটিতে হাজিরা দেওয়া সম্ভব না। করিম ঢুকে বলে,দামাদজি আপনেরে মায়ে ডাকা করছেন। বাইরে থেকে যে যেমনই দেখতে হোক ভিতরটা সব মেয়েরই প্রায় এক।এই উপলব্ধি দেবকে মেয়েদের প্রতি এত দুর্বল করেছে।তার ব্যবহারে কোনো মহিলা আহত হলে খুব কষ্ট হয়।দেব করিমের সাথে নাদিয়া বেগমের ঘরে ঢুকল। — আসো বলা মিঞা,এইখানে বসো। নাদিয়া বেগম পাশে বসতে ইঙ্গিত করলেন। করিম তুই এইখানে নাস্তা দিয়া যা। আমারেও দিবি। — জ্বি। করিম চলে গেল। — মা আব্বুরে দেখছি না? — তানার সময় কোথা? রোগীরা তার ধ্যান জ্ঞান। — ডাক্তারের কাম রোগীর সেবা করা। — তুমি আর তাল দিওনা। বিবি বাচ্চা ফেলাইয়া রোগীর সেবা? — কিছু মনে না করলে আমি একটা কথা বলতে পারি? — তুমি কও আমি কিছু মনে করুম না। — মামুন যখন হল তখন কি আপনি মণ্টির যত্ন করেন নাই? আপনি ঘরে চিন্তা করছেন আর ডাক্তার সাব মেয়ের চিন্তায় চারদিকে লোক লাগিয়েছেন। নিশ্চিন্তে বসে থাকেন নাই। — সেইটা আমি বুঝি না? ওর মনটা ভারী নরম। — মানুষের কথা শুনে তারে বুঝতে যাওয়া ঠিক না তার ভাবটা বুঝতে হয়। --বাইরে যে চোটপাট করি সেইটা দেখনাই।নাদিয়া বেগম ফিক করে হেসে বললেন,তুমি আবার এই কথা কাউরে বলতি যেও না। এমন সময় হন্তদন্ত হয়ে গুলনার ঢুকে বলেন,আপনে এইখানে বসে আছেন আমি সারা বাড়ি আপনাকে খুজে মরতেছি। — কেন করিম তো জানে আমি এইখানে। দেব বলে। — যাইতে হবে না? নাদিয়া বেগম জিজ্ঞেস করেন,কই যাবে? — টেলিভিশনে অডিশন আছে। তোমারে বলি নাই? — মামুন তো যাইতেছে। দল বাইন্ধা যাওনের কি আবশ্যক? গুলনার আড় চোখে দেবকে দেখেন। নিরীহ মুখ করে কেমন বসে আছে। মার কাছে থাকলে আর বিবির দিকে চোখ পড়েনা। মায়ের দখলদারী প্রবনতা গুলনারের ভাল লাগে না। লোকটার নড়ার কোন লক্ষন নাই। সকালের মুডটা নষ্ট হয়ে গেল। ইতিমধ্যে নীচে ঘন ঘন হর্ণ বাজাচ্ছে ড.মামুন। ব্যাজার মুখে গুলনার ঘর থেকে বেরোতে যাবেন পিছন থেকে নাদিয়া বেগম ডাকলেন,মন্টি শোন তো মা। গুলনার কাছে যেতে মুখের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করেন,তোর ঠোটে কি হয়েছে,ফুললো কি কইরে? প্রশ্ন শুনে কান ঝাঁ-ঝা করে উঠল। দেব বলল,তাই তো আমি এইটা খেয়াল করি নাই। উফ অসহ্য ! বলে কি না খেয়াল করি নাই? কাল রাতে কে করল? ভুতে? দাড়াও রাতে তোমারে ভাল করে খেয়াল করাচ্ছি। মাকে বললেন,পিপড়া-টিপড়া কামড়াইছে হয়তো। — সেইটা অসম্ভব না। দেব বলে। গুলনার তার দিকে আগুনে চোখে দেখে বললেন,আমি আসি মা। নীচে মামুন অস্থির হইয়া পড়ছে। একজন বিয়ে করল দখল করে বসে আছে আরেকজন।কাল থেকে ঠিক করে রেখেছে দুজনে এক সঙ্গে যাবে।সকালেও মনে করিয়ে দিয়েছে।গুলনার চলে গেলেন সব কেমন গোলমাল হয়ে গেল। দেখা যাক টেলিভিশনে কি হয়? দেশের দিকপাল শিল্পীরা থাকবেন। এদের সামনে গাইতে হবে ভেবে গলা শুকিয়ে আসে। ঘনঘন পানি খেতে থাকেন গুলনার এহসান। নিজেকে সান্ত্বনা দেন যা থাকে নসিবে তাই হবে। বেশ কয়েক রকম গান গাইতে হয়। রবীন্দ্র সঙ্গীত খুব ভাল হয়েছে মনে হল। নিয়মিত চর্চা করেন না আর কত ভাল হবে? বলদেবের একমাত্র চিন্তা তাকে এখানে একা থাকতে হবে। চিরকাল একাই থেকেছে। এখন মণ্টির সঙ্গে থেকে থেকে একা থাকার কথা ভাবলে কেমন অসহায় বোধ হয়। দারোগা বাড়ির কথা মনে পড়ল। আম্মুকে দেখতে ইচ্ছা হয়,কতকাল দেখেনি। তার ছাত্রটি এখন বড় হয়ে গেছে, দেখলে হয়তো চিনতেই পারবে না। মণ্টি মনে হয় রাগ করেছে। কথায় কথায় রাগ করে। এত রাগ ভাল না। কোথায় যেন গেল? গুলনারের অডিশন শেষ,কেমন হল খোদা জানে। সিড়ি দিয়ে নীচে নেমে গাড়িতে ঊঠলেন, সব কিছুর জন্য দায়ী দেব। সকাল বেলা মেজাজ খারাপ করে দিল। হঠাৎ একটি সরকারী গাড়ী পাশে এসে দাঁড়ায়। জানলা দিয়ে ভদ্রমহিলাকে দেখে চেনা চেনা মনে হল। কোথায় দেখেছেন মনে করতে চেষ্টা করেন। ভদ্রমহিলা জিজ্ঞেস করেন,কেমন আছেন? — আপনি মানে? — ডিএম সাহেবা। মামুন বলেন। গুলনার লজ্জিত গলায় বলেন,ম্যাম আপনি এদিকে? — হেডঅফিসে এসেছিলাম। বলুকে দেখছিনা ,কোথায় আছে? বলুকে তোমার কি দরকার,হাসি টেনে গুলনার বললেন, সময় থাকলে আসুন আমাদের বাড়িতে। সবাই খুশি হবে। — আজকের মত কাজ শেষ। এখন ফ্রী– । — আসুন তাহলে। গুলনার দরজা খুলে দিলেন। জেনিফার আলম বললেন,আপনি আমার গাড়িতে আসুন। — সেই ভাল অপা,তুমি যাও। আমার হাসপাতালে দেরী হয়ে গেছে। গুলনার নেমে ডিএম সাহেবার গাড়িতে উঠলেন। দেব সম্পর্কে জেনিফারের কৌতুহল তার পছন্দ নয়।নুসরত বলেছিল কোথায় গেছেন কেউ জানে না।গুলনারের মনে এলেও কিছু জিজ্ঞেস করেন না।বলু থাকলে পথেই সব মিটে যেত এখন বাড়ি নিয়ে যেতে হচ্ছে। --আজ স্কুল নেই? --যাইনি ছুটি নিয়েছি।টিভিতে অডিশন ছিল। --বলু কি করে এখন? --এবার এম,এ-তে ভর্তি করব। --ছেলেটা মেধাবী। ছেলেটা শুনে বিরক্ত হয়।তোমার কাছে কে জানতে চাইছে।গুলনার মুখে হাসি ফুটিয়ে তুললেন। এতকাল পরে একজন কথা বলার সঙ্গী পেয়ে নাদিয়া বেগমের ভাল লাগে।এই বাড়ীতে সবাই ব্যস্ত।বলদেবও বকতে পারে অনর্গল নাদিয়া বেগম কিছু বোঝেন কিছু বোঝেন না তবু শুনতে ভাল লাগে। --মণ্টি ওর বাপের আদরে ভীষণ জিদ্দি তুমি ওরে একদম প্রশ্রয় দিবানা।কড়া হইবা। --আমি খুব কড়া যেই জন্য আমারে খুব ভয় পায়। বাড়ীর নীচে গাড়ী দাড়াতে স্বস্তি পায় গুলনার।গাড়ি হতে নেমে নীচু হয়ে বললেন,আসুন।
Parent